somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২১শে মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখ জনতার সামনে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণ...........

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের জনক বলে বিবেচিত হলেও বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর একটা নাম। এই নেতাই দ্বিজাতি তত্ত্ব দিয়ে ভারতকে দুভাগে বিভক্ত করতে হবে এই ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন। এবং পরবর্তীতে মন্ত্রীমিশন প্রস্তাবিত ভারতকে তিন ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব বাতিল করেছিলেন, প্রসঙ্গত মন্ত্রীমিশন ভারতকে যে তিনভাগে ভাগ করার কথা বলেছিলো সেগুলি হলো,

১। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট যুক্ত প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, চেন্নাই(মাদ্রাজ), মুম্বাই
২। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট পাঞ্জাব, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু প্রদেশ ও বেলুচিস্তান
৩। বাংলা ও আসাম

মুসলীম লীগ প্রথমিক ভাবে এই প্রস্তাব মেনে নিলেও পরবর্তীতে প্রত্যাখ্যান করেছিলো। এবং এরপরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে হয়েছিলো। তার এই ভাষণটির তাৎপর্য বলে নেই, এই ভাষণটা পাকিস্তানের জনক বলে অভিহিত আলী জিন্নাহর বাংলাদেশে প্রথম এবং শেষ সফর ছিলো। এবং এই সেই ভাষণ যাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করা হচ্ছে, এতে জিন্নাহর ভারত বিদ্বেষও তার মানসিকতা কেমন ছিলো তা স্পষ্ট বোঝা যায়,

তৎকালীন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইংরেজীতে দেয়া এভাষণটির বাংলা অনুবাদ নিম্নে দেয়া হলো:

আসসালামুআলাইকুম! আসসালামুআলাইকুম!! আসসালামুআলাইকুম!!!

আমি এই অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি জনগনের প্রতি কৃতজ্ঞ। এবং আপনার মাধ্যমে জনাব চেয়ারম্যান (রিসেপশন কমিটি) ঢাকার জনগনকে আমার সংগে একমত পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটা বলার অপেক্ষা যে পূর্ব বাংলায় এসে আমার অনেক খুশি লেগেছে। পূর্ব বাংলা পাকিস্থানের অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ অংশ, যাতে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ মুসলমান জনগোষ্টি বসবাস করে। আমি অনেক দিন ধরে এইখানে একটা সফরে আসার জন্য ইদগ্রীব ছিলাম, কিন্তু দুঃখজনকভাবে অন্য অধিকগুরুত্বপুর্ণ বিষয়গুলি আমাকে এতোদিন এইসফরে আসা থেকে বিরত রেখেছিলো।

কিছু জরুরী বিষয়ে আপনারা নিঃসন্দেহে অবগত আছেন। উদাহরণস্বরুপ, আপনারা জানেন দেশ বিভাগের পর পাঞ্জাবে সৃষ্ট দাঙ্গার কথা এবং পূর্ব পঞ্জাব, দিল্লী এবং প্রতিবেশী জেলাগুলিতে যার ফলে অসংখ্য মুসলমানদের তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিলো এবং তাদের রক্ষা, আশ্রয় এবং খাবার প্রদানের মাধ্যমে পূনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছিলো পশ্চিম পাকিস্থানে। না পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও একটা নতুন দেশ এতো ভীষণ সমস্যার মধ্যে পড়েছে আর না পুরো ইতিহাসে কেউ এতো সাহস আর যোগ্যতার সাথে সমাধান করেছে। আমাদের শত্রুরা চেয়েছিলো পাকিস্তানকে অংকুরেই বিনষ্ট করতে। অন্যদিকে অন্য যেকোন বারের চেয়ে এবার পাকিস্থান অধিকতর বিজয়ী এবং শক্তিশালীরুপে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দেশের জন্ম হয়েছে থাকার জন্য এবং এর মহান ভুমিকা যথাযথভাবে চালিয়ে যাবার জন্য এবং এটাই এদেশের নিয়তি।

আপনাদের স্বগতভাষণে আপনারা জোর দিয়েছেন এই অঙ্গরাজ্যের বিশাল কৃষি এবং শিল্প সংক্রান্ত সম্পদের গুরুত্ব, যুব পুরুষ এবং মহিলাদের পাকিস্থানের সামরিক বাহিনীতে সুযোগ পাওয়ার উপযোগী ট্রেইনিং সুবিধা সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন এবং এই অংগরাজ্য এবং পাকিস্থানের অন্য অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের উপর, এবং সর্বোপরি আপনার জোর দিয়েছেন সরকারের সর্বস্তরে পূর্ব পাকিস্থানের সকল জনগনের ন্যায্য এবং আইনগত অংশীদরিত্বের উপর। আমি আপনাদের একটা বিষয়ে নিশ্চিত করতে চাই যে, আমার সরকার এই বিষয়গুলির উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং পুর্ব পাকিস্থান যাতে তার পুরোদমে তার পূর্ণতা অর্জন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে সতর্ক এবং অবিরতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই অঞ্চলের লোকদের সামরিক উন্নয়নের কথা আমরা ইতিহাসের পাতায় যথেষ্ট উদাহরণে দেখতে পাই এবং আপনারা জানেন, সরকার ইতোমধ্যেই যব পুরুষ এবং মহিলাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য কর্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে করে তারা একই সংগে নিয়মিত সামরিক বাহিনী এবং পাকিস্থান ন্যাশনাল গার্ডসের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সুযোগ পায়। আপনারা নিশ্চিন্ত হতে পারেন এই ভেবে যে, যুবকদের পাকিস্থানের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যুক্ত করার জন্য সর্বোচ্চ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এখন আমি এই অঞ্চলের সাধারণ কিছু বিষয়ের উপরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চাই। তারও আগে আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাতে চাই, এই অঞ্চলের সরকার এবং সাধারণ জনগন যেভাবে আপনাদের দুঃখদুর্দশায় নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন তার জন্যে। দেশবিভাগের পর তাৎক্ষনিকভাবে সৃষ্ট বিশৃংখলা এবং অনিশ্চয়তা তারা দ্রুত এবং কার্যকারিতার সাথে দুর করে যে একটা শৃংখল প্রশাসন দাড় করাতে পেরেছিলো তার জন্য এই অঞ্চলের সরকার এবং বিশ্বস্ত, পরিশ্রমী সরকারী আফিসাররা অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। পনেরই আগস্ট ঢাকায় অস্থায়ী প্রাদেশিক সরকার গঠিত হয়েছিলো। তখনও ঢাকা একটা মফস্বল শহর ছিলো, এই সরকার তাই হাজার হাজার সরকারি কর্মকর্তাদের বাসস্থান সরবরাহের জন্য তখন অনেক সমস্যায় পড়েছিলো। দেশবিভাগের কারনে ভারতে সৃষ্ট গোলযোগের কারণে ঐদেশ হতে বিতাড়িত ৭০ হাজার রেলওয়ে এবং অন্যান্য চাকুরীজীবী (যাদের কিছু অংশ ভয়ে পালিয়ে আসেছিলো) এবং এর ফলে সৃষ্ট প্রাশাসনিক সমস্যা সরকারের খুব কষ্টে কাবু করতে হয়েছিলো। সেখানে আরও অনেক সমস্যা ছিলো, হিন্দু কর্মীদের দেশত্যাগ, প্রাশাসনিক ব্যাবস্থায় থাক বিশাল শূন্যতা, এবং সম্পূর্ণ পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যাবস্থা বিশৃংখল ছিলো। তাই তখন সরকারের কাজ ছিলো তাৎক্ষনিকভাবে এর শক্তিগুলাকে পুনরেকত্রীকরণ এবং প্রাশাসনিক ব্যাবস্থার পুনর্সংঘটন যাতে করে একটা বড়োসড় প্রাশাসনিক বিপর্যয় ঠেকানো যায়।

প্রাদেশিক সরকার সেই কাজটা অসমান্য দ্রুততা এবং দক্ষতার সাথে করেছিলো। আপনাদের প্রশাসন অব্যাহতভাবে কাজ করে গিয়েছইলো এবং পুরো সম্প্রদায়ের জীবণও কোন ব্যাঘাত ছাড়া অতিবাহিত হচ্ছিলো। এটা কেবল দ্রুততার সাথে পুনর্সংগঠিতই হয়নি সাথে প্রাশাসনিক সমস্যগুলি দুরও করা হয়েছিলো। এভাবে একটা আসন্ন দূর্ভিক্ষকে ঠেকানো হয়েছিলো এং সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পূরো প্রদেশ শান্ত ছিলো। পরের ব্যাপারটির ক্ষেত্রে, অনেক প্রশংসা এই অঞ্চলের মানুষদের প্রাপ্য যাদের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান, যারা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন শান্ত থেকে এবং সব কিছু শান্ত রাখায় তাদের দৃঢ় সংকল্প দেখিয়েছেন, নাহলে অনেক উস্কানি এসেছিলো দেশবিভাগের পরপরই ভারতের অধীনে নির্বিচারে মুসলমানদের উপর হত্যা ও নিষ্পেশনের ঘটনা দ্বারা । এতো সব ভয়ংকর ঘটনার পরও, গতপুজায় হিন্দু সম্প্রদায় প্রায় চল্লিশ হাজার মিছিল-শোভাযাত্রা এই অঞ্ছলে ঘটেছে যাতে একটু মুসলমানদের একটুও উৎপাত, অশান্তি সৃষ্টির প্রয়াস দেখা যায় নি। যেকোন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকও আমার সংগে একমত হবেন যে ভারতের অন্য যেকোন জায়গা থেকে এইখানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বেশি ছিলো। আপনারা আমার সংগে একমত হবেন যে, পাকিস্তান শান্তি ধরে রাখা, আইনশৃংখলা রক্ষায় সক্ষম ছিলো, এবং আমি এও বলতে চাই যে শুধু ঢাকাই নয়, সংখ্যালঘুরা পুরো পাকিস্তান জুড়েই অন্য যেকোন জায়গা হতে অধিকতর নিরাপদ। আমরা এই বিষয়টা পরিস্কার করেছি যে পাকিস্তান কোন মুল্যেই সরকার শান্তির ব্যাঘাত হতে দিবো না,এবং কোন প্রকার দঙ্গা ঘটতে দিবো না। যে বিষয়গুলি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ প্রয়োজনীয় সেগুলির কথা বলতে গেলে, একটা শৃংখল প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ, সংকটের সময় খাদ্য সরবরাহ এবং শান্তি বজায় রাখা। সরকারের এইসব অর্জনকে অবহেলা করা ঠিক হবে না, এইগুলা এমনি এমনিই আসে না।

সমালোচনা এবং দোষ খোঁজা সবসময়ই সহজ, কিন্তু মানুষ সব সময় ভুলে থাকে তাদের জন্য কী করা হচ্ছে এবং করা হবে, এবং তারা মনে করে এগুলি এমনি এমনিই এসেছে, না বুঝেই যে, আমরা পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে এগিয়েছি। আমি বলতে চাই না যে আপনাদের প্রশাসন পারফেক্ট(নির্ভুল), বা এর থেকে অনেক দূরে। আমি এও বলছি না এর আর উন্নয়ন করা সম্ভব না। এবং আমি এও বলছি না একজন প্রকৃত পাকিস্তানির সৎ সমালোচনাকে স্বাগতম জানানো হবে না। এদের জন্য সবসময়ই স্বাগতম। কিন্তু কোন কোন জায়গায় আমি যা পাই তা হলো হয় আপনাদের সরকারের দ্বারা করা অথবা বিশ্বস্ত সরকারী চাকুরেদের দিনে রাতে কঠোর পরিশ্রমে করা ভালোকাজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভুল ধরার এবং অস্বীকার করার প্রবণতা, এটা দুঃখজনক। সুতরাং অভিযোগ ও সমালোচনা বাদ দিয়ে অন্ততপক্ষে এই ভালো কাজগুলার পক্ষে কিছু হলেও ভালো কথা বলুন। একটা বিশাল প্রশাসনে কিছু ভূল হওয়া স্বাভাবিক, পৃথিবীর কোন দেশ এমন নির্ভুল হতে পারে না। কিন্তু এরপরও আমরা চাই ভুলের সংখ্যা যতোসম্ভব সীমিত থাকে। আমাদের ইচ্ছা প্রশাসনকে অধিকতর দক্ষ, সুবিধাজনক এবং কার্যকরী করা। কী জন্য? সরকারের লক্ষ্যগুলা কী কী? এখটা সরকার তার জন্য কেবল একটা উদ্দেশ্যই রাখতে পারে, আরা তা হলো, কী ভাবে জনগনের সেবা করা যায়, কীভাবে তাদের উন্নয়ন এবং কল্যানের জন্য নতুন উপায় এবং প্রক্রিয়া তৈরী করা যায়। আর কী উদ্দেশ্যই বা সরকারের থাকতে পারে? মনে রাখবেন, এখন থেকে সরকারকে ক্ষমতায় আনার বা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা আপনাদের হাতে, আপনাদের এইটা ভুল বা দঙ্গামুলক পদ্ধতিতে করা অবশ্যই উচিৎ নয়। ক্ষমতা এখন আপনাদের হাতে এবং আপনাদের এর ব্যবহার শিখা উচিৎ এবং এই প্রক্রিয়াটাকে বোঝা উচিৎ। সংবিধানমতে, একটা সরকারের কে উল্টে দেয়া এবং নতুন সরকার কে নিয়ে আসা এখন আপনাদের হাতে, যদি আপনারা সেই পরিমানে অসন্তুষ্ট হন।

