somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শব-ই-বরাত: দাত বা বিদাআত: জায়েজ-নাজায়েজ ও একটি কৌতুক।

২৭ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কৌতুকটি আগে বলি।
বড় বোন সারারাত ধরে শবে-ই-বরাতের নামাজ পরে সকাল বেলায় আল্লাহর কাছে মুনাজাত করলো ১ ঘন্টা ব্যাপি। ছোট বোন উৎসাহী হয়ে জানতে চাইলো –
- আপু তুমি ১ ঘন্টা ধরে আল্লাহর কাছে কি চাইলে।
- নাহ্ আমার জন্য তেমন কিছু চাইনি। যা চেয়েছি সবই তোর জন্য।
- ছোট বোন খুশি হয়ে জিগ্যেস করলো তা আমার জন্য কি কি চাইলে।
- খোদার কাছে বলেছি তোর যেন একটি ভাল দুলাভাই জোটে!

আগামী ১ বছর আপনার জন্য কি বরাদ্ধ হবে তা এই রাত্রিতে পাশ করা হয়। আমাদের সঙসদের মত এই বাজেট দেয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী নাই। এ বাজেট মানি না বলে বিরোধী দলের ওয়াক আউট করার উপায় নাই। আবার ‘অর্থ মন্ত্রী কর্তৃক পেশকৃত বাজেট এই মহান সঙসদে উত্থাপন করার জন্য স্পিকারও নাই্’। প্রস্তুত কারকও তিনি। উপস্থাপনকারীও তিনি। পাশ করা বা বরাদ্দকারীও তিনি। আপনি শুধু আবেদন করতে পারেন। নিজের জন্য। দশের জন্য। দেশের জন্য।

বিরোধীদলের কা্জই হলো বিরোধিতা করা। এখানেও বিরোধিতা করা। বিরোধী দল বলেতেছে ভাগ্যরজনী টজনী বলতে কিছু নাই। সব সব বেদাত। সব ষড়যন্ত্র।
আমি ভাই ঠিক সঠিক জানি না। শব-ই-বরাত হালাল না হারাম তাও বুঝি না। সবাই পালন করে। আমিও করি। হালুয়া রুটি খায় আমিও খাই। নফল ইবাদম আমিও করি। এখন যদি কেউ বলে এটা করা জায়েজ নাই, বিদাত। তাহলে সেই পাপ আমার হবে না। যারা আমাদেরকে দিয়ে করাচ্ছে তাদের।
প্যাচালে লাভ নাই। চলুন দেখি জায়েজের পক্ষে কি যুক্তি :
প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্ত ''ইবনে মাজাহ ''শরীফ এ আছে -হযরত আলী(রাঃ) হতে বণীর্ত মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেন -যখন শাবানের ১৫তম রাতের আগমন ঘটে তখন তাতে কীয়াম /ইবাদত কর আর দিনে রোযা রখ ।নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সুর্যাস্তের পর থেকে ১ম আসমানে বিশেষ তজল্লী (ঔজ্জল্য )বষর্ণ করেন এবং বলেন -কেউ আছে কি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কারী ? তা আমি ক্ষমকরে দেবো ।কেউ আছে কি জীবিকা প্রার্থনা কারী ?তাকে আমি জীবিকা দান করবো ।কেউ আছে কি মুসিবত গ্রস্ত ?তাকে আমি তা থেকে মুক্তি প্রদান করব ।কেউ এন আছে কি ?সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত এরুপ বলতে থাকেন ।{সুনানে ইবনে মাজাহ.২য় খন্ড .১৬০পৃষ্টা .১৩৮৮ নং হাদীস}
পত্রিকাগুলোতে তেমন কোন রেফারেন্স নেই। সম্পদাকীয়তে সবাই এটাকে জায়েজ ধরে নিয়েই মন্তব্য করেছে, রিপোর্ট করেছে।
প্রথম আলো।http://prothom-alo.com/detail/date/2010-07-27/news/81925 ইসলাম ধর্মে শবে বরাতকে চারটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রজনীর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এ রাতে আল্লাহ পরবর্তী বছরের জন্য মানবজাতির রিজিক নির্ধারণ করে সবার ভাগ্য নির্ধারণ করেন ও ধর্মপ্রাণদের সব পাপ ক্ষমা করে দেন। এই রাতেই যারা পরবর্তী বছরে জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করবে, তাদের তালিকা করা হয়। এ কারণেই রাতটি মুসলমানদের কাছে ভাগ্য নির্ধারণের রজনী হিসেবে বিবেচিত। এ রাতে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যারা রিজিক অনুসন্ধানকারী, তারা প্রার্থনা করবে রিজিকের জন্য। বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবে বিপদগ্রস্ত মানুষ। ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই রাতে নফল ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে নিমগ্ন থাকার জন্য মুসলমানদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এই রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন রহমত ও দয়ার ভান্ডার। তাই মুসলমান সম্প্রদায়ের কাছে এটি উৎসবের রাতও।

