যৌথ পরিবারের উদাহরণ দিয়ে শুরু করি, চার ভাই চার মনের মানুষ। চার ভাই-ই একইসাথে থাকেন, আই মিন একই পরিবারের সদস্য। সবাই-ই পরিবারের জন্য কাজ করেন, যদিও সবার মধ্যে ব্যাপক মতপাথর্ক্য রয়েছে। খুব বড় বড় সমস্যায় (যেমন পরিবারের অস্তিত্ব যেখানে প্রশ্নের সম্মুখীন) যখন পড়েন সবাই-ই আবার এক হয়ে যান। পরিবারে যে সচ্ছলতা আছে এমনটি নয়, তবুও কেউ তাদের পরিবারকে অচল পরিবার বললে খুব শক্তভাবেই ডিফেন্ড করেন। তবে পরিবারের ভিতরের কেউ এই দাবী বাইরে থেকে তুললে তখনই প্যাঁচ বাঁধে। অবশ্য এমনটি কখনই ঘটে না। তবে এটা ঠিক সবাই কোন না কোনভাবে ডমিনেন্ট করতে চান। এ ব্যাপারে একটা প্রতিযোগিতা চলে, তিনিই ডমিনেন্ট করেন যার যোগ্যতা যখন বেশি থাকে।
বাংলাদেশের মানুষ আসলে যথেষ্ট রাজনীতি সচেতন। তারা যে কারণেই যে দলকে পছন্দ করে থাকুন না কেন দেশের খোঁজখবর রাখেন, একেবারেই বিশেষজ্ঞদের হাতে ছেড়ে দেন না। এদেশে নানান কিসিমের মানুষ আছেন, বেশিরভাগই সহজ সরল। প্যাঁচ-গোজ কম বোঝেন। বেশি জনসংখ্যার দেশ বলে দুর্র্ঘটনার খবর বেশি নজরে আসে। তবুও অন্য অনেক দেশের থেকে এদেশে দুর্ঘটনা কম। গুজরাটের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নাই, সুদানের মত ক্ষুধা নাই, কাশ্মীর-ফিলিস্তিনের মত জীবনব্যাপী যুদ্ধ নাই, ইউরোপ- আমেরিকার মত ভঙ্গুর পারিবারিক ব্যবস্থা নাই, আফগানিস্তান-পাকিস্থানের মত ব্যাপক জঙ্গি সমস্যা নাই, ইরাকের মত জাতিগত আক্রোশ নাই, আছে বীজ ফেললেই ফসল ফলানোর মত জমি, প্রাকৃতিক সম্পদ আর সবচেয়ে বড় যে জিনিস তা হচ্ছে এদেশের শান্তিকামী মানুষ।
আমি অবাক হয়ে যায়, যখন দেখি টিভি রিপোর্টাররা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিয়ে রিপোর্ট করতে যান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাক্ষাতকার নেন- তবুও তাদের হাসিমুখ। রাতে ঠিকানাহীন মানুষের সাক্ষাতকার নেন তবুও তাদের কষ্টের কথা স্বতস্ফুর্তভাবে বের হয় না। ফলে রিপোর্টে করুণার ভাব আনতে আলাদা টোন এড করতে হয়।
এদেশকে কিভাবে দেখতে চান, সেটা নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের স্বপ্ন লালন করেন। কেউ মনে করেন সমাজতন্ত্রই আমাদেরকে ভাল চালাতে পারবে, কেউ ভাবেন ধর্মনিরপেক্ষতা, কেউ মনে করেন জাতীয়তাবাদ, আবার কেউ ইসলামের সাবর্জনীনতাকে তুলে এনে এখানে মুক্তির পথ খুঁজেন। সে কারণেই কারও কাছে আলোড়িত চরিত্র চে গুয়েভারা, কারও কাছে গান্ধীজি বা বঙ্গবন্ধু, কেউ বা মেজর জিয়া আবার এমনও অনেকে আছেন যারা রাসুলের আদর্শ দ্বারাই বেশি আলোড়িত হন। তবে আমার কাছে যে জিনিসটি স্পষ্ট তাহলো দেশকে ভালোবাসেন না এমন লোক নেই। আগে প্রায়ই বলতে শুনতাম অমুক দেশের শত্রু ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার মনে হয় না কেউ সচেতনভাবে দেশের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখেন। তবে এটা ঠিক অনেকে স্বার্থকে বড় করে দেখেন, স্বার্থকে টিকিয়ে রাখতে অসচেতনভাবে দেশের বিরুদ্ধেও ভূমিকা রেখে বসেন।
আজ আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই, স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখা জরুরী- উপরের পরিবারের মত। সকলেরই উচিত, নিজের আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করেন- ভাল কথা। কিন্তু দেশকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা এটা আপনাদের আদর্শের জন্যই কল্যাণকামী নয়। তবে আদর্শই যদি এমন হয় যে, মানুষে মানুষে বিভক্তি-বিদ্বেষ ঘৃণাবোধ গড়ে তোলা তাহলে এতে সফল হওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এরকম মানুষ অন্তত বাংলাদেশে নাই।
আলোচিত ব্লগ
=হিংসা যে পুষো মনে=

হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।
কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন
গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।
রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।