বিভিন্ন চ্যানেলের ঈদ আয়োজনে নাটকের পরই সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল সংগীতানুষ্ঠান। বরাবরের মতো কম-বেশি সব চ্যানেলেই প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালায় ধারণ করা ছাড়াও শিল্পীদের লাইভ সংগীতানুষ্ঠান প্রচার হয়। ঈদ এলে লাইভ সংগীতানুষ্ঠানের বিষয়টি এতটাই মহামারী আকার ধারণ করে যে, রাত ১১টা বাজলেই প্রায় সব চ্যানেলেই একযোগে সংগীতানুষ্ঠান প্রচার শুরু হয়। দু-একটি বাদে কোনো চ্যানেলেই অন্য কোনো অনুষ্ঠান এ সময় প্রচার হয় না।
লাইভ সংগীতানুষ্ঠানগুলোর ব্যাপ্তি গভীর রাত পর্যন্ত হলেও এর সিংহভাগ সময়ই বিজ্ঞাপন আর খবর প্রচার করা হয়। ফলে প্রিয় শিল্পীর লাইভ সংগীত শোনার ধকলও দর্শকদের কম পোহাতে হয় না!
এনটিভিতে এবারের ঈদে প্রচার হয় বিশেষ ধারাবাহিক সংগীতানুষ্ঠান ‘পঞ্চাঙ্কের গানশালা’। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে ঈদের ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রচারিত ৫ পর্বের এ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন শাকিলা জাফর। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানা, পারভীন সুলতানা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, মুনির খান, কনকচাঁপা, রিজিয়া পারভীন, অদিতি মহসীন, ফাতেমা তুজ জোহরা, খায়রুল আনাম শাকিল, অনিমা রায়, কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, আরফিন রুমি, এলিটা, কণা, সেলিম চৌধুরী, রাজিব, পারভেজ, নির্ঝর ও কিশোর। এ ছাড়া ঈদের পঞ্চম দিন প্রচার হয় ব্যান্ড সংগীতের অনুষ্ঠান ‘শিরোনামহীন’। অনুষ্ঠানে ব্যান্ড দল শিরোনামহীন তাদের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে।
আরটিভিতে ঈদের ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন রাত পৌনে ১২টায় প্রচার হয় ‘লাইভ স্টুডিও কনসার্ট’। এতে লাইভ সংগীত পরিবেশন করেন নগর বাউল জেমস (ঈদের দিন), শাহনাজ বেলী ও চুমকী (ঈদের ২য় দিন), মমতাজ (ঈদের ৩য় দিন), ফিডব্যাক (ঈদের ৪র্থ দিন), দোহার (ঈদের ৫ম দিন) এবং শ্রেয়শী ভট্টাচার্য্য (ঈদের ৬ষ্ঠ দিন)।
এটিএন বাংলায় ঈদের দিন রাত পৌনে ১টায় ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু এবং ঈদের তৃতীয় দিন রাত পৌনে ১১টায় জেমস গান পরিবেশন করেন। ঈদের তৃতীয় দিন রাত সোয়া ১২টায় ‘টিউন উইথ আস’ অনুষ্ঠানে ভাই-বোন জুটি ফাহমিদা নবী-পঞ্চম এবং বালাম-জুলি গান পরিবেশন করেন। ঈদের চতুর্থ দিন রাত পৌনে ১১টায় সাবিনা ইয়াসমীীনের একক সংগীতানুষ্ঠান প্রচার হয়। একই দিন রাত পৌনে ১টায় প্রচার হয় হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রের গান