somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিলিপাইন ঘুরে এসে আদমের সফরনামা (শেষ পর্ব)

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. রাস্তা পার হচ্ছিলাম। আমি গাড়িটাকে দেখে দাড়িয়ে গেলাম আর গাড়িটা আমাকে দাড়িয়ে গেলো। গাড়িটা কম করে হলেও আমার থেকে ১৫-২০ মিটার দুরত্বে ছিলো। আমার অবাক চাহনি দেখে, ড্রাইভার সাহেব হাতের ইশারায় আমাকেই আগে রাস্তা পার হতে বললেন, আমার জাত ভাইদের মতো মুখ ভেংচি দিয়ে নয়-সুন্দর করে হেসে বিনয়ের সাথে। বাহ্ দারুনতো-আগে পথচারী তারপর গাড়ি। হুমায়ুন আহমেদের একটা লেখায় পড়েছিলাম বাংগালরা নাকি ধন্যবাদ দিতে কুন্ঠাবোধ করে। কথা সত্য, জীবনে যতবার মানুষকে পাবলিক বাসে সিট ছেড়ে দিয়েছি, বিদ্যুতবিলের লাইনে মহিলা/বৃদ্ধ/অন্যান্যদের আগে যেতে দিয়েছি, একটা ধন্যবাদ তো দুরের কথা, তারা এমনভাব করেছে যেন এটা তাদের অধিকার। আমি ড্রাইভার সাহেবকে দুর থেকে ধন্যবাদ দিলাম, তিনিও তার প্রতিউত্তর করলেন।
২. মি: বিনের একটা পর্বে দেখেছিলাম মি: বিন একটা হোটেলে গিয়ে বারবার লাইট বন্ধ করে আর জ্বালায়, তারপর বিছানায় লাফালাফি করে। আমিও আমাদের গেস্ট রুমে ঢুকেই মনে হলো মি:বিনের মতো করতে হবে। ব্যস কি আর করা- লাইট অন-অফ-অন-অফ-অন-অফ-অন-অফ(কতোবার করছি গুনি নাই)। বিছানায় লাফ (এটাও কতবার করছি গুনি নাই)। তবে খুব মজা লাগছে।
৩. ইন্ডিয়ান দু-জনের সাথে কেন জানি কেউই মিশতে পারলোনা। বাংলাদেশের প্রতি তাদের কটাক্ষ আমাকে আহতো করেছিলো। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে নাকি ইন্ডিয়া একটা বিরাট ফ্যাক্টর, এবং বাংলাদেশের সব বড়ো সাহেবেরা বর্তমানে ইন্ডিয়ার দৃষ্টিআর্কষণে বিশেষ ব্যস্ত সেটা নিয়ে তারা আমাদের লক্ষ্য করে হাসাহাসি করলো। আগামীকাল লাঞ্চ টাইমে তারা আমাদের সম্ভাব্য কি কি কথা বলতে পারে মনে মনে তার একটা তালিকা তৈরি করছিলাম এবং একটা করে সমুচিত জবাব বানাচ্ছিলাম। আহ, আমাদের বড়ো সাহেবরা যদি জানতেন তাদের এই দেউলিয়াপনা কিভাবে আমাদের ভোগায়! ইন্ডিয়ানদের সাথে আমার এই কাল্পনিক ঝগড়া আমাকে অনেক রাত পর্যন্ত ঘুমাতে দিলোনা। লস-ব্যানোসের বাতাসে তখন মধ্যরাতের হাহাকার আর লেগুনা লেক থেকে উঠে আসা আদ্রতার মহাসম্মেলন চলছে.............।
৪. লাঞ্চে যেতে যেতে গাড়িতে ইন্ডিয়ানটার সাথে আমার কথোপকথোন
“তুমি হিন্দি জানো”?
“না, তুমি বাংলা জানো”?
“না, বাংলা জানিনা, তুমি হিন্দি ছবি দেখোনা (কৃত্রিমতার সাথে অবাক হয়ে)”?
“না দেখিনা, হিন্দি ছবিতে আসলে দেখার কিছু নাই, ওসব দেখে আমাদের দেশের কিছু বেকার-অপদার্থ লোকজন, তাই তারা হিন্দি কিছুটা পারে ”।
তারপর দুই ইন্ডিয়ানের মধ্যে লেগে গেলো রাজনীতি নিয়ে তর্ক। একজন মোদীর সমর্থক আরেকজন বিরোধী। উপস্থিত সবাইকে তাদের যুক্তির ধার জানান দিতে তারা কথা বলছিলো ইংরেজিতে। আমরা দারুণ ভাবে তাদের কামড়াকামড়ি উপভোগ করলাম।

৫. ফেরার সময় ম্যানিলা এয়ারপোর্টে আমাদের জুতা-বেল্ট-ঘড়ি খুলে আমাদের প্রমাণ করতে হলো আমরা সাধু প্রকৃতির লোক। ভাবছিলাম শার্ট-প্যান্টও আবার খুলতে বলে কিনা। এয়ারপো্র্টে এসব হয় শুনেছি। বল্লাম, তোরা বাংলাদেশে আয় একবার তারপর দেখবি মজা কাকে বলে (কোনো কারণ ছাড়াই খামোখা বলছি, আমার মতো চুনোপুটির কিছুই করার নাই)।
৬. আমরা একদিন সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে হেটে হেটে, ছবি তুলতে-তুলতে, সব কিছু দেখতে-দেখতে গেস্টহাউজে ফিরবো। স্বল্পবসনা মেয়েদের দিকে আমার তাকাতেই যেন ইচ্ছা করলো না। জীবনে প্রথমবারের মতো আমি কোনো আকর্ষন বোধ করলাম না। মেয়েরা যেন একটু আড়াল হয়ে থাকলেই তাদের ভালো লাগে (পুরাই পারসোনাল মতামত, প্লিজ কেউ ত্যানা পেচাইস না)।
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×