somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকবরনামা-২ (মযহবনামা)

২৩ শে জুন, ২০০৯ বিকাল ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

................এইভাবে দুনিয়াদার আলেমগণের দ্বারা মোঘল হুকুমতে সর্বপ্রথম ইসলামবিরোধী বিশ্বাসের বীজ বপন করা হয়।

আবুল ফজল, ফৈজী ও তাহার পিতা এক মযহাবনামা জারী করেন। ইহাতে নফছ্পরস্তি ও শয়তানী আকিদার স্পষ্ট নিদর্শন পরিলতি হয়। এই মযহাবনামায় আরো অনেক দুনিয়াদার আলেম স্বেচ্ছায় দস্তখত করেন। অনেকের নিকট হইতে জোর করিয়া দস্তখত আদায় করা হয়। মযহাবনামাটি ছিল নিম্নরূপঃ

বাদশাহ আকবরের আদল ও ইনসাফের বদৌলতে বর্তমান হিন্দুস্তান পরিণত হইয়াছে শান্তি ও শৃঙ্খলার কেন্দ্রে। এই জন্য এই স্থানে মুক্ত পথের প্রদর্শক আলেম ও সর্ব সাধারণের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হইয়াছে। ইহারা আরব ও বিভিন্ন দেশ হইতে আগমন করিলেও এই দেশকেই মাতুভূমি বলিয়া জানেন। এই সমস্ত আলেমগণ সর্বপ্রকার এলমে বিশেষ পারদর্শী। তাহারা সাচ্চা ইমানদার। আকলী ও নকলী বিষয়গুলিতেও তাহারা বিশেষজ্ঞ। কোরআন পাকে আল্লাহ্পাক এরশাদ করিয়াছেনঃ
“আল্লাহ্তায়ালার নির্দেশ মান, রসূলের নির্দেশ মান এবং ঐ সকল লোকের নির্দেশ মান যাহারা তোমাদের প্রতি হুকুমের মালিক।” কতিপয় হাদিস । যথা ঃ ‘আল্লাহর নিকট কেয়ামতের দিন সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি হইবেন ন্যায় বিচারক আমির,’ ‘যে ব্যক্তি আমিরের অনুগত সে যেন আমারই অনুগত এবং যে ব্যক্তি তাঁহার অবাধ্য সে আমারও অবাধ্য।’ এই সব হাদিসের মর্মানুসারে এবং আকলী ও নকলী দলিল মোতাবেক আমরা ঘোষণা করিতেছি যে, আল্লাহর নিকট মুজতাহিদগণ অপো ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ্ অধিক মর্যাদাসম্পন্ন। বাদশাহ জালালুদ্দিন মোহাম্মদ আকবর বড়ই ন্যায়বান, জ্ঞানী ও বিদ্বান। তাই মুজতাহিদগণের এখতেলাফি বিষয়গুলিতে যদি তিনি তাঁহার তীè বুদ্ধি, জ্ঞান ও নির্ভুল রায় অনুযায়ী আদম সন্তানের জীবিকা ও পার্থিব সুবিধার জন্য কোন একটি দিককে প্রধান্য দেন এবং উহা করণীয় বলিয়া নির্দেশ প্রদান করেন তবে আবদশাহর এই সিদ্ধান্ত সমর্থরযোগ্য এবং সর্বসাধারণ উহা মানিয়া চলিতে বাধ্য। এইরূপ কোরআন শরীফের প্রতিকূল নয় অথচ যাহা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়, বাদশাহ কর্তৃক প্রদত্ত এই ধরনের ফরমান অনুযায়ী প্রতিটি নর-নারী আমল করিতে বাধ্য থাকিবে। ইহার বিরোধিতায়-দীন দুনিয়ার ধ্বংশ ও আখেরাতের শাস্তি নিহিত।”


এইরূপ প্রচারের ফলে বাদশাহ ্আকবর নিজেকে মুজতাহিদ মনে করিতে থাকেন। তাহার মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হয় যে- তিনি নিজেই নতুন কোন ধর্ম প্রবর্তন করিবার যথেষ্ট যোগ্যতা রাখেন। এইভাবে দুনিয়াদার আলেমগণের ফেতনা তাঁহার মনে অবিশ্বাসের বীজ বপন করে। ফলে তিনি ইসলামকে তাঁহার বিবেক দ্বারা বিচার করিতে থাকেন এবং দেখেন যে, ইসলামের প্রতিটি আকিদাই বিবেকের রায়ে টিকে না।

কিন্তু অজ্ঞ বাদশাহ বুঝিতে পারিলেন না- বিবেক নিজেই অশুদ্ধ। বিবেক বা মানুষের সাধারণ জ্ঞান কোনদিনই সত্য আবিষ্কারের যোগ্যতা রাখে না। তাহা হইলে মানুষ নিজেই চিন্তাভাবনা গবেষণা করিয়া সত্য আবিষ্কার করিতে পারিত। বড় বড় দার্শনিক ও হিন্দু মুণি-ঋষি ও গ্রীক সাধকগণ সত্য আবিষ্কার করিতে পারিত। তাঁহাদের জ্ঞানচর্চা ও ইসলাম বির্জিত কঠোর সাধনা করিয়া তাঁহারা মুক্তি পাইতে পারিতেন। কিন্তু তাঁহাদের সাধনা ও জ্ঞান দ্বারা তাঁহারা কেবল ভ্রষ্টতাই লাখ করিয়াছেন- অন্য কিছু নয়। বিবেকের কাজ শুধু এইটুকুই-সে বুঝিতে শিখিবে যে, আনুগত্যের মাধ্যমেই সে মুক্তি পাইবে।নবী (আঃ) গণ যে জ্ঞান লইয়া এই ধরাধামে আগমন করিয়াছেন সেই অহিলদ্ধ নিঃসন্দেহ জ্ঞানের নিকট আত্মসমর্পন করিবে। কারণ মানুষ তাহার আকল ও বিবেক দ্বারা সত্য আবিষ্কার করিবার মতা রাখে না বলিয়াই আল্লাহ্পাক নবী (আঃ) গণকে প্রেরণ করিয়াছেন-যাহাতে মানুষ তাঁহাদের অনুগত হইয়া আল্লাহ্ পাকের পরিচয় লাভ করে এবং মুক্তি পায়। কোরআন মজিদে তাই আল্লাহপাক্ ঘোষণা করিয়াছেন ‘যাহা কিছু রসূল কর্তৃক প্রাপ্ত হও- তাহা গ্রহণ কর এবং যাহা তিনি করিতে নিষেধ করেন তাহা হইতে বিরত থাক।’


(মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ রচিত খ,ম, আমানুল্লাহ কর্তৃক প্রকাশিত হজরত মোজাদ্দেদে আলফে সানি রহঃ -এর অবিস্মরণীয় জীবন কথা ‘নূরে সেরহিন্দ’ গ্রন্থ হতে চয়িত অংশ বিশেষঃ)
সেরহিন্দ প্রকাশন , ৩৮/২-ক, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০।
উল্লেখ্য, গ্রন্থটির সর্বস্বত্ত্ব লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত নয়।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×