somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাড়িভাড়া আইন, কাজীর কিতাব এবং তোঘলকি বাস্তবতা...!...(১ম পর্ব)

২০ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

----------------------------------------------------------------------------------
[দৃষ্টি আকর্ষণ: দীর্ঘ পোস্ট। অনুসন্ধিৎসু না হলে ধৈর্যচ্যুতির সম্ভাবনা রয়েছে।]
----------------------------------------------------------------------------------
বাড়িভাড়া আইন, কাজীর কিতাব এবং তোঘলকি বাস্তবতা...!
-রণদীপম বসু


@ যে গল্পের উপসংহার নেই, ভূমিকাও নেই

অন্ন বস্ত্র শিক্ষা চিকিৎসা বাসস্থান ; মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এই পাঁচটি অধিকার যে আসলে একটা কিতাবী বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়, আজকাল এটা যেকোনো নির্বোধও বোঝে। তাই বোধ করি কেউ এখন আর এটা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করেন না বা করতে চান না। কিন্তু উচ্চবাচ্য করা এবং না করা এই উভয়টাই যে ব্যক্তির অন্যতম মৌলিক অধিকার এটাও কি সবাই বুঝেন ?

আমার বউ আমার, গরীবের বউ সবার- দেশে এরকম একটা সম্ভ্রান্ত নীতির জয়জয়কারে আজ আর আশ্চর্য হই না মোটেও। কেননা সমাজের একজন মানুষ এবং রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে ন্যুনতম নৈতিকতা এবং দায়বোধ যখন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী হারিয়ে ফেলে, তখন সে কি আর মানুষ থাকে ? হয় যন্ত্র, নয় পশু হয়ে যায়। বাজার পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক করে তোলে দ্রব্যমূল্যের যথেচ্ছচারিতা আর নৈরাজ্য দেখলে এই ছোট্ট গরীব দেশটা কোনো মনুষ্য সমাজের অন্তর্ভূক্ত ভাবতেও কষ্ট হয় খুব। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন বা বাজার অর্থনীতির স্বঘোষিত মা-বাপ বনে গেছেন, এরা কি ভোক্তা সাধারণকে গরু-ছাগলের চাইতে বেশি কিছু ভাবেন ? সন্দেহ। আর আমাদের রাষ্ট্রপিতারাই বা তখত-এ-তাউসে বসে অভাজন নাগরিকদেরকে কী চোখে দেখেন এটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। সীমিত আয়ের নিরূপায় অসহায় নাগরিক হিসেবে আমাদের ভাবনা একটাই- সারাদিনের কর্মক্লান্ত ন্যুব্জ শরীরটাকে টেনে হিছড়ে বাজার নামক একটা অসম যুদ্ধক্ষেত্রে তুলোধুনা করিয়ে শেষ পর্যন্ত ভাড়া-বাসা নামের একটা মহার্ঘ খোয়াড়ে নিয়ে যখন ছুঁড়ে দেই, তখন এই শরীরটা কি আর কোনো মানুষের শরীর থাকে ? শরীরগতভাবে মানুষ আর পশুতে প্রভেদ কতটুকু ? মানুষের বোধ, সম্মান ও অধিকার নামের ধারণাগুলো আমাদের এই শরীর থেকে যারা কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে, তারা কারা ?

কদিন আগে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর একটি জরিপের ফলাফল দেখলাম বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। এতে বলা হচ্ছে ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ১১৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। পক্ষান্তরে এই সময়ে বাড়িভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি, ২৫৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০০৮ সালে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির হার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই জরিপকালের পর পরই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি যে অতীতের সমস্ত রেকর্ড চুরমার করে আকাশে গিয়ে ঠেকেছে, সেটা জরিপে আসার সুযোগ হয়তো পায়নি এখনো। ক্যাবের জরিপে বলা হয়েছে, গতবছর ফ্ল্যাট বাড়িতে ভাড়া বেড়েছে ২১ দশমিক ৬৫ ভাগ, আধাপাকা বাড়িতে ১৮ দশমিক ৫৭ ভাগ, টিনশেড কাঁচা বাড়িতে ২৩ দশমিক ৩৩ ভাগ, মেসরুমে ২৬ দশমিক ৯৮ ভাগ এবং বস্তি বাড়িতে ১৪ দশমিক ১৪ ভাগ। গত বছর এই বৃদ্ধির গড় হার ২১ দশমিক ৪৮ ভাগ। অথচ ২০০৬ সালে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির এই হার ছিল ১৪ দশমিক ১৪ ভাগ। চলতি বছরে এটা কত হবে ? তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর অন্যায় অবিচার ও দুর্নীতির ব্যাপারে যেটুকুই হোক উদ্যোগ নিলেও সিন্ডিকেট ব্যবসা বন্ধ ও ফ্রি স্টাইলে বাড়িভাড়া বৃদ্ধিরোধ বিষয়ে যেহেতু কোনো পদপে গ্রহণ করতে পারেনি, তাই যে দুঃসহ আশঙ্কা এই প্রশ্নকে আরো ব্যতিব্যস্ত করে তোলে তা হাঁড়ে হাঁড়ে অনুভব করেন কোটি মানুষের চাপে পিষ্ট এই মহানগরীর আশিভাগ দুর্ভাগা নাগরিক নামের দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশাল এক জনগোষ্ঠী ; যারা বর্তমান বাজার পরিস্থিতির স্বাপেক্ষে কৌতুকময় হাস্যকর আয়ের সাথে সঙ্গতিহীন অনিবার্য ব্যয়ের ভারে বস্তুতঃই দিশাহারা। এদের কষ্ট এরাই বুঝে। বাকিরা তা বুঝার কথা নয়। কেননা তারা যে কেউ কেউ আমাদের স্বঘোষিত আশ্রয়দাতা মা বাপ, আর অন্যরা গোষ্ঠীবদ্ধ সৌম্যবেশধারী বিবেকহীন একদল বাড়িভাড়া ব্যবসায়ী !

@ বাড়িভাড়া, এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম !

নাগরিক জীবন-ভাবনার সাথে যে অনুষঙ্গটি আজ নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মতো জড়িয়ে আছে অবিচ্ছেদ্যভাবে, তা হচ্ছে বাসাভাড়া বা বাড়িভাড়া। সারা মাসের বেতনের সিংহভাগ তুলে দেয়া নীতিবিবর্জিত বাড়িওয়ালা নামের এক নির্বিকার হাতে, কোন টোকেন রশিদ প্রমাণপত্রহীন। তার পর গৃহিণী নামের আরেক দুর্ভাগা প্রাণীর উপর নিজের সব অক্ষমতার ক্ষোভ ঢেলে ঢেলে সারা মাস ভাতের বদলে আঙুল চোষা। আর তাই মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত বা সীমিত আয়ের মানুষের চোখে বাড়িভাড়া মানেই এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ! যার সুনির্দিষ্ট আকার নেই, অবয়ব পাল্টানোর বাঁধাধরা কোন সময়গ্রাহ্যতা নেই, অস্থির পরিমাণবাচক এই বিশেষ বস্তুটির সাথে যখনতখন আয়তন পাল্টানোর মহিমায় সহমতের ভিন্নতা মানেই ঠাঁই খুঁজো অন্যত্র। আবারো সেই পুরনো চক্র, পুনরাবর্তন। সপ্তবুহ্যের মতো, ঢুকার রাস্তা আছে বেরোবার নেই। কিন্তু কেন ?

আগে জানতাম, ভালোবাসা এবং যুদ্ধে অন্যায় বলে কিছু নেই। হালে আরেকটি যে বিষয় নতুন অহমিকা আর ক্ষমতা দিয়ে এর সাথে যুক্ত হয়েছে, তার নাম ব্যবসা। প্রকৃতই সেবামূলক মনোভাব নিয়ে পৃথিবীতে কোন ব্যবসার জন্ম হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। এমন গোটাকয়েক যদি থেকেও থাকে, তাকে ব্যতিক্রমের ক্যাটেগরিতেই সসম্মানে রেখে দেয়া যায়। কাকে ব্যবসা বলে, ব্যবসার ধারণাগুলো কী কী বা ব্যবসার অর্থনৈতিক দর্শনটা কোথায় বাস করে এসব পূঁথিগত আলোচনা করার জন্য আমাদের দেশে অনেক ব্যবসা ও অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। নীতিহীন অর্থের হাহাকারে পিষ্ট আমাদের মতো মোটাচোখা দৃষ্টিধারীদের কাছে আজকাল ব্যবসা আর বর্বর ডাকাতির মাঝে কোন পার্থক্য কি আদৌ ঠাহর হয় ? এর অন্যতম উৎকৃষ্ট উদাহরণই হচ্ছে ঢাকার বাড়িভাড়া ব্যবসা। যেখানে সর্বশক্তিমান প্রভুর মতোই হও বললেই হয়ে যায় ! ইচ্ছাই যথেষ্ট। বাড়িওয়ালা নামের এই স্বৈরক্ষমতাধর ব্যক্তিটির কাছে ভাড়াটিয়া হলো সহজ উচ্চারণে ‘ভাড়াইট্ট্যা’, মানে বাদাইম্যা। আর সহজ বাংলায় বাদাইম্যা শব্দের পোশাকি অর্থ হচ্ছে যার কোন চালচুলো নেই, ঠিকানাহীন। বাহ্ ! ভাড়াটিয়া শ্রেণীর প্রাণীদের কী সম্মান ! পোষালে থাকো, নইলে দূর হও।

ডাকাতির মতো ব্যাভিচারী ব্যবসায়ও বোধকরি কিছু কিছু নীতিমালা থাকে। কিন্তু বাড়িভাড়া ব্যবসায় আদৌ কি কোন নীতিমালা আছে ? যদি বলি নেই, আমার কথায় বিজ্ঞজনেরা হয়তো মাইন্ড করবেন। সাথে সাথে ঢাকা সিটি কর্পোরেশানের বাড়ী ভাড়ার দর (Dhaka City Corporation::House Rent Rate ) ওয়েব সাইটটিও হয়তো দেখিয়ে দেবেন কেউ কেউ। যেখানে কিছু তথ্য ছক আর কতকগুলি তালিকা দেয়া আছে। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ঢাকা শহরকে ১০টি রাজস্ব অঞ্চলে ভাগ করে আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে ডিসিসি। ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসিসি আবাসিক এলাকাগুলোকে কয়েকটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করেছে। প্রধান সড়কের পাশে হলে এক রকম ভাড়া, গলির তিনশ’ ফুটের মধ্যে হলে এক রকম ভাড়া, আর গলির তিনশ’ ফুটের বাইরে হলে আরেক রকম ভাড়া। ওগুলোকে আবার আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প- এ তিন ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এ ছাড়া হোল্ডিং নম্বর, নির্মাণের সময়কাল, কাঠামো, নির্মাণশৈলী, অবস্থান ও পজেশান হস্তান্তরের শর্তের ওপর ভিত্তি করে ভাড়ার তারতম্য হতে পারে বলেও ডিসিসির বিধান রয়েছে।

