somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"এই মন খারাপের কোলাহলে, রুদ্ধতা শহুরে শিকলে"

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অদ্ভুত এ জীবন। আছে বিচিত্রতা! আছে অট্টহাসি, আছে জলছাপ স্বপ্ন, রঙজ্বলা আকাঙ্ক্ষা, ডুবন্ত আশা, ঘুমঘুম চোখ, যৌবনের সূর্য, নিষ্ক্রিয় আবেগ, পথিকের ক্লান্তি, দৃঢ় লক্ষ্য, উড়ুউড়ু কল্পনা, ধার করে আনা সুখ। আরও আছে অন্ধকারের আর্তনাদ, দুঃখ পোকার গান, অশান্ত শহর, মন খারাপের কোলাহল, বেদনার আলিঙ্গন, অভাবের বাতাস, মানসিক জলোচ্ছ্বাস, বিশালতায় অসহায়ত্ব, আশাহত শিকল, পরাধীন আত্মা, মন খারাপের কোলাহল।
তবুও কবিতা। হোক কবি ক্ষুধার্ত সহায়সম্বলহীন। অন্যরকম মায়ার জগত এই কবিতা। মাত্র কয়েকটি শব্দ লিখে ফেলে সমস্ত কষ্ট, সকল গ্লানি অথবা আনন্দ সুখের কথা। ভালো লাগা, দর্শন, ব্যাক্তিত্ব-মনোভাব উঠে আসে গহীন থেকে। কবির মৃত্যু হয়, মৃত্যু হয়না তার আত্মার কথার, মৃত্যু হয়না কবিতার। কবিতা চিরজীবী হোক।


১.

বদলে গেছে চুড়ির রং আজ মনের রংয়ের ভিড়ে
ঘাসফড়িংয়ে লাল ধরেছে সবুজ রঙটি ভুলে,
কাঁদামাটির বদলে এখন ধূলো বালি জমে
পুরনো এক চিঠি ছিল নতুন কেনা খামে।


২.

তুমি হায় দাঁড়িয়ে খোলা চুলে
আমি তাই দেখে মরি বারে বারে
পাখি গায় গান গায় চেনা সূরে
এসো মনপবনে কোন ভোরে।

কুয়াশার ভেজা পথ পিছে ফেলে
ধোঁয়াশার আশা সব বুকে নিয়ে
দাঁড়িয়ে রবো আমি সেই ভোরে
দেখিবো তোমারে আঁখি মেলে।


৩.

রোদসকালে উঠোন জুড়ে কুয়াশা
তবুও কিছুটা রোদ এসে পরে গায়ে,
ভেজা জানালায় আঙ্গুল ছুঁইয়ে
আশাবাদী কিশোরীর আঁকিবুকি।

অজান্তেই কারো নাম লিখে অবাধ্য আঙ্গুল
কিশোরী আনমনে হাসে
কখনো উদাস তাকিয়ে রয়।
কিশোরী পুতুল নিয়ে একাই কথা বলে
কিশোরীর ঘুম নেই
ঘোরলাগা কল্পনায় কাউকে ডাকে।


৪.

মেঘের সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া বাতাস
মেঘকে দূরে ঠেলে দেয়। তারপরে
সূর্য এসে আসীন হয় তার বিকিরন নিয়ে,
বাতাসের করার থাকে না কিছুই-
সূর্যে প্রতিরোধ গড়তে
মেঘকে খুব করে স্মরণ করে বাতাস,
অভিমানী মেঘেরা ফিরে আসে না।

(কবিতাটি ব্লগার দুর্যোধনের জন্মদিনে লেখা)


৫.

তুমি কেন এত ভালোবাসো?
আড়াল থেকে অপলক তাকিয়ে থাকো
আকাশে মেঘ করলে ভয় করো খুব
বিজলীর আলোয় সংশয়
বজ্রপাতে ভীত আমার-ই জন্যে
আমার সুখে মুখ স্মিত হাস্যে তোমার চোখে জল
আঁধার ঘরে সন্তপর্নে আলো জ্বেলে যাও
অগ্রহায়ানে অচেনা ফুলের মালা
শীতের পাতাঝরা পথে কাঁটা তুলে নাও
দূর থেকে শুধু ভালোবাসো, মহীয়সী তুমি
এত অবজ্ঞার পরেও কেন ভালোবাসো?

