somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধেয়ে আসছে বিশ্বমহামন্দা: পরিত্রাণের উপায়- ধর্মবিশ্বাস

০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঋণ সঙ্কটে চরমভাবে বিপর্যস্ত ইউরোপের প্রতিটি দেশের অর্থনীতি। ইউরোপের দেশগুলো এত বেশি ঋণ করেছে যে সেটা আর শোধ করার ক্ষমতা তাদের নেই। শুধু তাই নয় ঋণ করে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করতে শেখানো হয়েছে জনগণকে। তাদের অভ্যস্ত করা হয়েছে ধার করে ঘি খেতে। এখন সেই ঋণের পরিমাণ এত বেশি জমা হয়েছে যে সেটা আর শোধ করার ক্ষমতা নেই তাদের। যার ফলে অনেক দেশই এখন দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড। দেউলিয়ার পথে গ্রিস। ইতালি ও পতুর্গালের অর্থনীতিরও টালমাটাল অবস্থা। আসলে ইউরোপের প্রতিটি দেশই ঋণ সঙ্কটে আক্রান্ত। কিন্তু অন্যান্য দেশগুলো যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো তারা কোনো রকমে এই সঙ্কট মোকাবেলা করছে বা এক রকম সামাল দিতে পেরেছে। কিন্তু আর্থিকভাবে কিছুটা দুর্বল যেমন গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, পর্তুগাল তারা রয়েছে মহাবিপদে। আর্থিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে না পারার অভিযোগে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বার্লোসকুনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এর সঙ্গে তার সরকারেরও পতন ঘটেছিল। আর্থিক সঙ্কটের কারণে এটাই সম্ভাবত প্রথম কোনো সরকার পতনের ঘটনা। এখন সরকার পতনের আন্দোলন চলছে গ্রিসে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে গ্রিস। গত ১ জুলাই শেষ হওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় গ্রিস এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণ-খেলাপি। উন্নত বিশ্বের কোনও দেশের এমন ঋণখেলাপী হবার ঘটনা এই প্রথম। এসব দিয়ে এই সঙ্কটের তীব্রতা বোঝা যায়। এ ছাড়াও সমগ্র ইউরোপে দেউলিয়া হয়ে গেছে শত শত ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। কারণ তারা যে ঋণ বিতরণ করেছে সেটা আর ফিরে আসেনি।


অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই সঙ্কট শুরু হলেও এখন এটা রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঋণ সঙ্কট ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরোর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অস্তিত্ব। চেষ্টা তদবির কম হচ্ছে না কিন্তু কোনোভাবেই সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। পুঁজিবাদী অর্থনীতি ইতিহাসে এত বড় সঙ্কটে আর পড়েনি।


সার্বিক পরিস্থিতি বিচারে আশঙ্কা করা হচ্ছে ১৯৩০ সালের মতো বিশ্বব্যাপী আর একটা মহামন্দা আসন্ন। এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর ড. রঘুরাম রাজন। যাকে কিনা ভারতের আর্থিক ক্ষেত্রের “জেমস বন্ড” ডাকা হয়। ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার ভবিষ্যৎ বাণীটিও কিন্তু তিনিই করেছিলেন ২০০৫ সালে লেখা তার একটা গবেষণাপত্রে। তখন তিনি কর্মরত ছিলেন আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে। তার সেদিনের ভবিষ্যৎ বাণীকে তখন কেউই পাত্তা দেয়নি কিন্তু পরবর্তীতে ড. রাজনের ধারনাই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায় এবং আমেরিকা তথা বিশ্ব অর্থনীতি এক এক করে ধসে যেতে থাকে।


সব মিলিয়ে এটা প্রায় নিশ্চিত যে একটা মহামন্দা পৃথিবীবাসীর জন্য অপেক্ষা করে আছে। আর এটাও নিশ্চিত যে আমরা যেহেতু পৃথিবী নামক এই গ্রহেরই একটি ক্ষুদ্র অংশ, বিশাল জনসংখ্যার কিন্তু ক্ষুদ্র অর্থনীতির একটি উন্নয়নশীল দেশ, কাজেই এই মন্দার রেখা আমাদেরকেও আঁচড় দেবে। এখন প্রশ্ন হলো আমরা কীভাবে এই আসন্ন মহামন্দাসহ যেকোনো অর্থনীতিক সঙ্কটকে মোকাবেলা করতে পারি?