বলতেই হয়, বিশাল কাজ করেছে ডিসিসি ! ঠুঁটো জগন্নাথের জন্য বহু কষ্ট করে ওরিজিনাল ইটালিয়ান জুতো বানিয়েছে ! কিন্তু জগন্নাথ যে ঠুঁটো ! তার জন্যে আগে পা বানিয়ে হাঁটানোর ব্যবস্থা করতে হবে সেটা কি এরা জানে না ? অবশ্যই জানে। এবং একটু বেশি করেই জানে যে, জগন্নাথ হাঁটা শুরু করলে রাষ্ট্রের ওইসব চক্ষুলজ্জাহীন অসৎ কর্মচারিদের বসে বসে টু-পাইস কামানোর ধান্ধা কমে যাবে। বরং এলাকাভিত্তিক এই বাস্তবায়নহীন ভাড়াতালিকা বানিয়ে ধান্ধার পসার আরেকটু বাড়ানো হয়েছে মাত্র। সরকারের প্রাপ্য কোটি কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া এবং লক্ষ লক্ষ ভাড়াটিয়াদের নির্দয় পেষণে সহায়তাকারী এরাই যখন বিনয়ের অবতার সেজে বলে, ডিসিসি ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেও এটা মানতে বাধ্য করার মতো কোন আইন ডিসিসির আছে বলে জানা নেই, তখন দুঃখ হয় খুব। হাসিও পায় !

রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, তলোয়ার দিয়ে যুদ্ধ করা যায়, ঘাস কাটা চলে না ; ঘাস কাটতে কাঁচির দরকার। অদরকারী ঘাস কাটার মুরোদহীন এইসব তলোয়ারবিদদের কাছে জানতে ইচ্ছে হয়, এই দেশে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ নামে যে একটি আইন রয়েছে সেটা কি তারা জানেন ? ওটার দেখভাল করার দায়িত্ব কাদের ? কারা এটাকে অতি সযত্নে শুধুই কিতাবী আইন বানিয়ে রেখেছে ? কেবল একটু সদিচ্ছা থাকলেই যে আইনটিকে বাংলাদেশে অতিসহজে ও সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে সিংহভাগ নগরবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ মুক্তির পাশাপাশি সরকারের বিরাট রাজস্ব আয়ের বন্ধ দরজাটা নিমেষেই উন্মুক্ত করে দিতে পারে তা হচ্ছে ‘বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ’ বা Premises (House) Rent Control Ordinance, 1991.
তাহলে আসুন দেখি এ আইন কী বলছে আমাদের ?

@ বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা

আমাদের দেশে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত অধ্যাদেশটি প্রথম জারী করা হয় পাকিস্তান আমলে ১৯৬৩ সালে। এর অধীনে ১৯৬৪ সালে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়, যা বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর একযুগেরও বেশি সময় ধরে ১৯৮৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ ছিল। অতঃপর তৎকালীন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এইচ এম এরশাদ কর্তৃক ১৯৮৬ সালের ২২ নং অধ্যাদেশ দ্বারা বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ জারী করে ১৯৬৩ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশটি বাতিল করা হয়। এর মেয়াদ ছিল তিন বছর এবং তা ১৯৮৯ সালে শেষ হয়ে যায়। তিন বছর পরে আবার বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন জারী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্তু ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হয়। নইলে জাতীয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করে আইনটি পাশ করা যেতো। তাই জাতীয সংসদের অবর্তমানে বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্ষমতাবলে তৎকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ বর্তমানে প্রচলিত বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১ জারী করেন। এ আইনে কোন মেয়াদের কথা উল্লেখ করা হয় নি। সব আইনই যে স্বয়ংসম্পূর্ণ তা কিন্তু নয়। তাই নতুন কোন প্রণীত আইনকে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে প্রয়োগ করার জন্যে নতুন নতুন বিধি প্রণয়নেরও প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্তু বর্তমান আইন অর্থাৎ ১৯৯১ সনের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৪ ধারায় বিধি প্রণয়নের ক্ষমতার বিধান থাকলেও সরকার অদ্যাবধি এই আইনের অধীনে কোন নতুন বিধি প্রণয়ন করেন নাই। ফলে ১৯৬৪ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালাই কার্যকর রয়ে গেছে।

অতএব, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য বা বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য আমাদের দেশে কার্যকর আইন হচ্ছে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৯১ (৩নং আইন) এবং তা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে প্রয়োগের জন্য বিস্তারিত বিধি-বিধান হচ্ছে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ১৯৬৪। কিন্তু এ বিষয়ে আমরা কতটুকু সচেতন ? নিজেদের প্রয়োজনেই আজ এই প্রচলিত বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে আমাদের নিজ নিজ ধারণাগুলো স্পষ্ট হয়ে যাওয়া আবশ্যক।

১৯৯১ সনের ৩নং আইন হিসেবে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১-এ বিভিন্ন উপধারা সংবলিত ৩৬ টি আইনী ধারা রয়েছে। তা নিয়ে সংক্ষেপে কিছুটা আলোকপাত করা যেতে পারে।