সুতরাং সবকিছু আপনাদের হাতে, আপনাদের কাছে আমার কঠোর উপদেশ হলো, ধৈর্য ধরেন এবং তাদের সমর্থন দেন যারা আপনাদের নেতৃত্বে আছেন, তাদের প্রতি সহানুভুতি দেখান, চেষ্টা করুন তাদের সমস্যা ও বিপত্তিগুলাকে বোঝার। ঠিক তেমনি ভাবে নেতৃত্বের কাজ হবে আপনাদের দুঃখ-কষ্ট, অভিযোগ, বোঝার চেষ্টা করা। এধরণের সহযোগিতা এবং ভালো স্পিরিট(চেতনা) শুধু আমাদের অর্জিত পাকিস্তান রাষ্ট্রকেই রক্ষা করবে না বরং পৃথিবীতে একটা মহান রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্টা করবে। আপানারা কি এখন এই অর্জিত পাকিস্তানটাকে নিজেদের দোষে হারিয়ে ফেলতে চান? নাকি এটাকে(পাকিস্তান) তৈরী করতে চান? ভালো, তাহলে সেই উদ্দেশ্যপূরণে একটা গুরুত্বপুর্ন শর্ত আছে এবং সেটা হলো, নিজেদের মধ্যে একতা এবং দৃঢ়তা আনা। কিন্তু আমি বলতে চাই আমাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা বিদেশী আর্থিক সহায়তা এবং মদদে চলেন, তাদের উদ্দেশ্য আমাদের বিচ্ছিন্ন করা। পাকিস্তানে তারা স্যাবোটাজ(অন্তর্কোন্দল) চায়, একে ভাংতে চায়। আমি নিজেদের রক্ষায় আপনাদের নিজেদের নিযুক্ত হতে বলছি, আমি চাই আপনার জাগ্রত থাকেন, কোন আকর্ষণীয় স্লোগান বা শব্দের ফাঁদে পড়বেন না। তারা বলে পাকিস্তান সরকার এবং পূর্ববঙ্গের সরকার আপনাদের ভাষাকে ধ্বংস করতে চায়। এর চেয়ে বড়ো মিথ্যাচার আর হতে পারে না। খোলাখুলিভাবেই আমি বলতে চাই আপনাদের মাঝে কিছু কমিউনিস্ট(নাস্তিক, সমাজতন্ত্রী) এবং অন্যরা হলো কিছু দালাল যারা বিদেশী মদদ এবং অর্থ সাহায্যপুষ্ঠ, এবং আপনারা যদি সতর্ক না হোন, আপানারা বিভক্ত হয়ে পড়বেন। পূর্ব বঙ্গকে যে ভারতের সঙ্গে একত্রিত হতে হবে এই আইডিয়াটা(ধারনা) এখনও মারা যায় নি এবং এটা এখনও তাদের উদ্দেশ্য, এবং আমি কনফিডেন্ট(নিঃসন্দেহ) যে, আমি ভীত নই, তরাপরও সতর্কভাবেই বলছি, এই লোকগুলা যারা এখনও পূর্ববাংলাকে ভারতে যুক্ত করার স্বপ্ন দেখে তারা স্বপ্ন জগতে আছে।

আমাকে বলা হয়েছে, এখান থেকে কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ইন্ডিয়া চলে গিয়েছে, আমি দেখেছি ইন্ডিয়ান সংবাদ মাধ্যমে সেই সংখ্যা নাকি চমকপ্রদ ১০ লাখ! কিন্তু অফিসিয়াল হিসেবে এটা দু'লাখের আশপাশে বোধ হয়। ঘটনা যাইহৌক না কেনো, আমি এতে সন্তুষ্ট, কারণ এটা সংখ্যালঘুদের প্রতি কোন প্রকার খারাপ ব্যাভাহারের ফল নয়। অন্যদিকে, সংখ্যালঘুরা উপভোগ করেছে (এবং একথা সত্য) বিপুল স্বাধীনতা, এবং তাদের নিজেদের কল্যানের জন্য তাদের সচেতনতা এবং উৎকন্ঠা প্রদর্শন ভারতের যেকোন অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের তুলনায় অনেক বেশী।

এই সব বহির্গমনের কারণ পাওয়া যায় ভারতের কিছু যুদ্ধকারবারী(বা ব্যবসায়ী) লিডারদের ঢিলা মন্তব্যে, তারা বলে ঐখানে সংখ্যালঘুদের প্রতি অত্যাচার নাকি এখানে অত্যাচারের প্রতিক্রিয়া, এবং আতংকটাও তাই। এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলাতে সংখ্যালঘুদের(হিন্দু) এই দেশ ত্যাগ করার পরামর্শ বেশ যত্নকরে দেয়া হচ্ছে। এবং এভাবে কাল্পনিক বিভিন্ন হিসেবে সংখ্যালঘুদের এখানকার অবস্থা, এবং হিন্দু মহাসভাও একই কাজ করে যাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের(হিন্দু) সাথে ব্যবহার সম্পর্কে এই সব প্রপাগান্ডা(মিথ্যে খবর প্রচার) এবং দোষারোপ কে মিথ্যে হয়ে যায় যখন আমার দেখি প্রকৃতপক্ষে এখানে এখনও বারো মিলিয়ন অমুসলিম শান্তিতে বসবাস করে যচ্ছেন যারা এদেশ ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেছেন।

সুযোগ যখন পেয়েছি তখন এবিষয়ের পুরাবৃত্তিতে আমি আবারও বলতে চাই, আমাদের উচিৎ সংখ্যালঘুদের ভালো এবং ন্যায়পরায়নভাবে ট্রিট(ভালো ব্যাবহার দেয়া) করা। তাদের জীবণ এবং সম্পত্তি ভারতের তুলনায় এখানে অনেক বেশি নিরাপদ এবং রক্ষিত এবং আমাদের শান্তি-আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে হবে, বর্ণ, জাত এবং সম্প্রদায় নির্বিশেষে পাকিস্থানের প্রতিটা নাগরিককে রক্ষা এবং নিরাপত্তা দিতে হবে।

এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে তা সন্তোষজনক। এখন আমি এই অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত অসন্তুষ্টিমুলক বৈশিষ্ট গুলা নিয়ে আলোচনা করবো। এমন একটা অনভূতির কথা আমি শুনেছি তা হলো, এই অঞ্চলের কিছু অংশ নাকি অবাঙালী মুসলমানদের বিরুদ্ধে, এবং উর্দু নাকি বাংলাকে এ অঞ্চল এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হবে এ নিয়েও নাকি পরবর্তীতে উত্তেজনা তৈরী হয়েছে। পরের ব্যাপারটার ক্ষেত্রে, আমি শুনেছি কিছু খারাপ উদ্দেশ্যমূলক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে কিছু রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের দ্বারা, এবং তারা ছাত্র সম্প্রদায়েরকে হাতিয়ার বানিয়ে প্রশাসনকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছে।

আমার অল্পবয়েসী বন্ধুরা, ছাত্রবৃন্দ যারা এখানে উপস্থিত আছেন, তাদের বলছি, একজন মানুষ হিসেবে যার সবসময় ছাত্রদের প্রতি ভালোবাসা এবং অনুভব ছিলো, এবং একজন মানুষ হিসেবে যে আপনাদের দশ বছর ধরে সেবা করে আসছে(আলী জিন্নাহ নিজে), আমি তোমাদের সতর্কবানী হিসেবে বলতে চাই, তোমরা যদি কোন রাজনৈতিক দলকে নিজেদের ব্যবহার করতে দাও, তাহলে তোমারা জীবণের সবচেয়ে বড়োভুলটি করলে।

মনে রেখো, একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। এই সরকার আমাদের নিজস্ব সরকার। আমরা একটি মুক্ত, স্বাধীন ও সর্বভৌম দেশ। আমাদের স্বাধীনভাবে আমাদের কাজ করতে হবে, আমরা এখন আর কোন বিদেশী উপনিবেশ দ্বারা দমিত বা অত্যাচারিত নই, আমরা সেসব শেকল ভেঙে ফেলেছি, এবং জরাজীর্ণসব ছুড়ে ফেলেছি। আমার অল্পবয়সী বন্ধুগন, আমি তোমাদেরই পাকিস্তানের প্রকৃত নির্মাতা হিসেবে দেখতে চাই। অন্যদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ো না বা ধোঁকা খেয়ো না। নিজেদের মাঝে জাতি হিসেবে পূর্ণ একতা এবং দৃঢ়তা আনো। তারুণ্য কী করতে পারে তার একটা দৃষ্টান্ত তৈরী করো। তোমাদের প্রধান পেশাদারিত্ব হচ্ছে নিজেদের ভালো দেখা, পিতা-মাতার ভালো দেখা, দেশের ভালো দেখা, এবং পড়ালেখায় সব মনোযোগ নিবিষ্ট করা। তুমি যদি তোমার পরিশ্রম অন্যদিকে দাও তুমি সর্বদা অনুশোচানায় ভোগবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ শেষেই তোমরা নিজেদের ভুমিকা স্বাধীনভাবে রাখতে পারো এবং দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারো। তোমাদের প্রতি আমার পরিষ্কার ভাষায় বিপজ্জনক সতর্কবানী হলো, পাকিস্তান এবং তোমাদের অঞ্চল বিশেষকরে এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে, যেগুলার আমি মোকাবেলা করেছি ইতোমধ্যেই, পাকিস্তানের প্রতিষ্টাকে ব্যার্থ করতে না পেরে হতাশাগ্রস্থ পাকিস্তানের শত্রুরা এখন চায় পাকিস্তানের মুসলমানগুলিকে দুভাগে বিভক্ত করতে। এই প্রচেষ্টা এখন নীতিগতভাবে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থাকে উৎসাহ দেয়ার নামান্তর।

যতোক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এই রাজনৈতিক বিষ ছুড়ে ফেলে না দিচ্ছো, তোমরা কখনো নিজেকে একটা সত্যিকারের জাতির সাথে যুক্ত করতে বা তাদের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না। আমরা যা সম্পর্কে বলতে চাইনা তা হলো, বাংলা, পাঞ্জাবী, সিন্ধি, বালুচ, পাঠান এবং অন্যান্য ভাষাগুলি। তারা অবশ্যই কতোগুলি উপাদান। কিন্তু আমি জিজ্ঞাস করি, আপনারা কী ভুলে গিয়েছেন তেরো হাজার বছর আগে আপনাদের কী শিক্ষা দেয়া হয়েছিলো? যদি আমি বলতে আপনারা সবাই বহিরাগত এইখানে, কারণ আপনারা বাঙালী, সিন্ধুবাসী বা পাঠান তাহলে কী হবে? এখন আমরা সবাই মুসলিম।

ইসলাম আমাদের এইটা শিখিয়েছে, এবং আমি মনে করি আপনারা সকলে আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, অন্য যা কিছুই আপনি/আপনার হৌন না কেনো, আপনি/আপনারা মুসলমান। একটা জাতিতে এখন আপনারা আছেন, আপনাদের এখন আলাদা ভাবে খচিত একটা অঞ্চল আছে, একটা বিশাল অঞ্চল, এটা পুরোটাই আপানাদের; এটা একজন পাঞ্জাবী, একজন সিন্ধি, একজন পাঠান বা বাংলাদেশীর নয়; এটা আপনার। এখন আপনাদের একটা কেন্দ্রীয় সরকার আছে, যাতে বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা আছেন। সুতরাং যদি আপনারা আপনাদের নিজেদের জন্য একটা জাতি গঠন করতে চান, ঈশ্বরের(গড) দোহাই, এই প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। প্রদেশিক শাসন ব্যাবস্থা একটা অভিশাপ, এবং একই ভাবে অভিশাপ সমাজতন্ত্র, শিয়া, সূন্নী ইত্যাদি।

এইটা তাই আমাদের পূর্বসূরী সরকারদের মাথাব্যাথা ছিলো না, চিন্তার বিষয়ও ছিলো না; তাদের চিন্তা ছিলো প্রশাসন, আইন-শৃংখলা এবং বানিজ্য চালানো এবং ভারতকে শোষণ(এক্সপ্লয়েট) করা যতোটুকু সম্ভব। কিন্তু আমরা এখন সবমিলিয়ে ভিন্ন অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। এখন আমি আপনাদের উদাহরণ দেই, ধরেন আমেরিকা। যখন এইটা বৃটিশ শাসনকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো, এবং নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করলো, সেখানে কয়টা জাতি ছিলো: স্পেনিয়ার্ড, ফ্রেঞ্চ, জার্মান, ইটালিয়ান, ইংলিশ। ডাচ, আরও অনেকে। ভালো কথা, সেখানে তারা ছিলো, তাদের অনেক প্রতিকূলতা ছিলো। আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, সেখানে প্রকৃত পক্ষে অনেকগুলা জাতির অস্তিত্ব ছিলো, তারা অনেক বড়ো বড়ো জাতি ছিলো, সেইখানে আপনাদের এখানে কিছুই নাই(ইউ হ্যাড নাথিং)। আপনারা পাকিস্তানে এই মাত্র পেলেন। কিন্তু সেখানে একজন ফ্রেঞ্চ বলতে পারতো, আমি ফ্রেঞ্চমেন, আমি একটা মহান জাতির অংশ। এবং এভাবে হয়তো অন্যরাও বলতে পারতো। কিন্তু কী ঘটেছিলো? তারা বুঝতে পেরেছিলো এবং প্রতিকূলতা স্বীকার করে নিয়েছিলো, কারণ তাদের মাথায় বুদ্ধি(দে হ্যাড সেন্স) ছিলো। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তারা নিজেদের সমস্যার সমাধান করেছিলো, এবং সকল প্রকার শ্রেনীবিভাগ বিলুপ্ত করে দিয়েছিলো, এবং তারা কথা বলেছিলো একজন জার্মান, ফ্রেঞ্চ, ইংলিশ বা স্পেনিয়ার্ড হিসেবে না একজন আমেরিকান হিসেবে। এবং আপানদেরও তা ই করা উচিৎ, জীবণধারণ এবং কাজ করা এমনভাবে যেনো আপনাদের দেশ পাকিস্তান এবং আপনি একজন পাকিস্তানি।

এখন আমি আপনাকে বলি প্রাদেশিক সরকার ব্যাবস্থাকে ছুড়ে ফেলতে, কারন যতোক্ষণ না আপনারা এই বিষটাকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে রাখবেন, আমাকে বিশ্বাস করুন, আপনারা কখনো একটি শক্তিশালী জাতি হতে পারবেন না, এবং কখনোই তা অর্জন করতে পারবেন না, যার স্বপ্ন আমি দেখেছি যে আমরা অর্জন করবো।(lets laugh a little) অনুগ্রহকরে ভাববেন না আমরা আপনাদের মতামতগত অবস্থানকে অগ্রাহ্য করছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এইটা দুষ্টচক্রে পরিণত হয়। যখন আপনি একজন বাঙালীর সাথে কথা বলেন, উনি বলেন, "আপনি ঠিক বলেছেন, পাঞ্জাবিরা খুব উদ্ধত," আবার যখন আপনি পাঞ্জাবী বা অ-বাঙালীর সাথে কথা বলেন, উনি বলেন,"হ্যাঁ এই লোকগুলা আমাদের এইখানে চায় না, তারা আমাদের তাড়িয়ে দিতে চায়।" এখন এইটা একটা দুষ্টচক্র, এবং আমি মনে করি না সবাই এই চীনা ধাঁধার সমাধান পারেন।(lets laugh again) প্রশ্নটা হলো, কে অধিকতর বুদ্ধিমান হতে যাচ্ছেন, অধিকতর বাস্তববাদী, অধিকতর দেশবাসীর মতো মতো আচরণ করেন। এবং কে পাকিস্তানের প্রতি সবচেয়ে মহান সেবাটা দিবেন? তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে থাকেন, এই বিভাজনসংস্কৃতির এইখানেই সমাপ্তি ঘটানোর জন্য।

ভাষা সম্পর্কে আমি ইতোমধ্যেই বলেছি, এটা পকৃতপক্ষে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি তৈরী করে। আপনাদের প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যে ঠিকই বলেছেন, এবং আমি খুশি যে তার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কঠোরভাবে যেকোন রাজনৈতিক স্যাবোটিয়ার বা তাদের প্রতিনিধি(দালাল)দের যে কোন প্রচেষ্টা মোকাবেলার যা শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটাতে চায়। বাংলা এই অঞ্চলের অফিসিয়াল(দাপ্তরিক) ভাষা হবে কিনা এইটা এইখানকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ব্যাপার। আমার মনে কোন সন্দেহ নেই যে,এই প্রশ্ন সম্পূর্নভাবে এই প্রদেশের মানুষের আশা আকাংখা মতোই একটা উপযোগী সময়ে মিটমাট হবে।

আমি কথা পরিষ্কার, বাংলা ভাষার কথা বলতে গেলে, এটা সত্য নয় যে, আপনাদের স্বাভাবিক জীবণ এর দ্বারা প্রভাবিত বা ক্ষতিগ্রস্থ হতে যাচ্ছে । কিন্তু শেষপর্যন্ত, এইটা আপনাদের জন্য, এই প্রদেশের ভাষা কী হবে তা এখান জনগনই সিদ্ধান্ত নিবে। কিন্তু আমি আপনাদের কাছে এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, উর্দুই (এবং অন্যকোন ভাষা নয়) পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে যাচ্ছে।(এতোক্ষণ পুতুপুতু করে লাইনে আসলো এই মাত্র) কেউ যদি আপনাদের বিভ্রান্ত করতে চায় সত্যিকার অর্থেই সে পাকিস্তানের শত্রু(আমরা সবাই তাই শত্রু বনে গেলাম)। একটা রাষ্ট্রভাষা ছাড়া, কোন জাতিই এক বন্ধনে একত্রে শক্তভাবে বাঁধা হতে পারে না এবং কাজ করতে পারে না। অন্য দেশগুলার ইতিহাসের দিকে তাকান। সুতরাং, রাষ্ট্রভাষার কথা আসলেই, আমি বলবো পাকিস্তানের ভাষা হবে উর্দু। কিন্তু আমি যেমন বলেছি, এই সিদ্ধান্ত একটা উপযোগী সময়ে আসবে।

আমি আপনাদের আবার বলছি, যারা পাকিস্তানের শত্রু তাদের ফাঁদে পড়বেন না। (শুনে মনে হয় গনহত্যার প্ল্যান করা আছে) দুঃখজনকভাবে, আপনাদের একটি সংঘবদ্ধ দল আছেন এবং আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে উনারা মুসলিম, যারা বিদেশী আর্থিক সহায়তায় চলেন। কিন্তু তারা বেশ বড়ো ভূল করছেন(গনতান্ত্রিক দেশে সংবাদপত্রে লেখা যাবে না!!), আমরা আর বেশিদিন এই স্যাবোটাজ(অন্তর্কোন্দল তৈরীর প্রচেষ্টা) সহ্য করবো না, আমরা পাকিস্তানের শত্রুদের আর সহ্য করবো না, আমরা আমাদের দেশে এইসব গৃহশত্রু সহ্য করবো না এবং এইটা যদি বন্ধ না হয়, আমি কনফিডেন্ট যে আপনাদের সরকার এবং পাকিস্তানের সরকার, শক্তিশালীতম ব্যাবস্থা নেবে, এবং তাদের নৃশংসতার সঙ্গে মোকাবেলা করবে, কারণ তারা বিষাক্ত। আমি বোধ হয় আমার সঙ্গে আপনাদের মতনৈক্য বুঝতে পারছি। খুবই সহসা বলা হয়ে থাকে যে, আমরা কেনো এই পার্টি বা ঐ পার্টিকে পেতে পারি না? এখন আমাকে বলতে দিন, এবং আমি মনে করছি আপনারা আমার সঙ্গে একমত(সন্ত্রাসীর কথার স্টাইল দেখেন), যে আমাদের দশ বছরের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং সংগ্রামই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান কে অর্জন করেছে দশ বছর পরে। এইটা হলো মুসলীম লীগ যারা এইটা করেছে। সেখানে অবশ্যই এমন অনেক মুসলমান ছিলেন যারা উদাসীন ছিলেন। কিছু আবার ভীত ছিলেন, কারণ তারা তাদের স্বার্থ অন্যদের উপর সঁপে দিয়েছিলেন এবং তাঁরা ভেবেছিলেন তাঁরা হেরে যাবেন; কেউ কেউ নিজেদের শত্রুদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলো, এবং আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলো, কিন্তু আমার সংগ্রাম করেছিলাম, এবং যুদ্ধ করেছইলাম, এবং এইটা আল্লাহর মহিমা এবং তাঁর সহায়তায় আমরা পাকিস্তান প্রতিষ্টা করে পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলাম।

