somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় গল্প: দাগ অথবা কাজল (কিস্তি — ১০ম)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১৯

নীলা উঠে গেল। একটু পরে এল খবরের কাগজ নিয়ে। কাগজটা হাতে নিয়ে নীলাকে ওয়ার্ডরোবের ওপর থেকে একটা ম্যাগাজিন আছে বলে সেটা নিয়ে আসতে বলল। নীলা এনে হাতে দিলে, দিপু আনন্দের সঙ্গে বসতে বলল। যেন বাঘের বাচ্চা দেখাবে। ম্যাগাজিনের ভেতর থেকে দু-ভাঁজ করা একটা কাগজ বের বের করল দিপু। নীলার হাতে দিয়ে বলল পড়ো। সকালে যখন ঘুমিয়ে ছিলে তখন লিখেছি। নীলা হাতে নিয়ে কাগজটা খুলে দেখল, একটা ছোট্ট কবিতা— পড়তে লাগল—
‘তোমার আসার কথা ছিল
ফুলগুলো সব শুকিয়ে গেছে
আমার সঞ্চয়ে কেবল—
অপেক্ষা আর দু-ফোঁটা অশ্রু
তুমি কি নেবে কিছু...’
‘নেব গো, নেব, তোমার দুঃখ-কষ্টগুলো আমি মাথাত করে রাখব!...’
দিপুর কবিতা লেখার অভ্যাস ছিল না কখনই। কিন্তু এক সময় কাগজ নিয়ে লিখতে শুরু করল, কোনও চেষ্টা ছাড়ায়।স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সেসব হৃদয় থেকে ছুটে বের হতে লাগল। আর দিপু সেসব লিপিবদ্ধ করল। মন খারাপ হলে কাগজ নিয়ে বসত, লিখত, নিজেই পড়ত কাউকে দেখাত না, পরে ছিঁড়ে ফেলত। যেহেতু সেসব ভাল মানের ছিল না। দু-একটি ভাল লাগলে রেখে দিত, অবসরে ফের বের করে পড়ত। চোখের জল ফেলত। কষ্টে নয়, কবিতায় মনের কথাগুলো বলতে পেরেছে, সেই আনন্দে। মনটা হালকা হয়ে যেত।

২০

‘আসার কথা ছিল, ফুল সব শুকিয়ে গেছে, অপেক্ষায় ছিলে, কিন্তু আমি আসার সময় আপত্তি করেছিলে কেন?’
‘আপত্তি কোথায়?’
‘ঐ এক-ই তো— আমাকে বোঝালে, পাগলামি করছি, ঝোঁকের বশে কিছু করলে ভাল হয় না, কেন, কেন বলেছিলে?’
বাম-তালু উল্টো করে ডান-চোখ এবং ঠোঁটের অর্ধেকটা ঢেকে রেখেছে দিপু। মুখ টিপে হাসতে লাগল, বাম চোখে দুষ্টুমি।
‘অর্থাৎ .... অর্থাৎ সবটাই ভড়ং।’
দিপু কিছু বলল না ওভাবেই রইল।
‘মনে মনে চাই, মুখে না ...’ নীলা হাসছে।
‘খোলসটা ভেঙ্গে দাও। আমাকে কেউ এভাবে ঘাটায়নি আর। আকাশ থেকে ফেলে দাও। তোমার কাছে আমি ধরা দিতে চাই। জীবনে তো সুখের দেখা পাইনি, আমাকে নিয়ে এত গভীরভাবে ভেবেছ ... আর কী! ...’
নীলার দেখা এক শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব, ডিনামাইট দিয়ে যেভাবে দালান ধসিয়ে দেয়, চোখের সামনে ধসে পড়ছে। সে কিছুটা কোতূহলী এবং উৎফুল্ল— এই ভেবে— তার চেয়ে উঁচু কাউকে ভেঙেচুরে তার সমানে নিয়ে আসছে। আবার এটাও মনে হল— সে এক লাফে যেন উঁচুতে উঠে দিপুর সমান হয়ে গেছে। মনটা অজানা, অসাধারণ এক ভাললাগায় ভরে গেল।

২১

‘ফোনটা দেবে? শৈলেশকে খবরটা জানাই।’
শৈলেশ দিপুর খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সেই ছোটবেলা থেকেই। এর পেছনে একটা কারণও আছ। ওরা দু-জন একটু দূরের কাজিন। শৈলেশ সব সময় ওকে বলত— সম্পর্ক সে রকম মনে না করলে, নতুন করে জীবন শুরু করতে।
‘...সে-ই করলাম, কিন্তু ও-ই জানল না।’

দিপু ভাবছিল ফোনে শৈলেশকে বলতেই একটা বকুনি খাবে। উল্টো শুভেচ্ছা জানাল। দিপু একটু লজ্জা পেয়ে নিজের সীমাবদ্ধতার কথা বলল।
‘আরে ঠিক আছে— এসব বিয়ে এভাবেই হয়। তো বড় ভাবির ব্যাপার তাহলে ঘুচে গেছে?’
‘না রে, ওকে জানানোই হয়নি। হয়ত অন্য কারও থেকে এতক্ষণে জেনে গেছে।’
‘বলিস কী? এখন তো আইনি-ঝামেলায় পড়বি। আর পড়লেই কী...’
‘বুঝলাম না ...’
‘বলতে চাচ্ছি— বিয়ে তো হয়েই গেছে। এই আর কী ...’
হঠাৎ শৈলেশের খেয়াল হতেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। রসিকতা করতে গিয়ে এতবড় একটা ভুল করে ফেলল? উদ্দেশ্য ছিল বন্ধুকে একটু ফুর্তিতে রাখা। এই বিয়ের জন্য নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগল।

শৈলেশের সঙ্গে দিপুর বন্ধুত্ব নিয়ে দু-চারটি কথা বলে, নীলা কথা বলল দিপুর অসুখ নিয়ে। নীলা রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে, ওর সিনিয়রের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য রেখেছিল বলে জানাল। আসার সময় নিয়ে আসবে। দিপুর কাছে শুনতে পেয়ে নীলাকে ডা. ভাবি বলে হাল্কা-রসিকতা করল তার প্রয়োজন বোধ হয় শেষ হয়ে এল। আগামী কালকের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করে নবদম্পতির শুভ-কামনা করে শৈলেশ ফোনে বিদায় নিল।

২২

নীলার সারাটা দিন গেল ঘর-দোর গোছ করতে। বহুদিনের অথর্ব ধুলোগুলো পিটুনি খেয়ে কোমর সোজা করে লাফ দিল। পুরো বাড়ি ধুলোর গন্ধে ভরে গেল। বুকের ওপর ডান থেকে বামদিক বরাবর, নিচে আঁচলটা নামিয়ে কোমরে একটা প্যাঁচকষায় নীলাকে দেখাল— আশ্বিনের নদীর বিদায়-নেয়া-স্রোতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দুলতে থাকা, বাঁশের আগার মতো।

ধোয়া-মোছা শেষ করে গোসল সারতে বিকেল শেষ। এক ফাঁকে দিপুকে দুপুরের খাবার খাইয়ে বিছানায় পাঠিয়েছে নীলা। দিপু ঘ্যানঘ্যান করা সত্ত্বেও নীলা ওর সঙ্গে খেতে বসেনি। শরীর অপরিষ্কার, ক্ষুধা লাগলেও নীলার খাওয়ার কোনও রুচি নেই। তার চেয়ে সামান্য কাজের বাকি যেটুকুন আছে, শেষ করে গোসল করে খাবে।

খেতে নিয়ে দিপু নানা হাসির গল্প করেছে। খেয়েছেও বেশ মজা করে। নীলাকে বলল, আরেকটা লেবু কেটে দিতে। নীলা রান্নাঘরে চলে গেল। লেবুর টুকরো পিরিচে সাজানোর সময়, অদ্ভুত এক খেয়াল চাপল নীলার। মাঝের বীজসহ টুকরোর দু-পাশে দু-টো টুকরো সাজাল, একটি মোটা অন্যটি চিকন। বাকি দু-টুকরো আলাদা করে রাখল। মাঝেরটিকে ওর মনে হল— ওটা সে নিজে, আর পাশের দু-টিকে ভাবল, ওর দু-টি ছেলে-মেয়ে, চুপটি করে শুয়ে আছে। পিরিচের দিকে তাকিয়ে আপন মনে হাসতে লাগল।
‘কী হল নীলা।’
দিপুর ডাকে হুশ ফিরে পায় নীলা— ‘আসছি।’
টেবিলে রাখতে গিয়ে নীলা বলল, ‘তুমি তো বেশ টক খাও দেখছি।’
‘হ্যাঁ, খাই তো... দেখ-না সে জন্যই যে কামরাঙাগাছ লাগিয়েছি। কয়দিন পরই দেখবে, কামরাঙা খাওয়া কাকে বলে।’
নীলা একটা চেয়ার টেনে বসল। দু-হাত একত্রে মুড়ে মুঠো করে, তা-তে চিবুক রাখল, কনুই দু-টো টেবিলে ভর দিয়ে।
‘সে জন্যই কী চেহারা সুন্দর?...’
‘মানে?’
‘কামরাঙা খেলে চেহারা সুন্দর হয়।’
দিপু খাবার তুলতে নিয়ে, হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
‘বলো কী!’
নীলা হাসল।
‘আমি তো ছুটির দিনে দুপুর বেলায়, লবণ-মরিচ দিয়ে মেখে বড় এক বাটি সাবাড় করে দেই। তারপর একটু ঘোরাঘুরি করে গোসল করি...’
মিষ্টি করে হেসে, ভাত মুখে পুড়ল।
‘খালিপেটে নয়ত!?’
‘নয়ত কী! গোসলের আগেই তো মজা!’
নীলা মুখে হাত চেপে বলে, ‘সর্বনাশ! খালিপেটে মোটেই কামরাঙা খেতে নেই... কিডনির সমস্যা হয়। আর যাদের আছে তাদের তো!...’
দিপু স্থির হয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর কৈফিয়ত দেয়ার সুরে মিনমিন করে বলল, ‘আমাকে কেউ খেতে নিষেধ করেনি, খালি পেটে কামরাঙা খাওয়া... নিষিদ্ধ...’ মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল বোকার মতো।
‘তুমি জানালে-না বলবে— আর খেয়ো না। এই আমাকে দু-গাল খাইয়ে দাও-না, খুব খিদে পেয়েছে।’ নীলা দিপুর সামনে হা করল।

মাথার ভেজা-চুল ঝাড়া দিতে গিয়ে যেন আকাশে উড়ল নীলা। কাপড় মেলার সময় নিজেকে নিজে পিঠ চাপড়াল। নিজেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ আর কর্তব্যপরায়ণ এক নারী বলে মনে হল।

নীলা খেতে বসেছে, একা। থালা-বাটিতে পুরো টেবিল ছড়ানো। সারাদিন কাজের ধান্দায় পানিটাও ঠিকমতো খাওয়া হয়নি। এখন খাবার গিলতে কষ্ট হচ্ছে, গলায় ঢুকতেই চাচ্ছে না। শুকনো-গলায় লালা আনতে, খানিকটা লেবুর রস মুখে করে বসে রইল।
ঠাণ্ডা পানি খেতে ইচ্ছে করায়, রেফ্রিজারেটর খুলল।
‘না, নেই।’
একটা বোতল টেনে বের করল— জমে বরফ। আনার সময় হাত থেকে পড়ে, গড়িয়ে চলে গেল টেবিলের নিচে।
কয়েকবার ঢালার চেষ্টা করল, বের হল না। তাকিয়ে দেখতে লাগল— বোতলটা ঘোলা হয়ে যাচ্ছে, গায়ে জলবিন্দু— গোসলের পরে ওর নিজের শরীরে যেমন... খাবার শেষে যথাস্থানে রেখে দিল বোতলটি। গলা আর ঠাণ্ডা করা হল না, কেবল ধরার কালে হাত একটু ঠাণ্ডার ছোঁয়া পেল।

খাবার শেষ করে নীলা যখন বিছানায় পিঠ ঠেকাল, দিপু জেগে গেছে। নানা খুচরো কথা বলতে না বলতে, সন্ধ্যা কালো রঙের বালতি হাতে, নেমে এল আকাশ থেকে। ভাসিয়ে দিল চারিধার, ভয় পেয়ে ছুট দিল, যত রাজ্যের ভবঘুরে-কোলাহল।
নীলা উঠল চা-নাশতা তৈরি করতে। রান্না-ঘরে ঢুকে দেখে, মঙ্গল।
‘আবার এসেছ, বলেছি-না তিনদিন তোমার ছুটি।’
‘কিন্তু ভাই কাল রাত্রে একটু আয়োজন করতে হবে। সেটা নিজ হাতে করতে চাই।’
‘তা কোরো, সাথে হেল্পার হিসেবে আমাকে নিয়ো। এখন লক্ষ্মীবোনের মতো ঘরে যা-ও।

কিস্তি - ৯ম

কিস্তি - ১১তম
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩০
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×