(এক নিভৃতচারিণীকে নিয়ে লেখা। সে দূর থেকে কবিতাটি দেখেছে জানি। কিন্তু সে কখনোই বোহেমিয়ান সাইক্লোন ছুঁতে পারবে না জেনেই আশায় থাকে। অদ্ভুত সব আবেগ)


৬.

সে এসেছিল,
জানালা খুলতেই মিষ্টি বাতাস জানিয়ে গেলো
সে আঁচল ভরে ভালোবাসা কুঁড়াতে আসে এই পথে
লাল, হলুদ আর বেগুনী ভালোবাসা
ফিরে যাওয়ার সময়ে বারে বারে পিছন পানে দেখে।

সে চলে যায়,
আমি নেমে আসি সেই পথে
ভালোবাসা সব নিয়ে গেছে সে
শুন্য পথে আমি শুনি ভালোবাসার রোদন
তুমি আমি আমরা
কেউ ভালো নেই, ভালোবাসা নিয়ে গেছে সব।


৭.

তোর কাছ থেকে মুঠোভরা ভালোবাসা নিয়ে
দৌড়ে এসে দরজা বন্ধ করে
মুঠি খুলে দেখি ভালোবাসা নাই
আঙ্গুলের ফাঁক গলে মিলিয়ে গেছে সব;

ফাল্গুনের রোদে শুকাতে দেয়া ভালোবাসারাও
উবে যায় কর্পূরের মত,
বেঁয়ে পরে দু’হাতে
ভালোবাসা ধরা যায় না, ভালোবাসা ধরা যায় না।


৮.

মনে আছে তোমার?
দুজনের সেই ধূসর ছেলেবেলা
ছুঁয়ে দেয়া কিংবা লুকচুরি খেলা
বুঝতে কি সেই প্রথম ভালোলাগা?
ছোট্ট মনে কত স্বপ্নরেখা
চড়ুইভাতি খেলার ফাঁকে ফাঁকে
ছোট ছেলে তোমাকেই শুধু দেখে।

বয়স বাড়ার অঙ্ক মেলাতে যেয়ে
দুজন এখন অনেক বেশী দূরে
এখনো কি লজ্জাতে মুখ লুকাও?
হয়ত এখন অন্য জামায়
ঘ্রান নিয়ে নাক ডুবাও।

(এই কবিতাটি ফেসবুকে স্টাটাসে দিয়েছিলাম। কমেন্টসে তাসনুভা আখতার রিয়া খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছিল। রিয়া বলতে গেলে ফেসবুকের ফেবুকবি। আগের কালে রাজদরবারে সভাকবির দেখা মিলতো। কিন্তু ফেসবুকে ফেবুকবি পাওয়া যাবে কেউ কি জানতো? সে যেকোন পরিস্থিতি নিয়ে কবিতা লিখে ফেলতে পারে। স্যারের চকচকে টাক মাথা থেকে শুরু করে প্রেম ভালোবাসার মত জটিল বিষয় নিয়ে
ছন্দ মিলিয়ে তাৎক্ষনিক কবিতা লিখে ফেলে। নীচে রিয়ার কবিতাটা দেয়া হলো......)



মনে পড়ে যায়
বালুর ভাত,
ধূলোর আটা
মাছ হতো কচুর ডাটা।
ঐ বৈশাখী মেলা
তোর হাত ধরে দেখা
পুতুল খেলা,
সারা উঠোনে দুজনের কত ছোটাছুটি,
কাঁদতাম আমি
হারিয়ে তোর কাছে লুডুর পাকা গুটি।
হঠাত্‍ কৈশোর এসে দাঁড়ালো মাঝে,
তোকে দেখে গাল লাল হয় লাজে।
অকারন সংশয় ভীরু ভীরু চোখ,
মনে মনে চাওয়া তোর ভালো হোক।
সময়ের হাত ধরে চলে গেলি দূরে,
স্মৃতির গ্রাম ছেড়ে ঐ শহরে।
বৃষ্টি যখন পড়ে টিনের চালে,
যৌবনা এ মন স্মৃতি ঝাঁপি খোলে।
হয়েছিস কেমন তুই মনে মনে আঁকি,
বৃষ্টি ভেজা ডাহুক যায় মনে মনে ডাকি।
মাটির সোঁদা ঘ্রাণ ছুটে আসে নাকে,
ভুলে কি গেছিস তুই আমাকে?


৯.