নিয়ে অনুষ্ঠান ‘চাঁদনী পসর’। এ ছাড়া ঈদের পঞ্চম দিন রাত পৌনে ১টায় প্রচার হয় ব্যান্ড দল মাইলসের ব্যান্ড সংগীতানুষ্ঠান। এটিএন বাংলার ভিন্ন ভিন্ন এসব সংগীতানুষ্ঠান দর্শকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলাভিশনে ঈদের আগের দিন মমতাজ ও আরিফ দেওয়ানের পালাগান প্রচার হয়। নতুন প্রজন্মের কাছে গানের লড়াই এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচিত করার জন্য চ্যানেলটি ধন্যবাদ পেতে পারে। এ ছাড়া চ্যানেলটির অন্যান্য সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যে ছিল ‘এলআরবির গান’, আপেল মাহমুদ, মো. আব্দুল জব্বার, শাম্মী আখতার, মো. খুরশীদ আলম ও শাকিলা জাফরের অংশগ্রহণে ‘সুবর্ণ সময়’, হৈমন্তী শুক্লাকে নিয়ে গান ও আড্ডার অনুষ্ঠান ‘স্বপ্ন তুমি’, ১৬ কণ্ঠশিল্পী ‘বেস্ট অব দ্য বেস্ট’, ফোক গানের অনুষ্ঠান ‘ময়ূরপঙ্খি নাও’, ‘বাজে ঝরণার গান’ ও ‘ভাব তরঙ্গ’।
একুশে টিভিতে প্রতিদিন রাত সোয়া ১২টায় প্রচার হয় ‘লাইভ স্টুডিও কনসার্ট’। অনুষ্ঠানে একজন সুরকারের সঙ্গে তিনজন শিল্পী উপস্থিত ছিলেন। সুরকার শেখ সাদী খানের সঙ্গে শিল্পী আলম আরা মিনু, নির্ঝর এবং অপূর্ব কুমার অপু ছিলেন ঈদের দিন। সুরকার আলী হোসেনের সঙ্গে শিল্পী পুতুল, শেখ জসীম এবং ফারহানা মিমি ছিলেন ঈদের ২য় দিন। সুরকার মাকসুদ জামিল মিন্টুর সঙ্গে শিল্পী প্রতীক হাসান, অনুপমা মুক্তি ও আশিক ছিলেন ঈদের ৩য় দিন। সুরকার আলী আকবর রুপুর সঙ্গে শিল্পী মৌটুসি, কিশোর ও সাব্বির ছিলেন ঈদের ৪র্থ দিন। সুরকার শওকত আলী ইমনের সঙ্গে শিল্পী সোনিয়া, পুলক, দিনাহ জাহান মুন্নি ছিলেন ঈদের ৫ম দিন। সুরকার ইবরার টিপুর সঙ্গে শিল্পী ঝিলিক ও মুহিন ছিলেন ঈদের ৬ষ্ঠ দিন। এ ছাড়া ঈদের পঞ্চম দিন প্রচার হয় সংগীতানুষ্ঠান ‘মিউজিক বাই বোট’। এতে সংগীত পরিবেশন করেন বেলাল, শফিক তুহিন, কাজী শুভ, নির্ঝর, খেয়া এবং ইমরান।
জি টিভিতে ঈদের ২য় দিন থেকে ৫ম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন রাত সোয়া ১১টায় প্রচার হয় ঈদ স্পেশাল স্টুডিও কনসার্ট ‘গানোফোন’। এতে সংগীত পরিবেশন করেন মমতাজ (ঈদের ২য় দিন), এস আই টুটুল (ঈদের ৩য় দিন), হায়দার হোসেন (ঈদের ৪র্থ দিন) এবং পারভেজ ও জয় (ঈদের ৫ম দিন)। এ ছাড়া একই চ্যানেলে ঈদের ৪র্থ দিন ব্যান্ড ‘পার্থিব’ ও ৫ম দিন ব্যান্ড ‘অরণ্য’ গান পরিবেশন করে।
বৈশাখী টিভিতে প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টায় প্রচার হয় লাইভ সংগীতানুষ্ঠান ‘সময় কাটুক গানে গানে’। এতে গান পরিবেশন করে রিংকু ও শশী (ঈদের দিন), এসআই টুটুল (ঈদের ২য় দিন), ন্যান্সি (ঈদের ৩য় দিন), পার্থ বড়–য়া (ঈদের ৪র্থ দিন), আরফিন রুমী (ঈদের ৫ম দিন), শাকিলা জাফর ও তপন চৌধুরী (ঈদের ৬ষ্ঠ দিন) এবং সালমা (ঈদের ৭ম দিন)।
