somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশ্য পাঠ্য আগুন পোস্ট

২৪ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সারাদিন জামাতিদের প্রচুর আলতুফালতু পোস্ট দেখে আর ভাল্লাগছিলোনা, আগে পড়া কিছু বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি করে ফেললাম এই অবশ্য পাঠ্য আগুন পোস্ট।

১. ইদানিং জামাতিরা সরকারের নারী নীতি নিয়ে ভীষণ ক্ষেপে আছে। কিন্তু তাদের গুরু মওলানা আবু আলা মওদুদীর নারী নীতি কী ছিলো তা কি তারা জানে? আবু আলা মওদুদী ১৯৬৪/৬৫ সাল পর্যন্ত নারী-শাসনের ঘোর বিরোধী ছিলেন। আওরাত-জেনানাদের রাজনীতিতে টেনে আনা, পার্লামেন্টের সদস্য হতে দেয়াকে ইসলামবিরোধী বলেছিলেন তিনি। দস্তুরী তাযাবীয গ্রন্থের ৬ পৃষ্ঠায় মওদুদী বলছেন, “আইন পরিষদগুলোতে মহিলাদের সদস্য হওয়ার অধিকার দেয়া হলো পাশ্চাত্য জাতিসমূহের অন্ধ অনুকরণ। ইসলামের নীতিমালা এ অনুমতি দেয়না। ইসলামে রাজনীতি ও দেশের প্রশাসনিক দায়িত্ব কেবলমাত্র পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।” আবু আলা মওদুদী রচিত তাফহিমুল কোরান গ্রন্থের ৪৬ পৃষ্ঠায় বলা আছে, “পবিত্র কোরানের স্পষ্ট নির্দেশ থাকার পরও এ কথার কী অবকাশ আছে যে, মুসলিম মহিলারা কাউন্সিল ও পার্লামেন্টের সদস্য হবে? ঘরের বাইরে সামাজিক তৎপরতায় দৌড়াদৌড়ি করবে, সরকারী দফতরে পুরুষদের সাথে কাজ করবে, কলেজগুলোতে ছেলেদের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করবে, বিমান ও রেলকারে যাত্রীদের মনোরঞ্জনে ব্যবহৃত হবে এবং শিক্ষাদীক্ষার উদ্দেশ্যে আমেরিকা-ইংল্যান্ড যাবে?” ১৯৬১ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কন্যা রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন কিনা এ নিয়ে মওদুদী সাহেব ফতোয়া দেন, “মহিলাসমাজের কর্মক্ষেত্রই আলাদা। সুতরাং ফাতেমা জিন্নাহর রাষ্ট্রপ্রধানের পদ গ্রহণের প্রশ্নই ওঠেনা। এটা হলো পুরুষের কাজ।”

ভালো মন্দ যাই হোক এপর্যন্ত সবকিছুতো অন্তত একটা সুরেই ছিলো। কিন্তু ১৯৬৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যখন সম্মিলিত বিরোধীদলীয় প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহর জয়লাভের সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখনই সুর পালটে ফেললেন আমাদের মওদুদী ছাহেব, “মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপারে কোনই বাধ্যবাধকতা নেই। মহিলাদের নেতৃত্বে যুদ্ধ করা বা হজ্ব করা অবৈধ বলাও অন্যায়। আমাদের ওপর ফরয হলো মিস ফাতেমা জিন্নাহকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে বর্তমান সরকারকে নিয়মতান্ত্রিক পথে ক্ষমতাচ্যুত করা। আল্লাহতায়ালা এরচেয়ে সুবর্ণ সুযোগ আর দান করতে পারেননা।”

কেউ কি আমাকে বুঝিয়ে দেবেন এদের নারী নীতি আসলে কী?