আকাশের নীচে বাস এক জোড়া পাখি
সকালের নীল রঙে করে ডাকাডাকি
সাগরের পাশে থাকা একাকী এক বক
অধীরে তাকিয়ে থাকা তরুন যুবক
তীরে এসে ছুঁয়ে যায় মাঝ নদী ঢেউ
চুল ছেরে বসে আছে আনমনে কেউ
ফিরে যাই শৈশবে পুরনো সে প্রানে
মায়া সেথা রোপিত আদুরে বাগানে।

(ব্লগার একুয়া রেজিয়ার ফেসবুক স্টাটাসের বিপরীতে এই কবিতাটি তার কমেন্টস কোটে লিখেছিলাম)

১০.

"কাঁদছো কেনো বোকা মেয়ে? আমার চোখে তাকাও,
আমার স্বপ্ন তোমার অশ্রু আর্টপেপারে রাঙ্গাও;
খুব বেশী কি মন খারাপ আজ? হাতটা ধরো তবে,
আজকে চলো হেঁটে বেড়াই জ্যোৎস্না বিধুর রাতে।

ঠোঁট বাঁকিয়ে আর কতক্ষন? একটু এবার হাসো,
গালের সাথে গাল ঠেকিয়ে আমায় ভালোবাসো;
চোখে কেন এত অভিযোগ? চুল ছেরে দাও খোপার,
এইযে দেখো কান ধরলাম, একটু হাসো এবার।"

(আমার ভবিষ্যৎ স্বপ্নকন্যাকে নিয়ে লিখেছিলাম। সে আসবে, সে একদিন আসবে)


১১.

সন্তানেরা আজ দূরে সরে গেছে খুব
একাকী এক বাজপাখির নীড়,
অবিশ্রান্ত ক্লান্তি ছাপিয়ে ছুটে চলার দিন
ফুরিয়ে গেছে, ভুলে গেছে তারা
কি কারনে তবে এতসব?
কিসের সুখের আশায়?
নাকি লোভে?
বিন্দুমাত্র ছিলোনা লোভের তাড়া।
আজ স্থান নেই এই জঞ্জলার;
সে আজ উৎকোচ তোমাদের সভ্য নগরীতে_
সময় সন্নিকটে
তোমারও শেষ নিবাস বৃদ্ধাশ্রম।

সেথায় শিয়াল ডাকে রাত পোহাবার আগে
সময় থাকে চায়ের কাঁপে নির্বাসিত,
ক্ষনে ক্ষনে ভিজে যায় চশমার কাঁচ
স্মৃতি এসে দোলা দেয় কাঁঠালচাপার ডালে।
ঝরে পরে ফুল
দুয়ারে দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকা মৃত্যুর পথ,
ঝুম বৃষ্টিতে আঁকা প্রিয়জনের মুখ
হুহু করে উঠে অন্তর হায়!
সভ্যতা থেমেছে বৃদ্ধাশ্রমে।

(কবিতাটির নাম দিয়েছিলাম সভ্যতা থেমেছে ব্রিদ্ধ্যাশ্রমে। রেজওয়ান তানিম ভাইয়ের সাথে একদিন কবিতার খেলা খেলতে যেয়ে এই কবিতাটি লেখা।)


১২.

আমি এখনো চেয়ে আছি
আমায় ঘিরে নক্ষত্রেরা দাঁড়িয়ে,
থেমে থেমে শোনা যায় কান্নার ধ্বনি_
স্বজনের আহাজারি,
কেউ ছিটায়ে দেয় গোলাপ জলের পানি
কড়া আতরের ঘ্রান,
দিয়ো না, দিয়ো নিভিয়ে দুচোখের আলো
আর কিছুক্ষন দেখতে দাও
আমি ডুবতে চাই না অনামিশায়,
আমি চাইনা থাকতে অন্ধকারের ঘরে;
আলো চাই, আরও আরও।

(একজন মৃত মানুষের অনুভূতি কেমন হতে পারে সেটা কল্পনা করে লেখা। অনুভূতি আদৌ এমন কি না কেউ কি জানে?)


১৩.

বিল পেরুলে গোরস্থানে
হিজল বনে শেয়াল ডাকে
ভয় আমি পাই যেতে সেথায়
দিন ফুরাবে যখন,
একলা রবে বনে সবাই।


১৪.

