somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশের বিপত্তি (সচিত্র পোস্ট)

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বর্তমান সময়ের যোগাযোগ ব্যব্স্থার অপরিহার্য বাহন হয়ে দাড়িয়েছে বিমান। তাই পৃথিবী ব্যাপী পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এয়ারলাইন্সের সংখ্যা। বিমান নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ তাই বিমান চলাচল ও বিমান ভ্রমনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গলদঘর্ম। তৈরী হচ্ছে নতুন আইন, অত্যাধুনিক যন্ত্র, যাত্রী নিরাপত্তার নতুন ব্যবস্থা। রাস্তায় গাড়ী চালাতে গেলে যেমন কিছু বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় তেমনি বিমান ভ্রমনও ঝামেলামুক্ত নয়। আমাদের বিমান ভ্রমনকে বিঘ্নিত করতে ও জীবন নাশের কারণ হতে পারে এমন কতগুলো বিপত্তির কারণ হলঃ

বহিরাগত পরিত্যক্ত বস্তু (Foreign object debris)ঃ
বহিরাগত পরিত্যক্ত বস্তু (FOD) বলতে এমন ব্স্তু যা বিমান নির্মাণ বা মেরামতের সময় ভুল ক্রমে বিমানের সাথে রয়ে গেছে, রানওয়েতে পড়ে থাকা কোন বস্তু এবং ফ্লাইটের সন্মুখের কঠিন বস্তুর (যেমন শিলাবৃষ্টি, ধুলো)। এ জাতীয় ব্স্তুর আঘাতে বিমানের ইঞ্জিন এবং অন্যান্য অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এয়ার ফ্রান্সের ফ্লাইট নং ৪৫৯০ অন্য একটি বিমান থেকে খসে পড়া অংশের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছিল।



বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং তথ্যের অভাবঃ
একজন পাইলট বিভ্রান্ত হতে পারেন ছাপানো ডকুমেন্ট (যেমন ম্যানুয়েল, ম্যাপ ইত্যাদি যা আপডেটেড নয়), ত্রুটিপূর্ণ্ যন্ত্র ও সংকেতের মাধ্যমে(ককপিট অথবা গ্রাউন্ডে),গ্রাউন্ড কন্ট্রোল থেকে প্রেরিত ত্রুটিপূর্ণ নির্দেশনা পালন অথবা অন্য কোন ভুল বা কোন তথ্য না জানার কারণে ঘটতে পারে একটি মারাত্মক বিমান দূর্ঘটনা।


চিত্রঃ একটি বাতিল করা ম্যানুয়াল।

বজ্রপাতঃ
বোয়িংয়ের এক গবেষনায় দেখা গেছে যে, গড়ে একটি বিমান বছরে দুবার বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়। বিমান সাধারন বজ্রপাতে কোন ক্ষতি ছাড়াই প্রতিরোধ করতে সক্ষম। সাধারন ধাতুর উপর বজ্রপাতের প্রতিক্রিয়া আমাদের সকলের জানা। বিমানে রয়েছে বজ্রপাত প্রতিরোধের বিশেষ ব্যবস্থা। আশার কথা এইযে, বিমানের উপর বজ্রাঘাতে ক্ষতির ঘটনা বিরল।



পরিচলনশীল আবহাওয়া (convective weather)ঃ
খারাপ আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ একটি বিমান দূর্ঘটনা কবলিত হতে পারে। খারাপ আবহাওয়া যেমনঃ মারাত্মক বাতাসের ঘূর্নিপাক (severe turbulence), বরফ শীলা , ভারী বর্ষণ, উইন্ড শীয়ার, মাইক্রোবার্স্ট, নিম্ন উচ্চতার প্রচন্ড বাতাসের বেগ এবং টর্নেডো ইত্যাদি। এরূপ আবহাওয়ার একটি বৈশিষ্ট্য যে, এরা দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে করতে অগ্রসর হয়। তবে এমন ভয়ন্কর আবহাওয়া সনাক্তকরণ ও এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বিমানে রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্র। যার সাহায্যে আগে থেকে পাইলট খারাপ আবহাওয়ার অব্স্থান ও বিস্তৃতি সম্পর্কে জানতে পারে এবং সে অনুযায়ী নিরাপদ পথ(করিডোর) বেছে নিতে পারে। ( Aircraft Weather Avoidance System সম্পর্কিত একটি স্বতন্ত্র পোষ্ট লেখার ইচ্ছা আছে।) র


চিত্রঃ ওয়েদার ডিসপ্লে।

বরফ এবং তুষারপাতঃ
বরফ এবং তুষারপাত বিমান দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। ২০০৫ সালে সাউথওয়েষ্ট এয়ারলাইন্স ফ্লাইট নং ১২৪৮ তীব্র তুষারপাতের সময় নামতে গিয়ে রানওয়ের শেষ প্রান্তে পিছলে যায় ও একটি শিশু নিহত হয়। এমনকি ডানার উপর অল্প বরফের আচ্ছাদন বিমানের জন্য প্রয়োজনীয় লিফ্ট তৈরীতেও বাধা দেয়। তাই বিমানের উইং এবং টেইলে জমা বরফের আচ্ছাদন নিয়ে উড্ডয়ন আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৮২ সালে এয়ার ফ্লোরিডা ফ্লাইট নং ৪১৮৪ উইংয়ের উপর জমা বরফের কারণে বিধ্বস্ত হয়।
এয়ারলাইন্স এবং এয়ারপোর্ট গুলো বিমান উড্ডয়নের পূর্বে তীব্র ঠান্ডাতে যাতে বিমানের উইংয়ে বা টেইলে বরফ জমে না থাকে তা নিশ্চিত করে। আধুনিক বিমানেের ইঞ্জিন, উইংয়ের সামনের কানায় এবং টেইলে যাতে বরফ জমতে না পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেই সাথে যতদূর সম্ভব খারাপ আবহাওয়াকে এড়িয়ে ফ্লাইট প্ল্যান তৈরী করা হয়।



চিত্রঃ যাত্রার প্রাক্কালে উইংয়ের উপর এন্টি আইসিং লিকুইড ছিটানো হচ্ছে।

ইঞ্জিন বিকলঃ
বিভিন্ন কারণে ইঞ্জিন বিকল হতে পারে যেমনঃ জ্বালানী তেলের স্বল্পতা, জ্বালানী তেল ফুরিয়ে যাওয়া, বহিরাগত বস্তুর দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হওয়া, ত্রুটিপূর্ণ রক্ষনাবেক্ষনের কারণে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়া, ইঞ্জিনের নির্মান ত্রুটির জন্য গোলযোগ দেখা দেওয়া, ধাতব দূর্বলতা (মেটাল ফেটিগ)। পাইলটের ভুলের কারণেও ইঞ্জিন বিকল হতে পারে।
একাধিক ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমানের একটি ইঞ্জিন বিকল হলে তখন যাত্রাপথ পরিবর্তন করে নিকটবর্তী বিমানবন্দরে জরুরী অবতরন করতে হয়। দ্বিতীয় ইঞ্জিনটি বিকল হলে অথবা ইঞ্জিন বিকল হওয়ার দ্বারা বিমানের অন্য কোন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেই সাথে জরুরী অবতরন সম্ভব না হলে নিশ্চিত বিমান বিপর্যয়।



বিমানের স্ট্রাকচারাল ফেইলিয়রঃ
বিমানরে স্ট্রাকচারাল ফেইলিয়রের কারনে মারাত্বক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। গভীর পর্যবেক্ষন (rigorous inspection) এবং নন ডেস্ট্রাকটিভ টেস্টের মাধ্যমে এই অব্স্থার উত্তরণ সম্ভব। আধুনিক বিমানগুলো কম্পোজিট মেটেরিয়াল দ্বারা নির্মিত। ক্রমাগত সাইক্লিক চাপের কারণে উপাদান গুলোর স্তর আলগা হয়ে ভার বহনে অক্ষম হয়ে পড়ে। উপাদানের অভ্যন্তরীণ ফাটল/ক্ষয় বাইরে থেকে দেখা যায় না। তাই নিয়মিত আল্ট্রা সাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে উপাদান গুলোর অভ্যন্তরীণ অবস্থা পর্যবেক্ষন করতে হয়।



স্টলিংঃ
বিমানের স্টলিং বলতে এমন অবস্থাকে বুঝানো হয় যখন উড্ডয়ন কোণ (the angle of attack) বৃদ্ধি পেয়ে এমন অবস্থায় উপনীত হয় যেখানে ডানা তার (লিফ্ট) উড্ডয়ন শক্তি তৈরীতে ব্যর্থ হয় এবং পাইলট যদি এই অবস্থায় তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহন না করে তবে নিশ্চিত বিমান বিপর্যয়।