২. ‘মুরতাদ কি সাজা ইসলাম মে’ নামে আবু আলা মওদুদীর একটা বই আছে। তার থেকে কিছু উদ্ধৃত করছি-

“যে এলাকায় ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হবে, সেখানে (জন্মগত) মুসলমানদের নোটিশ দিতে হবে যে, যারা আকিদা ও আমলের দিক দিয়ে ইসলাম থেকে বিমুখ হয়েছে এবং বিমুখ হয়ে থাকাই পছন্দ করে, ঘোষণার তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে অমুসলমান হওয়ার রীতিনীতি প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে ইজতিমায়ী নিযাম থেকে বের হয়ে যেতে হবে। এ সময়ের পরে যারা মুসলমানের বংশে জন্ম নেবে তাদেরকে মুসলমান গণ্য করা হবে। তাদের ওপর সম্যক ইসলামী আইনকানুন প্রয়োগ করা হবে। ধর্মের সকল ফরয ও ওয়াজিবগুলো তাদেরকে বিনা ব্যতিক্রমে পালন করতে বাধ্য করা হবে। অতঃপর ইসলামের গন্ডির বাইরে যে-ই পদার্পণ করবে, তাকেই কতল করা হবে।”

৩. সাম্রাজ্যবাদ মওদুদী স্টাইল-

“অমুসলমান দেশগুলোতে নিমন্ত্রণ কার্ড পাঠাতে হবে। কিন্তু শক্তি লাভ মাত্র ওইসব দেশে (বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোতে) আক্রমণ চালাতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে কাফেরদের প্রচার নিষেধ করা হবে এবং কাফেরদের মধ্যেও কাফেরদের প্রচার নিষেধ করা হবে।” বই- ‘মুরতাদ কি সাজা ইসলাম মে।’

৪. “কোরান হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়”- এই মারাত্মক কথা মওদুদী বলেছেন ‘তাফহিমাত’ গ্রন্থের ৩১২ পৃষ্ঠায়।

৫. জামায়াত প্রেমিকরা একটা অভিযোগ সবসময়ই করে থাকে যে, তাদেরকে নাকি ব্লগে প্রচুর খারাপ অশ্লীল কথাবার্তা হজম করতে হয়। তাদের জন্য দিচ্ছি সাঈদীর এই ওয়াজের অংশবিশেষ, অশ্লীল কথা কারা বলে বোঝা যাবে এবার ভালোমত-

“হায় মুসলমান, সেই মুসলমান, সেই নবীর উম্মত, এক পাতা ইংরেজি বই পড়ে আর বলে, হোয়্যার ইজ গড? আল্লা কোথায়? বলেন নাউযুবিল্লাহ। মাস্টার সাহেব ক্লাসে বলে, মানুষ ছিলো বান্দর। তার পাছায় লেজ ছিলো। সেই লেজ ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেছে। তবে এখনো মানুষের পাছার কাছে লেজের অংশবিশেষ রয়ে গেছে। বিশ্বাস না হয় নিজের পাছা দেখো। ছাত্রছাত্রীরা শোনে, আর কাপড়ের নিচে হাত ঢুকায়া দেয়, সত্যিই তো লেজের মতো কী দেখা যায়! বলেন নাউযুবিল্লাহ। এই জন্যেইতো আমি বলি, ওইটা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বেশ্যাবিদ্যালয়, ওইখানে আহাম্মক শরীফ আর উমরউদ্দিন বদরা বদমায়েশি শিক্ষা দিতেছে। ভাই সাহেবরা জোরে আওয়াজ দেন, ১২ কোটি মুসলমানের দেশে ডারউইন সিলেবাসে থাকবে?”

৬. জামাতি ব্লগারগণ, এতক্ষণ ধরে যা পড়লেন তা নিশ্চয়ই আপনাদের আগে থেকেই জানা ছিলো। তবু আপনারা জামায়াতে ইসলামী নামক বিষফোঁড়ার পাতা চমৎকার ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে কেনো পারেননা সেই গোমরটা ফাঁস করছি (এটা আছে ‘মুরতাদ কি সাজা ইসলাম মে’ বইয়ের ৫২ পৃষ্ঠায়)-

“জামায়াতে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তিকে আগেই জানানো হয় যে, এখান থেকে ফিরে যাওয়ার শাস্তি মৃত্যু।”

সবাইকে ধন্যবাদ।
৩৩টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×