বলুন তো, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বায়োলজিক্যাল ভ্যালু সমৃদ্ধ খাবার কোনটা। একটু সহজ করে দিচ্ছি। কোন প্রোটিন যুক্ত খাবারে সব দরকারী এমাইনো এসিড গুলো এমন সুন্দরভাবে বিন্যস্ত আছে যে এটি সহজেই, সবচেয়ে বেশি পরিমানে (গ্রহণ করা খাবারের অংশ) এবং সুন্দরভাবে শরীরে কাজে লাগে।
কি ভাবছেন, দুধ এর কথাই তো?
বিনয়ের সাথে জানাচ্ছি আপনি ভুল ভাবছেন।
দুধের বায়োলজিক্যাল ভ্যালু ৮৪.৫ আর ডিমের ৯৩.৭ (Food and Agriculture Organization)। তাছাড়া এক গ্লাস দুধ থেকে আপনি পাবেন ৪ গ্রাম প্রোটিন আর একটা ডিম থেকে ৭.৫ গ্রাম। তাছাড়াও পাবেন দুধের চেয়ে দ্বিগুন পরিমান আয়রন, ফসফরাস।
দুধ আর ডিম নিয়ে ঝগড়া করা আমার উদ্দেশ্য নয়। দুধ নিঃসন্দেহে আদর্শ খাদ্য। কিন্তু আমাদের চারপাশের যারা মনে হাজারো ভুল ধারণার কারনে ডিম খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, তাদের বলছি, ডিমের পুস্টিগুন দুধের চেয়ে কোন অংশেই কম না বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশি। তাছাড়া, পৃথিবীর সবচেয়ে সহজলভ্য প্রোটিন উপাদান এবং কমপ্লিট সুষম খাবার ডিম এ প্রোটিন, এমাইনো এসিড, ভিটামিন, মিনারেল সহ অন্যান্য খাদ্য উপাদান এমনভাবে আছে যা পৃথিবীর আর কোন একক খাবারে নেই।
ডিম দিবসের নাম শুনলেই অনেকে ফিক করে একটা হাসি দেয়। বিনয়ের সাথেই বলছি, ডিম খাওয়া নিয়ে মানুষের মনে অসংখ্য ভুল ধারনা আছে। এইসব ভুল ধারনা দুর করার জন্য হলেও ডিম দিবস এবং ডিম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
আজ বিশ্ব ডিম দিবসে এই আহবান করছি সকলের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হোক, সকলেই সুস্থ্য থাকুক। আর শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি সেই সব পোল্ট্রি বিজ্ঞানীকে যাদের গবেষণার ফলে মুরগী বছরে মাত্র ৪০-৬০ টি ডিমের বদলে আজ দিচ্ছে ৩০০ এর অধিক ডিম।
কিছু ভুল ধারণাঃ
* দেশী মুরগির ডিমের পুস্টি ফার্মের ডিমের চেয়ে বেশি।
* কাঁচা ডিম খেলে বেশি পুস্টি পাওয়া যাবে।
* কুসুম যত গাঢ় রং এর হবে ডিম তত পুস্টিকর।
* ডিমের খোসার রং এর উপর পুস্টি গুন নির্ভর করে।
* ডিমের কোলেস্টেরল ক্ষতিকর।
* হাঁসের ডিমে পুস্টি কম।
একজন পোল্ট্রি গ্রাজুয়েট হিসেবে বলছি উপরের (*) চিহ্নিত সবগুলোই ভ্রান্ত ধারণা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২১