৯ম পর্ব পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস (৯ম পর্ব - সালোনিকা ফ্রন্টে যুদ্ধ)
জার্মানী প্যারিস দখলের জন্য নতুন পরিকল্পনা নেয়। এর দায়িত্ব দেয়া হয় ক্রাউন প্রিন্সকে যিনি ৫০ টি ডিভিশনের সম্বন্বয়ে গঠিত জার্মান ৫ম আর্মির নেতৃত্বে আছেন। ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯১৬ ক্রাউন প্রিন্স তার বাহিনীকে নিয়ে শুরু করেন অপারেশন জাজমেন্ট। জার্মান বাহিনী প্রথমেই ফ্রান্সের পূর্বের শহর ভার্ডান আক্রমণ করে। প্রায় ১২৫০০০০ সৈন্য এই আক্রমণে অংশ নেয়। জার্মানরা অধিক সৈন্যর সাহায্যে এবং নতুন মারণাস্ত্র ফ্লেইম থ্রোয়ারের সাহায্যে খুব দ্রুত ভার্ডান দখলে অগ্রসর হতে থাকে। কিন্তু এই ফ্রন্টে ফরাসী বাহিনীর দায়িত্বে থাকা জেনারেল পেতান দ্রুত তার সৈন্য ভার্ডান রক্ষার জন্য প্রেরণ করেন। প্রায় ১২০০০ ট্রাক এবং ২০০ ট্রেনের সাহায্যে তিনি কিছুদিনের মধ্যেই ১১৪০০০০ সৈন্য এই ফ্রন্টে নিয়োজিত করেন।
ক্রাউন প্রিন্স
পেতান
এই দুই বিশাল বাহিনী ভার্ডান দখল-রক্ষায় মরনপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। প্রতিমাসে দুই পক্ষের প্রায়৭০০০০ সৈন্য এই ফ্রন্টে নিহত বা আহত হতে থাকে। এরই মধ্যে মিত্র বাহিনী উত্তরে শম নদী তীরে তীব্র আক্রমণ করে। ফলশ্রুতিতে জার্মানরা বাধ্য হয় ভার্ডান থেকে কয়েক ডিভিশন সৈন্য শম ফ্রন্টে প্রেরণে। এভাবে জার্মানরা ধীরে ধীরে এই ফ্রন্টে পরাজয়ের দিকে এগুতে থাকে। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯১৬ চূড়ান্ত ভাবে জার্মানদের ভার্ডান আক্রমণ অভিযান পরাজয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। কিন্তু ৩০৩ দিনব্যাপী এই যুদ্ধে দুইপক্ষের সাত লক্ষাধিক সৈন্য আহত ও নিহত হয়, যা মানব ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী একটি যুদ্ধ।
১ জুলাই,১৯১৬ মিত্র বাহিনী শম নদীর দুই তীর দখলের জন্য শুরু করে তাদের যৌথ আক্রমণ। এই আক্রমণের পরিকল্পনা ডিসেম্বর, ১৯১৫তেই মিত্র বাহিনী নেয়। কিন্তু জার্মানীর ভার্ডান আক্রমণে তাদের পরিকল্পনা ব্যাহত হয়। মিত্র বাহিনীর ৯৯ টি ডিভিশন এই আক্রমণে অংশ নেয় যার যৌথ নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিটিশ জেনারেল হেইগ এবং ফরাসী জেনারেল ফচ। এই ফ্রন্টে জার্মান ২য় আর্মির ৫০ ডিভিশন সৈন্য মোতায়েন করা ছিল।
হেইগ
ফচ
মিত্র বাহিনী প্রথমেই আক্রমণ করে আলবার্ট ও বাপুম শহরে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা এই দুই শহর দখল করে ফেলে। এসময় দুই পক্ষই যুদ্ধবিমানের বহুল ব্যবহার করে। ইতিমধ্যে সেপ্টেম্বর,১৯১৬ তে ব্রিটিশ বাহিনী তাদের নবসৃষ্ট যুদ্ধাস্ত্র ট্যাঙ্ক ব্যবহার শুরু করে যাতে করে মিত্র বাহিনী সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে যায়। এভাবে যুদ্ধ চলতে থাকে নভেম্বর পর্যন্ত এবং ১৮ নভেম্বর মিত্র বাহিনীর শম আক্রমণ সমাপ্ত হয়।পেরোন শহরের আগ পর্যন্ত এসে। এর মাধ্যমে মিত্র বাহিনী জার্মান অধিকৃত এলাকার ৬ মাইল ভিতরে ঢুকে পড়ে। কিন্তু এজন্য তাদের ৬ লক্ষাধিক সৈন্যর জীবন দিতে হয়, অপরপক্ষে জার্মানরাও প্রায় ৫ লক্ষ সৈন্য হারায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৩