পাখি উড়ে যায়, পাখি ফিরে আসে
পাখি বলে যায়, তাকে ভালোবাসে
পাখি উড়ে যায়, একা এক আকাশে
পাখি চলে যায়, না ফেরার দেশে।


১৫.

আলো ছায়ার খেলা ছেরে
নেমে আসে কৃষ্ণক্লান্ত রাত
আবারো শেষ একটি দিনের
শেষ প্রতিদিনের রুটিনের ঘণ্টা।

ইশারায় মৃত্যু ঘটেছিল স্বপ্নের
সেই চোখ, সেই ভাষা নেইকো আর
আঙ্গুলের ভাজে আঙ্গুল রাখেনা
ভালোবাসার সমাধি ঘটেছে চন্দ্রপূর্ণিমায়।

প্রায়শই এই অন্ধকার অসহ্য লাগে
আলো দেখি, দেখে এগিয়ে যাই
অন্ধকার শিকড় মেলে আঁকড়ে ধরে আমায়
টেনে নিয়ে চলে অতল গহ্বরে।

চাঁদের আলো নেমেছে পথে
অদ্ভুত আগন্তকের দেখা মেলে সেই পথে
ছারিয়ে মরন, দুঃখ বরন
হেঁটে চলি, রাত বিরাতে, একা, সেই পথে।


১৬.

কেউ নয় সে কেউ নয়
সে নিজেরি ছায়া,
কথা কয় সে বেঁচে রয়
বেবুঝ স্মৃতি মায়া।

স্মৃতি করে প্রতারনা
ভুলে যাই তোরে,
তবু মনে আনাগোনা
কোন এক ভোরে।


১৭.

আড়ালে কিছু কথা থাকে
কখনো বলা হয়ে উঠে না,
আড়াল থেকেই শিষ দিয়ে যায়
অব্যাক্ত স্বাদহীন কথারা।

কান্না এসে কথা কয় শেষে
চুপিসারে আধোবেলা,
সবশেষে আড়াল হয়ে যায়
আড়ালের কথামালা।

(এই কবিতাটি ফেসবুক স্টাটাসে দেয়ার পরে আমার প্রিয় একটা আপু মেসেজ করে বলেছিলেন আমি নাকি খুব জিনিয়াস। তার জীবনের সাথে মিলে যায়। আমি হেসেছিলাম, কারন সবার জীবনের সাথেই মিলে যায়)


১৮.

কবিতার সব শব্দ
একান্তই আমার সঞ্চয়ে
সেই রূপ, সেই নারী
নিয়ে গেলো,
নিয়ে গেলো বিনা সন্ধিতে
শব্দ হারিয়ে নিঃস্ব কবি
হেরে যায় জীবনের খেলায়
কোন অবেলায়,
কোন রমণীর দড়জায় সদ্যজন্ম কবিতা
কুকুর শুঁকে যায় অচেনা কবির লাশ।


কদর্প্যশুন্য এক রাত্রির গল্প
অনুভব ঘেরা অনুভূতি অল্প
চেয়ে থাকা অপার নয়নে নয়ন ঢেলে
বেড়ে চলে রাত তরুণীর মেরুদন্ড বেঁয়ে।


১৯.

আমি পালিয়েছি, আমি ছেরেছি ঘর, তোকে দেখার ভয়ে
আমি হারিয়েছি, আজ ভুলেছি পথ, দেখতে চাইনা তোরে,
আমি কতটা দিন কাটিয়েছি জানি চোখের অবুঝ জলে
আমি দেখছি আকাশ, মেঘেদের ঢেউ, তোর স্মৃতি ভুলে।

আমি চাইনা হাটতে আবার সেপথে, যে পথে তোর চলে যাওয়া
আমি চাইনা ফেরত অবাক সে প্রেম, ভুলে যাওয়াই চাওয়া
আমি রোদের মাঝে আর থাকি না চেয়ে তোর আসার পথ
আমি হারিয়েছি পরে পেরেছি বুঝিতে ভালোবাসার বোধ।

আমি শক্ত এখন অনেক বেশী, কাঁদিনা তোর জন্যে
আমি জনসম্মুখে হেসে খেলে বেড়াই হাটিনা অরন্যে
আমি তিল তিল করে এগিয়ে চলেছি অপমানের শোধে
আমি চলে যাব হায়, খেলা শেষ হলে, আমার আপন ক্রোধে।

(একান্তই আমার নিজের জীবন নিয়ে লিখেছিলাম এই কবিতাটা, অনেকটা গীতিকাব্যের মত। তবে কোথাও কারো সাথে মিলে যাবে ভাবিনি। জীবন থেমে থাকে না। কখনোই থেমে থাকে না।)


২০.

