somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমুর সিম ভেরিফিকেশন (বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রম্য করার চেষ্টা)

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"বলুন কি করতে পারি আপনাদের জন্য। "
হিমু জবাব না দিয়ে মধুর ভঙ্গিতে হাসলো। সে হাসিতে এক নামী দামী কর্পোরেট অফিসের ডিজিএম- হাসান সাহেব বিভ্রান্ত হলেন কি না, ঠিক বোঝা গেলো না। তিনি আগের মতই স্পষ্ট গলায় বললেনঃ "আপনি কি কারো রেফারেন্সে এসেছেন?"
"জ্বি না স্যার! আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। কারো রেফারেন্স নিয়ে আসার মত ন্যুনতম যোগ্যতাটুকুও আমার নেই।"
"আপনারা কোথা থেকে আসছেন?"
"আমি এসেছি আগামসি লেনের একটা মেস থেকে। আর উনি এসেছেন সুদূর নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে...."
"নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে আমার কাছে কিসের জন্য- জানতে পারি?"
হিমু এ পর্যায়ে বিনীত গলায় বললো-"স্যার উনার নাম মনসুর বয়াতি, উনি বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী আব্দুল কুদ্দুস বয়াতির শিষ্য। মনসুর ভাই আসলে আপনার কাছে আসেন নি, এসেছিলেন আমার কাছে। আমি আপনার অফিসে আসার সময় উনাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।"
হাসান সাহেব নিজের চেয়ার থেকে কিছুটা সামনের দিকে ঝুকে পড়ে বললেনঃ

"একটু খুলে বলুন তো হিমু সাহেব! অবশ্য খুব বেশি সময় আমি আপনাদের দিতে পারবো না। এগারোটার দিকে আমার একটা মিটিং আছে...."
"আমি আপনার দশ মিনিটের বেশি সময় নেবো না। সত্যি বলতে- আমার এখানে আসার উদ্দেশ্যই হোল আপনাকে শুধু একটা রিপোর্ট হ্যান্ড-ওভার করা। তারপরই আমার কাজ শেষ!"
"কিসের রিপোর্ট?"
"আমার ফুপাতো ভাই বাদল নিজ উদ্যোগে একটা গবেষণা চালিয়েছে। গবেষণার বিষয় বস্তু "বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতির ওপর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের প্রভাব"। গত প্রায় কয়েক মাস যাবত সে এটা নিয়ে একাডেমিক পর্যায়ে এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করে চলেছে। সেটারই খুটি-নাটি, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে সাজানো এই রিপোর্ট।"
"আমি আপনার কথা এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না..."

"দুই একটা উদাহরণ দিলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন ধরুন প্রবাদ-প্রবচন বাংলাদেশের সমাজ-ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন- এই প্রবাদ-প্রবচনের ওপর বেশকিছু প্রভাব ফেলতে পারে। দেখা গেলো- বহুকাল ধরে চলে আসা প্রবাদ 'যত বড় মুখ নয়, তত বড় কথা' - এর বদলে মানুষ হঠাত বলতে শুরু করেছে 'যত বড় আঙ্গুল নয়, তত বড় ছাপ"। কিংবা ধরুন 'ঘুঘু দেখেছ, ফাদ দেখোনি' এর বদলে 'আঙ্গুল দেখেছো, ছাপ দেখোনি'। "
হাসান সাহেব কিছু বললেন না, মনে হোল তিনি অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছেন।
হিমু উৎসাহের সাথে বলতে লাগলো- "এছাড়া চলচ্চিত্র একটা জাতির মনন এবং একই সাথে শৈল্পিক রুচিরও প্রতীক, সেই চলচ্চিত্রেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতির সীম নিবন্ধন বেশ ভালো প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন ভবিষ্যতে আমরা হয়তো কোন নায়কের মুখে সংলাপ শুনবো- "চৌধুরি সাহেব- আমি গরীব হতে পারি, কিন্তু আমারো বায়োমেট্রিক সিম আছে!" অথবা নায়িকা হয়তো ভিলেনকে শাসিয়ে বলবে-ছেড়ে দে! তুই আমার আঙ্গুল পাবি, কিন্তু ছাপ পাবি না....."

হাসান সাহেব ঠান্ডা গলায় শুধু বললেনঃ "আই সি"
হিমু গলার স্বর নীচু করে বললো- "স্যার, এই রিপোর্টের সব থেকে উল্লেখযোগ্য দিকটা হোল- এতে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য বেশ কিছু সুপারিশও তৈরি করা হয়েছে। যেমন- ঘুষখোর সম্প্রদায়ের জন্য একটা সুপারিশ হোল- এখন থেকে ঘুষ নেয়ার সময় সম্মানিত ঘুষখোর মহোদয়গণ যেন রুমাল অথবা ত্যানা জাতীয় কিছু একটা দিয়ে প্রথমে নিজের হাতখানা পেচিয়ে নেয়। তা না হলে বলা তো যায় না, কখন আবার দুদক ঘুষের টাকার বাণ্ডিলের গায়ে আঙ্গুলের ছাপ শনাক্ত করে ঘুষখোরের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে.... সুতরাং, অসতর্কম কার্য্যতঃ নাস্তি।"
হিমুর ভুলভাল সংস্কৃত শুনে ডিজিএম সাহেব আরো গম্ভীর হয়ে গেলেন। ওদিকে হিমু বলে যেতে লাগলো- "রিপোর্টের শেষদিকে নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু সুপারিশমালাও যোগ করে দেয়া হয়েছে। যেমন- আমরা শুনতে পাচ্ছি- আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে সিম নিবন্ধনের পর উক্ত তথ্য অপরাধী শনাক্তকরণের কাজটুকু সহজ করে দেবে। তবে আপনার নিশ্চই জানা আছে- আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে দিয়ে অপরাধীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। তাই দেখা গেলো- অপরাধীরা এ থেকে বাচার উপায় হিসেবে চায়না থেকে শ'য়ে শ'য়ে নকল আঙ্গুল বানিয়ে নিয়ে এলো। চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই- এসবই করা হোল সেই নকল আঙ্গুলগুলো পড়ে। শেষমেষ- যেই লাউ, সেই কদু! সুতরাং- এসবদিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।"
"কিছু মনে করবেন না হিমু সাহেব, আমার মনে হচ্ছে- আপনার ফুপাতো ভাইটা মানসিকভাবে ঠিক সুস্থ নন। এনিওয়ে- আজ আর আমি আপনাকে সময় দিতে পারছি না বলে দুঃখিত। ইট ওয়াজ নাইস টু মিট ইউ..."

হিমু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়াতে দাড়াতে বললো- "আমরা সবাই আসলে মানসিকভাবে অসুস্থ স্যার। কেউ বেশি, কেউ কম। যাই হোক- আমি রিপোর্টটা রেখে গেলাম, সময়-সুযোগ পেলে পড়ে দেখবেন আশা করি।"
হাসান সাহেব কিছু বললেন না, স্থির চোখে শুধু হিমু আর তার সঙ্গী- মনসুর বয়াতির দিকে তাকিয়ে রইলেন।

তারা দু'জন বিদায় নিয়ে সে অফিস থেকে বাইরে বেরিয়ে এলো।


হিমু এবং মনসুর বয়াতির পরবর্তী গন্তব্য বাংলালিংকের কোন একটা ভেরিফিকেশন সেন্টার। হিমুর নিজের কোন মোবাইল সিম নেই, মনসুর বয়াতির সিম রেজিস্ট্রেশন করার জন্যই হিমু তার সাথে সাথে চললো।
"হেমু ভাই, হেই অফিসে কেমুন উমাইল্যা একটা গন্দ দ্যাকছুইন?"
"ওটা এসির কারণে মনসুর ভাই।"
"গন্দে আমার ফেট ফুইল্যা যাইতাছিলো গা গো! বাইরে আইয়া-এইরা বাইচ্যা গেছি।"
হিমু প্রসঙ্গ পালটে বললো "কিছু খাবেন মনসুর ভাই? চা, সিগারেট, ডাব??"

রাস্তার পাশে টং দোকানে বসে তারা সিগারেট ধরালো। মনসুর বয়াতি পান একটা মুখে দিয়ে সুখী সুখী ভঙ্গিতে সিগারেট টানতে লাগলেন। হিমু তার সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে মনসুর বয়াতিকে জিজ্ঞেস করলোঃ "আপনারা এই সিম রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নতুন কোন গান বাধেন নি?"
"উস্তাদে বানছে।"
"উস্তাদে কি বানছে শুনান তো একটু!"

মনসুর বয়াতি সাথে সাথেই মাথা ঝাকিয়ে গান ধরলো

"এই সিম সিম নয়, আরো সিম আছে
এই সিমেরে নিবে তুমরা সেই সিমেরও কাছে
এহে হে হে হে এ এ এ এ.....

শুনেন শুনেন ভাই-বুইনেরা শুনেন দিয়া মন
বায়োমেট্টিক করতে হইবো হইছে নির্ধারণ
ওহো হো হো হো ওওওও.....

