somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও একটি প্রস্তাব

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাগজে কলমে উন্নয়নশীল হলেও একটি দরিদ্র দেশ বললে ভূল হবে না আমার মাতৃভূমি এই বাংলাদেশকে।এদেশে অর্ধেকের বেশি মানুষের পুষ্টি বিষয়ে কোন ধারনাই (সাধারন ধারনা বাদে) নাই। পড়াশুনা বলতে বোঝে ভালো রেজাল্ট আর সরকারি চাকুরি।খারাপ রেজাল্ট আর বেসরকারি চাকুরি মন্দের ভাল।স্বাধীনতার পর থেকে এটাই চলে আসছে।আমি আমার আলোচনায় স্বাধীনতার আগে যাব না।

কারন মহান স্বাধীনতা আমাদের একটা সুযোগ দিয়েছিলো একটি শক্তিশালী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে লক্ষ কোটি ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট বের করে দেশের কাজে লাগানো।

আপনি যদি ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট অর্থ ভেবে থাকেন সব বিষয়ে ৯০-৯৯% মার্কস পাওয়া চশমা চোখের এলোমেল চুলওয়ালা কেউ,তাহলে এ ব্লগ আপনার জন্য নয়।আপনি এই মুহুর্তে পড়া বন্ধ করতে পারেন।

বিশ্ব বরেন্য বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন" কল্পনা জ্ঞান এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ.... "

কিন্তু আমাদের দেশে আমরা বিভিন্ন ভাবে কিশোর কিশোরী দের কল্পনা গুল হত্যা করি।

আমার আজকের লেখার পয়েন্ট এটাই।পৃথিবী তথা বাংলাদেশের প্রতিটা শিশু আমাদের জন্য অফুরন্ত সম্ভবনা নিয়ে আসে।আমরা কি সেটার সদ্ব্যবহার করতে পারি?? পারি না।সুযোগ থাকা সত্তেও পারি না।

হয়ত অনেকেই বলবেন, আমাদের সীমিত সম্পদে এটা সম্ভব নয়।আমি বলব সম্ভব।কিভাবে সম্ভব সেটা নিয়েই আমার আজকের অালোচনা।

একটা শিশু জন্মের পরই আমরা সেই শিশুটির পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে পারছি না,শিশুটি পুষ্টিহীনতা নিয়ে বড়ো হতে থাকে।স্কুলে যাওয়ার পর আমরা তার সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি না।কারন,সবদিকে শুধু বাণিজ্যিক শিক্ষা।কোচিং,ব্যাচে পড়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি।আপনি বর্তমান ঢাকা শহরের বেসরকারি স্কুল গুলোর পরীক্ষা পদ্ধতি জানলে আঁৎকে উঠবেন।প্রায় প্রতিমাসেই পরীক্ষা থাকে কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের। পমুখস্ত নির্ভর পড়া থেকে সৃজনশীল যুগে প্রবেশ করার সার্থকতা জানতে আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এবার মূল কথায় আসা যাক,একটা ক্লাশে ধরুন ষাট জন ছাত্র ছাত্রী আছে।এক জনের রোল হবে এক এবং সম্ভবত সবচে খারাপ স্টুডেন্টের রোল হবে ষাট। মুটামুটি ছয় বছর বয়স থেকেই একটা বাচ্চা ছেলে শিখতে শুরু করল বৈষম্য। ভাল করে পড়াশুনা করতে হবে,সবাইকে পেছনে ফেলে এক রোল করতে হবে।একটা শিশুর প্রথম শিক্ষা যদি হয় প্রতিযোগিতা,তাহলে সেই শিশুটি থেকে দেশ কি আশা করতে পারে?? (জাপানের স্কুল গুলতে নাকি রোল নম্বার হয় নামের অনুসারে,হায় আমার স্কুলে যদি এমন হত,না জানি বাবা মায়ের কত মারের হাত থেকে বেচে যেতাম!)

অথচ খবর নিলে দেখবেন সেই ষাট রোল ছাত্রটি মস্ত ফুটবল খেলয়াড়।সে যখন ব্যাক পজেশনে থাকে তাকে কাটিয়ে গোল করা কারো সাধ্য নেই! অথবা সেই ঊনষাট রোলের মেয়েটা খুব সুন্দর গল্প লিখতে পারে।অথবা আটষট্টি নম্বর ছেলেটা সাঁতারে ফাস্ট।এক ডুবে অনেকটা সময় পানির নিচে কাটিয়ে দিতে পারে।

আমরা কি করি এই ট্যালেন্ট গুলকে বছর শেষে একটি মেডেল অথবা একটি চিনামাটির ডিনার সেটের প্লেট অথবা সস্তা দামের কোন বই দিয়েই নিজেরা সন্তুষ্ট হয়ে যাই।

আর হায় হায় করি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলাধুলার সময়,বাংলাদেশের কেউ নেই,বাঙালী খেলতে পারে না,বাঙালীর কনফিডেন্স নাই ইত্যাদি ইত্যাদি....

আমাদের দেশের ভবিষ্যত সাকিবের পিঠে তারই ব্যাট ভাঙ্গা হয়,পিটিয়ে ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হয় সবচে সেরা ফুটবল খেলোয়াড় কে,দাবার বোর্ড ছিড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় সবচে ভালো দাবাড়ুর,খুজে খুজে তিন গোয়েন্দা বই পোড়ানো হয় সাধারন কয়েকটা উদাহরন দিলাম। বাবা মায়ের দ্বারা শিশু নির্যাতনের আরো অনেক ঘটনাই চাপা পড়ে থাকে।এগুলো সবই ঘটে শুধুমাত্র খারাপ রেজাল্ট করার জন্য,অথবা পর্যাপ্ত পরিমানে পড়াশুনা না করার জন্য।অথচ, ইতিহাস সাক্ষী আছে পৃথিবীর সোনার অক্ষরে নাম লেখা শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা পড়াশুনায় খুব উদাসীন ছিলেন।

আমার প্রস্তাব হলো, খেলাধুল অথবা বিশেষ যোগত্যা কে সরাসরি সিলেবাসের সাথে যুক্ত করে দেওয়া। একটা সাবজেক্ট বেড়ে যাবে।এবং

ইচ্ছামত যে কোন সাবজেক্ট কে ফোর সাবজেক্ট হিসেবে সিলেক্ট করা যাবে ক্লাশ ওয়ান থেকে।

ওকে,নাম্বার ওয়ান: ধরুন একজন ভালো ক্রিকেট খেলে,সে তার সিলেবাসে ক্রিকেট যুক্ত করবে।ধরুন অান্ত:স্কুল খেলায় যদি সে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয় তাহলে সে ১০০ মার্ক পাবে।এই একশো মার্ক তার মেইন মার্ক এর সাথে যোগ হয়ে মেধাতালিকায় তার অবস্হান প্রকাশ করবে।

সে যদি বিশ রান করে এবং দুটি উইকেট পায়, তাকে পঞ্চাশ দেওয়া যেতে পারে।

এভাবে সাঁতার,সাহিত্য,আরো সব রকমের খেলাধুলা এ্যাড করা যেতে পারে।

এবং দেখা গেল এই ছেলেটিই অংকে খুবই কাঁচা,তাহলে সে ম্যাথম্যাটিকস ফোর সাবজেক্ট করে নিলো।কোন রকমে পাশ মার্ক পেয়েও ছেলেটি উৎরে যেতে পারছে।

এতে আমরা সত্যিকারের একটি ব্রিলিয়ান্ট প্রজন্ম পাব এটা আমি বিশ্বাস করি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০৯
১৬টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×