somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিহানুর ইসলাম প্রতীক
আমি প্রযুক্তি প্রিয় মানুষ; ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি ভালোবাসি। এছাড়াও ভালোবাসি বই আর লেখালেখি পড়তে। মাঝে মাঝে লিখতেও ইচ্ছা করে। এখানে যোগ দিয়েছি হঠাৎ কোন কিছু লিখে ফেললে সেটা সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য।

সতীত্ব কিংবা ভার্জিনিটি

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সতীত্ব কিংবা ভার্জিনিটি বলতে কি শুধু সতীচ্ছদ পর্দার অক্ষত থাকাকেই বুঝায়?

না, এর কোনো উত্তর দিতে হবে না। প্রশ্নটি কেবল লেখাটি শুরু করার আগে একটি উপমা ছিল। তবে এই প্রশ্নের জবাবে অধিকাংশের উত্তর কী হবে তা আমার জানা আছে। তারা বলবে, 'না, সতীত্ব বলতে কেবল সতীচ্ছদ পর্দার অক্ষত থাকাকে বুঝায় না। চূড়ান্ত ব্যাপারটি ছাড়াও এমনিতে পরপুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠতা হলেও অসতী হয়ে যায়।' হ্যাঁ, উত্তরটি ভুল নয়। তবে আমার চিন্তাধারাটা আরেকটু জটিল।

মানুষের দেহ হচ্ছে নিরপেক্ষ। মন যেভাবে দেহকে পরিচালনা করে, দেহ সেভাবেই পরিচালিত হয়। কোনো মেয়ে হয়তো এখনো কোনো পরপুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়নি, কিন্তু তার আগেই যদি মেয়েটির মন সেদিকে টলে যায় তবে আপনি তাকে কী বলবেন? হয়তো তার দেহটা কোনো সুযোগের অভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারছে না কিন্তু মনটা ইতোমধ্যে সেদিকে টলে গিয়েছে।

আসলে সতীচ্ছদ পর্দাটা কোনো ফ্যাক্ট নয়, ফ্যাক্ট হচ্ছে মানুষের মন। আপনি যদি ইতোমধ্যেই কোনো পরপুরুষকে নিয়ে মানসিকভাবে কামনায় মেতে উঠেন তবে আমার মতে আপনি আর সতী নন। মানসিক কামনা বলতে আমি কোনো কল্পনাকে বুঝাচ্ছি না। কল্পনা কিংবা স্বপ্নে অনেক কিছুই হতে পারে, সেজন্যে আমি আপনাকে অসতী বলবো না। কিন্তু কল্পনা যদি কেবল কল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, অর্থাৎ আপনি যদি আপনার সেই স্বপ্নপুরুষ কিংবা প্রেমিকের কাছে নিজেকে যেকোনো সময় সপে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন, কেবল সুযোগের অভাবে হয়ে উঠছে না ব্যাপারটা এরকম হয়, তবে আপনার সতীচ্ছদ পর্দা (Hymen) অক্ষত থাকা অবস্থাতেও কিংবা কারো স্পর্শ না পাওয়ার পরেও আমি আপনাকে অসতী বলবো। যেই মুহূর্ত থেকে আপনার প্রেমিক কিংবা কোনো পরপুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে আপনার আপত্তি থাকবে না, সেই মুহূর্ত থেকেই আপনি অসতী হয়ে গেলেন আমার চিন্তাধারা অনুযায়ী।

"I wouldn't say that raped girl non-virgin who never wished to have sex before marriage. Rather I would say that girl non-virgin who never had sex yet, but wish to have sex without marriage."

লেখাটিতে হঠাৎ কয়েকটি ইংরেজি বাক্য নিয়ে আসায় কিছু মনে করবেন না। আসলে আমার মাঝে এই ধরনের একটা চিন্তাধারা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই উপরের ঐ কয়েকটি লাইন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। তবে কারো যদি ঐ ইংরেজিটুকু বুঝতে সমস্যা হয় তবে বাংলায় অনুবাদ করে দিচ্ছি-
"আমি সেই ধর্ষিত মেয়েটিকে অসতী বলবো না যার কিনা কখনো বিয়ের আগে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। বরং আমি সেই মেয়েটিকে অসতী বলবো যে কিনা এখনো কারো সাথে মিলিত হয়নি বটে কিন্তু বিয়ে ছাড়াই মিলিত হতে ইচ্ছুক।"

এবার আসি আমার প্রশ্নের জবাবে যাদের উত্তর 'হ্যাঁ' হবে তাদের বিষয়ে অর্থাৎ যারা বলবে সতীচ্ছদ পর্দা (Hymen) অক্ষত থাকাকেই ভার্জিনিটি বলে। আপনাদের আমি খুব বেশি কিছু বলবো না, শুধু বলবো আপনাদের মতামত অনুযায়ী স্বয়ং সানি লিওনও নিজেকে ভার্জিন দাবি করতে পারবে। কিভাবে জানেন? কারণ এখন আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি দ্বারা সতীচ্ছদ পর্দাকেও পুনঃস্থাপন করা যায়। একে বলে Hymen Repair Surgery.

