ফরাসী সম্রাট নবম লুইস মৃত্যুর সময়
ওসীয়তনামায় লিখে যান,
‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে
মুসলমানদের পরাজিত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত
আছি। ক্রুসেড যুদ্ধের ধারাবাহিকতা যুগ যুগ ঘরে
চলছে। কিন্তু আমরা বিজয়ী হতে পারছি না। কারণ,
মুসলমানদের আক্রমণ করার পর তাদের মধ্যে
এমন চেতনার দাবাগ্নি জ্বলে ওঠে যার
প্রতিরোধ অসম্ভব হয়ে যায়। এই চেতনার আগুন
প্রতিরোধ করার জন্য এখন অন্য উপায়-
উপকরণ গ্রহণ করা উচিত। আর তার কৌশল
একটাই তা হলো, তাদের মন-মস্তিষ্ক ও চিন্তার
জগতকে প্রভাবিত করতে হবে।’
এই ওসীয়তনামাটি আজও প্যারিসে সংরক্ষিত
আছে। তাতে চারটি পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছে :
১. মুসলিম নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করা।
তাদেরকে যতদূর সম্ভব ছোট ছোট টুকরায় ভাগ
করে দেয়া, যাতে তারা দূর্বল থেকে দূর্বলতর হয়ে
যায়।
২. মুসলিম দেশসমূহের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাকে
অস্থিতিশীল করে রাখা। আর এর জন্যে ঘুষ,
দূর্নীতি, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অশ্লীলতার
প্রসার ও বিস্তৃতি ঘটানো।
৩. ইসলামী মূল্যবোধ ও ঈমানী চেতনায়
পরিচালিত দেশ প্রেমিক সংগঠনগুলোকে
সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হতে না দেয়া। যারা দীন
ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় যে কোনো ত্যাগ
স্বীকারে প্রস্তুত থাকে।
৪. এমন ইউরোপিয়ান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা,
যা দক্ষিণে গাজা এবং উত্তরে ইন্ট্রিয়ক
পর্যন্ত পৌঁছবে। আর পূর্বদিকে তার সীমান্ত
থাকবে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত।
(ড. ইসমাঈল আলী মুহাম্মদকৃত ‘আল গাযবুল
ফিকরি-মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’, ২৯-৩০)
আজকের মুসলিম দেশগুলোর দিকে
তাকালে এই
বাস্তবতা স্পষ্ট
তবে আশার বাণী হচ্ছে, বিশ্বব্যপী ইহুদীবাদ ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খ্রিস্টানদের ইসলাম গ্রহণের দৃষ্টান্ত ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার চার্চের পাদ্রীরা খ্রিস্টবাদ বিস্তারে কাড়ি কাড়ি ডলার খরচ করেও আশানুরুপ সাফল্য পাচ্ছে না। অথচ কোন প্রকার অর্থ ব্যায় বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা ছাড়াই খ্রিস্টানদের লালন ভুমিতে মুসলমানের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ইউরোপ আমেরিকার মত জায়গায় মুসলমানরা গড়ে তুলছে নতুন নতুন মসজিদ মাদ্রাসা। এর বিপরীতে অসংখ্য চার্চ-গীর্জা বিগত এক দশকে বদ্ধ বিরান ঘরে পরিণত হয়েছে। মুসলমানরা রাজনৈতিকাবে সচেতন হতে শুরু করেছে। মুসলমানরা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ইসলামবিদ্বেষী চক্রকে রুখে দাঁড়ানোর দুঃসাহস দেখাতে পারছে।
এসব দেখেই ওরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। মুসলমানরা যেভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় আত্মসচেতন হয়ে উঠছে, তাতে সেদিন বেশী দূরে নয়; যেদিন বিশ্বের কর্তৃত্ব মুসলমানদের কব্জায় চলে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