এর জন্য আমাদেরকে আগে বুঝতে হবে সাধারণত অর্থনীতিক সঙ্কট কেন দেখা দেয়, এটা খুঁজে বের করতে পারলে এ থেকে পরিত্রাণের উপায়ও খুঁজে পাওয়া যাবে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপে যে সঙ্কট চলছে তার কেন্দ্রে যে বিষয়টি আছে তাহলো লোভ। অতি মুনাফা, অর্থ, বিত্ত, আর ভোগবিলাসের লোভ। অতি মুনাফার জন্য ব্যাংক, বীমা আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মনীতি না মেনে সর্বোচ্চ ঋণ বিতরণ করেছে। আর যারা ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য হারিয়েছে তারা অতি মাত্রায় ভোগ-বিলাসিতা ও বেহিসাবী অপচয়ের কারণে তা হারিয়েছে। এছাড়া অর্থনীতিক সঙ্কটের অন্যতম প্রধান কারণ হলো সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনীতি। এই ভোগবাদী, বস্তুবাদী, আত্মাহীন দাজ্জালীয় ব্যবস্থার কারণে আজ অর্থনীতিক বৈষম্য এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, একদিকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী চরম দারিদ্র্যক্লিষ্ট হয়ে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে আর অন্যদিকে গুটিকয় মানুষ সম্পদের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে চরম ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে পিশাচের হাসি হাসছে। ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলনকারীরা এটাকে বলছে ‘We are 99% & you are 1%’ এই ১% এর হাতে বিশ্বের প্রায় সমস্ত সম্পদ কুক্ষিগত। পৃথিবীর সম্পদ সীমিত, কাজেই এই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন না হলে মানুষ অর্থনীতিক অবিচারের শিকার হবে। নির্দিষ্ট কিছু দেশে, নির্দিষ্ট কিছু মানুষের হাতে এই সীমিত সম্পদ যত বেশি কুক্ষিগত হতে থাকবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী তত বেশি বঞ্চিত হবে ও চরম দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত হতে থাকবে। আবার এই সম্পদের অপচয়ও মানুষকে চরম অভাবে পতিত করে। যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংসাত্মক কাজে, অস্ত্র তৈরিতে সম্পদের যে অপচয় হয়েছিল তা পরবর্তীতে অর্থনীতিক মন্দা ডেকে আনে। বর্তমানে পরাশক্তিধর দেশগুলি আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে, অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা করে যে ট্রিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ অপচয় করে যাচ্ছে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা ডেকে আনার অন্যতম কারণ।


এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হলো সকল প্রকার অর্থনীতিক মন্দা থেকে রক্ষা করতে পারে আমাদের ধর্মবিশ্বাস। ধর্মবিশ্বাস আমাদের বিরাট একটি শক্তি। আমাদের সমাজ বস্তুবাদী সমাজ নয়, আমাদের সমাজ বিশ্বাসভিত্তিক সমাজ। ধর্ম থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা অর্থনীতিক এই মন্দাসহ সকল প্রকার সমস্যার সমাধান করতে পারি।


যেমন প্রতিটি ধর্মে পাশবিক ভোগ-বিলাস ও সম্পদের অপচয় করতে নিষেধ করা হয়েছে। ধর্মের এই দিকটি মানুষের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে সম্পদের অপচয় কমানো যাবে। ইসলাম ধর্মে এ বিষয়ে অনেক উপদেশ, নির্দেশনা রয়েছে। ইসলাম অপচয় ও ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকতে শিক্ষা দিয়েছে। ছোটখাটো অপচয়ের বিরুদ্ধেও রসুলাল্লাহ সতর্ক থাকতে বলেছেন। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ।” (বনি ইসরাঈল-২৭)। ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলাল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সোনা অথবা রুপার পাত্রে বা সোনা-রুপা মিশ্রিত পাত্রে পান করে, সে নিজের পেটে জাহান্নামের আগুন ঢালে (দারু কুতনি থেকে মিশকাত)। ভোগবাদী মানসিকতার প্রদর্শনী থেকে মানবসমাজকে পবিত্র রাখাই এ হাদিসের উদ্দেশ্য।


