somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম আমলে ভাস্কর্য-চর্চা

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। রাসুল সা. এর যুগে বাইজান্টাইন মুদ্রার প্রচলন ছিল। এসব মুদ্রায় হিরাক্লিয়াসের ছবি মুদ্রিত ছিল। হিরাক্লিয়াস স্বয়ং রাসুল সা.-কে এ-সব মুদ্রা উপহার হিসাবে পাঠিয়েছিলেন।

২। হজরত আবু বকর, হজরত উমর, হজরত আলীর যুগেও ভিনদেশী আরো নানা রকমের মুদ্রার প্রচলন ছিল, যে-গুলোতে শাসকদের ছবি মুদ্রিত ছিল।

৩। হজরত মুয়াবিয়াহ প্রথম নিজ পরিচিতি ও ছবি খোদাই-করা মুদ্রার প্রচলন করেন।

৪। পরবর্তী খলিফা আবদুল বিন মারওয়ান, খলিফা আল-আমিন, খলিফা আল-মুতাওক্কিল বিল্লাহ, বাদশাহ আল-মুকতাদির বিল্লাহ, বাদশাহ নুরুদ্দিন জঙ্গি প্রমুখ মুদ্রায় নিজ পরিচিতিসহ ছবি মুদ্রণ করেন।

৫। স্পেনের মসজিদ-রাজপ্রাসাদসহ শহরের নানা জায়গায় মানুষের এবং অন্যান্য প্রাণীর ছবি ও ভাস্কর্য ছিল। খলিফা আবদুর রহমানের নিজ দাসী জাহরার নামে যে নগরী নির্মাণ করা হয়, যেখানের প্রধান ফটকে জাহরার ভাস্কর্য ছিল। কর্ডোভার মসজিদের তিন থামে তিনটি ছবি ছিল: (ক) একটিতে নবী মুসার লাঠি; (খ) দ্বিতীয়টিতে আসহাবে কাহাফের ছবি, (গ) তৃতীয়টিতে ছিল নুহের কাক। ‘নাফহুত তিব’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা আল-মাগরিবির মতে, আল-জাহরা রাজপ্রাসাদের সম্মুখে ভয়ঙ্কর সিংহমূর্তির ভাস্কর্য ছিল।

৬। ঐতিহাসিক আজরাকি ‘আখবারু মক্কা’ গ্রন্থে একটি বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে বলা হয়েছে যে, মক্কা-বিজয়ের পর রাসুল সা. যখন কাবায় প্রবেশ করেন, তখন শায়বা বিন উসমানকে বলেন, আমার হাতের নিচ ছাড়া সকল ছবিই ধ্বংস করে দাও। রাসুল সা. হাত সরানোর পর দেখা গেল, সেখানে ঈসা আ. ও তাঁর মা মরিয়মের ছবি।

৭। বিভিন্ন মুসলিম বিজয়ের পর সে-সব অঞ্চলের মূর্তি ও ভাস্কর্যকে অক্ষত ও বহাল রাখার কথা ইতিহাসে নানাভাবে বর্ণিত হয়েছে।

৮। ধ্র“পদী ধারার ফিকহ-শাস্ত্রবিদদের অন্তর্ভুক্ত ইবনে হাজাম, গাজ্জালি, কুরাফি, মাক্কি বিন হামুশ, নুহাস, কুরতুবি প্রমুখ ছবি ও ভাস্কর্যকে বৈধ বলেছেন।

৯। আধুনিক ধারার ফিকহশাস্ত্রবিদদের থেকে মুহাম্মদ আবদুহু, মুহাম্মদ আম্মারাহ, কাজী উমর মুখতার, ইসমাইল আল-ফারুকি ছবি ও ভাস্কর্যশিল্পকে বৈধ বলেছেন।


তথ্যসূত্র:
تطور الكتابات و النقوش علي النقود العربية : الدكتور إلياس البيطار
الإسلام والفنون: الدكتور إسماعيل الفاروقي
فن النحت: الدكتور عمر مختار القاضي
فلسفة الفنون في الإسلام : محمد عبد الواحد حجازي
الإسلام و الفنون الجميلة : محمد عمارة
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×