আগুনঃ
আগুন ও এর দ্বারা সৃষ্ট বিষাক্ত ধোঁয়া বিমান দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে। বিমানের ওয়্যারিংয়ের মধ্যকার একটি তারের সাথে আরেকটি তার লেগে শর্ট সার্কিট হলে, তারের ইনসুলেশন ক্ষয় হলে অথবা তারের উপর পানি লাগলে বিমানের ভিতর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিমান তৈরীর সময় বিমানের ব্যবহৃত উপাদান গুলো যেন আগুন প্রতিরোধি হয় বা কম জ্বলে তা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। বিমানের ভিতরেও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা হয়।


চিত্রঃ বিমানের আগুন সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

বার্ড স্ট্রাইকঃ
বার্ড স্ট্রাইক বলতে বিমান এবং পাখির সংঘর্ষকে বুঝানো হয়। উড়ন্ত অবস্থায় পাখি ইঞ্জিনের ভিতর ঢুকে গিয়ে এবং বিমানের উইন্ড শীল্ড ভেঙ্গে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে। পাখি আকার, আঘাতের স্থান এবং বিমানের বেগের উপর এই ক্ষতির পরিমান নির্ভর করে। ল্যান্ডিং এবং টেকঅফের সময় বার্ড স্ট্রাইকের প্রবণতা বেশী দেখা যায়। বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ এয়ারপোর্টের আশে পাশে পাখি মারার এবং পাখি তাড়ানোর বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকে।



গ্রাউন্ড ডেমেজঃ
অনেক সময় বিমানের ফিউজলেজ (বিমানের মূল অংশ) এবং উইং বিমানের রক্ষনাবেক্ষনের কাজে নিয়োজিত নানা প্রকার যানবাহন ও গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই উড্ডয়নের পূর্বে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় এবং প্রয়োজনীয় মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়। কোন ভাবেই এ অবস্থাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।



আগ্নেয় ছাইঃ
আগ্নেয় ছাই হতে উদগত ধোয়া বিমানের প্রোপেলার, ইঞ্জিন এবং ককপিটের জানালাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। কারণ আগ্নেয় ছাইয়ের তাপমাত্রা থাকে অত্যাধিক। যার ফলে বিমানের উইন্ডশীল্ড ও অন্যান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পাইলটকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিতে হয়।


মনুষ্য কারণঃ(Human factors)
পাইলটের ভুল বর্তমান সময়ের বিমান দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এই অব্স্থা এড়ানোর জন্য পাইলটদেরকে বিভিন্ন বিমান নিরাপত্তা মূলক প্রশিক্ষণ ও কৌশল যেমন ক্রু রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) শিক্ষা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিমান রক্ষনাবেক্ষন কালীন ভুল এড়ানোর জন্য বিমান প্রকৌশলী ও কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষনের ব্যব্স্থা রাখা হয়েছে।



উন্মত্ত পাইলটিংঃ
এই ঘটনা খুবই বিরল যে, কোন ফ্লাইট ক্রু কে মদ্যপ বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে বিমান উড্ডয়নের পূর্বের শারীরিক পরীক্ষায় নেশাগ্রস্থ অবস্থায় পাইলটকে পাওয়া গেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সুতরাং বিমানে উড্ডয়ন কালীন সময়ে কোন পাইলটকে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

ফ্লাইট ইনটু টেরাইনঃ
"ফ্লাইট ইনটু টেরাইন" বলতে বুঝায় পাহাড়ী এলাকার উপর দিয়ে অথবা উচু ইমারত বিশিষ্ট কোন স্থানের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া। এসব স্থানের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় পাইলটের ভুল পরিচালনা অথবা নেভিগেশনাল ইকুইপমেন্টের ত্রুটিপূর্ণ সংকেতের কারনে মারাত্মক রকমের বিমান দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই পাইলটের দক্ষতা ও ত্রুটি মুক্ত নেভিগেশনাল ইকুইপমেন্ট ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই অবস্থা থেকে নিরাপদ থাকা যায়।



ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ইন্টারফেরেন্সঃ
এমন কোন যন্ত্র ব্যবহার করা যা বিমান চালনার সাথে সম্পর্কিত কম্পাস সিস্টেমকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই ১০,০০০ফুটের নিচে, টেকঅফ বা ল্যান্ডিংয়ের সময়এ ধরনের ব্যক্তিগত যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিষিদ্ধ। যেমনঃ মোবাইল, ব্যক্তিগত কমিউনিকেশন ইকুইপমেন্ট, রিমোট কন্ট্রোল চালিত কোন যন্ত্র ইত্যাদি।