[ধারা ১.০] সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তনঃ

এ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে যে, এই আইন বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, ১৯৯১ নামে অভিহিত হবে। (২) উপধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের ধারা ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ এবং ২৭ অবিলম্বে বলবৎ হবে এবং উক্ত ধারাগুলো ব্যতীত অন্যান্য ধারাসমূহ যে সকল এলাকায়.(Premises Rent Control Ordinance) প্রেমিসেস রেণ্ট কণ্ট্রোল অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬ ২৬ শে মার্চ, ১৯৮৯ ই তারিখে বলবৎ ছিল সেই সকল এলাকায় ২৭ শে মার্চ, ১৯৮৯ ইং তারিখে বলবৎ হয়েছে বলে গণ্য হবে।

(২) উপধারায় আরো শর্ত আরোপ করা হয়েছে যে, সরকার সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দ্বারা যে কোন এলাকায় এই আইন বা তার অংশবিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত তারিখ হতে বলবৎ হবে মর্মে নির্দেশ দিতে পারবেন। অনুরূপভাবে এই আইনের কোন অংশ কোন এলাকায় কার্যকরী হবে না মর্মেও নির্দেশ দিতে পারবেন।

[ধারা ২.০] সংজ্ঞাঃ

এ ধারায় বাড়ি, বাড়ির মালিক, ভাড়াটিয়া, মানসম্মত ভাড়া, নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় শব্দের আইনী সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে।
(ক) “নিয়ন্ত্রক” অর্থ ৩(১) এর আওতায় নিযুক্ত কোন নিয়ন্ত্রক এবং ধারা ৩(২) এর আওতায় নিযুক্ত কোন অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপনিয়ন্ত্রকও এর অন্তর্ভূক্ত হবে,
(খ) “বাড়ি মালিক” অর্থ কোন ব্যক্তি যিনি আপাততঃ নিজের বা অপর কোন ব্যক্তির পক্ষে অথবা অপর কোন ব্যক্তির উপকারার্থে কিংবা কোন ব্যক্তির ট্রাষ্ট বা রিসিভার হিসেবে কোন বাড়ির ভাড়া পান বা পাবার অধিকার রাখেন বা যিনি বাড়িটি ভাড়া দেয়া হলে অনুরূপ ভাড়া পেতেন বা ভাড়া পাবার অধিকারী হন এবং Ges .Code of Civil Procedure, 1908 (Vol 1908).এ সংজ্ঞায়িত কোন আইনগত প্রতিনিধি উপভাড়া প্রদানকারী কোন ভাড়াটিয়া এবং বাড়ির মালিক হতে স্বত্ব প্রাপ্ত কোন ব্যক্তিও তার অন্তর্ভূক্ত হবে।
(গ) “বাড়ি” অর্থ কোন দালান বা দালানের অংশবিশেষ বা কোন কাঁচা ঘর বা ঘরের অংশবিশেষ, যা আবাসিক বা অনাবাসিক অথবা উভয় উদ্দেশ্যে পৃথকভাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে কিংবা ভাড়া দেবার ইচ্ছা পোষণ করা হয়েছে এবং তৎসংলগ্ন বাগান, উঠান ও কাছারী ঘরও এর অন্তর্ভূক্ত হবে।
(ঘ) “মানসম্মত ভাড়া” অর্থ এই আইনের অধীনে নির্ধারিত বা নির্ধারিত বলে গণ্য মানসম্মত ভাড়া।
(ঙ) “ভাড়াটিয়া” অর্থ কোন ব্যক্তি যার দ্বারা অথবা যার পক্ষে কোন বাড়ির জন্যে ভাড়া পরিশোধ করা হয় এবং .Code of Civil Procedure, 1908 (Vol 1908).এ সংজ্ঞায়িত কোন আইনগত প্রতিনিধি এবং ভাড়ার সময়সীমা সমাপ্ত হবার পরও বাড়ি দখলকারী কোন ব্যক্তিও এর অন্তর্ভূক্ত হবে।
(চ) “ভাড়া” বলতে বাড়ি ভাড়াকে বোঝাবে ;
(ছ) “বিধি” বলতে এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিকেই বোঝাবে।

[ধারা ৩.০] নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি নিয়োগঃ

এই ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তিকে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রক, (২) উপধারা অনুযায়ী অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপ-নিয়ন্ত্রক নিয়োগ করতে পারবেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ইতিপূর্বে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, সিনিয়র সহকারী জজগণ বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে অদ্যাবধি সরকার অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপ-নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাউকেই নিয়োগ করেন নাই।
উপধারা (৩) ও (৪) দ্বারা তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

[ধারা ৪.০] দরখাস্তের শুনানীঃ

এ ধারায় বাড়িভাড়া সম্পর্কীত কতিপয় দরখাস্তের চূড়ান্ত শুনানীর ক্ষেত্রে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রককে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। উপধারা (১) অনুযায়ী বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় নিয়ন্ত্রকের কাছে দাখিলকৃত প্রত্যেকটি দরখাস্তের শুনানী তিন মাসের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে।
কোন বিশেষ কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী বাকী উপধারা অনুযায়ী তার কারণ লিপিবদ্ধ করে নিয়ন্ত্রক উক্ত সময়ের পর যতশীঘ্র সম্ভব দরখাস্তের শুনানী সমাপ্ত করবেন।

[ধারা ৫.০] বাড়ি মালিক ও ভাড়াটিয়ার প্রতি নোটিশ:

আলোচ্য ধারায় বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক কর্তৃক এই আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করার পূর্বে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াকে নোটিশ প্রদানের বিধান বর্ণিত হয়েছে।

[ধারা ৬.০] বাড়িতে প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতাঃ

এই আইনের আওতায় কোন মামলাজনিত তদন্তের উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রক কর্তৃক যে কোন সময় কোন বাড়িতে প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা বর্ণিত হয়েছে। এই ধারার ভাষ্যমতে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক তদন্তের উদ্দেশ্যে সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্তের মধ্যে যে কোন সময় সংশ্লিষ্ট বাড়িতে প্রবেশ ও পরিদর্শন করতে পারবেন। তদুপরি বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক তার অধীনস্থ কোন কর্মকর্তাকেও অনুরূপভাবে প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।

[ধারা ৭.০] ভাড়া বৃদ্ধির উপর বিধি নিষেধঃ

এই আইনের বিধান অনুযায়ী, কোন বাড়ির ভাড়া মানসম্মত ভাড়ার বেশি বৃদ্ধি করা হলে অনুরূপ অতিরিক্ত ভাড়া কোন চুক্তিতে ভিন্নরূপ কিছু থাকা সত্ত্বেও আদায়যোগ্য হবে না।
অর্থাৎ আলোচ্য ধারায় বাড়িওয়ালার খেয়াল-খুশিমত ভাড়া বৃদ্ধির উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে, কোনক্রমেই মানসম্মত ভাড়ার বেশি বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে না। এমনকি বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে এই মর্মে কোন চুক্তি থাকলেও মানসম্মত ভাড়ার বেশি ভাড়া নির্ধারণ করা যাবে না।

[ধারা ৮.০] বাড়ি মালিক কর্তৃক উন্নয়ন এবং আসবাবপত্র সরবরাহের জন্যে ভাড়া বৃদ্ধিকরণঃ

এই ধারায় অতিরিক্ত বাড়ি ভাড়া নির্ধারণের বিধান বর্ণিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বাড়ি মালিক বাড়িভাড়া দেবার পরেও নিজ খরচে বাড়িটির এমন কিছু উন্নয়ন সাধন করেন অথবা আসবাবপত্র সরবরাহ করে থাকেন যাকে বাড়ি মেরামত বলা যায় না, তবে বাড়ি উন্নয়ন বলা যায়। এরূপ ক্ষেত্রে বাড়ি মালিক ও ভাড়াটিয়া পরস্পর সম্মত হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নির্ধারণ করতে পারবেন এবং উক্ত অতিরিক্ত ভাড়া ভাড়াটিয়া কর্তৃক মানসম্মত ভাড়ার ভিত্তিতে দিতে হবে। অর্থাৎ মানসম্মত ভাড়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নির্ধারণ করতে হবে।

[ধারা ৯.০] কর প্রদানের কারণে ভাড়া বৃদ্ধিঃ

আলোচ্য ধারার ভাষ্যমতে কোন বাড়ির পৌরকর, টোল ইত্যাদি ভাড়াটিয়া কর্তৃক প্রদেয়, তবে ভাড়ার শর্ত মোতাবেক তা পরিশোধ করতে বাড়ির মালিক রাজী হয়ে থাকলে উক্ত ভাড়াটিয়াকে অনুরূপ পরিশোধযোগ্য অতিরিক্ত টাকা তার বাড়ি মালিককে প্রদান করতে হবে।

[ধারা ১০.০] প্রিমিয়াম ইত্যাদির দাবী নিষিদ্ধঃ

আলোচ্য ধারায় ভাড়া দেয়া বা ভাড়া নবায়ন করা অথবা ভাড়ার মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে বাড়ির মালিক কর্তৃক ভাড়ার অতিরিক্ত প্রিমিয়াম, সালামী, জামানত বা অনুরূপ কোন টাকা দাবী বা গ্রহণ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি অনুরূপ কোন প্রিমিয়াম, সালামী, জামানত প্রদানে কোন ভাড়াটিয়াকে বাধ্য করা যাবে না। এ ছাড়াও বাড়ি মালিক বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রকের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া অগ্রীম ভাড়া হিসেবে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দাবী বা গ্রহণ করতে পারবেন না।


[ধারা ১১.০] উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভাড়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমঃ

ধারা (১০)-এ যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি নির্মাণ অথবা পুনঃ নির্মাণের দ্বারা উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কোন বাড়ি কমপক্ষে বিশ বছর মেয়াদের জন্যে ভাড়া দেয়া হয় এবং যদি উক্ত মেয়াদ তা শুরু হবার তারিখ হতে দশ বছরের মধ্যে বাড়ি মালিকের ইচ্ছানুযায়ী বাতিলযোগ্য না হয়, তাহলে বাড়ি মালিক ভাড়ার অতিরিক্ত হিসেবে কোন প্রিমিয়াম, সালামী, জামানত অথবা অনুরূপ কোন অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন।

[ধারা ১২.০] আসবাবপত্র ক্রয় ভাড়ার শর্ত হবে নাঃ

কোন বাড়ি ভাড়ার জন্যে বা তার নবায়ন বা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্যে কোন ব্যক্তি তার আসবাবপত্র ক্রয়ের কোন শর্ত আরোপ করতে পারবেন না।

