আসুন, সিনেমার নায়িকাদের জন্য ত্রাণ হিসাবে এক টুকরা কাপড় খয়রাত করি। উনারা কাপড়ের অভাবে ইজ্জত ঢাকতে পারছেন না!! দেশে যেন কাপড়ের দুর্ভিক্ষ চলছে। সিনেমা তেমন দেখি না ঠিক, কিন্তু মিডিয়ার সুবাদে সিনেমা জগত সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখি। দেয়ালে সাঁটানো সিনেমার বিজ্ঞাপনের পোস্টারগুলো এতটাই অশ্লিল যে, লজ্জায় মরে যাওয়ার দশা। নায়িকাদের নিম্নাঙ্গে আর উর্ধাঙ্গে দু’চিলতে কাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই। মনে হয়, দেশে যেন কাপড়ের দুর্ভিক্ষ চলছে। কাপড়ের অভাবে সুন্দরীরা লজ্জা নিবারণ করতে পারছে না। সেন্সরবোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, জনগণের টাকায় বেতন দিয়ে আপনরাদের ওখানে কেন বসানো হয়েছে? অশ্লিল সিনেমাগুলো কি সেন্সরবোর্ডের ছাড়পত্রহীন? তথ্যমন্ত্রনালয় কিভাবে এ সিনেমাগুলোর অনুমোদন দেয়? ? ওনারা কি বাঙ্গালী মুসলিম জাতিকে অসভ্য, চরিত্রহীন ও ধর্ষক জাতিতে পরিণত করার ঠিকাদারী হাতে নিয়েছেন? নাকি লাম্পট্য সিনেমা ওনারাও উপভোগ করছেন?
নায়িকা ও পতিতার মধ্যে কি পার্থক্য? একজনে দেহের বিনিময়ে খর্দ্দের টানে, আরেকজন টানে দর্শক। বরং পতিতারা আড়ালে শালীনভাবে পতিতাবৃত্তি করছে, আর কথিত নায়িকারা প্রকাশ্যে পতিতাবৃত্তি করে যুবসমাজকে লাম্পট্য বানানোর রিহার্সেল করছে। আসলে পতিতার ডিজিটাল ভার্সন হচ্ছে, “নায়িকা”।
অনেকেই মনে করেন, "নগ্নতা মানেই অশ্লিলতা নয়"। হ্যাঁ, আমিও তাই বলি “নগ্নতা মানেই অশ্লিলতা নয়”। কারণ রাস্তা-ঘাটে অনেক পাগল নগ্ন-অর্ধনগ্ন হয়ে ঘোরে। নিঃসন্দেহে এটা অশ্লিলতা নয়। কিন্তু পরিকল্পিত নগ্নতা, উদ্দেশ্যমূলক উলঙ্গপনা অবশ্যই অশ্লিলতা। "যা কিছু মানব মনকে দুষিত ও কলুষিত করে তাই অশ্লিলতা"। অশ্লিল সংস্কৃতিটাই হল শয়তানের। মানুষরুপী শয়তানগুলো শয়তানের এজেন্ট। নারীর মর্যাদা ভু-লুন্ঠিত করার জন্য একশ্রেণীর সিনেমা নির্মাতা নারীকে পণ্য ও ভোগ্য বস্তুতে পরিণত করে তাদের উলঙ্গ, অর্ধ-উলঙ্গ করেছে। বিজ্ঞাপন নির্মাতারা যুবসমাজের যৌন কামনাকে লেলিয়ে দেওয়ার জন্য অশ্লিল বিজ্ঞাপন নির্মাণ করছে। সাবান-শ্যাম্পু থেকে শুরু করে পুরুষের লুঙ্গি, এমনকি অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনেও নারীদেহের অশ্লীল প্রদর্শনী হচ্ছে। বাংলাদেশের দন্ডবিধিতে অশ্লিলতার সংজ্ঞা নেই। আর এই না থাকাটাই অসাধু ব্যক্তিদের জন্য প্লাস পয়েন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জরায়ু স্বাধীনতার দাবী উত্থাপনকারী একশ্রেণীর নারী নেত্রীরা এটাকে অশ্লিলতা হিসাবে মানতে চান না। উনারা হয়ত বলবেন, এগুলো ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। উত্তরে আমি বলব, স্বাধীনতার উদ্দেশ্য অন্যের ক্ষতি করা নয়, যৌন নৈতিকতার অনুশাসন ভেঙ্গে দেওয়া নয়। স্বাধীনতা অসীম নয়, তারও সীমাবদ্ধতা আছে। দেশব্যাপী যখন ধর্ষণের নৈরাজ্য চলে, এসিড নিক্ষেপে আমার বোনের চেহারা ঝলসে যায়, বখাটেদের অত্যাচারে মেয়েরা আত্মহত্যা করে, তখন এসব নারী নেত্রীরা মুখে কুলুপ আটেন। বুদ্ধিজীবি নামের ঐ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরা সাময়িকভাবে বাকপ্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। তারপরেও যারা এটাকে অশ্লীল বলে মানতে চাননা, তাদের কাছে প্রশ্ন- উলঙ্গ হয়ে সিনেমা করা যদি অশ্লিলতা না হয়, তাহলে আপনাদের কাছে অশ্লিলতার সংজ্ঞা কি?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩০