somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়ামঃ কান্তিচন্দ্র ঘোষ ও নজরুল

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুবাইয়াৎ ই ওমর খৈয়ামঃ কান্তিচন্দ্র ঘোষ ও নজরুল
রায়ান নূর

ওমর খৈয়াম বর্তমানে জগদ্বিখ্যাত কিংবদন্তী ৷ তিনি তার বিজ্ঞানের খোলস ছেড়ে কবে দার্শনিকতার স্তরে উপনীত হয়েছেন আর সীমাহীন প্রশ্ন জিজ্ঞাসায় রচনা করেছেন অমৃতসূধাস্বরূপ রুবাইয়াৎ যার অস্তিত্বে এখনো পন্ডিতগণ একমত হননি ৷ তার দর্শন উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে কালান্তরে;তার লক্ষণ মেলে আল্লামা ইকবালের পঙ্কতি ও তার‘আসরারে খুদী’তে ৷ যেমনঃ

এক তু হ্যায় কে হক হ্যায় ইস জাহাঁ মেঁ
বাকী হ্যায় নমুদ সিমিয়াই ৷
(এ দুনিয়ায়, হে মানুষ তুমিই একমাত্র সত্য,বাকী সবই মরীচিকা ৷)

তিনি যে রুবাইয়াৎ(চতুষ্পদী কবিতা) লিখেছিলেন তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলে যখন এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ড 110 টি রুবাইয়াতের ইংরেজী অনুবাদ করে গোটা ইউরোপকে তাক লাগিয়ে দেন ৷ যদিও রুবাইয়াতের সংখ্যা আরো অধিক পরিমাণে ছিল ৷ এরপর বহুভাষায় এমনকি বাংলাভাষায় এই রুবাইয়াতগুলোর অনুবাদ হয়েছে ৷ অনেক রুবাইয়াৎ পাওয়া গেছে খৈয়ামের নামে তা থেকে 66 টি রুবাইয়াত প্রশ্নাতীতভাবে খৈয়ামেরই হতে পারে তা পন্ডিতগণ স্বীকার করেছেন ৷ বলাবাহুল্য ফিটজেরাল্ড সম্পূর্ণ নির্মোহ থেকে তার অনুবাদ সম্পন্ন করতে পারেন নি,এতে তাঁর অদম্য কবিত্বপ্রতিভার আঁচ লেগেছে যার ফলস্বরূপ অনেক ক্ষেত্রে অনুবাদগুলো মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভাব,ভাষাভঙ্গী কিংবা ছন্দের দিক থেকে ৷ তবু তার দর্শনের ছোয়া রুবাইয়াতগুলোকে নিরাসক্তভাবে ঐক্য সাধন করেছে ৷

বাংলাভাষায় ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ,কাজী নজরুল ইসলাম,কান্তিচন্দ্র ঘোষ,নরেন্দ্র দেব সহ অনেকেই অনুবাদ করেছেন ৷ তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম,নরেন্দ্র দেব ও কান্তিচন্দ্র ঘোষের অনুবাদ বিশেষ প্রণিধানযোগ্য ৷ কান্তিচন্দ্র তার অনুবাদকে সাবলীল ও হৃদয়গ্রাহী করার প্রয়াসে খৈয়ামের ফার্সী ছন্দ ব্যতিরেকেই ফিটজেরাল্ডকেই অনুসরণ করেছেন যা মাত্রারিক্তভাবে নরেন্দ্র দেব, সিকান্দার আবু জাফরের অনুবাদেও লক্ষ করা যায় ৷ খৈয়ামের রুবাইয়াতের ভাষা,প্রকাশভঙ্গি ছিল অত্যন্ত সরল ও নৈসর্গিক ৷ অদৃষ্টের প্রতি নিরাসক্তি,স্বর্গের প্রতি অনাস্থা,ভবিষতের প্রতি অনীহা,অতীতের মোহ-ত্যাগ,প্রভুর নির্বিকার অবিচার, মৃত্যুর প্রতি চিরবিশ্বাস আর সামগ্রিকভাবে বর্তমানকে উদযাপনই ছিল তার রুবাইয়াতের প্রাণশক্তি ৷ তাই তার অনুবাদগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ব্যক্তিবিশেষে স্থান করে নিয়ে বিশেষ থেকে সামান্যে প্রত্যাবর্তন করেছে বিভিন্ন রূপ আর আঙ্গিকে ৷ কোন কবিই পারে নি তাকে নিয়মের ছকে বাধতে বরং অন্তর্নিঃসৃত বাণী ভাস্বর হয়েছে সকল অনুবাদে ৷

খৈয়ামের অনুবাদ হয়েছে তিন শ্রেনীতে প্রথমত ভাবমুখ্য, দ্বিতীয়ত গতিমূখ্য,তৃতীয়ত ভাব-গতি মূখ্য ৷ কাজী নজরুল ইসলাম ও কান্তি ঘোষের অনুবাদে তৃতীয় লক্ষণটি স্বরূপে বিরাজমান ৷ কাজী নজরুল ব্যতিত এই অনুবাদকগণ ফার্সী ভাষা জানতেন কিনা তা সহজে বোধগম্য নয় ৷ যদিও জেনে থাকতে পারেন তবে বলতে হয় ইংরেজ কবি ফিটজেরাল্ডের মোহ তারা পূর্ণরুপে কেটে উঠতে পারেন নি ৷ কান্তিচন্দ্র ঘোষের অনুবাদের বিশেষত্ব এইযে,ভাষার সরলতা,একটি বিশেষ ছন্দের বহুল ব্যবহার,শব্দচয়নে নৈপন্য,ভাবের একত্রিকরণ ৷ আর এসব কারনে কান্তিচন্দ্রের অনুবাদ সাধারনের কাছে গ্রহণযোগ্য ৷ বলা হয়ে থাকে "কান্তিচন্দ্র ঘোষ ফিটজেরাল্ডের 110 টি রুবাই-এর মধ্যে 76 টি রুবাই-এর হুবহু অনুবাদ করে গেছেন ৷"¹কিন্তু তার অনুবাদগুলোতে স্বাতন্ত্র্যতা লক্ষ্য করা যায় ৷যেমনঃ


'Tis all a Chequer-board of Nights and Days
Where Destiny with Men for Pieces plays:
Hither and thither moves, and mates, and slays,
And one by one back in the Closet lays.

কান্তি ঘোষের অনুবাদঃ

ছকটি আঁকা সৃজন ঘরের
রাত্রী দিবা দুই রঙের,
নিয়ৎ দেবী খেলছে পাশা
মানুষ ঘুঁটি সব ঢঙের;
প'ড়ছে পাশা ধ'রছে পুনঃ,
কাটছে ঘুঁটি, উঠছে ফের—
বাক্সবন্দী সব পুনরায়,
সাঙ্গ হ'লে খেলার জের ৷

সিকান্দার আবু জাফরের অনুবাদঃ

দিন-রাত্রীর রঙ দিয়ে আঁকা দাবার ছকটি মেলে
নসীব খেলছে বিচিত্র খেলা মানুষের ঘুঁটি চেলে;
ঘর থেকে ঘরে চালে চালে ঘুঁটি পড়ছে মরছে আর
দান শেষ হলে আবার তাদের বাক্সে রাখছে ঢেলে ৷৷

যেখানে মূল ফার্সীঃ

মা ল'বতেগানীম ও ফলকে ল'বতেবায
আয রুয় হাকিকাতি নাহ্ আয রুয় মজায
এক চান্দ দর ইন বেসাত বাজী কারদিম
রফতিম বেহ সন্দুকে আদম এক এক বায ৷

(আমরা খেলনা আর আসমান খেলোয়ার—বাস্তবে দেখ কল্পনায় নয় ৷কিছুটা সময় এর মধ্যে দেওয়া-নেওয়ার খেলা করে—সিন্দুকে মানুষকে একে একে পুরে রাখে ৷)

কাজী নজরুলের অনুবাদঃ

আমরা দাবার খেলার ঘুঁটি, নাইরে এতে সন্দ নাই!
আসমানী সেই রাজ-দাবাড়ে চালায় যেমন চলছি তাই ৷
এই জীবনের দাবার ছকে সামনে পিছে ছুটছি সব
খেলা শেষে তুলে মোদের রাখবে মৃত্যু-বাক্সে ভাই!