কালের কন্ঠ। Click This Link মহিমান্বিত এই রাতের ফজিলত সমপর্কে বলা হয়েছে, বরকতময় এই রাতে মুমিনদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয় মানুষের আমলনামা। নির্ধারিত হয় তাবৎ মানুষের আগামী এক বছরের রিজিক। এ রাতেই তালিকাভুক্ত করা হয় পরবর্তী বছরের মৃত্যুবরণকারী ও জন্মগ্রহণকারীর নাম। কোরআনে বলা হয়েছে, এ রাতে ২০ ধরনের বিশেষ গুনাহগার ছাড়া বাকি সবাইকে ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়।

ইত্তেফাক।http://ittefaq.com.bd/content/2010/07/27/news0434.htm হাদিস শরিফে শাবান মাসের এ রাত ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ অর্থাৎ অর্ধ শাবানের রাত হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতে এ রাতটি শবে বরাত হিসাবে পরিচিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, “ইরান ও ভারতীয় উপমহাদেশে এ মাসের একটি রজনীকে ‘শব-ই-বরাত’ বলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন কোন দেশের কোন কোন এলাকায় শবে বরাত ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। আরববাসীরা এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ বলেন। এই রাতেই পরবর্তী বছরের মৃত্যুবরণকারী মানুষ এবং পরবর্তী বছরের জš§গ্রহণকারী শিশুদের তালিকা করা হয়। এই রাতে ২০ ধরনের বিশেষ অপরাধী ছাড়া বাকি সবাইকে ক্ষমা করা হয়। হাদিস শরিফে আছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, মধ্য শাবানের রাতে নামাজ আদায় এবং দিবসে রোজা রাখবে। রাতভর কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল, তাসবিহ-তাহলিল ইত্যাদি ইবাদতে মগ্ন থাকাই এ রাতের প্রধান শিক্ষা। উলামা মাশায়েখগণ বলেন, হালুয়া-রুটি, ফিন্নী-পায়েশ, খিচুড়ি, বিরিয়ানি প্রভৃতি বিতরণ বাধ্যতামূলক নয়। অবশ্য গরীব-দুঃখীর মধ্যে মিষ্টান্ন বিতরণ এবং পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে খাদ্যসামগ্রীর আদান-প্রদান সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করে। ইবাদতের পাশাপাশি এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা দোষের কিছু নয়। এটা বরং আমাদের সাংস্কৃতিক বলয়কে আরো গৌরবান্বিত করেছে।

নয়াদিগন্ত। Click This Link


বিদাত সম্পর্কে প্রচলিত অনেক কথা থাকলেও তেমন কোন রেফারেন্স আমার জানা নাই। সামহোয়ারইনের এই ব্লগটি দেখতে পারেন। Click This Link ১. কোরআনে শব-ই-বরাতের ব্যাপারটা বর্ণনা করে একটি শব্দ পর্যন্ত নাই।২. নির্ভরযোগ্য কোন হাদীস দ্বারা (বিশেষত সিহাহ সিত্তাহ) দ্বারা শব-ই-বরাত প্রমাণ করা যায় না। শুধু 'মিশকাত শরীফে' যা বলা হয়েছে তাতে শব-ই-বরাতের মূল ধারনা কোনক্রমেই প্রমাণিত হয় না।৩. আমাদের এই উপমহাদেশ বাদে বিশ্বের অন্য কোন মুসলমান প্রধান দেশে শব-ই-বরাত পালনের রীতি নাই। সত্যতা জানার জন্য, প্রয়োজনে সৌদি অ্যম্বাসির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ৪. কোরআনে শব-ই-মেরাজের রাত্রিতে রাত জেগে ইবাদত করার ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। শব-ই-বরাতের কোন কনসেপ্ট সেখানে নাই। ৫. মূলত অগ্নিপূজকদের মাধ্যমে এই রীতি মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে। অগ্নিপূজকরা তাদের দেবতাদের খুশি করার জন্য সারারাত পূজা করত এবং চারপাশে আগুন জ্বালিয়ে আলোকজ্জ্বল রাত্রি উদযাপন করত। ৬. আমাদের দেশের ফতোয়াবাজ মৌলভিরা এই প্রথার প্রধান রক্ষক। কারন, এই রাত্রিতে তাদের বেশ কিছু উপরি ইনকাম হয়। ৭. খুব স্পষ্ট করে বললে, শব-ই-বরাত পালন করা বেদআ'ত ছাড়া আর কিছুই নয়।


সর্বশেষ : ইবাদাত বন্দেগী করবো। হালুয়া রুটি খাবো। গরীবকেও কিছু দান করবো। তার বিনিময়ে আমার জন্য কিছুই চাইবা না। চাইবো আপনাদের জন্য। আপনাদের ভাগ্যে যেন একজন ভাল ভাবি জোটে।
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×