আমাদের সব আবেগই কি যুক্তিহীন ?
একটু একটু করে হার্টলেস হয়ে যাওয়া এই দেশটাতে হৃদয়গত সমস্যা যে কী প্রবল তা টের পাওয়া যায় রমনা পার্ক বা এ জাতীয় উদ্যানগুলোর অন্তর্হিত নিরালা স্পটগুলোতে গেলে, অথবা নগরীর বিভিন্ন হার্ট কিনিকগুলোতে ঢু মারলে। যদিও দুটো জায়গার পরিবেশ পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষিত ভিন্ন, দুই দল দুই ভুবনের পাত্রপাত্রী, তবু অভিন্নতা একটাই ; উভয়েই হৃদয়গত সমস্যায় তটস্থ, কখনো কখনো বিধ্বস্ত।
হাঁটতে হাঁটতে ফুটপাত ধরে মিরপুর হার্ট ফাউণ্ডেশনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এখানে যারা আসেন, সখ করে তো নয়, দায়ে পড়েই আসেন। হার্টের কারবারি হার্টলেস চিকিৎসকদের কাছে বিধ্বস্ত হার্টের রোগিদের নিয়ে যারা আসে, আত্মীয় পরিজন তো বটেই, তাদের চোখে মুখেও বিধ্বস্ত হতে যাওয়া নিজস্ব হার্টের ছবিটাও কি বুক ফেটে বেরিয়ে আসে না ? দেখে যে বোঝার সে ঠিকই বুঝে নেয়। সব সম্ভবের এই দেশে তা আমাদের গা সওয়া এখন। অতএব ভাঙাচোরা চেহারা দেখতে দেখতে পার হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু থেমে যেতে হলো। জটলাটা যদিও আমাদের পথচারিদের জন্য পথরোধক ছিলো না, তবু সহগামি লেখক-বন্ধু দাস প্রভাসের কৌতূহল আমার মধ্যেও সঞ্চারিত হলো।
গেটের লাগোয়া ভেতরেই একটা এম্বুলেন্সকে ঘিরে থাকা মানুষগুলোর ফাঁক দিয়ে উঁকি দিলাম ভেতরে। ক’টা বিষাদগ্রস্ত ছেলে-মেয়ের পাশে এক ক্রন্দনরত মধ্যবয়সী মহিলার কাতরোক্তি। সদ্যমৃত স্বামীই হবে, ধবধবে সাদা কাপড়ে মোড়ানো। পেছনের হুডখোলা এম্বুলেন্সে মৃতদেহটাকে তুলে নিতে পেশাদার হাতে টানা-হেছড়া করছে ক’জন। আর ক্রন্দনরত মহিলার বুকভাঙা কাতরোক্তি- ‘আস্তে ওঠান, ব্যথা পাইবো, আস্তে ওঠান..!’
সুখ দুঃখের উর্ধ্বে ওঠে যাওয়া মৃতের দায় তো জীবিতরাই বহন করে। যাদের উদ্দেশ্যে এই শোকাকুল অনুরোধ, তারা শুনলো কি না বোঝা গেলো না, কিন্তু বুকের কোথায় যেনো সুইয়ের মতো এসে বিঁধে গেলো কথাটা- ‘আস্তে ওঠান, ব্যথা পাইবো !’ আহ !
সংসারের মায়াবী সুখে দুঃখে পাশাপাশি বন্ধনে কাটিয়ে দেয়া দিনগুলোকে আমরা কেউ আর ফিরিয়ে আনতে পারি না। স্মৃতিটাই হয়তো আবেগ হয়ে নাড়া দেয় আমাদেরকে। কিছুক্ষণ পর যে মৃতকে কবরে শায়িত বা চিতায় ওঠানো হবে, সেই মৃতদেহের কষ্ট পাওয়ার আশংকায় কেঁপে ওঠাটা যত যুক্তিহীনই হোক, বুকের ভেতরে কোথায় যেনো একটা প্রশ্ন নাড়াচাড়া করতেই থাকে-
আমাদের সব আবেগই কি যুক্তিহীন ? #
(২০/০৪/২০০৮)
আলোচিত ব্লগ
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”
একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?
যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই
আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।