somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাস

১৪ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মেয়েটার নাম ছিল শর্মিলা। “ভালুকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়” এর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত সে। তূর্য তাকে পড়াতে যেত। মাঝে মাঝে সেও তূর্যের কাছে পড়তে আসত। ঠিক পড়ানো বলে না, একটু-আধটু দেখিয়ে দেওয়া আর কী!

মেয়েটা তূর্যের উপস্থিতি একদম পছন্দ করত না। দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী ছিল বলে তার দেমাগও ছিল বেশ। অনেক ছেলে তার জন্য পাগল, পেছন পেছন ঘুরঘুর করে। সে ভেবেছিল তূর্যও বোধহয় একই গোছের। কয়েকদিনের মধ্যেই অবশ্য শর্মিলার ভুল ভেঙে যায়। সে তূর্যের অনুগত হয়ে ওঠে।

মায়ের সাথে শর্মিলার প্রায় প্রায়ই তুচ্ছ কারণে ঝগড়া হতো। তার মা তূর্য্যের কাছে নালিশ দিতেন। তূর্য্য গম্ভীর হয়ে শর্মিলাকে বকে দিত। অবশ্য তার বকুনি শর্মিলা কখনোই আমলে নিত না, মিটিমিটি করে শুধু হাসত।

শর্মিলার বাবা প্রচণ্ড রকমের রাগী মানুষ ছিলেন। মেয়ের সম্পর্কে অনেক আজেবাজে কথা শোনা যায়। ক্রুদ্ধ হয়ে অনেকদিন মেয়েকে উত্তম-মধ্যমও দিয়েছেন।

ভদ্রলোক তূর্যকে খুব স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন। তূর্যের প্রবাসী মামা যখন তার কাছে তূর্য সম্পর্কে জানতে চাইতেন (তরুণ ছেলেরা যেহেতু একটু উচ্ছৃঙ্খল হয়, মামা ভেবেছিলেন তূর্যও হয়ত তাই- তূর্য উচ্ছৃঙ্খল ছিল না), তিনি তূর্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বলতেন, “আপনার ভাগ্নের মতো ছেলেই হয় না।”

যদিও একদিন কোনো এক কারণে তূর্যের সাথে উনি কথা বলা বন্ধ করে দেন, তবুও তূর্যের প্রতি তাঁর পূর্ব অনুরাগ শেষ পর্যন্তই ছিল।

রাত-বিরাতে তূর্যের কাছে পড়তে আসত শর্মিলা। অনেকে বাঁকা চোখে দেখত। শর্মিলার বাবা এসবে ভ্রুক্ষেপ করতেন না। তিনি তূর্যের ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রেখেছিলেন, তূর্য তার যোগ্য প্রতিদানও দিয়েছিল।

একদিন রাত নয়টায় হন্তদন্ত হয়ে তূর্যের কাছে এলো শর্মিলা। বইপত্র রেখে ভোঁ দৌড় । তূর্য জিজ্ঞেসও করতে পারল না সে কোথায় যায়। রাত ১১টায় এসে বইপত্র নিয়ে বাড়ি চলে গেল শর্মিলা। যাওয়ার সময় তূর্য জিজ্ঞেস করল, “কোথায় গিয়েছিলে?”
সে বলল, “বান্ধবীর বাড়ি।”

আসলে আশপাশে ওর কোনো বান্ধবীই ছিল না। ও গিয়েছিল প্রেমিকের সাথে দেখা করতে। পরে একজনের কাছ থেকে এ কথা জানতে পেরেছিলো তূর্য।

শর্মিলা যখন বাড়ি পৌঁছল, ওর বাবা ঘরেই ছিলেন। তিনি মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেন, “কোথায় গিয়েছিলে?”
শর্মিলা বলল, “তূর্য ভাইয়ের কাছে পড়তে।”

৪ অগ্রহায়ণ ১৪২২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:১৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×