ভু-স্বর্গ কাশ্মীর ভ্রমণটা আনন্দের হলেও সব সময় আমাদের মনে কাশ্মীর নিয়া একটা ভয় কাজ করে। আর এবার আমরা যখন কাশ্মীর ভ্রমণ শুরু করলাম তখন ভারতে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে কাশ্মীরে একজন ট্রাক ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং যেদিন জম্মুতে নামলাম সেদিন ওখানে চলছে অবরোধ। এ যেনো ভয়ের ষোলকলা পূর্ণ হলো। তবে সেটাই হয়েছিলো আমাদের জন্য শাপে বর, আমাদের ড্রাইভার সাহিল জম্মু শ্রীনগর হাইওয়ের বদলে এমন এক রাস্তা ধরে আমাদেরকে পেহেলগাম নিয়ে গিয়েছিলো তাকে বিনা দ্বিধায় বলা চলে স্বর্গের পথ। কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি দৃষ্টি নন্দন মোগল গার্ডেন রয়েছে, তিনটি গার্ডেন দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। আজকের পোষ্ট তারই একটি নিয়ে, যার নাম চশমেশাহী।
(২) ডাল লেকের পাড়ে একটা দাবায় দুপুরের খাবার খেয়ে ছুটে চললাম মোগল গার্ডেনগুলো দেখতে, চশমেশাহীতে ঢোকার আগেই কঠিন সিকিউরিটি পার হতে হয় বলে কিছুটা ভয় ভয়ও লাগছিলো। অবশেষে চশমেশাহীর গেইটে পৌছে গার্ডেন দেখার টিকিট নিলাম। ১০ রুপী করে টিকেট, ১০ জনের জন্য এক টিকেট ১০০ রুপী।
(৩) মোগল গার্ডেন গুলো সবই পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে, ক্রমান্বয়ে পিছনের দিকটা উঁচুতে উঠে গেছে, আর সেখান থেকে পাহাড়ি ঝর্ণাকে গার্ডেনের ভেতর দিয়ে প্রবাহমান রাখা হয়েছে। তাই প্রথমেই সিড়ি বেয়ে আমাদেরকে উপরের দিকে উঠতে হচ্ছে।
(৪) উপরে একটা সমতলে অনেক নাম জানা অজানা ফুলের বাগান থেকে আরো উপরে উঠতে হয় সিড়ি বেয়ে। ছবিতে দেখা বিল্ডিংটার মাঝখানে একটা ড্রেনের মতো আছে তা দিয়ে পানি নিচের দিকে নেমে আসছে, শুকনো মৌসুম হওয়ায় পানি অনেক কম।
(৫) সিড়ি বেয়ে পরের ধাপ উঠে নিচের তোলা ছবি এটা।
(৬/৭) ভেড়ার পশমের মতো দেখতে লাল হলুদ এই ফুলগুলো আগে কখনো দেখিনি।
(৮) সর্বত্রই বেশ পরিপাটি করে গোছানো এই বাগান।
(৯) কিছুক্ষণ আগের এক পশলা বৃষ্টি আমাদের গায়ে কাঁপন ধরাচ্ছিলো।
(১০) ভাট শালিক দুটোর ও বেশ শীত করছে।
(১১) প্রত্যেকটা মোগল গার্ডেনেই এই গাছগুলো রয়েছে, নাম জানিনা, দেখতে অনেকটা বনসাইয়ের মতো।
(১২/১৩/১৪) বেগুনী, লাল, হলুদ সাদা কোন রঙের ফুলেরই কমতি নাই চশমেশাহীতে, যা দেখলে মনটা সত্যিই ভালো হয়ে যায়।
(১৫) চশমেশাহীর সর্বশেষ এবং সর্বোচ্চ ধাপ হলো এইটা, এর পেছনেই রয়েছে পাহাড়ি ঝর্ণা, ওখান থেকে পানি এই পথ ধরে পুরো বাগানে ধাপে ধাপে নেমে যাচ্ছে।
(১৬/১৭) তবে এই লাল রঙা ফুলটা একেবারেই অন্য রকম, মেয়েদের লম্বা বিনুনির মতো উপর থেকে নিচে ঝুলে থাকে।
(১৮) ঝর্ণার পানি যেখান দিয়া বাগানে প্রবেশ করছে সেখানে তৈরী করেছে এই মসজিদ আকৃতির ছোট্ট স্থাপনাটা।
(১৯) এই ছবিটা খারাপ হওয়ার জন্য আমি দায়ীনা, যেই আপু এটা তুলেছে সব দায় দায়িত্ব ওনার
(২০) চশমেশাহী থেকে নেমে আসার পর কিছু স্যুভেনির কেনার জন্য বেশ কিছু ছোট্ট দোকান আছে, ইচ্ছে হলেই কেনা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