somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশ্চয়তা - অনিশ্চয়তা....................

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানিং আম্মাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করি, আম্মা এটা কিভাবে রান্না করে, ঐটা কিভাবে রান্না করবো। এইসব।
আম্মা সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলেন, কিভাবে রান্না করবো, কতটুকু লবণ, তেল দিবো সেটাও বলেন দেন, কতক্ষন তাপ দিবো সেটাও।
আমার এই কষ্ট দেখে আম্মা বুঝতেছে না যে, আমার একটা সঙ্গিনী লাগবে মানে বউ লাগবে।
আম্মা এই কষ্ট দেখে আমাকে বলে, - “বাবা তুমি ছুটি নিয়ে বাসায় আসো, তোমাকে রান্না করে খাওয়ায়।”
তিনি আমাকে ছুটি নিয়ে বাসায় যেতে বলে। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারে কোন কথা বলে না।
আফসোস করে এই কথাগুলি আমার রুমমেটকে বলি। রুমমেট আমাকে উল্টো তার আফসোসের কথা বলে।

আমার রুমমেটের পরিবার, তার জন্য পাত্রী খুঁজতেছিলো। রুমমেটের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। বেসরকারী একখান ভালো চাকুরী করে, বেতনও ভালো।
ভালো পরিবারে, সুন্দরী এক মেয়ের সাথে বিয়ের কথা বার্তা চলতেছিলো। মেয়ের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। মেয়ে পড়ালেখাতে খুব ভালো। রুমমেটের পরিবার মেয়েটিকে খুব পচ্ছন্দ করলো।
কিন্তু মেয়েটির পরিবার ছেলের পরিবারকে পচ্ছন্দ করলো না। কারণ হিসেবে জানানো হল: উনারা উনাদের মেয়েকে সরকারী চাকুরীজীবীর সাথে বিয়ে দিবেন। কোন প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করে এমন কাউকে না।

রুমমেটের পরিবার ফিরে আসলো, আমার রুমমেট যথারীতি সরকারী জবের ট্রাই না করে, বসের উন্নতি কিভাবে হবে সেটার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে যাচ্ছে। সামনে বছরের মার্চে রুমমেট বিয়ে করতে যাচ্ছে।
ও পরে, শুনলাম মেয়েটির বিয়ে সরকারী কলেজের কেরাণীর সাথে বিয়ে হয়েছে, মানে সরকার‌ী চাকুরজীবীর সাথে বিয়ে হয়েছে।
আমাদের দেশে অনেক অভিভাবক আছেন যারা প্রাইভেট জব করা ছেলের সাথে তাদের মেয়েকে বিয়ে দিতে চায় না। কারণ এই দেশে প্রাইভেট জব মানে অন্ধাকারাচ্ছন্ন একটা ভবিষ্যৎ।
আমাদের দেশে প্রাইভেট জবগুলোর কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি নাই।
আপনি সকাল ৯টার মধ্যে অফিসে ঢুকতে বাধ্য, ৬টার পরও অফিস করতে বাধ্য। রাত ১০টা বাজলেও আপনাকে সেটার পারশ্রমিক দেওয়া হয় না।
নিজের জন্য পরিবারের জন্য যে জব করা, সেই জবের জন্য পরিবারকে আর সময় দেওয়া হয় না। কালকে আপনার ছেলে বা মেয়ের পরীক্ষা অথচ বসকে সময় দেওয়ার জন্য আপনার ছেলে মেয়েকে সময় দিতে পারছেন না। এমনকি আমাদের অনেকের জীবনে এমনও আছে, যে তিনি অনেকদিন হয়ে গেল সুর্যোদয় -সূর্যাস্ত দেখেন নি।

২-৩ জনের কাজ একজনকে দিয়ে করানো হয়। ইনক্রিমেন্টের সময় মিটিং এ বস বলে- এই বছর কোন ব্যবসা হয় নাই। এই বছর টার্গেট ফিলাপ হয় নাই।
ইনক্রিমেন্টের সময় আসলে – বস বুঝাইতে চায় আমরা অফিসে এই বছর বসে বসে বেতন নিয়েছি, কোন কাজ করি নাই। তাই এই বছর ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার যোগ্য আমরা নয়। এমনকি চাকুরী থেকে ছাটাই এর একটা গুঞ্জন শোনা যায়।
ইনক্রিমেন্ট বাড়ুক আর নাই বাড়ুক – বাসা ভাড়া বৃদ্ধির নোটিশ ইতোমধ্যে চলে এসেছে। গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে, রিক্সাওয়ালা ১০টাকার বেশি ভাড়া বাড়াবে, মানে এই মাসের ৬০টাকার ভাড়া, সামনে মাসে অন্ততপক্ষে ৭০টাকা হবে।
যতই যাই বলি, বস নিজেকে উদার মানসিকতার প্রমাণ দেখাতে ইনক্রিমেন্ট দেয়। কারো ইনক্রিমেন্ট ৫০টাকা হয় (মানে ভালো লাগলে থাকো, না হলে চলে যেতে পারো, তুমি চলে গেলে তোমাদের মত হাজার হাজার পাওয়া যাবে ), কারো হয় ৫০০টাকা, আবার কারো ২০০০-২৫০০টাকা।
গড়ে আমাদের দেশে ইনক্রিমেন্ট দেখি ৩-সাড়ে ৩হাজার টাকা। প্রাইভেট জবে সামনে মাসে জব থাকবে কি থাকবে না, এটার কোন নিশ্চয়তা থাকে না।
সবকিছুই যেন এলোমেলোভাবে সম্পর্কিত। তারপরও মানুষের জীবন থেমে নেই, সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।




সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×