একই দিনে নৃশংসভাবে খুন হতে হলো একজন সাংবাদিক ও একজন লেখিকাকে। তাদের লাশ একই জায়গায় পায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ থেকে ধরে নেওয়া যায় যে তারা গতরাতে একসাথেই ছিলেন যখন কোন এক বা একাধিক ঘাতক তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে লাশটি লেকের ধারে ফেলে যায়। খুন হওয়া দুইজনারই পরিচয় পাওয়া যায়। খুন হওয়া ভদ্রলোক সাংবাদিক ছিলেন বিবাহিত, নাম আযাদ। বয়স আনুমানিক ৩৩। একটি স্বনামধন্য পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বিগত ৭ বছর ধরে। লেখালেখি করতেন মূলত ব্যবসা-বানিজ্য পাতায়। তার কোন ছেলে-মেয়ে ছিল না। স্ত্রীর সাথে তার বেশ মনোমালিন্য চলছিল গত কয়েকটি মাস।
আর যিনি লেখিকা তার নাম সুলতানা। বয়স ধরে নেওয়া যায় ২৯ থেকে ৩০ এর ঘরে। যতটুকু জানা যায় যে সুলতানা ছিলেন বিবাহিতা। তার ২ বছর বয়সের একটি মেয়েও ছিল। সে মারা গিয়েছিল নদিতে ডুবে। কয়েকমাস আগে পদ্মায় যে ফেরীটি ডুবে যায় এবং যার ফলে ৭৫জনের প্রানহানি হয় তার মধ্যে সুলতানার মেয়ে ও স্বামীও ছিল। সুতরাং সে বিধবাও। লেখিকা হিসেবে মোটামোটি সুনাম ছিল তার। খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত বই লিখেছিলেন ৯ টি। তার "চার শকুনের তান্ডব" বইটি ব্যাপক সারা ফেলেছিল পাঠক সমাজের মাঝে। এটি ছিল তার তৃতীয় বই।
আযাদ সাহেবের সাথে পরিচয় ছিল সুলতানার। যেহেতু আযাদ সাহেবের সাথে তার স্ত্রীর মনোমালিন্য ছিল আর যেহেতু আযাদ সাহেব ভালভাবেই সুলতানাকে চিনতেন আর যেহেতু আযাদ সাহেব ও সুলতানার লাশ একসাথে একই জায়গায় পাওয়া যায়, সেটি থেকে ধরে নেওয়া যায় যে আযাদ সাহেব ও সুলতানা একই সাথে রাত কাটিয়েছেন কোন এক জায়গায় যেখানে একজন ঘাতক বা একাধিক ঘাতক তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
গোয়েন্দা পুলিশ প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করলো আযাদ সাহেবের স্ত্রী'কে। হয়তো আযাদ সাহেবের স্ত্রী নাসরীনের হাত থাকতে পারে এই খুনের পেছনে। কিন্তু আযাদ সাহেবের স্ত্রী যে মানসিক রোগী! বর্তমানে তাকে এক মানসিক হাসপাতালে শিকল পড়িয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। পুলিশ যখন হাসপাতালে গিয়ে ব্যাপারটি জানতে পারলো তখন তারা আরো জটলার মধ্যে পরলো। ঘটনাটি তাদের কাছে আরো ঘোলাটে মনে হলো। কবে থেকে নাসরীন মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন তা জানার জন্য গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার আলমগীর হাসাপাতালে যান আরেকবার। আর সেখানে গিয়েই পরিচয় হয় তারানা নামের এক মনোরোগ চিকিৎসকের সাথে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৯