somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনে একটা ভালো কাজ করলাম... :)

২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল বিকেল ৩ টার ঘটনা, একটা মাদ্রাসার বাচ্চার এক্সিডেন্টের ঘটনা
আমি আর আমার বন্ধু রাকিব মিরপুর কালশি রোডে হাঁটছিলাম। এমন সময় দেখলাম পিকআপ থেকে লাফ দিয়ে ৮-৯ বছরের একটা বাচ্চা লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গেল। আমি ছুটে আসতে আসতে রাস্তার ওপাশ থেকে বাইক থামিয়ে একটা ছেলে রাস্তা থেকে ওই বাচ্চাটাকে উঠিয়ে একটা সিএনজিতে উঠিয়ে দেয়।

ঠিক ৪.৩০ এর সময় দেখি রাস্তায় অনেক মানুষের ভিড়। আমি আর আমার বন্ধু রাকিব এগিয়ে গিয়ে দেখি এক্সিডেন্টের করা সেই বাচ্চাটিকে রাস্তার নিচে ঘাসের উপর শুইয়ে একটা মহিলা পাখা দিয়ে বাতাস করছে। এটা দেখে আমাদের মাথায় বাজ পড়ে গেল। আমি ওই বাচ্চার পালস চেক করে দেখলাম সে এখনও জীবিত আছে। আমি বললাম একে হাসপাতালে নিয়ে যাব।

এই কথা শুনে কেউ কেউ বলে উঠলঃ
পুলিশের ঝামেলা হবে,
হাসপাতালের বিল দিবে কে?
একে নিয়ে যাওয়ার রিকশা ভাড়া দিবে কে?

আমি আর আমার বন্ধু রাকিব বললাম, দেড় ঘন্টা ধরে রাস্তায় শুইয়ে রাকছেন, যে কোন সময়ই তো মারা যেতে পারে, আর নাক একদম ফেটে গেছে, মাথা, চোয়াল দিয়ে রক্ত ঝরছে টাকা লাগলে সেটা আমরা দিব। কেউ একটা কথাও বলবেন না, পুলিশে খবর দিলে দেন তাও আমরা একে হাসপাতালে নিব।

আমি বাচ্চটাকে আমার দুহাতের উপর করে রাস্তায় আনলাম রাকিব এক হাতে তার মাথা ধরল। আমরা রিকশায় উঠলাম এবং তখনই পাশ থেকে একজন আমার হাতে বিশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলল "ভাই রিকশা ভাড়া দিয়েন"। আমরা বাচ্চাটাকে নিয়ে গেলাম ঢাকা সিএমএইচ এ।

আর্মিদের নিয়মকানুন আমার ভালো করেই জানা। কেননা ৮ বছর ধরে এই সিএমএইচ এই চিকিৎসা করায়। আমি আমার আব্বুর পরিচয় দিলাম এবং ঘটনা বললাম। তারা আমাকে ড্রেসিং রুমে পাঠাল। বাচ্চাটা তখনও অজ্ঞান। ড্রেসিং করে আইসিইউ তে পাঠাল এবং টিটেনাস ও স্যালাইন লাগাল। তখন সময় ৭.৩০ মিনিট।

এদিকে আমার বাসা থেকে বার বার ফোন দিয়ে বাবা-মা বার বার বাসায় আসতে বলছেন। কিন্তু কিভাবে বাচ্চাটাকে ফেলে যাব? প্রথমে মাদ্রাসা থেকে ঠিকানা নিয়ে ১০.৩০ মিনিটে কালশি কবরস্থানের পাশে একটা বাসা থেকে বাচ্চার বাবাকে খুঁজে বের করল রাকিব। লোকটা গার্মেন্টসে চাকরি করে। সিএমএইচ এসে তার বাচ্চাকে করে তাকে আমরা একটা সিএনজি তে উঠিয়ে দেই রাত ১১.৪৫ মিনিটে।

সিএমএইচ এর বিল সরকারি খাতে লিখে দেয় কর্তৃপক্ষ। আমাকে ডাক্তাররা অনেক ধন্যবাদ জানায় কিন্তু এতটুকু ভালো লাগে নি। কিন্তু যখন ছেলের বাবা আমার হাত ধরে বললঃ

"বাবা অনেক বড় উপকার করছেন আপনারা, আমার ছেলেকে বাঁচাইছেন, আমি কোনদিন আপনাদের ঋণ পরিশোধ করতে পারব না (তার চোখের কোণায় এক ফোঁটা জল)" :(( :((
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×