অর্থাৎ কোন বাড়ির মালিক তার বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র ক্রয় করতে পারবেন না। তদুপরি ভাড়া নবায়ন কিংবা মেয়াদ বৃদ্ধির শর্ত যদি বাড়ি ভাড়া চুক্তিতে থেকেও থাকে তা সত্ত্বেও ভাড়াটিয়া বাড়িভাড়া নবায়ন না করে, তাহলে বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র আটক বা ক্রয় করতে পারবেন না।

[ধারা ১৩.০] ভাড়া আদায়ের রশিদ প্রদানঃ

আলোচ্য ধারায় বাড়িওয়ালার প্রতি ভাড়া পরিশোধের রশিদ প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ বাড়ি মালিক যখনই ভাড়া গ্রহণ করবেন তখনই বাড়ি ভাড়া পরিশোধের একটি রশিদ ভাড়াটিয়াকে প্রদান করবেন। বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ১৯৮৬ এ উল্লেখিত ফরমে বা ছকে রশিদ ছাপিয়ে নিয়ে ঐ রশিদ দ্বারাই বাড়ি মালিককে ভাড়া পরিশোধের রশিদ প্রদান করতে হবে। রশিদ ইস্যু করার সময় বাড়ি মালিক রশিদের মুড়িতেও লিখে রাখবেন এবং তা অবশ্যই বাড়ি মালিককে সংরক্ষণ করতে হবে।
স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, ভাড়া রশিদ আদায় করার দায়িত্ব অনেকাংশেই ভাড়াটিয়ার উপর নির্ভর করে থাকে। তবে ভাড়াটিয়া ভাড়া রশিদ ছাড়া ভাড়া পরিশোধ করে থাকলে অনুরূপ ভাড়া পরিশোধ প্রমাণ করা ভাড়াটিয়ার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা আদালতে দলিলী সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি।

[ধারা ১৪.০] অনাদায়যোগ্য ভাড়া ইত্যাদি ফেরতঃ

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ধারায় বাড়ি মালিক কর্তৃক যে সকল অনাদায়যোগ্য ভাড়া নেয়া হয়েছে তা ফেরত প্রদানের কথা বলা হয়েছে। যখন কোন বাড়ি মালিক ভাড়াটিয়ার কাছ হতে এরূপ কোন টাকা গ্রহণ করেন বা জমা নেন যা এই আইনের বিধানের পরিপন্থী বা প্রিমিয়াম, সালামী অথবা জামানত বাবদ অগ্রীম কোন টাকা প্রদানে ভাড়াটিয়াকে বাধ্য করা হয়ে থাকে যা এই আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাহলে ভাড়াটিয়ার দরখাস্ত বলে অনুরূপ টাকা প্রদান বা জমাদানের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে উক্ত টাকা ফেরত দেবার জন্যে অথবা অন্যভাবে সমন্বয় করে নেয়ার জন্যে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক বাড়ি মালিককে নির্দেশ দিতে পারবেন। যেক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক অনুরূপ আদেশ প্রদান করেন সেক্ষেত্রে যে আদালতে বকেয়া বাড়ি ভাড়া আদায়ের ডিক্রির জন্যে মামলা করা যেতো তা সেই আদালতেরই ডিক্রি বলে গণ্য করতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায় যে, বাড়ি মালিক নানা ছল-চাতুরীতে অযৌক্তিকভাবে ভাড়াটিয়ার কাছে অর্থ দাবী করে বসে। দাবীকৃত অর্থ পরিশোধ না করলে উচ্ছেদের হুমকী পর্যন্ত দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রায় বাধ্য হয়েই উচ্ছেদের ভয়ে ভাড়াটিয়া অযৌক্তিকভাবে দাবীকৃত অর্থ পরিশোধ করে থাকে। তবে এরূপ ক্ষেত্রে কোন ভাড়াটিয়া যদি বাড়ি মালিকের বেআইনী দাবীকৃত ও পরিশোধিত টাকার প্রতিকার চান তাহলে উক্ত অর্থ জমা প্রদানপূর্বক রশিদ গ্রহণ করতঃ ৬ মাসের মধ্যে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন।

[ধারা ১৫.০] নিয়ন্ত্রকের ক্ষমতা ও দায়িত্বঃ

বাড়ি মালিক বা ভাড়াটিয়ার দরখাস্তের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রক কোন বাড়ির মানসম্মত ভাড়া নির্ধারন করতে পারবেন এবং এরূপভাবে তা নির্ধারণ করবেন যেন তার বাৎসরিক পরিমাণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্যকৃত উক্ত বাড়ির বাজার মূল্যের ১৫% শতাংশের বেশি না হয়।

এই ১৫(১) ধারা অনুযায়ী বাড়ির বাজার মূল্য নির্ধারণের উপায় কী ? এক্ষেত্রে আমাদেরকে দেখতে হবে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ১৯৬৪।
বিধিমালায় বলা হয়েছে: (০১) পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে ভূমির মূল্য, ভূমি উন্নয়ন ব্যয় ও বাড়ি নির্মাণ ব্যয় থেকে অবচয় (যখন মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে তখনকার সময় পর্যন্ত) বাদ দিয়ে যা থাকবে সেটাই বাড়ির বাজার মূল্য। প্রথম তিন বছরে কোনো অবচয় নেই এবং পরবর্তী প্রত্যেক বছরে অবচয় শতকরা ১ ভাগ।
(২)আধা পাকা বাড়ির ক্ষেত্রেও এই নিয়ম। তবে আধা পাকা বাড়ির কোন অবচয় প্রথম দুবছর ধরা হবে না এবং তৃতীয় বছর থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত অবচয় শতকরা ২ ভাগ এবং ১৯ তম বছর থেকে এ অবচয়ের হার শতকরা ৩ ভাগ।

