somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

। লোকটা নাকি পাগল ছিলো...!

৩১ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টোনা কহিলো- টুনি পিঠা করো। টুনি কহিলো- চাল আনো, তেল আনো, নুন আনো, গুড় আনো ইত্যাদি ইত্যাদি। টোনা কহিলো- ঠিক আছে, আমি যাইতেছি, তুমি রান্নার বুঝ-ব্যবস্থা করো। এইভাবে টুনি ঘরের কাজে আটকা পড়িলো। আর টোনা ফুড়ুৎ কইরা উড়াল দিয়া গেলোগা। এবং অন্য আরেক টুনির সঙ্গে পুটুর-পাটুর করিতে লাগিলো।
এই গল্প থেকে থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই ? শিক্ষা পাই- ছাগল দুই ধরনের। দেশি ছাগল আর রাম-ছাগল। দেশি ছাগল হইলো ব্ল্যাক বেঙ্গল। কান দুইটা ছোট ছোট। আর রামছাগল ? কান দুইটা এই লম্বা লম্বা ! বদমাইশি কইরা কইরা জীবনে বহুৎ কানমলা খাইছে তো, শরীরটা মাশাল্লা হৃষ্টপুষ্ট হইছে ! কিন্তু কানগুলা আমার চ্যাঙ্গের মতো ঝুইল্যা গেছে !

কী বুঝলি ?

আমার প্রথম কৈশোরের অভিজ্ঞতা তখনো এতো হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে নি। লোকটির সঙ্গতিহীন কথা আর আচানক ধরনের শব্দগুলোর অর্থ খুঁজতে খুঁজতে আমার অনভ্যস্ত কান দুটো গরম আর সম্ভবত লাল হয়ে ওঠছে। অতএব আমি আর কী বুঝবো !
আমাকে নিরুত্তর দেখে ফের প্রশ্ন- কিছুই বুঝস নাই ?
হ, বুঝছি !
কী বুঝছস ?
আপনি একটা পাগল !

উত্তর শুনে কটমট করে আমার দিকে চেয়ে রইলেন। আমি ইতস্ততবোধ করছি। হঠাৎ হৈ হৈ করে ওঠলেন- তুই তো বড়ো সত্যিবাদী পোলা রে !
বলেই হেঁচকা টানে নিজের লুঙ্গিটা খুলে ফেললেন। আচম্বিতে এই অভুতপূর্ব ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমি আতঙ্কিত নাক মুখ কুঁকড়ে অজান্তেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কয়েক মুহূর্ত কেটে গেলো। লাঞ্চিত হবার সমূহ আশঙ্কা সত্য হয় নাই দেখে আশ্বস্ত হলাম ঠিকই। কিন্তু এই বিব্রতকর অবস্থা কিভাবে সামাল দেবো ভাবতে ভাবতে কুচকানো বন্ধ চোখ দুটো আস্তে একটু একটু করে খুলতে লাগলাম। ধুয়াশা নজরে দেখছি সামনেটা ফাঁকা, কেউ নেই ! ঝট করে পুরো চোখ খুললাম।

লুঙ্গিটাকে কপালে বেঁধে রাস্তার রাজা শাহেনশাহের মতো নির্বিকার তিনি উন্মুক্ত নিম্নাঙ্গে ফুটপাত ধরে হেঁটে চলেছেন ! আমি একইসাথে বিস্মিত, বিব্রত এবং মনে মনে কুঞ্চিতও ! আশ্চর্যের ব্যাপার ! আশপাশ দিয়ে আনমনা পথচারী নারী-পুরুষগুলো আচমকা এমন এক দৃশ্যের মুখোমুখি হয়েও কেন যেন একটু না চমকিয়েই নির্দ্বিধায় পার হয়ে যাচ্ছে সবাই ! কেউ কেউ আবার লোকটির বিশেষ কোন জায়গায় হ্যাংলার মতো দৃষ্টি ফেলে অনায়াসে কৌতুক করতেও ছাড়ছে না !

একটু একটু করে অভিজ্ঞতায় পুষ্ট হতে হতে আমাদের বোকা কৈশোরটা তারুণ্য কিংবা যৌবন পেরিয়ে যেতে যেতে অবাক হবার ক্ষমতাটা হয়তো হারিয়েই ফেলে ! তবু মানুষের বুকে কোন কোন কৈশোর বোধ করি চিরকাল থেকে যায়। অন্য অনেক ঘটনার মতোই কৈশোরের ওই ঘটনাটা আমাকে কতোটা প্রভাবিত করেছে জানি না। তবে মন-ভুলে সেই কথাটা কখনো মনে এলেই একটা প্রশ্ন এখনো আমাকে তাড়া করে-
লোকটা কি সত্যিই পাগল ছিলো ?
একটা শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে লোকটা নিজেই নাকি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরে যায় একদিন।
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×