somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যর্থ দা লুজার : একটি সত্য কাহিনী

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলেটিকে ডাকা হত স্পার্কি নামে। এটি তার আসল নাম নয়। অবশ্য তার আসল নাম হওয়া উচিত ছিল ব্যর্থ বা দা লুজার। তার আসল নাম আমি একটু পরে জানাব। তবে ছেলেটি অনন্ত জলীল নয়।
স্কুলে স্পার্কির সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল লেখাপড়া না পারা। অষ্টম শ্রেণীতে সে কৃতিত্বের সঙ্গে সব বিষয়ে ফেল করতে সক্ষম হয়। হাইস্কুলে উঠে পদার্থ বিজ্ঞানে সাফল্যের সঙ্গে শুন্য গ্রেড অর্জন করে। তার এই অসাধারণ সাফল্য ল্যাটিন ভাষা, বিজগনিত এবং ইংরেজি ভাষাতেও সম্প্রসারিত হয়। এত ভাল গুন যার সে কি আর খেলাধুলাতে ভাল করবে? স্কুলে খেলাধুলাতে সে কিছু করতে পারেনি। স্কুলে গলফ দলে অন্তর্ভুক্ত হলেও যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল তাতেও সে হেরে যায়। এরপরে একটি সান্ত্বনাসূচক ম্যাচ হলে সেটিতেও সে গৌরবের সঙ্গে পরাজয় বরন করেন। সারা স্কুল জীবনেই স্পার্কির এ ধরণের ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা সাফল্যের সঙ্গে বজায় ছিল। এমনকি সে কারও সঙ্গে খুব একটা মিশতে পারত না। অন্য ছাত্ররা তাকে নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাত না। তাই একবার স্কুলের বাইরে যখন তার এক সহপাঠী তাকে হ্যালো বলে সম্বোধন করে তখন সে অনেকটা অবাক হয়েছিল।
স্বভাবতই মেয়েদের সঙ্গেও স্পার্কি মিশতে পারত না। সে কোন মেয়ের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া (ডেটিং) তো দুরের কথা, কোন মেয়েকে সাহস করে ঘুরতে যাবার প্রস্তাব দিয়েছিল বলে মনে হয় না। প্রস্তাব দিলেও যে ব্যর্থ হত এতে কোন সন্দেহ নেই।
স্কুল জীবনে বোধহয় নির্ধারিত হয়েছিল স্পার্কি ভবিষ্যতে একজন ব্যর্থ মানুষই হবে। তার সহপাঠীরা, তার পরিবারের লোকজন এমনকি সে নিজেও এই কথা বুঝে গিয়েছিল। তাই অল্প বয়সেই স্পার্কি নিজের ভবিষ্যৎ কে মেনে নিয়েছিল এবং এ নিয়ে তার মনে কোন কষ্ট ছিল না।


তবে একটা জিনিসকে স্পার্কি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিল জীবনে। আর তা হল ছবি আকা বা ড্রয়িং। সে তার শিল্পকর্ম নিয়ে দারুন গর্ব অনুভব করত। অন্যরা তার শিল্পকর্মকে পাত্তা দিত না বা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করত না। হাইস্কুল জীবনের শেষ দিকে তার স্কুলের ইয়ার বুকের সম্পাদকের কাছে কিছু কার্টুন জমা দেয় স্পার্কি। বলাই বাহুল্য ব্যর্থ স্পার্কির কার্টুন ছাপতে রাজি হবে কোন সম্পাদক? তাই এই যাত্রাও সে ব্যর্থ হল। কিন্তু এই ব্যর্থতায় দমে না গিয়ে স্পার্কি একজন পেশাদার শিল্পি হবার সিদ্ধান্ত নেয়।
হাই স্কুল শেষ করার পর স্পার্কি ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির কাছে কাজের জন্য আবেদন করে। এই কোম্পানি তাকে স্যাম্পল হিসাবে কিছু ছবি পাঠাতে বলে। স্পার্কি যথারীতি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে কিছু ছবি পাঠায়। বলতে পারলে খুশী হতাম যে ডিজনি আনন্দের সঙ্গে তাকে তাদের কোম্পানিতে নিয়ে নেয়। কিন্তু তা হয়নি এবং স্পার্কির ব্যর্থতার মুকুটে আর একটি পালক গৌরবের সঙ্গে যুক্ত হয়।
কি আর করবে বেচারা স্পার্কি? সে সিদ্ধান্ত নিল কার্টুনের মাধ্যমে নিজের আত্মজীবনী রচনা করবে। তাই করল এবং কার্টুনের মাধ্যমে একটি ছেলের ছোটবেলা ফুটিয়ে তুলল যে কোন কিছুতে সফল হয় না।
কিন্তু এবার তার কপাল খারাপ- সে কিভাবে যেন বেশ সফল হয়ে গেল। তার কার্টুন চরিত্র গুলো সারা বিশ্বে বিখ্যাত হল। স্পার্কির সত্যিকারের নাম হচ্ছে Charles M. Schulz । তার সম্পর্কে জানতে চাইলে উইকিপিডিয়াতে এই লিঙ্কে যানঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Charles_M._Schulz
তার এই কমিক স্ট্রিপের নাম Peanuts (http://en.wikipedia.org/wiki/Peanuts ) । আর কার্টুন চরিত্রটির নাম হচ্ছে চার্লি ব্রাউন। চার্লি ব্রাউন এর ঘুরি কখনো উড়ত না বা সে ঠিক মত ফুটবলে লাথি মারতে পারত না।
এই কমিকসটি পঞ্চাশ বছর একটানা চলেছিল (১৯৫০-২০০০)। আর একসময় কমিকসটি বিশ্বের ৭৫টি দেশের ২১ ভাষায় ২৬০০টি সংবাদ পত্রে ৩৫ কোটি লোক নিয়মিত পড়তো। আর এই ব্যর্থ ছেলেটি শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে এক বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে।
(বলতে ভুলে গেছি, এটি আমার অনুবাদ করা। কোথা থেকে মূল ইংরেজি লেখাটি পেয়েছি তা এখন ভুলে গেছি)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩১
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×