somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিচির মিচির পাখি সমগ্র :)

২৯ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পাখি সবার মত আমারও খুব ভালো লাগে। খুব ইচ্ছে ছিল একটা কথা বলা পাখি থাকবে আমার। আর সব না হওয়া ইচ্ছের মত এই ইচ্ছেটা হয়নি।

কারও বাসায় কথা বলা পাখি আছে শুনলেই আমি সেই বাসায় যেতে খুব আগ্রহী থাকতাম :P একটা টিয়া পাখি অবশ্য দেখেছিলাম কাছ থেকে। বাসার সবার নাম বলতে পারত! কি যে ভালো লাগত শুনতে!

আমি পেপারে একবার পড়েছিলাম, নিরিবিলি শান্ত কোন জায়গায় পাখির খাবার প্রতি দিন একই সময় নিয়মিত রেখে দিলে পাখিরা সেখানে সব সময় আসে সেই খাবার খেতে। অনেক সময় অনেক পাখি পরিচিত হয়ে যায়। এতই চেনা হয় যে তাকে হাত থেকেই খাবার খাওয়ান যায়! :D

তবে লেখা ছিল যে পাখি যে খাবার খায় তার জন্য সেই খাবার টাই রাখতে হবে। তার মানে আমি যেই পাখি টাকে পোষ মানাতে চাই আমাকে সেই পাখির খাবার দিতে হবে নিয়মিত :)

আমার পড়ে খুব ভাল লাগল কাজটা আর খুব সহজ মনে হয়েছিল। ঠিক করলাম আমিও করব। পাখির খাবার রাখব। আমাদের এদিকে চড়ুই আর কাক বেশী দেখা যায়। তাই ঠিক করলাম চড়ুই হবে আমার পাখি। চড়ুই খায় ধান আম্মু বলল। কিন্তু ধান যোগান করতে পারলাম না। শেষে চাল দিয়েই শুরু করব ঠিক করলাম। B-)
প্লাস্টিকের বোতলের অর্ধেক কেটে একটা বাটির মত বানালাম। তাতে গরম শিক দিয়ে ফুটা করে দড়ি দিয়ে বাধলাম। তার পর আমার পড়ার টেবিলের পাশের জানালার শিকের সাথে বেধে দিলাম। জানালার বাইরে ঝুলবে। আর অনেক উপরে তাই কেউ ফেলে দেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু পাখি সহজেই খেতে পারবে। B-)

বেশ কিছুদিন খুব খেয়াল রাখলাম কিন্তু দেখি কোন পাখির প এর ও খোজ নাই! :(
:| অপেক্ষা করে করে একদিন ভুলেও গেছি সব। ধরে নিলাম হয়ত পাখির চোখে পরে নাই! :(
এর কিছু দিন পর খুব বৃষ্টি হল। বৃষ্টিতে চাল ভিজে চুপ চুপে হয়ে গেছে দেখে নামিয়ে নিলাম। আর আমার এক্সপেরিমেন্ট টা ফেইল করল সেই কথা ভেবে দীর্ঘ নিশ্বাস নিলাম
:((
বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ খেয়াল করলাম জানালার পাশে :D পাখির কিচির মিচির কিচির মিচির! তাকিয়ে দেখি বেশ কিছু চড়ুই পাখি উড়া উড়ি করছে! :) এত ভাল লাগল! বুঝলাম চড়ুই পাখি ঠিকই আমার চাল ;) খেয়ে গেছে কিন্তু আমি টের পাইনি :P
কিন্তু তখন খাবার না পেয়ে কিচির মিচির করছিল :( হয়ত আমাকে অনেক বকছিল! :((
এর পর চাল দিয়েছিলাম কিন্তু আর আসেনি। মনে হয় রাগ করেছে! আমার ইচ্ছে আছে আবার করব এমন।


আমাদের বাসায় কাজ করেন খালা আমাদের একবার বললেন, শালিক পাখি নাকি কথা বলতে পারে। শুনেই আমরা লাফ দেই :D পারলে। আমাদের অতি আগ্রহে রাজী হয়ে খালা তার গ্রামের বাড়ী থেকে একটা পাখি নিয়ে আসলেন।