[ধারা ১৬.০] মানসম্মত ভাড়া কার্যকর হবার তারিখ এবং তার মেয়াদঃ

নিয়ন্ত্রক কর্তৃক মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণ করার পর উক্ত মানসম্মত ভাড়া কোন্ তারিখ হতে বলবৎ হবে এবং কতদিন পর্যন্ত চালু থাকবে তারই বিধানাবলী ১৬ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। এই ধারার মূল বক্তব্য হলো, এই আইনের ১৫ ধারা মতে ভাড়া হ্রাস বা বৃদ্ধির জন্যে দরখাস্ত করা হলে অনুরূপ দরখাস্ত দাখিলের পরবর্তী মাস হতে মানসম্মত ভাড়া প্রদান করতে হবে। কাজেই নিয়ন্ত্রক মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণের সিদ্ধান্ত যে দিনই প্রদান করুন না কেন, এই আইনের বিধান মোতাবেক তা দরখাস্ত দাখিলের পরবর্তী মাস হতেই মানসম্মত ভাড়া কার্যকরী হবে। এই ধারায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানসম্মত ভাড়া কার্যকরী হবার তারিখ হতে দুই বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। দুই বছর পর মানসম্মত ভাড়ার পরিবর্তন করা যাবে।

[ধারা ১৭.০] কতিপয় ক্ষেত্রে ক্রোক পরোয়ানা ইত্যাদিঃ

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের এই ধারায় বকেয়া বাড়ি ভাড়া আদায়ের জন্যে ক্রোক এবং প্রয়োজন বোধে ভাড়াটিয়াকে জেলে আটকে রাখার বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে। ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের বিধান মোতাবেকই বকেয়া বাড়ি ভাড়া আদায়ের ডিক্রি জারী করা হয়। তবে বাড়ি মালিক তার দরখাস্তের সাথে উক্ত ভাড়া অনাদায়যোগ্য নয় বলে এফিডেবিট দাখিল না করলে কোন প্রকার ক্রোক বা গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেয়া যাবে না।

[ধারা ১৮.০] অনুমোদনযোগ্য ভাড়া প্রদান করা হলে সাধারণতঃ উচ্ছেদের আদেশ দেয়া হবে নাঃ

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের এই ধারাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ধারায় ভাড়াটিয়ার অধিকার ও কর্তব্যের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে যে, ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন বা ১৮৭২ সনের চুক্তি আইনের বিধানে যাই থাকুক না কেন, ভাড়াটিয়া যদি নিয়মিতভাবে ভাড়া পরিশোধ করতে থাকেন এবং বাড়ি ভাড়ার শর্তসমূহ মেনে চলেন তাহলে যতদিন ভাড়াটিয়া এভাবে করতে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত উক্ত ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৮ ধারার ১ উপধারামতে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারার (গ) (ড) এবং (ত) দফার বিধানের পরিপন্থি কোন কাজ করলে বা কোন চুক্তির অবর্তমানে ভাড়াটিয়া বাড়ি মালিকের অনুমতি ব্যতীত বাড়ি বা বাড়ির কোন অংশ উপভাড়া প্রদান করলে বা ভাড়াটিয়া যদি এরূপ কোন আচরণ করেন যা পার্শ্ববর্তী বাড়ি দখলকারীদের জন্যে বিরক্তিকর বা উৎপাতজনক হয় অথবা ভাড়াটিয়া যদি বাড়িটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন বা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে থাকেন অথবা বাড়িটি বাড়ি মালিকের বা তার লোকজনের প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজন হয়ে পরে যা আদালতের কাছে সঙ্গত বলে প্রতীয়মান হয় তাহলে উক্ত ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারার (গ) (ড) এবং (ত) দফায় যথাক্রমে বর্ণিত হয়েছে যে, ভাড়াটিয়া নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে থাকলে যতদিন ভোগদখলের চুক্তি রয়েছে ততদিন ভাড়াটিয়া নির্বিঘ্নে ভোগদখল করতে পারবেন।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারার (গ) দফাঃ
ইজারাদাতা ইজারা গ্রহীতার সাথে এই মর্মে চুক্তি করেছে বলে ধরে নেয়া হবে যে, ইজারা গ্রহীতা যদি ইজারা অনুসারে বরাদ্দকৃত খাজনা দেয় এবং তার উপর বাধ্যকরী চুক্তির শর্ত সমূহ পালন করে তাহলে বিনা বাধায় সে ইজারায় নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত উক্ত সম্পত্তি ভোগ দখল করতে পারবে। এরূপ চুক্তির সুবিধা ইজারা গ্রহীতার স্বার্থের সাথে সংযুক্ত থাকবে এবং তা তার উক্ত স্বার্থের সাথে বলবৎ থাকবে এবং অন্য যে কোন ব্যক্তি উক্ত স্বার্থ বা তার অংশবিশেষের সাথে জড়িত হবে সে তা প্রয়োগ করতে পারবে।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারার (ড) দফাঃ
ইজারা গ্রহীতা উক্ত সম্পত্তির দখল নেবার সময় তা যে অবস্থায় ছিল সেরূপ ভাল অবস্থায় রাখবে এবং ইজারার মেয়াদ শেষে তা সেরূপ অবস্থায় ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু ব্যবহার জনিত যুক্তিসঙ্গত কোন ক্ষয়-ক্ষতির জন্যে সে দায়ী হবে না। ইজারার মেয়াদ বলবৎ থাকাকালে সে ইজারাদাতা বা তার প্রতিনিধিদেরকে উপযুক্ত সময়ের মধ্যে ইজারা সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে এবং তার অবস্থা পরিদর্শন করতে দিতে বাধ্য থাকবে এবং সম্পত্তির অবস্থার কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে ইজারাদাতা সেই সম্পর্কে নোটিশ দিবে বা জারী করবে এবং উক্ত ত্রুটি ইজারাগ্রহীতা তার চাকর বা প্রতিনিধিগণ কর্তৃক সংঘটিত হলে নোটিশ প্রদান বা জারী করার তারিখ হতে তিন মাসের মধ্যে ইজারা গ্রহীতা উক্ত ত্রুটি সংশোধন করতে বাধ্য থাকবেন।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারার (ত) দফাঃ
কৃষিকার্যের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে ইজারাগ্রহীতা ইজারাদাতার বিনা অনুমতিতে উক্ত সম্পত্তির উপর কোন স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করবে না।