এখন এইটা একটা পবিত্র বিশ্বাস আপনাদের যা আমাদের হাতে, অর্থাৎ মুসলিম লীগ। এই বিশ্বাস কি আমরা সত্যিকারের অভিভাবকের মতো দেশ এবং দশের কল্যানে পাহারা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবো? নাকি না? নাকি ব্যঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা পার্টি গুলা যাদের অতীত প্রশ্নবিদ্ধ, তারা ধ্বংস করে যাবে যা আমরা অর্জন করেছি বা ছিনিয়ে নিয়ে যাবে যা আমরা নিরাপদ করেছি? আমি আপনাদের একটা প্রশ্ন করি, আপনারা কি পাকিস্তানে বিশ্বাস করেন? (সবাই চিৎকার করে বলে ছিলো ইয়েস, ইয়েস) আপনারা কি খুশি যে আপনারা পাকিস্তান অর্জন করেছেন?(সবাই চিৎকার করে বলেছিলো ইয়েস, ইয়েস) আপনাদের কেউ কি চান পুর্ব পাকিস্তান বা পাকিস্তানের কোন অংশ ভারতে যুক্ত হৌক?(সবাই বলেছিলো নো, নো) ভালো, যদি আপানারা দেশের সেবা করতে চান, পাকিস্তানের তৈরী প্রক্রিয়ায় হাত বাটাতে চান, এর পুনর্নির্মান চান, তাহলে আমি বলি সবচেয়ে সৎ রাস্তা সকল মুসলমানের সামনে খোলা(অমুসলিম না), মুসলিম লীগ পার্টিতে যোগ দিন, এবং এই দলটির সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিয়ে পাকিস্তানের সেবা করুন। অন্যসব ব্যাঙের ছাতা পার্টি যারা বর্তমানে আছেন, যাদের দিকে তাদের সন্দেহজনক অতীতের জন্য সন্দেহের চোখে দেখা হয়, এজন্য নয় যে তাদের জন্য আমাদের মনে সন্দেহ আছে বা, খারাপ উদ্দেশ্য বা প্রতিষোধমানসিকতা আমাদের। সৎ পরিবর্তন কে স্বাগতম, কিন্তু বর্তমান জরুরী অবস্থার চাওয়া হলো সব মুসলমানরা মুসলিম লীগের( যারা পাকিস্তানের প্রকৃত অভিভাবক) ব্যানারের নিচে আসবেন, এবং পাকিস্তানকে বানিয়েছে, একে একটা মহান দেশ বানালো যাখন আপানারা অন্য কোন পার্টির কথা ভাবতে পারতেন না(যেই সব পার্টি এখন বড়ো বড়ো এবং স্বাস্থ্যবান স্লোগান দিয়ে তৈরী হয়েছে)। আরেকটা জিনিস বলতে চাই, নিজিদের একা ভাববেন না, অনেকে আমাকে বলেছেন যে, পূর্ব বাংলা নিজেদের পুরো পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে। কোন সন্দেহ নাই যে দুই প্রদেশের মাঝখানে অনেক ফারাক, নিসন্দেহে দু'প্রদেশের মাঝে অনেক প্রতিকূলতা আছে কিন্তু আমি বলি আমরা স্বীকার করি ঢাকা এবং পূর্ব বাংলার গুরুত্ব(উপনিবেশ হিসেবে) আমি শুধু এক সপ্তাহ বা দশ দিনের জন্য এসেছি এইবার, কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আমার দায়িত্বপালন করতে গিয়ে আমাকে হয়তো এইখানে আসতে হতে পারে কয়েক দিনের জন্য হৌক কয়েক সপ্তাহের জন্য হৌক, এবং একই ভাবে পাকিস্তানী মন্ত্রীদেরও অবশ্যই এই প্রদেশের সঙ্গে একইভাবে গভীর সম্পর্ক রাখতে হবে। তাদের যেমন এইখানে আসা উচিৎ একইভাবে আপনাদের নেতা এবং সরকারের সদস্যদের পাকিস্তানের রাজধানী করাচী যাওয়া উচিৎ। কিন্তু আপনাদেরও ধৈর্য রাখতে হবে, আপনাদের সাহায্য এবং সহযোগিতায় আমরা একটি শক্তিশালী পাকিস্তানি রাষ্ট্র বানাবো।

পরিশেষ, আপনাদের প্রতি আবেদন, মিলেমিশে থাকেন, অসুবিধা, দু:খ-কষ্ট মানিয়ে চলেন এবং বৃহৎস্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থ কুরবানী দেন। কোন ঝামেলা, কোন কঠোর পরিশ্রম বা কোন কুরবানীই খুব বেশী নয়, যদি আপনারা সবাই ব্যক্তিগতভাবে এবং সমষ্টিগতভাবে দেশ এবং জাতির উন্নয়নে অবদান রাখেন। এটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনার পারেন পাকিস্তান কে, যেটি লোকসংখ্যার বিচারে পঞ্চম বৃহত্তম দেশ, শক্তিতেও বড়ো করতে, যাতে করে এটা অন্য সকল দেশের কাছে সম্মানের জায়গা পেতে পারে। এই শব্দগুলার মাধ্যমে আমি আপনাদের মধ্যে ঐশ্বরিক দ্রুততা কামনা করছি।

পাকিস্তান জিন্দাবাদ! পাকিস্তান জিন্দাবাদ!! পাকিস্তান জিন্দাবাদ!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১০ বিকাল ৩:০০
৯টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×