গুণীনের মন্ত্রবল
--------------------------------- ড. রমিত আজাদ
শান্ত বিকেল গড়িয়ে নেমে এলো নির্জন সন্ধ্যা,
আজ সারাটা দিন বৃষ্টি হয়েছিলো অঝোরে,
শরতের রৌদ্রজ্জ্বল দিন ম্লান করেছিলো আকাশ ছাওয়া কালো মেঘ,
খগোল থেকে নেমে আসা নির্মল বারিকণা
রূপ নিয়েছিলো অসহনীয় জলাবদ্ধতায়।
কোন যান নির্বিঘ্নে চলতে পারেনি রাজপথে,
অফিসগামী মানুষের পরিচ্ছন্ন পোষাক
কাদামাটি লেপ্টে মূষিকের মতো নোংরা হয়ে গিয়েছিলো
বড় সাহেবদের ঝলমলে গাড়ীগুলোও বাদ পড়েনি,
জলকাদায় ভিজে কেমন বিশ্রী রূপ ধারণ করেছিলো।
কেবল কাঁচ তোলা ছিলো বলে তাদের গায়ে ময়লা লাগেনি,
এসির বাতাসে থেকে টের পায়নি নর্দমার গন্ধ।
এভাবেই অনেক কিছু তাদের থাকে অজানা।
বিরক্তি, অস্বস্তি, ক্ষোভ আর ক্রোধে উম্মত্ত মানুষের ঢল,
ভাগ্য বেচারাকে গাল দিতে দিতে যাচ্ছে।
শুধু বস্তির ছোট ছোট শিশুগুলো হুটোপুটি করছিলো নোংরা জলে,
ওরা এখনো জীবনের কিছু বোঝেনা যে!
আর বুঝেই বা কি হবে? পাল্টাতে পারবে কি কিছু?
ঐ নর্দমায় ডুবে থাকা ব্যঙাচীদের সাথে তাদের পার্থক্য কতটুকু?
তার চাইতে ঐই ভালো, হুল্লোড় করুক নর্দমায়।
এভাবে নর্দমার গন্ধ একসময় সহনীয় হয়ে যাবে।
আবহাওয়াটা এতো খারাপ হলো কেন?
গুণীনের মন্ত্রবলেই কি এই সবকিছু হলো?
কিসের এতো আক্রোশ?
এতিমখানার এতিমদের প্রতি আক্রোশ!
গল্পকারের গল্পের প্রতি আক্রোশ!
লেখকের বইয়ের প্রতি আক্রোশ!
সাংবাদিকের কলমের প্রতি আক্রোশ!
এমনকি কবির কবিতার প্রতি আক্রোশ!
শান্ত বিকেল গড়িয়ে নেমে এলো নির্জন সন্ধ্যা,
এই আঁধার ক্রমশ ঘণীভূত হয়ে
রাত হয়তো আরো গভীর হবে।
গহীন অরণ্যে ডেকে উঠবে অলুক্ষুণে হুতুম প্যাঁচা!
প্যাঁচার ডাক শুনে আমরা আরো একবার শংকিত হবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৮