ভোগ-বিলাসিতার ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেন, “আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মতো আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।” (মুহাম্মদ- ১২)। তিনি আরও বলেন, “আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার ভোগবিলাস অতীব নগণ্য” (তওবা- ৩৮)। সকল ধর্মেই অপচয় ও ভোগ-বিলাসিতার বিরুদ্ধে নির্দেশনা রয়েছে। ঈসা (আ.) বলেন, “তোমাদের শরীরটা বানাও ঘোড়ার মতো আর এতেই তোমাদের নিরাপত্তা। কারণ ঘোড়ার আহার খুব পরিমিত কিন্তু শ্রম অপরিমিত।” তিনি আরও বলেন, “সঞ্চয় যত বাড়ে আগ্রহ ততই বেড়ে যায়। অতএব একটি পোশাকই বিধেয় গণ্য করো, টাকার ব্যাগটি দূরে নিক্ষেপ করো, থলিয়াটা বাদ দাও, পায়ে চপ্পল নেই বলে ভাবতে বসো না- হায় আমাদের কী হবে? বরং লেগে যাও আল্লাহর ইচ্ছা পূরণের কাজে।” (বার্নাবাসের বাইবেল, অধ্যায়- ২৫)।


সনাতন ধর্মে একটি শাস্ত্রই আছে আয়ুর্বেদ। সেখানে পরিমিত খাবার গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ ও খাদ্য অপচয়ের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। যোগ ব্যায়াম ও ব্রহ্মচার্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ‘অপরিগ্রহ’। দেহরক্ষার প্রয়োজন ব্যতীত অতিরিক্ত কোন বস্তুর আরাধনায় (ভোগবিলাসিতায়) নিরত না থাকার নাম ‘অপরিগ্রহ’। শ্রীরামকৃষ্ণ পাঁকাল মাছের উদাহরন দিয়ে বলেছেন “সংসারে বাস করবে পাঁকাল মাছের মতো, গায়ে কাদা লাগবে না। সংসারের ভোগ বিলাস যেন আচ্ছন্ন না করে।”


এই বিষয়গুলি যখন মানুষ মেনে চলবে তখন খদ্য ঘাটতি অনেকাংশেই কমে যাবে। মানুষ নিজে অল্প আহার করে অন্যকে অন্ন দানের চেষ্টা করবে।


সম্পদ যত বেশি সঞ্চালিত হয় সামষ্টিক অর্থনীতি তত চাঙ্গা হয় আর সম্পদ যত বেশি পুঞ্জীভূত হবে সামষ্টিক অর্থনীতি ততই ভেঙ্গে পড়বে, বৃহত্তর জনসাধারণ বঞ্চিত হবে। বর্তমানে সম্পদকে সঞ্চালিত করার পন্থা হিসাবে সুদভিত্তিক ঋণব্যবস্থাকে গ্রহণ করা হলেও এর ফলে মূলত সম্পদ পুঞ্জীভূতই হয়। সম্পদ দ্রুত থেকে দ্রুততর সঞ্চালনের সর্বোত্তম পন্থা হলো দান। প্রতিটা ধর্মে এই দানের ব্যাপারে অত্যধিক জোর দেওয়া হয়েছে। সম্পদ পুঞ্জীভূত করকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ পাক মো’মেনের সংজ্ঞার মধ্যেই বলেছেন, “মো’মেন শুধুমাত্র তারা যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের উপর ঈমান আনে, পরে কোনো সন্দেহ পোষণ করে না, সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করে অর্থাৎ মানুষের কল্যাণে সম্পদ ও জীবন ব্যয় করে সেই সত্যনিষ্ঠ।” (সুরা হুজরাত- ১৫)। দান করার জন্য আল্লাহ সরাসরি হুকুম দিয়েছেন (সুরা নাহল- ৯০), যার মাধ্যমে দান করা মো’মেনের জন্য ফরদ হয়ে যায়। রসুলাল্লাহ দানের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন যে, “আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি দান কর, আমি তোমাকে দান করব [আবু হুরায়রাহ (রা:) থেকে বোখারী ও মুসলিম]।” হাদীসে আরও উল্লেখিত যে, হাশরের মাঠে দান মো’মেনের জন্য ছায়াস্বরূপ হবে। অন্যান্য ধর্মেও দানের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মহাভারতে বলা হয়েছে, “দানই শুদ্ধির শ্রেষ্ঠ উপায়। দান করলে আত্মা বিশুদ্ধ হয়ে যায়।” দানের বিষয়ে ঈসা (আ.) বলেছেন, “অর্থলিপ্সাকে দান-খয়রাতের প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত করা বাঞ্ছনীয়, যা অন্যায়ভাবে জমা করা হয়েছে তা ন্যায়্যভাবে বিলিয়ে দেওয়া দরকার। আর তার লক্ষ রাখা উচিত যে তার দক্ষিণ হস্ত যা দান করছে তার বাম হস্ত যেন তা টের না পায়। কারণ কপট লোকেরা চায়, দুনিয়া দেখুক ও প্রশংসা করুক যে তারা দান-খয়রাত করছে।” (বার্নাবাসের বাইবেল, অধ্যায়-১২৫)।