রানওয়ে নিরাপত্তাঃ
রানওয়েতে মোটামোটি চার ধরনের বিপত্তির ঘটনা ঘটতে পারে।
১। রানওয়ে এক্সকারশন (Runway excursion)ঃ এমন পরিস্থিতি যখন কোন একটি বিমান নিরাপদে রানওয়ে থেকে বেরিয়ে যেতে পারে না।



২। রানওয়ে ওভাররান(Runway overrun)ঃ এমন পরিস্থিতি যেখানে একটি বিমান রানওয়ের শেষ প্রান্তে পৌছার পূর্বে থামতে ব্যর্থ হয়।


৩। রানওয়ে ইনকারশন (Runway incursion)ঃ রানওয়েতে অবস্থানকৃত ব্যক্তি, যানবাহন বা অন্য কোন বিমান সঠিক স্থানে না থাকা। যার সাথে সংঘর্ষের কারণে ঘটতে পারে বিমান দূর্ঘটনা।


৪। রানওয়ে কনফিউশন (Runway confusion)ঃ টেকঅফ বা ল্যান্ডিংয়ের জন্য সঠিক রানওয়ে নির্বাচনে পাইলটের ব্যর্থতা।



সন্ত্রাসবাদঃ
সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা সংগঠনের দ্বারা বিমান হাইজ্যাকের মত ঘটনা ঘটতে পারে। সাধারণত এয়ারক্রুরা হাইজ্যাক প্রতিরোধের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষন লাভ করে থাকে। যে কোন ধরণের সন্ত্রাসী আক্রমন প্রতিরোধ করার জন্য কঠোর এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সিকিউরিটি চেকপয়েন্ট, স্ক্যানিং, ককপিট ডোর লকিং, ককপিট সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়।



এয়ারক্রু দ্বারা ইচ্ছাকৃত কোন দূর্ঘটনা ঘটানোঃ
প্রতিটি ফ্লাইটের পূর্বে এয়ারক্রুদের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত রাখা হয়। এয়ারক্রু আত্মহত্যার মানসে বিমান দূর্ঘটনা ঘটায় এমন নজিরও রয়ে গেছে। সম্প্রতি ২০১৫সালের ২৪শে মার্চ জার্মান উইং ফ্লাইট নং ৯৫৮৫ ফ্রেন্চ আলপসের সাথে ধাক্কা খেয়ে ১৪৪জন যাত্রী ও ৬জন ক্রু সবাই নিহত হয়। কো-পাইলট আন্দ্রেজ লুবিতজ(Andreas Lubitz) এই ঘটনা ঘটায়। এই ঘটনার পর কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জার্মানী এবং অষ্ট্রেলিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষনিক দুইজন অনুমোদিত ব্যক্তি অবস্থান করার আইন প্রণয়ন করে। European Aviation Safety Agency সুপারিশ করেছে যে, প্রতিটি ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে যেন ককপিটে কমপক্ষে একজন পাইলট সহ দুই জন এয়ার ক্রু থাকার ব্যবস্থা রাখা হয়।

সামরিক কারণঃ
অনেক সময় ভুল বশতঃ অথবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে একটি বিমান সামরিক বাহিনী বা যুদ্ধরত কোন বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। যেমনঃ


১। ২০০১ সালে ইউক্রেন বিমান বাহিনী মহরা চলাকালীন সময়ে সাইবেরিয়ান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট নং ১৮১২ বিমানটিকে ভূপাতিত করে।
২। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের একটি অজ্ঞাত বাহিনীর আক্রমনে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট নং ১৭ বিমানটিকে ভূপাতিত হয়।

এতক্ষন বিমান ভ্রমনের বিপত্তি গুলো বর্ননা করা হল। এমনিতে আমরা বাংলাদেশের জনগন নানা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছি এর মধ্যে আবার বিমান ভ্রমনের বিপত্তির কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাঠকের মন ভারাক্রান্ত করা উদ্দেশ্য নয়। আমার এই লেখা সচেতনতার উদ্দেশ্যে। তবে আপনাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আলোচিত সমস্ত বিষয় গুলি বিবেচনায় রেখে সমস্ত এয়ারলাইন্স, সকল বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিমান প্রস্ততকারী সংস্থা নিরন্তর গবেষনা এবং বিমান পরিচালনা ব্যবস্থার উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিরাপদ বিমান ভ্রমণের সকল কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

আপনাদের বিমান ভ্রমণ নিরাপদ হোক।

আমার আরেকটি পোস্টঃ ব্ল্যাক বক্স-অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধানে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
১৬টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×