আমি এতক্ষণ শুধু মেয়েদের ভার্জিনিটি নিয়েই একতরফাভাবে কথা বললাম। আসলে এতক্ষণ আমি এটা প্রমাণ করতে চাইলাম যে, ভার্জিনিটিটা শারীরিক নয় বরং মানসিক। ঠিক তেমনিভাবে ছেলেদের ক্ষেত্রেও এটা সমানভাবে প্রয়োগ হবে। কোনো ছেলে যদি এখন পর্যন্ত শারীরিকভাবে মিলিত না হয়েও থাকে কিন্তু অবৈধভাবে মিলিত হতে ইচ্ছুক তবে আমি তাকে আর ভার্জিন বলবো না, নন-ভার্জিনই বলবো। সে হিসাবে এখন কোনো ভার্জিন ছেলে আছে বলে মনে হয় না এবং আমি নিজেও সে হিসাবে ভার্জিন নয়। I wished to have sex with more than thousand girls till now.

মানুষ হিসেবে ছেলে মেয়ে দুজনেরই যৌন অনুভূতি থাকলেও এটা তৈরি হওয়ার ব্যাপারটা আলাদা। ছেলেদের যৌন অনুভূতিটা হয় শরীর কেন্দ্রিক। এজন্যেই কোন সুশ্রী মেয়েদের শরীর দেখলে আমাদের সে ধরনের ইচ্ছা তৈরি হয়ে যায়। অন্যদিকে মেয়েদের যৌন অনুভূতিটা হয় ব্যক্তি কেন্দ্রিক। তাই তারা যার তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে না। তারা কেবল তাদের ভালোবাসার এবং পছন্দের ব্যক্তির সাথেই এটা করতে ইচ্ছুক থাকে। আর এ কারণেই আবাসিক হোটেল বা পতিতালয়ে কেবল ছেলেরাই যায়। টাকা খরচ করে মজা করে ফিরে আসে।

এবার আরেকটা প্রসঙ্গে যাই, পুরুষত্ব বলতে আপনি কী বুঝান? পুরুষত্ব বলতে কি পুরুষদের প্রচন্ড যৌনতা, যেখানে সেখানে সেই যৌনতার বহিঃপ্রকাশ কিংবা বিছানায় অনেকক্ষণ টিকে থাকাকে বুঝায়? একসময় আমি এরকমটাই ভাবতাম। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমার চিন্তাধারা এবং মানসিকতার যথেষ্ঠ পরিবর্তন হয়েছে। সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে পুরুষত্ব নিয়ে ভাবনা। প্রকৃত পুরুষত্ব হলো নিজের যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারা। আপনার কাছে যখন একজন পরনারী যথেষ্ঠ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিরাপদ থাকবে তখন আপনাকে আমি প্রকৃত পুরুষ বলবো। যৌনতা যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এবং উত্তেজিত অবস্থায় এটাকে নিয়ন্ত্রনে রাখা যে কতটা কঠিন তা কেবল একজন শারীরিক সুস্থ-সবল পুরুষই ভালো বলতে পারবে। সুতরাং এই যৌনতাকে যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সেই প্রকৃত পুরুষ, অন্যথায় সে কাপুরুষ। বাসে অনেক চাপাচাপিতে কোনো মেয়ের দেহের সাথে নিজের দেহ লাগিয়ে মজা নিলেন, কিংবা ব্রেকের তাল সামলাতে না পারার ভান করে কোনো মেয়ের গায়ে ধাক্কা দিলেন বা স্পর্শকাতর স্থানে হাত লাগালেন, তবে আমি আপনাকে একজন কাপুরুষই বলবো না কেবল, একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত বিকৃত মস্তিষ্কের পারভার্টেড অসুস্থ ব্যক্তিও বলবো। মেয়ে পেলেই বিছানায় নিয়ে যাওয়ার মধ্যে কোনো পুরুষত্ব নেই, আছে কেবল কাপুরুষতা।

এই লেখাটি আমি নিজেকে সাধু সাজানোর জন্য লিখিনি। আমি প্রকৃত পুরুষ কিনা সে বিষয়ে আমি নিজেও সন্দিহান। কিন্তু কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা, অনেক বই ও লেখালেখি পড়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আমার মাঝে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। সেসব পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে আমি নিজেকে একজন প্রকৃত পুরুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি কেবল। আর সেসব পরিবর্তনকে আপনাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই আমার আজকের এই লেখাটির অবতারণা। আসুন তথাকথিত পুরুষ না হয়ে প্রকৃত পুরুষ হয়ে উঠি।

লিখায়: রিহানুর ইসলাম প্রতীক

লেখাটি প্রথমে লেখকের ফেসবুক টাইমলাইনে প্রকাশিত। মূল লেখাটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
ফেসবুকে লেখক: Rihanoor Protik
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:২৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×