গত ৭ জুলাই বাংলাভিশনে পদ্মা সেতু নিয়ে অনুষ্ঠিত এক টক-শোতে এক দর্শক ফোনে অতিথিদের উদ্দেশে কিছু কথা বলেছিলেন। সেই কথার ট্রান্সক্রিপ্ট এরকম:
ধানমন্ডি ঢাকা থেকে -----------------------বলছি
আমি একটি কনসালটেন্সি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের পেশার সাথে জড়িত।
আমি পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে তথ্যভিত্তিক কিছু কথা বলতে চাই। আমাকে যদি ২/৪ টা মিনিট সময় দেন।
প্রথমে একটা জিনিস আমি পরিস্কার করতে চাই। এসএনসি লাভালিন সম্পর্কে মিডিয়ায় যে প্রচার হয়ে থাকে যে তারা সর্বনিম্ন দরপত্রদাতা। আসলে কন্টাক্টররা সর্বনিম্ন দরদাতা হলে তারা কাজটা পায়। কিন্তু কনসালটেন্টদের কাছে একটা ব্যাপার আছে টেকনিক্যাল ও ফিন্যান্সিয়াল প্রপোজাল চাওয়া হয়। দুটার আলাদা মার্কস থাকে। তারা একত্রে যোগ হয়ে সর্বোচ্চ নাম্বার যে হয় তারাই কাজটা পায়।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকরা সবসময় একটি কথা বলেন যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকাই ছাড় করলো না সেখানে দুর্নীতি হয় কিভাবে। এখানে দুর্নীতি কিভাবে হয়েছে সেটা আমি একটু তুলে ধরতে চাই।
৫টি ফার্ম কে শর্টলিস্ট করা হয়েছিল - হাইপার্নমেন্টাল ব্রিটিশ তারা যমুনা ব্রিজের কনসালটেন্ট ছিল, হ্যালকোও ব্রিটিশ তারা ভৈরব ব্রিজের কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছিল, এইকম নিউজিল্যান্ডের তারাও বাংলাদেশে অনেক রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ এর কাজ করেছে, ওরিয়েন্টাল জাপান তারাও বাংলাদেশে অনেক কাজ করছে। এসএনসি লাভালিন তারা কানাডায় অনেক বড় বড় কাজ করেছে কিন্তু বাংলাদেশ বা সাব-কন্টিনেন্টে কোন কাজ করার অভিজ্ঞতা তাদের ছিল না।
এই ৫ টি ফার্মের কাছে টেকনিক্যাল ও ফিন্যান্সিয়াল প্রপোজাল চাওয়া হয়। টেকনিক্যালি ৯০ মার্কস ছিল ও ফিন্যান্সিয়ালি ১০ মার্কস। এখানে একটি ইভাল্যুয়েশন কমিটি করা হয়েছিল। তারা এসএনসি লাভালিনের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রভাবিত হয়ে টেকনিক্যাল প্রপোজালে তাদের অনেক বেশি নাম্বার দিয়ে দেয়। যাতে ফাইন্যান্সিয়াল প্রপোজালে তারা লোয়েস্ট হতে না পারে, তারা যেন ২টা মিলে প্রথম হতে পারে। এই মার্ক দেওয়ার ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছিল।
এই নিয়ে অভিযোগ ওঠে, তখন সরকার ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ বিভিন্ন জনকে নিয়ে একটি রিভিউ কমিটি করে। তারা রিভিউ কমিটিও এই এসএনসি’র মার্কস ঠিক রেখে অন্যান্য ফার্মের মার্ক কিছু পরিবর্তন করে। কারন তারাও সরকারের ইনডিভিজুয়াল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। সে আনুগত্যের কারনে তারা এটা চেঞ্জ করেন। এরপরে এটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে যায়।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে থেকে অনুমোদন লাভ করে যখন আসে তখন এটা ফিন্যান্সিয়াল প্রপোজাল সবার সামনে খোলা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য এসএনসি লাভালিনের, দুর্নীতির মাধ্যমে টেকনিক্যাল প্রপোজালে এতো বেশী মার্কস নেওয়া সত্ত্বেও দুই প্রপোজাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ নাম্বার পায় ব্রিটিশ কোম্পানী হ্যালকো। এতে সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে।
তখন শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। ফিন্যান্সিয়াল প্রপোজাল ওপেন হওয়ার পর আইনত আর কিছু করা যায় না। কিন্তু এই কমিটি হ্যালকোর টেকনিক্যাল প্রপোজালে মার্কস থেকে আরো নাম্বার কমিয়ে এসএনসিকে ফার্স্ট বানিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অনুমোদেনের জন্য পাঠায়।
সরকার এই কমিটি প্রথম থেকে কিভাবে এসএনসিকে কাজটা দেওয়া যায় সে ব্যাপারে সর্বোতভাবে সচেষ্ট ছিল।
সুতরাং দুর্নীতি কিভাবে হয়েছে তা সহজেই বোধগম্য।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