[ধারা ১৯.০] কতিপয় পরিস্থিতিতে ভাড়াটিয়া কর্তৃক ভাড়া জমাঃ

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ ধারাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া কর্তৃক ভাড়া জমা দেবার বিধান বর্ণিত আছে। ১৯ ধারার ১ উপধারার ভাষ্যমতে যেক্ষেত্রে কোন ভাড়াটিয়া বাড়ি মালিকের বরাবরে ভাড়ার টাকা মানিঅর্ডার যোগে প্রেরণ করার পরে তা বাড়ি মালিক গ্রহণ করার অস্বীকারের কারণে ফেরত আসে সেক্ষেত্রে যে তারিখে ভাড়াটিয়ার হাতে মানিঅর্ডার ফেরত আসে সেই তারিখ হতে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রকের কাছে বাড়ি ভাড়া মানিঅর্ডারযোগে প্রেরণের খরচসহ জমা দিতে হবে।
আবার বাড়ি ভাড়া কে বা কারা পাবেন এ বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে বা নিশ্চিত না হওয়া গেলে ভাড়াটিয়া নিয়ন্ত্রকের কাছে বাড়ি ভাড়া জমা দিতে থাকবেন।
১৯ ধারার ৩ উপধারায় বলা হয়েছে যে, যেখানে বাড়ি মালিক তার ঠিকানা পরিবর্তন করেন এবং তার ঠিকানা বা অবস্থান সম্পর্কে ভাড়াটিয়া জ্ঞাত না থাকেন এবং ভাড়া গ্রহণ করার মতো বাড়ি মালিকের কোন প্রতিনিধিও না থাকে তাহলে উক্ত ভাড়া যে তারিখে পরিশোধযোগ্য হয় সেই তারিখ হতে ১৫ দিনের মধ্যে ভাড়াটিয়ার উক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিতে পারবেন। এমন কি যতক্ষণ পর্যন্ত বাড়ি মালিকের ঠিকানা ও অবস্থান জানা না থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত পরবর্তী সময়ের বাড়ি ভাড়াও নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিয়ে যেতে থাকবেন।
তবে এক্ষেত্রে শর্তারোপ করে নিয়ন্ত্রকের একটি কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে এবং তা হলো, যে তারিখে জমা হবে তা হতে সাত দিনের মধ্যে বাড়ি মালিকের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নিয়ন্ত্রককে রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে উক্ত ভাড়া যে জমা দেয়া হচ্ছে তা সম্পর্কে একটি নোটিশ প্রেরণ করতে হবে।

[ধারা ২০.০] মানি অর্ডারযোগে ভাড়া গ্রহণ বা ভাড়া উঠানোর বিষয়ে হেফাজতঃ

বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০ ধারায় বলা হয়েছে যে, ভাড়াটিয়া কর্তৃক নিয়ন্ত্রকের কাছে বাড়ি মালিকের নামে যে ভাড়ার টাকা জমা দেয়া হয়েছে উক্ত ভাড়ার টাকা বাড়ি মালিক যদি উঠিয়ে নেন তাহলে তা দ্বারা এ গণ্য করা যাবে না যে, ভাড়াটিয়া তার দরখাস্তে যে কারণসমূহ উল্লেখ করেছেন তা বাড়ি মালিক স্বীকার করে নিয়েছেন অথবা বাড়ি মালিক ভাড়াটিয়াকে প্রদত্ত উচ্ছেদ নোটিশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বাড়ি মালিক নিয়ন্ত্রকের আদালতে বাড়িভাড়া নিয়ে মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও বাড়ি মালিক নিয়ন্ত্রকের আদালতে জমাকৃত ভাড়ার টাকা উঠিয়ে নিতে পারবেন। কারণ এই বাড়ি ভাড়া বাড়ি মালিকেরই প্রাপ্য। তবে বাড়ি ভাড়ার জমাকৃত টাকা কে বা কারা পাবেন সে সম্পর্কে কোন বিরোধ বা সন্দেহ থাকলে উক্ত বিরোধ নিস্পত্তি বা সন্দেহ দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত জমাকৃত ভাড়ার টাকা উঠিয়ে নেয়া যাবে না।

[ধারা ২১.০] ভাড়াটিয়া কর্তৃক মেরামত ইত্যাদিঃ

চলবে.....
[২য় পর্ব]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১:৩৬
৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×