জানিস বন্ধু?
গভীর রাতে সবাই যখন ঘুমে;
জোনাক নিভে, আঁধার আসে ক্রমে_
চাঁদের আলোয় জানলা শিকের ছায়ায়।
সে আসে ঘরে,
অন্য চাঁদের মায়ায়।

কেমনে পাবো?
সে তো আঁধার নিয়েই আসে,
ভোরের আলো আসলে পরে
ঘরের কোনে চুপটি করে,
সে রাতের আশায় থাকে।

(কেউ একজন। শুধু কল্পনা। কোন আলাপন নেই। নিশ্চুপ ভালোবাসা)


২১.

রোজ ভোরে তোমার স্কুল যাওয়ার পথে
চশমা পড়া একটি ছেলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে
অবুঝ সে মন, অপেক্ষা তার বুঝতে কি তুমি পারো?
তার মত করে সারাটি দিন কার কথা তুমি ভাবো?

পিছন ফিরে তুমি যেক্ষনে মুচকি মৃদু হাসো
সত্যি বলছি ছেলেটি তোমায় আপন ভাবে আরো,
পাঁচটি ঘণ্টা একই স্থানে দাঁড়িয়ে সে থাকে
স্কুল ছুটি হলেই যে ফের তোমার দেখা পাবে!

(একটি ছেলে সত্যিই দাঁড়িয়ে থাকতো। কিশোর বেলার প্রেম। কিশোরীর সেই মুচকি মৃদু হাসিটুকু দেখার জন্যে কলেজ ফেলে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো। একটু দেখলেই কত যে সুখ! বুকের খাঁচার ভিতরে সুখ সুখ অনুভূতি। শেষবেলায় কিশোরী=পাখি আর কিশোর=পাখি উড়ে গেছে)


২২.

আমি নীচতলাতে একেলা থাকি
আমার উপর তলায় তাহার বাড়ি,
আমার উপর উঠার ইচ্ছে ভারি
পাই না সিঁড়ি কেমনে উঠি?


২৩.

জ্বরের ঘোরে দেখিনা আমি সূর্য কিরণের রেখা
তিক্ত স্বাদের সবকিছু তাই, চাঁদ কি সূর্য দেখা,
অভুক্ত দু'নয়নে আমার বহু দিনের আঁধার
কাঁচা রোদ তাই চোখ ধাঁধানো,রূপ আঁকা শুধু তাহার।


২৪.

আবছায়া দিন কেটে যায় অন্য এক অরন্যের মায়ায়
গহীন থেকে শিশ দিয় দোয়েলের জোড়া,
দিঘির জলে ঢেউ খেলে যায় কারো মনের মত
আড়াল থেকে দেখে কেউ মুখটি মায়াকরা।


২৫.

এসেছে রাত, পুরনো সেই মন খারাপের গল্প শোনাতে
ক্ষুদ্র আলোর দেখা নেই, নিচ্ছিদ্র অন্ধকারের পুরনো রাত,
দূর থেকে ভেসে আসে ক্ষুধিত কুকুরের আর্তধ্বনি
আজ রাতে এখনো ডানা মেলেনি ব্যাথারা।

অসহায় চোখ যেখানে আর তাকিয়ে রবে না প্রকট সুখের দ্বারে
যেখানে দ্বিপ জ্বেলে জেগে রইবে না অপেক্ষমান মা,
নীল নীল রঙ ঢেলে মাখাবে না আত্মার অনুমেয় শরীর
অতীতের দিনে ফিরে যাবে সেই রঙচটা অবাধ্য আত্মা।

জোড়া শালিকের অশুভ বার্তায় কাঁপবে না তার ঠোঁট
নর্দমার পাশেই বাধবে না কেউ অভাবের নীড়,
রাতের ক্ষুধা মিটাবে না আধপেট জলে
ভোর হবে সুন্দর সকলের তরে।

(কল্পনা করি এমন একটি পৃথিবী। মা চাইলেই সন্তানের মাথায় হাত রাখতে পারবে)


২৬.

কার জামার বোতামে এঁকেছিলে তুমি স্বপনের আলপনা_
কারে লয়ে তুমি ভাসায়ে তরী ডুবে ছিলে কল্পনা?
সাধ ছিল বহু তোর হাত ধরে চাহিব বহু দূর_
দুজন মিলিয়া, এক বীথিতলে বাধিব আপন সূর।


২৭.

কিভাবে বলবে সে না বলা কথা?
লুকিয়ে যে রাখে, ডানা ছেঁড়া ব্যাথা,
সুদূরের শিকারি কেটেছে তার ডানা
চায় সে উড়ে যেতে, তবু পারে না।

(অনেক আছে, উড়ে যেতে চায়, কিন্তু পায়ে শিকল দেয়া)


২৮.

তুমি যা ভাবো ভেবে নাও
বোকা, অধম কিংবা অপদার্থ,
আদিক্ষেতা কিংবা লোকলজ্জা নয়
কোথায় রয়ে গেছে ছিদ্র হৃদয়ের নিশানা।

কলকল বিরহ প্রবাহের ধ্বনি
রাখো হাত হৃদপিন্ডে দেখো_
সময়ে অসময়ে বাজছে সেই রেশ;
সত্যি, আদিক্ষেতা অথমা লোকলজ্জা নয়,
শুধুই ব্যাথিত আত্মার আর্তচিৎকার।

(ফলাফল শুভ নয় বারে বারে বলি, তবুও হাত বাড়াতে চায় অশুভ আগুনে। অপরিনামদর্শীতা কখনোই ভালো না, কখনোই না।)


২৯.

ভীরু ভীরু পায়ে এগিয়ে সে আসে
এইতো প্রথম প্রেম,
পায়েলের ধ্বনি থামে কাছাকাছি
দেয়ালে পুরনো ফ্রেম।

টানা চোখে চেয়ে টেনে আঁচল
দোলায় শখের চুড়ি;
চিবুকে ঢেউ, লাল রঙ্গা ঠোঁট
ছড়িয়ে গোলাপ কুঁড়ি।


৩০.

অবশেষে কিছু বলতে চাই
আরও কিছুক্ষন তোমাকে দেখতে চাই
আরও কথা শুনতে চাই
হাত ধরতে চাই
আঙ্গুল ধরতে চাই
পাশাপাশি হাটতে চাই
তোমাকে ভাবতে চাই
বাঁধা চুল খোলা দেখতে চাই
তোমার হাসি চাই
আনন্দঅশ্রু চাই
তোমাকে চাই

তবুও হয়না শেষ
আরও অনেক বলার থেকে যায়
শেষ বেলায় মন খারাপের দেশে
সূর্যডোবা পথে হাটতে থাকি আমি
যেখানে পথ মিলেছে সূর্যাস্তে।



নীল সাদার এক অদ্ভুত মায়া আঁকড়ে আছে ফেসবুকে। কত সম্পর্ক, কত আনন্দ, কত কষ্টের সাক্ষী সে নিজে। আজ এমনি একটা সময়, মন খারাপ থাকলেই কতক্ষনে ফেসবুকে স্টাটাসে সবাইকে জানাবো তার জন্যে অস্থির হয়ে থাকি। একটি শুভ সংবাদ দেয়ার জন্য স্ট্যাটাস আপডেটে ক্লিক করি। অন্যরকম একটা জগতের সৃষ্টি করি আমরা। অদ্ভুত সেই জগত। কবিতাগুলোর অধিকাংশই ফেসবুকে লেখা। আয়োজন করে গল্প লেখা যায়, কবিতা লেখা যায় না। কবিতা মেঘ বদলের মত মন বদলে সৃষ্টি হয়। কবিতা বৃষ্টির মত শব্দ হয়ে ঝরে।


শ্রদ্ধা- প্রিয় আপু মাহি ফ্লোরা। আমি ব্লগে লেখার প্রায় শুরু থেকেই আমার আবর্জনাসম লেখাগুলো পড়েন আর কমেন্টসে লিখে যান খুব ভালো হয়েছে_অসাধারন_এমন লেখা আরও চাই। উৎসাহ! একমাত্র উৎসাহ পারে সুন্দর কিছু সৃষ্টি করতে। আমি যথেষ্ট উৎসাহ পেয়েছি তার থেকে। আপু ঋণ কিভাবে শোধ করে?


ছবি: আমার ওয়াল স্ট্রীট ফটোগ্রাফির এলব্যাম থেকে

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৪
৭০টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×