মানুষকে যদি ধর্ম দ্বারা উদ্বুদ্ধ করা যায় তখন অর্থ-বিত্তশালী লোকজন নিজেদের অর্থের একটা বিরাট অংশ দরিদ্র মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেবে। ফলে সামষ্টিক অর্থনীতি এমনভাবে উপচে পড়বে যে মানুষের আর অভাব থাকবে না।


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলাল্লাহ (সা.) কে এ কথা বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তৃপ্তিসহকারে পেট পুরে ভক্ষণ করে, আর তারই পার্শ্বে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে, সে ঈমানদার নয়। (বাইহাকী)। এছাড়াও প্রতিটা মানুষের মধ্যে যদি ধর্মের এই চেতনাটি জাগ্রত করা যায় যে নিজের উদরপূর্তি করলেই হবে না, অন্যের তরে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ই মানুষের জীবনের স্বার্থকতা তবে কোনো অর্থনীতিক মন্দাই আমাদের কিছু করতে পারবে না। একটি উদাহরণ দেওয়া যায়- ধরি একশ’ জন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ১ কেজি চাউলের ভাত খায়, এখন সঙ্কট জেনে তারা প্রত্যেকে অন্যের জন্য ২০০ গ্রাম চাউল উঠিয়ে রাখলো, এতে কিন্তু শারীরিকভাবে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবার কথা নয়। এর ফলে প্রতি একশ’ জন মানুষের নিকট থেকে ২০ কেজি চাউল উদ্বৃত্ত হয়। এই ২০ কেজি আবার বিশ জনকে ভাগ করে দিলে তারাও ২০০ গ্রাম করে রেখে দিলে পুনরায় ৪ কেজি চাউল উদ্বৃত্ত থাকবে। এভাবে যে কোনো মন্দাই ধর্মবিশ্বাস দ্বারা মোকাবেলা করা সম্ভব। তাই আসুন ধর্মবিশ্বাসকে আর ভুল খাতে ব্যবহৃত হতে না দিয়ে দেশ জাতির উন্নয়নে ব্যবহার করি, যে কোনো সমস্যাকে রুখে দিই, ইহকাল ও পরকাল উভয় জীবনের কল্যাণ সাধন করি। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে গত কয়েক শতাব্দী যাবৎ বস্তুবাদী সভ্যতার প্রভাবে মানুষগুলি নিতান্তই আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর পশুতে পরিণত হয়েছে। এখন মানুষকে যদি তার ধর্মবিশ্বাস দ্বারা উদ্বুদ্ধ করা যায় তবে এই জাতীয় সঙ্কট থেকে আমরা অন্তত রেহাই পাব, ফলে অন্যরাও আমাদের দেখা-দেখি এ থেকে পত্রিাণের পথ পাবে।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×