ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোয় গনফেল হওয়ায় বেশ সমালোচনা চলছে ক্রম বিশ্ব র্যাঙ্কিং হারানো ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে। আচ্ছা যদি ৯৫% ফেল না করে পাশ করত তাহলে কি হত? ঢাবি কি পারতো এই কয়েক লাখ মেধাবীকে ভর্তির সুযোগ দিতে? পারতো না। কিন্তু এরা এইচ এস সি পর্যন্ত কি শিখেছে সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতো না।যাই হোক সে প্রসংগে আমার লেখা না। বাংলাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে যাদের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় সবাই পাশ করে। এবং প্রায় সবাই-ই কোন না কোন বিষয়ে পড়ার সুযোগ পায়। কথা এইখানে, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কে অনুসরণ করা। এবং দেশের সবচাইতে বেশি শিক্ষার্থী এখানে পড়ে (বলা যায় সকল পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্বঃ ও মেডিকেল কলেজের সব স্টুডেন্ট এক করলেও এর থেকে বেশি স্টুডেন্ট জাতীয় বিশ্বঃ এ পড়ে) সুতরাং সরকারের উচিৎ অন্যন্য সকল বিশ্বঃ ও মেডিকেল কলেজের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়ে জাতীয় বিশ্বঃ কে বাড়িয়ে দেওয়া এবং ঢাবি সহ অন্যদের জাতীয় বিশ্বঃ কে অনুসরণ করতে বাধ্য করা। এইবার আরেকটা প্রশ্ন... উচ্চশিক্ষা অধিকার না সুযোগ?? চাকরীর বাজার দেখলে মনে হয় বাধ্যতামূলক। আবেগ নয় বাস্তবতা দিয়ে সত্য বলতে হবে উচ্চশিক্ষা আসলে সুযোগ। সুযোগ মানেই সবাই সেটা পাবে না যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে নিতে হবে। তাহলে ঢাবি কি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করবে নাকি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনুসরণ করবে?? যদি সেদিকে যায় তাহলে তো তাদের ভর্তি পরীক্ষায় এখনই GRE, GMAT, SAT, TOEFL, IELTS এই জাতীয় পরীক্ষা চালু করা উচিৎ। অর্থাৎ আমরা যদি অক্সফোর্ড, ইয়েলে, এমাইটি বা এর নিচের মানের যেকোন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই তখন তো এইসব কঠিন কঠিন পরীক্ষা এড়িয়ে যেতে পারিনা। তবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ গুলো কেন সেই পথে হাঁটবে না? বিশ্বের প্রতিটি দেশ তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সিস্টেম রেখেছে আমরাও রাখতে পারি। যতদিন আমরা কোন বাংলাদেশি টেস্ট না বানাতে পারছি ততদিন আমরা বিদেশি টেস্ট গুলোর সহায়তা নিতে পারি। আমাদের প্রশ্ন পদ্ধতি তাদের মত করে হবে। এ প্লাস ছয় লাখ স্টুডেন্ট পাক সেটা সমস্যা নয়। এ প্লাস মানেই ভালো স্টুডেন্ট এই চেতনা ছাড়তে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মানে শুধু চাকরী পাওয়ার কারখানা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় মানে গবেষণা। আমরা আজও হিসাব করি ঢাবি থেকে কয়টা বিসিএস এ গেল, জাবি থেকে কয়টা গেল, কে কি চাকরি পেল ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু কেউ খোঁজ রাখিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে করা গবেষণা কি কাজে লাগানো যায়। গবেষকদের পুরস্কার ও অর্থ সাহায্য দিয়ে আরও আগ্রহী করে তোলা যায়। ঢাবি সহ সকল বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো থেকে সঠিক শিক্ষার মান পড়ে যাচ্ছে এর মূল কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কোয়ালিটির চেয়ে কোয়ান্টিটিতে বেশি নজর দিচ্ছে। দেশের ৫০% এর বেশি স্নাতক নাকি বেকার তাহলে আরও স্নাতক বানিয়ে কি হবে??এখন উচিৎ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না বাড়িয়ে যেগুলো আছে সেগুলোর মান বারানো এবং অন্যদের কর্মমুখি শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং কর্মক্ষেত্র বাড়ানো। ইতিহাস, দর্শন, বাংলা, রসায়ন, পদার্থ পড়ে যদি ব্যাংক চালানো যায় তাহলে আমার এতগুলো বিবিএর দরকার কি? আবার এতগুলো মানুষকে অযথা ইতিহাস, দর্শন, বাংলা, রসায়ন, পদার্থ পড়িয়ে লাভ কি?? তাহলে ডিপ্লোমা কিংবা ব্যাংকিং চালাতে ট্রেনিং সেশনে যে পড়াশুনা করায় তা পড়ালেই তো হয়। এমন অনেক সেক্টর আছে যেখানে স্নাতক ডিগ্রি কোন কাজেরই না অথচ আবেদন করার যোগ্যতা সেখানে স্নাতক। এইভাবে গনহারে স্নাতক বা উচ্চশিক্ষা দিলে আর কয়েকদিন পরে প্রথম শ্রেণির চাকরীর আবেদনের যোগ্যতা চাওয়া হবে এমফিল পিএইচডি... কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবেনা। শিক্ষার মান বাড়বে না। সব সেক্টর নিয়ে নিচে নেমে যেতে হবে। ঢাবি আর কখনই অক্সফোর্ড হবে না।
কোয়ালিটি না কোয়ান্টিটিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করবে? !!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন
=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?
যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!
যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।
কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।
ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।