মাছরাঙা টিভিতে প্রতিদিন রাত পৌনে ১২টায় প্রচার হয় ফোনোলাইভ স্টুডিও কনসার্ট ‘রাঙা রাত’। এতে গান পরিবেশন করেন সুবীর নন্দী (ঈদের দিন), খুরশীদ আলম (ঈদের ২য় দিন), আব্দুল জব্বার (ঈদের ৩য় দিন), রফিকুল আলম (ঈদের ৪র্থ দিন) ও ফরিদা পারভীন (ঈদের ৫ম দিন)। এ ছাড়া কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপার উপস্থাপনায় বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের আত্মজীবনী নিয়ে অনুষ্ঠান ‘স্টার নাইট’ এবং যন্ত্রশিল্পীর সমন্বয়ে ফিউশন মিউজিকের অনুষ্ঠান ‘ফিউশন, নো কনফিউশন’ প্রচারিত হয়।
চ্যানেল নাইনে ঈদের দিন প্রচারিত হয় গজলভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘নওবাহার’। এতে গজল পরিবেশন করেন শিল্পী সানি জুবায়ের। ঐতিহ্যবাহী ফোক ফর্ম ‘বাংলার জারী গান’ প্রচারিত হয় ঈদের দিন থেকে ঈদের চতুর্থ দিন পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রচার হয় বাউল গানের অনুষ্ঠান ‘ঈদ পার্বনের পালা’, সংগীতানুষ্ঠান ‘চেনা সুর চেনা গান’সহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান।
দেশ টিভিতে প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টায় লাইভ সংগীত পরিবেশন করেন দলছুট (ঈদের দিন), ফিডব্যাক (ঈদের ২য় দিন), এলআরবি (ঈদের ৩য় দিন), ব্ল্যাক (ঈদের ৪র্থ দিন), ওয়ারফেজ (ঈদের ৫ম দিন), এফএনএফ (ঈদের ৬ষ্ঠ দিন) ও মাকসুদ ও ঢাকা (ঈদের ৭ম দিন)। এ ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টায় লাইভ সংগীত পরিবেশন করেন শারমিন সাথী এবং ফাহিম হোসেন (ঈদের দিন), রুমানা ইসলাম এবং বাদশাহ বুলবুল (ঈদের দ্বিতীয় দিন), আলম আরা মিনু এবং পলাশ (ঈদের তৃতীয় দিন), সাব্বির এবং রন্টি দাশ (ঈদের চতুর্থ দিন), আঁখি আলমগীর এবং আতিক হাসান (ঈদের ৫ম দিন), কোনাল এবং রাফসান (ঈদের ৬ষ্ঠ দিন), অনুপমা মুক্তি এবং সন্দীপন (ঈদের ৭ম দিন)।
দিগন্ত টিভিতে ঈদের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম দিন রাত সোয়া ১১টায় প্রচার হয় ফোনোলাইভ মিউজিক্যাল শো মিউজিক আওয়ার ঈদ স্পেশাল। এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন শিল্পী সুবীর নন্দী (ঈদের ৩য় দিন), ন্যান্সি (ঈদের ৪র্থ দিন) এবং তপু (ঈদের ৫ম দিন)।
[ ফটো ক্যাপশন : বাংলাভিশনে ঈদের আগের দিন মমতাজ ও আরিফ দেওয়ানের পালাগান প্রচার হয়। ]
আলোচিত ব্লগ
সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?
যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।
নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন