somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুলশান-বনানী, ফ্যাশন-মডেলিং কিংবা একজন কাঁচা কিশোরীকে ঘষে-মেজে 'পণ্য' বানানো

৩১ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.

বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ কেবলই হাঁটছে উন্নয়নের দিকে। প্রগতির দিকে। অর্থ আর লালসায় আক্রান্ত মানুষ পরিব্যস্ত ফ্ল্যাটকেন্দ্রিক জীবনধারায়। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মূল্যবোধ। ক্ষয়ে যাচ্ছে বিবেক। অর্থ প্রাপ্তির লোভে বিলাসি মানুষ পা বাড়াচ্ছে অন্ধকারের দিকে... অন্ধকারের স্বরূপ বুঝেও সে না বোঝার ভান করছে... হারাচ্ছে আলোর পথ! বিশেষত মেয়েদের কথাই বলছি। মিডিয়ায়, বিশেষত ফ্যাশন-মডেলিং এর আলোকিত জগতে একজন নারী কিংবা কিশোরি ব্রেইন ওয়াশড্ হয়ে কতটুকু যোগ্য সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকেন? একজন নারী লোলুপ ফটোগ্রাফার কিংবা প্রডাকশন হাউসের লাল কুত্তাদের মিছিলে কতটুকুই বা সংযত থাকবেন ...

২.

এটা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার সময় চলে এসেছে। বাংলাদেশ দ্রুত ফ্যাশন কিংবা মডেলিংয়ে প্রগ্রেস করছে। এতে কারো আপত্তি নেই। বিশ্ব চাচ্ছে নারী পণ্য হোক। ম্যাগাজিন কিংবা পত্রিকার পাতায় অর্ধবসনা কিংবা নগ্ন নারীর ছবি। যেখানে হয়তো-বা মোবাইল ফোনসেট না, নারীই মূলত পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বিনিময়ে হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে টাকা। কন্ট্রাক্ট পেপারে সাইন করিয়ে নিমিষেই রোবট বানিয়ে ফেলা হচ্ছে একজন কিশোরি কিংবা উঠতি মডেলকে! সেই মহার্ঘ্য চুক্তিপত্রে অনেক সময় ব্যক্তিগত সময় কাটানোর চুক্তিও উঠে আসছে... একজন মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে হলে হায়েনার খপ্পরে পড়ে সতীত্ব হারাবে নাকি নারী? নাকি অর্ধনগ্ন পোশাক পরে নিজেকে বিকিয়ে দিবে টাকার বিনিময়ে? তার মানে এই না বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে। তবে পণ্য হিসেবে মিডিয়ায় কেন নারীকে উপস্থাপন করা হবে পত্র-পত্রিকায়? আমি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি, কয়েকজন ছাড়া সবাই একটা স্বপ্ন নিয়ে মডেলিং এর রূপালি (নাকি অন্ধকার!) জগতে প্রবেশ করে। কিন্তু মিডিয়ার গ্রেট পার্সোনালিটিদের নোংরামি দেখে নিজেও নোংরা হতে বাধ্য হয়। একটা মেয়ে যে কখনো হার্ড ড্রিংকস চেখে দেখেনি, সে অন্য মডেল কিংবা মিডিয়া পিপলদের দেখাদেখি ড্রিংক করবে কিংবা সিগারেট ধরাবে তার 'হট' কিংবা 'গর্জিয়াসনেস' গ্রো করার জন্য! এছাড়াও ঢাকা শহরে নিত্য-নতুন মিডিয়া হাউস, ফ্যাশন হাউসের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মডেলিং এর ছদ্মবেশে কুরুচিপূর্ণ পোশাক পরিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী পরিচিত হচ্ছে 'পণ্য' হিসেবে। নিঃসন্দেহে এটা দুঃখজনক!

৩.

একজন বহুল সমালোচিত ফটোগ্রাফার তার স্টুডিওতে উঠতি বয়সী কিংবা মডেল হবার আশায় মগ্ন মেয়েদের নানাভাবে জিম্মি করে নগ্ন ছবি তোলেন এবং মেয়েটার শরীর পাওয়ার স্বার্থে তার ক্যারিয়ার গড়ার দায়িত্বও নেন! ইউরো কোলার চেয়ারম্যান এ ধরণের কুকীর্তি করে বিখ্যাত (!) হয়ে গেছেন। প্রশ্ন হলো- এটা কী ধরণের অসুস্থ মানসিকতা? আমরা তাহলে কীভাবে মেয়েদের নিরাপত্তা আশা করি? হট ড্যান্স শো, ডিজে পার্টি, ফ্যাশন, ইয়াবা-আইস পিল তো আধুনিকতার নাম দিয়েই চলে এসেছে! কিন্তু দুর্ঘটনা কিংবা মূল্যবোধের অবক্ষয় কি তাতে কমে গেছে? মোটেও না। বরং বেড়েছে। সৌদি আরবে বোরকা পরে মেয়েরা ফ্যাশন শো করে। সেখানেও নারীত্বের অবমাননাই করা হয় বৈকি! মেয়েরা মিডিয়ায় ঢুকবে... নায়িকা হবে... একজন মডেল হবে... কিন্তু মিডিয়ায় মেয়েদের এভাবে ব্যবহার করে, ক্যারিয়ার গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করাটা কবে দূর হবে?

৪.

সাহিত্য যদি জাতির দর্পণ হয়ে থাকে তাহলে মিডিয়াও প্রতিনিধিত্ব করে একটি দেশের, একটি সভ্য জাতির। ক্রমশ ওয়েস্টার্নাইজড্ হতে থাকা বাংলাদেশ, রাজধানী ঢাকার মিশ্র সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে তরুণ প্রজন্মকে। ফ্যাশন-মডেলিং কিংবা এডফার্মগুলোকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করা দরকার। প্রয়োজনে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ এই বিষয়টার সরকারের নেগলেজেন্সি ভালোই আছে। তাই হাবিজাবি ফটোগ্রাফার কিংবা ফ্যাশন হাউসের মালিকরা ব্যবসা করে খাচ্ছে! প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকতে হবে...

৫.

এক ধরণের অসুস্থ মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠছি আমরা। রুম ডেট, ফোন সেক্স, থ্রি-এক্স, ড্রাগস... ইয়াবা! আর কত অবক্ষয়ের দিকে... পাশ্চাত্যের নোংরামির দিকে ঝুঁকবে এই প্রজন্ম?

এই প্রশ্নের উত্তর কে দিবে?


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১০ রাত ২:৪৩
৩৫টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×