somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন রিভিউ: PK

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনযুদ্ধে কী আমরা সবসময় জিতেই আসছি? একবারো কী হারিনি? তাতো হেরেছিই! নাহলে তাকে কী আর জীবন বলে ? তাকে বলে স্বপ্ন। সেই হারার মূহুর্তে মানুষের মনে আসে কেবল সাহায্যের প্রার্থনা। সেই সর্বশক্তিমানের প্রতি যিনি সর্বদাই আমাদের সবাইকেই দেখছেন। করলাম প্রার্থনা। কিন্তু একজন এসে বলে গেল:‌”হয় নাই, এভাবে করলে উনি শুনবেন না।“। একটু ভেবে দেখি। এটা কী সত্যি হতে পারে? যে স্বত্তা আমাকে তৈরী করেছেন, সকল বিপদ আপদে আমাকে দেখেছেন তাঁর কাছে প্রার্থনা জানাতে আমার অন্য কোন ধর্ম-ব্যবসায়ীর সাহায্য নিতে হবে? এই প্রশ্ন নিয়েই ভাবায় অসাধারণ এক চলচ্চিত্র PK।

কাহিনী জানা যাক। দিল্লীর এক নারী সাংবাদিক জাগ্গু ( Anushka Sharma) নিজের চ্যানেলের জন্য আজেবাজে খবরের প্রতিবেদন দিতে দিতে বিরক্ত। হঠাৎ চোখে পড়ে এক অদ্ভুত মানুষকে। মাথায় এক হলুদ রংয়ের হেলমেট , গলায় সব ধরনের ধর্মের মালা, এবং হাতে কয়েকটি কাগজ। কাগজে কিছু দেব-দেবীর ছবি দিয়ে নিচে লেখা “সন্ধান চাই”। পিছু নেয় আনুশকা। কিছু তো গড়বড় আছেই। অদ্ভুত সেই ছেলে। মন্দিরে ঢুকার আগে চপ্পলে সাইকেলের তালা লাগিয়ে রাখে। একদিন তো সে “এখানে পেচ্ছাব করলে ৫০ টা জুতার বাড়ি” লেখায় দেদারসে নিজের তরল ঢেলে দিলো। পুলিশ নিয়ে গেল ধরে। পুলিশকে কিছু ঘুষ দিয়ে আনুশকা কারাগারের ভিতর ঢুকে পড়ে তার সাক্ষাৎকার নেবার জন্য। কিছু একটা কাহিনী তো আছে এই বান্দার। নাম কী? ভোজপুরী ভাষার টানে বললো: “আমি পিকে”।

কে এই ভোজপুরী ছেলেটি? দিল্লী তে কী করছে? পিকে তার কাহিনী বলা শুরু করলো। দুই লাইন শুনার পর আনুশকা ভাবলো:” ধুর!!! আমি এত কষ্ট করে এই পাগলের পিছে ভাগছি? ঐ! আমারে কেউ বাইর করো!!”

ও আচ্ছা পিকে চরিত্রে অভিনয় করেছেন “ আমির খান”। আরে তাই নাকি? এটা আমির খান নাকি? সত্যিই! পিকের দিকে তাকিয়ে থেকে ভুলে যেতে হয় যে এটি আমির খানের অভিনয়। আমি এত অসাধারণ অভিনয় কোন মুভিতে কারো থেকে দেখিনি। অসাধারণ, দুর্দান্তু। আমির খানের অভিনয় সেই প্রশংসার প্রাপ্য যেটির বিশেষণ বাংলা ভাষাতেও নেই। চোখ গুলি ছানাবড়া করে যেভাবে সকলের মন জয় করে নিল সেই পিকে তার কথা কেউ ভুলবেনা। অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ।

মুভির নির্দেশক রাজকুমার হিরাণী। ভাবলাম ... আর কত? এবার নিশ্চয়ই ফালতু মুভি বানাবে। হিন্দী মুভির যেরকম যাচ্ছেতাই অবস্থা! কিন্তু নাহ। রাজকুমার হিরাণীর জবাব নেই। কীভাবে পারে? অভিজাত জোশী – হিরাণী জুটি শুধু হিন্দী মুভি দর্শক নয় যেন গোটা মানব সমাজকেই এক অসাধারণ উপহার দিলেন। প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়া একটি দারুন মুভির পিছনে টাকা ঢাললেন, এর জন্য তাকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।

আনুশকা শার্মার অভিনয় যথেষ্ট কঠিন ছিল এবং দারুন করেছেন তিনি। শুধু তার চুলের স্টাইলটা খুব একটা পছন্দ হয়নি। স্বাধীন, স্বনির্ভর নারী হলেই কী Barkha Dutt এর মত চুল থাকতে হবে?

সহ অভিনেতা হিসেবে সঞ্জয় দত্ত , বোমান ইরানীকে অনেক ভালো লেগেছে। সুশান্ত সিং, পরীক্ষিত সাহানী, সৌরভ শুকলাকে ভালোই লেগেছে। এই মুভি আমির খানের। আমির খানের সাথে তারা আমি বলবো সফল ভাবে তাল মিলিয়েছেন।

সংগীত হিসেবে “ভাগওয়ান ... হে কাহারে তু ?” অসাধারণ একটি গান। Swanand Kirkire ‘র লেখনি , শান্তনু মৈত্রের সুরে ফাটায় ফেলছে সোনু নিগাম। সাথে আমির খানের অভিনয় দেখে চোখের পানি আটকায়ে রাখতে পারিনি।

অনেকে বলতে পারেন মুভিটি কী “3 Idiots” এর চেয়েও ভালো? কঠিন প্রশ্ন। উত্তর দেবার চেষ্টা করি।
3 Idiots এর “বালাৎকার” ধরনের অসাধারণ হাসির দৃশ্য হয়তো নেই এই মুভিতে। তবে যতটা হাসিয়েছে , ততটাই কাঁদিয়েছে PK। 3 Idiots এর সাথে মিল হলো দুটাই অসাধারণ মুভি।

মুভির খারাপ দিক শুধু একটা মনে হয়েছে। মুভিতে পিকের জীবনে ভালোবাসার প্রবেশটি একদম বেমানান লেগেছে। ভালোবাসাটি বন্ধুত্ব পর্যন্ত থাকলে তেমন কিছুই ক্ষতি হতো না।

সবশেষে মহান আল্লাহ কে জানাই “রক্ষা করো প্রভু”।

রেটিং- ৪.৫০ /৫
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৯
১৬টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×