somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(১৫)

১৬ ই মে, ২০০৮ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(১৫)

তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল,১৯৯৩)


‘খেল লড়কোঁকা সমঝতে যে মুহব্বতকে তৈঁ,
হ্যয় বড়া হৈফ হমেঁ অপনী ভী নাদানীকা।’


(প্রেমকে আমি ছেলেখেলা ভেবেছিলাম, আজ বড় আশ্চর্য লাগছে নিজের বোকামীর কথা ভেবে।)
-মীর তকী মীর।

কথাটি বড় বেশী করে সত্য রূপা। ঐ যুবকটির ভাবনাও তো একই সমান্তরালেই চলে। কিন্তু সে তা প্রকাশে অক্ষম বলেই ‘মীর’-এর কাছে ঋণী হয়ে যায়। তার মনের কথা তো মীর’ই বলে দেন এভাবে-
‘হোশ ও সব্র্ ও খ্যয়র ও দীন ও হরাস ও দিল ও তাব,
উসকে এক আনেমেঁ কেয়া কেয়া নহ্ গয়া মৎ পুছো।’


(শুধু তাঁর আসাতেই আমার যে কী কী গেলো জানতে চেও না, আমার শান্তি ও ধৈর্য, শক্তি ও স্বাস্থ্য, যৌবন ও উদ্যম, আরো কত কী !)
তাই বুঝি হারানোর কষ্টে মীর কেঁদে ওঠেন ঐ যুবকের মনে-
‘দিলকী বিরানীকা কেয়া মজকুর হ্যয়,
ছহ্ নগর সও মরতয়া লূটা গয়া।’


(আমার উজাড় হৃদয়ের কথা কী আর বলব, এই নগরীটি বার বার লুণ্ঠিত হয়েছে।)
এ কী সত্যিই হারানোর কষ্ট ? না কি অন্য কিছু !

জানো রূপা, যে যুবকটি তার প্রিয়তমের কাছে কখনও অভিনয় করেনি বা করতে পারতো না, হয়তো করার ক্ষমতাও রাখে না, সেও কিন্তু একটা দুর্দমনীয় অনুভূতি বহু কষ্টে গোপন করার চেষ্টা করে এসেছে- এরিয়ে যেতে চেয়েছে। সেটা তার ঈর্ষা। কত যন্ত্রণার হলাহলে মন্থিত হয়ে ঈর্ষার জন্ম আমি জানি না। হয়তো মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লেই ঈর্ষাতুরতায় আক্রান্ত হয়, কিছুই আর পাবার নেই বলে। কেন এমন হয় বলো তো ? আমি ঠিক বুঝাতে পারছি না রূপা, তুমিই বুঝে নিও। যুবকটি যখন দেখে তার প্রিয়তমের একটি অলৌকিক হাসি স্বয়ং ঈশ্বরকেও কিনে নেয়ার ক্ষমতা রাখে, সেখানে সমস্ত পৃথিবীটাই তার দিকে আকৃষ্ট হলেও দোষের তো কিছু নয়। তবু সে কেন এমোন ঈর্ষার আগুনে পুড়ে যায়, যদি কেউ একজনও তার প্রিয়তমের দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায় ! খুব কষ্ট হয় যুবকের তখন। খুব কষ্ট ! এ জন্যেই কি মীর বলেন-

‘হমারে আগে জব কিসীনে তেরা নাম লিয়া,
দিল-এ সিতম জ্দহ কো হমনে থাম থাম লিয়া।’

(আমার সামনে যখন কেউ তোমার নাম মুখে আনল, এই নিপীড়িত হৃদয়কে আমি দুই হাতে চেপে ধরলাম।)

ভালোবাসা তাকে এ কী বানালো, রূপা ! পৃথিবীর আর কিছুই যেখানে তার ঈর্ষাকে ছুঁতে পেলো না কোনদিন, ভালোবাসায় এ কী হাল তার ! ভালোবাসাই কি ঈর্ষার জন্ম দেয় ! কষ্ট পেয়ো না রূপা, তুমিই তো আমাকে এই ঈর্ষার দাহনে পুড়াচ্ছো। তাই-

‘য়সীয়ৎ মীরনে মুঝকো য়হী কী
কেহ্ সব কুছ হোনা তূ, আশিক নহ্ হোনা।’


(মৃত্যুকালে মীর আমাকে সাবধান করে দিয়ে গেল ; আর যা কিছু হতে চাও হোয়ো, কিন্তু প্রেমিক কিছুতেই নয়।)...--মীর তকী মীর।



চলবে...


আগের পর্ব (১৪): Click This Link
পরের পর্ব (১৬): Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০০৮ রাত ১০:২৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×