অনুবাদগুলো পর্যালোচনা করলে ফিটজেরাল্ডের অনুবাদের অতিরঞ্জিত কবি প্রতিভার লক্ষণ পাওয়া যায় ৷ আর বাংলা অনুবাদে তার আরেক রূপ পরিলক্ষিত হয় ৷ কান্তিচন্দ্র ঘোষ ফিটজেরাল্ডের সবটুকুই নিয়েছেন সিকান্দার আবু জাফরের মত তবু কবি কল্পনায় বিস্তর ফারাক ৷ কান্তিচন্দ্র ঘোষ ভাবকে সমান্তরালভাবে একীভূত করবার প্রয়াসে অত্যন্ত সচেতন ভাবে শব্দের ঘুঁটি চেলেছেন—আবদ্ধ করেছেন এক নিপুন ছন্দে যা খৈয়ামের কবিতার মূল ভাব সাধারনের বুঝতেও দেরী হয় না ৷ নরেন্দ্র দেবের অনুবাদে বিচিত্র ছন্দের প্রভাবে শ্রুতিজনিত সমস্যা কিছুটা উপলব্ধি হয় আর রুবাই এর অস্বাভাবিক আকার বৃদ্ধি অনেককেই তুষ্ট করতে পারে নি ৷ অন্যদিকে কাজী নজরুল ইসলামের রুবাইয়াত আরবী ঘোড়ার তেজে চলেছে নিখূঁত ছন্দে কেননা ফার্সী ভাষা আয়ত্তে থাকার ফলে মূলভাব তার আত্নগত ছিল ৷ তবুও তার অনুবাদ পূর্ণ আক্ষরিক না হয়ে বরং কবিকল্পনামিশ্রিত ভাবানুবাদ হয়েছে ৷ অনুবাদ যাই হোক না কেন মূলভাব সকলেই আত্মগত করার চেষ্ঠা করেছেন ৷ ভাব ঠিক করতে ছন্দ পরিবর্তন কিংবা ছন্দ ঠিক করতে ভাবের পরিবর্তন সর্বোপরি ৷ এক্ষেত্রে কাজী নজরুল ইসলাম ব্যতিত ভাব, ভাষা কিংবা শব্দ ব্যবহার ও ছন্দের নৈপন্যে কান্তিচন্দ্র ঘোষ বিশেষত্বের দাবীদার ৷

রুবাইয়াতের পূর্ণ অর্থ অনেক অনুবাদে অনুপস্থিত ৷ ফিটজেরাল্ড কখনো রুবাই-এর দুই-এক চরণ নিয়েই একটি রুবাইয়াত করেছেন এবং অনেক সংস্করণে রুবাইয়াতগুলোকে পরিবর্তিত করেছেন ৷ বাংলায় অনুবাদকগণও তাদের অনুবাদে ব্যতিক্রম করেননি ৷ কেবল কাজী নজরুল ফিটজেরাল্ডকে অনুসরণ করেন নি তবুও তার অনুবাদে মূল ভাবার্থের সঙ্গে অসঙ্গতি,বিচ্যুতি ঘটেছে কবি-প্রতিভার দরুন ৷ সকলেই খৈয়ামের মর্মে প্রবেশ করতে চেয়েছেন ও বক্তব্যের রহস্যজালে বারংবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছেন ৷ কাজী নজরুল যেমন একাত্ম হতে চেয়েছেন তার মূল স্পর্শ করে তেমনি কান্তি ঘোষ একাত্ম হতে চেয়েছেন তার ভাবের মধ্যে ৷ তাই অনুবাদগুলো দুই মেরুতে অবস্থান করছে ভিন্নরুপে ৷ এটি মূলের সাথে সম্পর্কভিন্ন পূর্ণ আক্ষরিক না হয়ে অনুবাদকের মৌলিক রচনায় স্নানান্তরিত হয়েছে ৷ যেমনঃ

“How sweet is mortal Sovranty!”—think some:
Others—”How blest the Paradise to come!” Ah, take the Cash in hand and waive the Rest;
Oh, the brave Music of a distant Drum!