আঙ্গুলেরও ছাপ দিয়া সিম নিবন্ধন হয়
সুখী শান্তি দ্যাশ হইবো বয়াতিতে কয়
ওহো হো হো হো ওওওও....." -- এটুকু গেয়েই মনসুর বিকট শব্দে কাশতে লাগলেন। একসময় কোনমতে কাশি থামিয়ে হাপাতে হাপাতে বললেন- "আর বিড়ি খাইতাম না গো..."

চা-সিগারেটের বিল মিটিয়ে তারা গুলশানেরই একটা বাংলালিংক পয়েন্টে ঢুকলো সিম নিবন্ধনের জন্য। সময় শেষের দিকে- বিধায় বেশ ভালোই ভীড়। প্রায় চার-পাচজন কর্মী সিম ভেরিফিকেশনের কাজ করছেন- যাদের প্রত্যেকেই মহিলা নয়তো তরুণী। এমনই একজনের সামনে ভীড় একটু পাতলা দেখে হিমুরা তাড়াতাড়ি সেদিকেই এগিয়ে গেলো।

এই মেয়েটার বয়স অন্যদের চেয়ে কম দেখেই সম্ভবত সিম রেজিস্ট্রেশন করতে আসা মানুষেরা তার কাছে যেতে খুব একটা ভরসা করতে পারছে না; তার উপর মেয়েটার চেহারাও কেমন মায়া মায়া, কিছুটা দিশাহারাও বুঝি! হিমুর মনে হোল- একে এই চকচকে আলোর ব্যস্ত কর্পোরেট জগতের চেয়ে গোধূলির কন্যাসুন্দর আলোয় ছাদের রেলিঙে হেলান দেয়া অবস্থায় বেশি মানিয়ে যেতো ।

মনসুর বয়াতির সিম রেজিস্ট্রেশন শুরু হোল। মেয়েটা এক পর্যায়ে মনসুর সাহেবের ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ছবি দেখে বললোঃ "আপনার এখানকার ছবির সাথে তো আপনার চেহারার কোন মিলই নেই।"
বয়াতি কিছু বলবার আগেই হিমু তার মুখের কথা লুফে নিয়ে অত্যন্ত বিনীত ভঙ্গিতে বললোঃ "আসলে ম্যাডাম, চেহারা তো আর আঙ্গুল না- যে সব সময় দেখতে একই রকম লাগবে। এমনকি একই চেহারা অল্প সময়ের ব্যবধানে কিংবা ভিন্ন ভিন্ন আলোতেও একেক সময় একেক রকম দেখাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ যদি আপনার কথাই বলি- তাহলে এখানে আপনাকে দেখতে যেমনই লাগুক না কেন, শেষ বিকেলের আলোয় তার থেকে হাজার গুণ বেশি সুন্দর লাগবে- এটা আমি বাজি ধরে বলে দিতে পারি...."
"এক্সকিউজ মি, এখানে আপনি কথা বলছেন কেন? রেজিস্ট্রেশন করাতে এসেছেন উনি। আর তাছাড়া একজনের কথার মাঝখানে এরকম হুট হাট করে ঢুকে পড়াটাও তো অভদ্রতা।"
হিমু হাসিমুখে মনসুর বয়াতিকে দেখিয়ে বললোঃ "উনি আসলে স্বল্প কথার মানুষ, গান-বাজনা নিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত কথা বলাটা উনার বড়ই অপছন্দ। সে কারণেই মূলত উনার হয়ে আমি কথা বলছি।"
মেয়েটা অবিশ্বাসের গলায় বললোঃ "এমন অদ্ভূত কথা আমি জীবনে শুনি নি। যাই হোক-' মনসুর বয়াতির দিকে তাকিয়ে- 'আপনি এখানে আপনার বৃদ্ধাঙ্গুলটা প্রথমে রাখুন....'
মনসুর বয়াতি যখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিচ্ছিলেন, তখন হিমু কৌতূহলী গলায় মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলোঃ "আচ্ছা ম্যাডাম, যাদের আঙ্গুল নাই, তাদের রেজিস্ট্রেশন হবে কিভাবে? যেমন পত্রিকায় আমরা অনেক সময় দেখি না, যে - বোম তৈরি করতে যেয়ে দুর্ঘটনাবশতঃ সন্ত্রাসীর হাত উড়ে গেলো। তাদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাটা কি?"
মেয়েটি এবার ঠান্ডা চোখে হিমুর দিকে তাকিয়ে তার চেয়েও ঠান্ডা গলায় বললোঃ "কোন কাজের কথা না থাকলে দয়া করে চুপ করে থাকুন। এসব সস্তা রসিকতা করে লাভটা হচ্ছে কি?"
"আমি সত্যিই জানতে চাচ্ছি ম্যাডাম। হয়েছে কি- আমার কয়েকজন পরিচিত ভিক্ষুক আছে যাদের হাতই নেই, কিন্তু মোবাইল আছে। তারা কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করবে? তাছাড়া পদ্ধতিটা জানা থাকলে আঙ্গুল কাটা জগলু ভাইয়েরও কাজে লাগতে পারে।"
"ওহ গড, সন্ত্রাসী আঙ্গুল কাটা জগলু?! আপনি তো ডেঞ্জারাস লোক...."
"ডেঞ্জারাস লোক আমি নই, তবে জগলু ভাইকে বলতে পারেন। উনি শুধু আমাকে উনার ছোটভাই হিসেবে অত্যন্ত পছন্দ করেন- এটুকুই!"

মেয়েটি আর কথা বাড়ালো না, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছুক্ষণ গুটগুট করে কম্পিউটারে কিছু একটা টাইপ করলো, তারপর মাথা নীচু করে কাগজে কিছু একটা লিখে মনসুর বয়াতির দিকে তাকিয়ে বললো- "আপনার কাজ শেষ। সিম রেজিস্ট্রেশনের জন্য ধন্যবাদ!"
একথা শোনার পর মনসুরকে দেখে মনে হোল যেন- তার উপর থেকে বিরাট কোন বিপদ কেটে গেছে। সে মিনমিন করে মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলোঃ "টেহা কত দিতাম গো আফা?"
"টাকা লাগবে না। এটা তো ফ্রী!"
হিমু সাথে সাথে বললোঃ "অনেক জায়গায় দশ বিশ টাকা করে নিচ্ছে তো, তাই হয়তো উনি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছেন।"
টাকা লাগবে না শুনে বয়াতি ভীষণ অবাক হয়েছিলেন, হিমুর দিকে ফিরে বললেনঃ "কি ক্কয় তাইনে হেমু ভাই, টেহা বলে লাগতো না।"
"টেহা না নিলে আর কি করবেন! জোর করে তো আর দেয়া যাবে না- তাই না!"
এ পর্যায়ে হিমু এবং মনসুর বয়াতি দু'জন চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো। তারপর হঠাত একটা কিছু মনে পড়ে গেছে- এমন ভঙ্গিতে হিমু মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললোঃ "আচ্ছা ম্যাডাম, লাস্ট কোয়েশ্চেন! কেউ যদি আঙ্গুলের ছাপের বদলে সিম ভেরিকিফিকেশনের সময় কলাগাছ নিয়ে আসে- তাহলে কি হবে??"
"কি বলতে চাচ্ছেন, পরিষ্কার করে বলুন।"
"না মানে বলছিলাম কি- একটা কথা আছে না- 'আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ'। তাই আঙ্গুলের ছাপ দেয়া, আর কলাগাছের ছাপ দেয়া তো একই জিনিস হওয়ার কথা..."

মেয়েটি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ হিমুর দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর আশেপাশের সবাইকে সচকিত করে হঠাত খিলখিল শব্দে হাসতে শুরু করলো। শুধুমাত্র হিমু না হয়ে সে জায়গায় যদি অন্য কোন যুবক থাকতো, তাহলে সে নিশ্চিতভাবেই তখন ঐ মেয়ের প্রেমে পড়ে যেতো; হিমু বলেই কেবল তার কোন ভাবান্তর হোল না! সে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মনসুর বয়াতিকে নিয়ে গুলশানের ভেরিফিকেশন পয়েন্ট থেকে বাইরে বেরিয়ে এলো।

হিমুদের যে কখনো, কারো প্রেমে পড়তে নেই!

(হিমুকে চেনেন না- এমন বাংলাদেশি খুজে পাওয়াটা দুঃসাধ্য। হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট এই চরিত্রটি বাংলাদেশের অসংখ্য যুবকের মত আমাকেও প্রবলভাবে আলোড়িত করেছিলো এবং হয়তো করে যাবে আমরণ। এ লেখাটা কোন ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে লেখা হয় নি, হিমু এবং তার লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থেকেই লেখা হয়েছে। ইন কেইস- যদি প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ কর্তৃক দায়িত্ব ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত কারো এ ধরণের লেখা নিয়ে কোন আপত্তি থাকে, তবে আমাকে জানালেই আমি পত্রপাঠ গল্প এডিট করে দেবো....

অন্য কারো সৃষ্ট চরিত্রদেরকে নিয়ে কিছু লেখবার আগে নিঃসন্দেহে তাদের অনুমতি নেয়াটা আবশ্যক, যেহেতু আমার সেই সুযোগ নেই- তাই পাবলিকলি এই অংশটুক লিখে জানালাম, দায়িত্ব মনে করেই!

হ্যাপি রিডিং)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯
৪১টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×