পাখিটার আবার পা ভাঙ্গা ছিল। তাই বেধে রাখা হয়নি। পাখিটা টুক টুক করে হেটে বেড়াত সারা ঘরে। আর আমার পড়ার টেবিলের নিচে বসে থাকত। আমাকে তাই খুব সাবধানে পড়তে হত।যদি পা লেগে যায় পাখির গায়ে!। ভুলেও যদি আমার পা কাছে পেত টুক করে ঠোকর মারত। আর আমি চমকে পারলে পরেই যাই! ২/৩ মাস পর পাখি টা মুখ দিয়ে অদ্ভুত কট কট শব্দ করত। কিছু বলতে চাইত যেন। কিন্তু বারান্দা থেকে কাক কামড়ে নিচে ফেলে পাখি টাকে মেরে ফেলেছে। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় পাখি টা বুঝি আমার টেবিলের নিচে বসে আছে। একটু পরই ঠোকর দিবে!




এর পর একবার স্কুলের কাছে খুব মুরগির বাচ্চা বিক্রি করার ধুম পরে গেল। সবাই মুরগির তুল তুলে বাচ্চা গুলো কিনে নিত। তার সাথে খাবার। দেখে এত কিউট লাগে। আর মেয়ে গুলো তো দেখেই কুপোকাত! না কিনে যাবে কই! ধুমছে কিনেছে সবাই। কিন্তু জানি না সেই বাচ্চা গুলোর কি হয়েছে এখন। কিন্তু আমি রাখতে পারিনি আমার বাচ্চা গুলো কে। কাক নিয়ে গেছে আমার মুরগির বাচ্চা গুলো কে।

এর পর পাখি পালার ভুত আমার মাথা থেকে গেছে ভালো মতই। :(




বাসার কাছে অনেক গাছ থাকার কারনে কাকের বাসা অনেক দেখা যায়। বারান্দার কাছে আম গাছেও নিয়মিত এক কাক পরিবার বাসা বানায় আর থাকে ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়া পর্যন্ত।
কিন্তু আমাদের অবস্থা খারাপ করে ফেলে। সারাদিন কা কা কা করে সবার কান ঝালা পালা করে দেয় (আমি ছাড়া সবার, আমার কান ঝালা পালা হয় না আর সেই কথা বাসায় বলার কারনে আজ আমাকে বকুনি খেতে হইছে :(( আমি কেন কাকের সাপোর্ট করলাম! আমার নাকি কান নাই :P )

আমাদের প্রতিবেশী এই কাকের অনেক দাবি আমাদের মেনে নিতে হইছে।
যেমনঃ
বারান্দায় বাসার বাসিন্দারা যেতে পারবে না! :-*
গাছের ধারে কাছে থাকতে পারবে না! :|
কাকের দিকে তাকাতে পারবে না :-/
আর যদি অমান্য করা হয় শুরু হয় কাকের প্রতিবাদ! :-/
আম্মু বারান্দার দরজা খুলে রুমের মাঝে বসে থাকলেও কাক পরিবারের বিরাট সমস্যা দেখা দেয়! বাধ্য হয়ে আম্মু রুম থেকেই চলে আসে।

কা কা করে করে আর গাছের ডাল পালা ভেঙ্গে ভেঙ্গে তার প্রতিবাদ করতে থাকে!

কাকের এই প্রতিবাদ আমি আম্মুর কাছে শুনে বিশ্বাস করতে পারি নাই প্রথমে। পরে আমি নিজের চোখে দেখলাম! দেখে পুরা টাস্কিত।! :-*




****

এলোমেলো কিছু কথা লিখে ফেললাম।

লেখাটা আমি শুরু করেছিলাম বড় বিলাই আপুর দালান কোঠায় পাখির বাসা পোস্টে কমেন্ট দিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৮:৩৩
৮৮টি মন্তব্য ৮৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×