কান্তি ঘোষের অনুবাদঃ

রাজ্যসুখের আশায় বৃথা
কেওবা কাটায় বরষা মাস;
স্বর্গসুখের কল্পনাতে
পড়ছে কারুর দীর্ঘশ্বাস ৷
নগদ যা’পাও হাত পেতে নাও,
বাকীর খাতায় শূন্য থাক্ ―
দূরের বাদ্য লাভ কি শুনে? ―
মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক ৷

যেখানে নজরুলের অনুবাদঃ

করছে ওরা প্রচার―পাবি স্বর্গে গিয়ে হুর পরী,
অামার স্বর্গ এই মদিরা,হাতের কাছের সুন্দরী৷
নগদা যা পা’স তাই ধরে থাক,ধারের পণ্য করিসনে,
দূরের বাদ্য মধুর শোনায় শুন্য হাওয়ায় সঞ্চরী ৷

মূল ফার্সীঃ

গবিন্দ কসান ভেস্ত্ বা হুর খোশ আস্ত
মান মেগবিম কেহ আবে আঙ্গুর খোশ আস্ত
ইন নক্বদে বগীর ও দস্তে আয আন নসিয়েহ বেদার
কাওয়াজ দহলে শানিদনে আয দুর খোশ আস্ত ৷

(সকলে বলে বেহেস্তের আনন্দ হুরপরীতে―আমি বলি আমার আনন্দ দ্রাক্ষারসে ৷ বাকী মুল্যের জন্য নগদ হাতছাড়া কর না―দূরের খুশির বাদ্য তীব্রই শোনায়)

অনুবাদগুলো বিচার করলে নজরুল ও কান্তি ঘোষের অগাধ প্রতিভা ও কবিত্বশক্তির পরিচয় পাওয়া যায় ৷ যেখানে ভাষা মূখ্য নয় ভাব মূখ্য ৷ মূল থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হলেও কান্তি ঘোষ তার অনুভূতি থেকে বিচ্যুত হননি ৷ এখানে যেন খৈয়ামের বাক্য প্রধান নয়, প্রধান তার অন্তর্নিহিত দর্শন ৷ এই দ্বন্দ্ব থেকে ফিটজেরাল্ডও মুক্তি পান নি ৷ দ্রাক্ষারসে খৈয়াম জারিত হয়েছেন তিলে তিলে আর বর্তমানকে আঁকড়ে ধরে দূরের স্বর্গমোহ ত্যাগ করেছেন তেমনি খৈয়ামকে আঁকড়ে ধরে কবিগনও যেন তার ভাবসমুদ্রে অন্তঃর্লীন হয়েছেন ৷

