somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন বই পড়ুয়ার আত্মকাহিনী

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন বই পড়ুয়ার আত্মকাহিনী
=====================================
ছোট বেলায় যখন বই পড়তাম। তখন বইপড়া নিয়ে আগ্রহ বলতে নতুন বই হাতের পাওয়ার পরের মুহুর্ত থেকে শুরু করে দু'একদিন পর্যন্ত। বই হাতে পাবার পরই মনে মধ্যে ঈদের আমেজ চলে আসতো। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে ঈদের জামা কাপড়ও এতো মনোযোগ দিয়ে দেখতাম না। এক বার ট্রায়াল দিয়ে বাসার সবার কিছু মন্তব্য পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল।

কিন্তু নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে টানা দু'এক দিন বইয়ের ইমেজ সারাক্ষণ ভেতরে কাজ করতো। কথা বার্তা কাজ সব কিছুতেই শুধু নতুন বই ভেসে উঠতো। তখন সব ব্যস্ততা থাকতো নতুন বইকে ঘিরে। অতি ভদ্র এবং খুব মনোযোগী ছাত্রের মতো সবগুলো বই নিয়ে টেবিলে বসতাম। পড়ি আর না পড়ি বুঝি আর না বুঝি সব বইয়ের লাষ্ট পৃষ্ঠা পর্যন্ত চোখ বুলাতাম।

দিন পার হতে থাকতো বইগুলো সাথে আমার দূরত্বও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকতো। একটা সময় দেখা যেতো কিছু বই শুধু সপ্তাহে দু'এক বার পড়া হতো। আর কিছু বই যত বিরক্তিকর আর যত অপছন্দের হোক না কোন সেগুলোই প্রতিদিন পড়তে হতো। তখন মাঝে মাঝে মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতো। এই সব বই কে লিখছে। আর এভাবে কেনো লিখছে। আর নানা রকম প্রশ্ন। বিরক্তিকর আর অপছন্দ যাই বলি তারপরও সেই বইগুলোই খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হতো।

সারা মাস যতই এদের অপছন্দ করি না কেনো যখন পরিক্ষার সময় কাছে চলে আসতো, এদের প্রতি অন্য রকম একটা আগ্রহ জাগতো। আর পরিক্ষার আগের রাতে খুব আফসোস করতাম। যদি আর একটু পড়ার সময় পেতাম। প্রতি পার্বিক পরীক্ষা শেষ হবার পর বুঝতে পারতাম। আরো বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়া দরকার ছিলো বইগুলো।

এই ইমেজ নিয়ে পুরো স্কুল লাইফ পার করার পর কলেজ লাইফ। এখানেও সেই একি চিত্র। তারপর ভর্তি যুদ্ধের পালা। এই পালায় আসলে সত্যিকার অর্থেই পড়েছি। অনেক পড়েছি। চকলেট বোম এট্যাম বোম আর গ্রেনড এর মতো অনেক বইও পড়েছি। তাও হলো না। ভর্তি যুদ্ধে পরাজিত হলাম।

কিন্তু বই পড়া বা বই নিয়ে গতানুগতিক যে সব ধারনা পোষন করতাম তা থেকে পুরো আলাদা একটা ইমেজ তৈরি হলো। কিন্তু বর্তমান সময়ের ডানে বায়ের এতো বিনোদন আর বন্ধু বান্ধবের আড্ডায় যা পেতাম তার কিছু তখন এর মধ্যে পেতাম না। তখন আবার এই বই পড়ার উপর ভয়াবহ রকমের বিরক্তি চলে আসলো। সেই বিরক্তির মাত্রা এমন ছিলো যে। আমার বাসার ১০০০ হাজার বই পড়ে থাকতো। কিন্তু সেই বই ছুঁয়ে দেখা দূরে থাক পরিষ্কার করার কথা বললে বুয়াকে দিয়ে পরিষ্কার করাতাম।

তারপরের সময়গুলো সত্যিই জীবনের সবচেয়ে দামী সময়। এই সময়গুলোতে এসে কোথাও কাউকে খুঁজে পাই না। যা ভাবি যা চিন্তা করি বাস্তবে তার কিছুই হয় না। এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো না কাউকে বলতে পারি না বুঝাতে পারি। না সহ্য করতে পারি। কোন কুল কিনারা না পেয়ে তখন সাইবার ক্যাফে বসতাম। কিছুটা নিজেকে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবার জন্য।

ওখানেও নিজেকে হারাতে খুব বেশি সময় নেই নি। অনেক কিছু ইচ্ছে করতো তাও পারতাম না। অবশেষে আবার সেই বই। নেটের বা কম্পিউটারের টুকটাক কিছু জানার জন্য আবার সেই বইয়ে ফিরে এলাম।

এবার বই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুর মত সব বিষয়েই সাড়া দিচ্ছে। মাঝে মাঝে পত্রিকার পাতায় কিছু লেখালেখি সময় কাটানোর জন্য পড়তাম। কিন্তু সেটা ছিলো নিছক সময় কাটানো মাত্র। কিন্তু যখন ফেবুতে এসে সময় কাটাতে শুরু করলাম। তখন ইচ্ছে করেই টুকটাক লেখা লেখি পড়া শুরু করি। পড়ার আগ্রহটা বেশিই জাগতো অনেকের অনেক কথা মিলে যেতো। সেটাই ছিলো মূল কারন।

একটা সময় সেগুলো্ও আর ভালো লাগে না। কারন সবাই ঘুরে ফিরে ওই এক বিষয় নিয়েই লেখালেখি করে প্রায় সবাই। আবার কখনো কখনো যা লিখে তা দেখে গায়ে ১০০ ডিগ্রী জ্বর চলে আসতো। তখন মাঝে মাঝে কমেন্টেস এ বড় বড় রিপ্লাই দিতাম।

একটা সময় কিছু অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে শুরু করলাম বিভিন্ন লেখকদের অনেক আগের লেখা বিভিন্ন গল্প কবিতা উপন্যাসে। এবার সত্যিকারের বই পড়ুয়া হয়ে উঠতে শুরু করলাম। পুরো দমে বই কিনি বই ধার করেও পড়ি। আর বাসায় পড়ে থাকা সেই ১০০০ হাজার বইয়ের কথাও মনে করি। আর এখন তো টুকটাক নিজেও লিখি। থাক অনেক বলে ফেললাম আজ এ পর্যন্তই থাক। বর্তমান সময়ের কথাটা না হয় পরের পোস্টেই বলি.. :)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৪:০৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×