কান্তি ঘোষের অনুবাদে ফার্সী শব্দের যথাসামান্য ব্যবহার আছে যেমন প্রয়োজনের তাগিদে তেমনি নিয়ৎ দেবী,দেব,দেবতা,যুক্তিদেবী,ভাগ্যদেবী,ভাগ্যসুতো,পুজো,মাঙ্গলিক,দৈববাণী,নমস্কার,আশীষ,পঞ্চভূত,বিশ্বরথ,বিধানরথ,স্বর্গদূতী,মন্দির,উপোস,দ্রাক্ষাদেবী,দ্রাক্ষাবঁধু,তৃণাসন,চরকাসুতো,দিব্যি ইত্যাদি শব্দগুলি অধিকতর পরিভাষিক শব্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ৷ অন্যদিকে কাজী নজরুলের অনুবাদে যথাযথ ফার্সী শব্দের বহুল ব্যবহার অাছে পরিভাষিক শব্দের তুলনায় ৷ ভাগ্যলক্ষ্মী,স্বর্গদূত, দেবী-প্রতিমা,প্রভু ইত্যাদি কতিপয় পারিভাষিক শব্দ ব্যতিত ফার্সী মুসলমানি শব্দের অবাধ ছড়াছড়ি তার অনুবাদে ৷ কাজী নজরুল ইসলাম তার অনুবাদে কককক/ককখক মূল ছন্দরীতি অনুসরণ করেছেন আর কান্তি ঘোষ মূল ছন্দ ব্যতিরেকে স্বরবৃত্ত ছন্দ ককখখ অন্ত্যমিলে রুবাইয়াতগুলোকে কাঠামোতে আবদ্ধ করেছেন ৷ যেমনঃ

কান্তি ঘোষঃ
সেই নিরালায় পাতায় ঘেরা
বনের ধারে শীতল ছায়,
খাদ্য কিছু,পেয়ালা হাতে
ছন্দ গেঁথে দিনটা যায়!
মৌন ভাঙ্গি মোর পাশেতে
গুঞ্জে তব মঞ্জু সুর ―
সেই তো সখি স্বপ্ন আমার,
সেই বনানী স্বর্গপুর!

কাজী নজরুল ইসলামঃ

এক সুরাহী সুরা দিও,একটু রুটি ছিলকে আর
প্রিয় সাকী,তাহার সাথে একখানা বই কবিতার,
জীর্ণ আমার জীবন জুড়ে রইবে প্রিয়া আমার সাথ,
এই যদি পাই চাইব না কো তখৎ আমি শাহানশার!

খৈয়ামের ফার্সী রুবাইয়াতের অনুবাদগুলো বাংলায় অবিকল বিষয়বস্তুতে আসেনি ৷ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বক্তব্য হল ফার্সী থেকে অনুবাদ আর ইংরেজী থেকে অনুবাদ;এই দুই শ্রেণি সম্পর্ণ আলাদা ৷ তাই কাজী নজরুলের সাথে কান্তি ঘোষের অনুবাদ যেমন স্বতন্ত্র তেমনি ফিটজেরাল্ডের অনুবাদ আর কান্তি ঘোষের মধ্যে অমিল এবং কাজী নজরুল আর ফার্সী রুবাইয়াতের মধ্যে অমিল দৃষ্টিসাপেক্ষ ৷
কান্তি ঘোষের অনুবাদ মূলের সাথে আংশিক সঙ্গতিপূর্ণ তাই তা মৌলিক রচনারই নামান্তর ৷ কেননা তিনি ফিটজেরাল্ডকেও পূর্ণভাবে অনুকরণ করেন নি ৷ কাজী নজরুল ও কান্তি ঘোষের মধ্যে উপরোল্লিখিত মিল বিদ্যমান থাকলেও কান্তি ঘোষের মূলের সাথে ভাবের বিচরণ বিচ্ছিন্ন এবং তাতে খৈয়ামের দর্শন ও রসপ্রাপ্তি ঘটে কিন্তু পাঠকের মনে সংশয়ের উদ্রেক করে ৷ কান্তি ঘোষের অনুবাদ ‘এর জিনিসটা বস্তু নয়,গতি’―রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই উক্তিটিই বিশ্লেষণসাপেক্ষ ৷ মৌলিক রচনা হিসেবে কান্তি ঘোষের অনুবাদ বিশেষ কৃতিত্বের দাবীদার এবং খৈয়াম দর্শন বিশেষভাবে উপলব্ধির কারণে তার অনুবাদ মূল ব্যতিরেকেই বাংলায় রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়াম হিসেবেই পরিগনিত হবে লোকদৃষ্টির অন্তরালে ৷


রায়ান নূর,
বাংলাভাষা ও সাহিত্য,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৷

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×