somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিনি কক্সবাজার মৈনটঘাট

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেখতে কক্সবাজেরের মতো অনবরত ঢেউ তীরের বালিয়াড়িতে এসে আছড়ে পড়ছে, এমন সুন্দর যায়গা আমি বেশ কয়েকটা দেখেছি, ওগুলোর কাছে গেলে মনের অজান্তেই কক্সবাজারের নামটা মুখে চলে আসে। মৈনটঘাটটাও তেমনি। তবে এর ব্যতিক্রম হলো অন্য যেই জায়গাগুলোকে আমি মনে মনে কক্সবাজারের সাথে তুলনা করি সেখানকার নদীগুলোর প্রসারতা মৈনটের চেয়ে অনেক কম। মৈমনঘাটে পদ্মার প্রশস্ততা এতো বেশী যে সত্যিই অবাক হতে হয়। তবে মৈনটের তীরের ভাঙ্গনটা বেশ ভাবনার বিষয়। মিুনটঘাটের অনেক নাম শুনে সেদিন বেড়িয়ে পড়লাম ওখানের উদ্দেশ্যে। গুলিস্তানের গোলাপ শাহ এর মাজারের সামনে থেকে ছাড়ে মৈনটঘাটের বাস, ৯০ টাকা ভাড়া দিয়া সোজা চলে গেলাম ঢাকার দোহার উপজেলার মিনি কক্সবাজার তথা মৈনটঘাটে। ওখানে যখন আমি পৌছি তখন দুপুর একটা বাজে। বিকাল বেলাটা নাকি খুব জমজমাট হয়। আমি আবার সব জায়গায়ই কম মানুষ থাকলে ঘুরে/দেখে আরাম পাই, মৈনটঘাটেও পেয়েছিলাম। তো আসুন দেখি মৈনটের ছবিব্লগ।


(২) নয়াবাজার দিয়া যখন দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুতে উঠলাম তখন বাসে বসেই বুড়িগঙ্গার উপর একটা ক্লিক।


(৩) বাস থেকে নেমে সামনে এগোতেই এমন সিএনজির সারি।


(৪) এখানে গোসল করতে নেমে পদ্মার স্রোতে মৃত্যুবরণ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী, তাই এই সতর্ক বার্তা।


(৫) ইদানিং পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হওয়ায় বেশ কিছু খাবার হোটেল এখানে চালু হয়েছে, মাছ ভাত খাওয়ার এই হোটেলগুলোতে দামও তুলনামুলকভাবে বেশ কম।


(৬) ঘাটের একপাশে বাধা রয়েছে বেশ কিছু স্পীডবোড, সাধারণত ওপারের যাত্রীরাই এগুলো ব্যবহার করে, তবে পর্যটকরা ইচ্ছে করলে ভাড়া নিয়া ঘুরেও বেড়াতে পারে।


(৭) অন্যপাশে রয়েছে অনেকগুলো ট্রলার, ওরাও যাত্রী মালামাল এবং রিজার্ভে ব্যবহৃত হয়।


(৮/৯) মৈনটে এমন অনেক খঞ্জনা পাখির দেখা পেয়েছিলাম, সাধারণত অন্য কোথাও আমি এতো খঞ্জনা দেখিনি। এক সময় কোচবিহার রাজ্যের ভাগ্য জানতে বিজয়া দশমীর সকালে হাতির পিঠে চড়ে খঞ্জনা পাখি ওড়ানোর রেওয়াজ ছিল। ওই পাখি যেদিকে যেত, সেইদিকে লক্ষ্য রেখে রাজ পুরোহিত ও গনৎকাররা রাজ্যের ভাগ্য নির্ধারণ করতেন।




(১০) কিছু দোকানপাট পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছিল।


(১১) আবার কিছু দোকানপাট পর্যটকদের আসার আগে খোলা হয়না।


(১২) নদীর পারে মাঠে গরু ঘাস খাচ্ছিল আর তাদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিক গো-বকদের দল। গো-বক মাটির ওপর বা ঘাসবনের ভেতর দিয়ে যেমন মার্চ করতে পারে, তেমনি উড়ন্ত পোকা-পতঙ্গকে লাফ দিয়ে শূন্য থেকে পেড়ে ফেলতে পারে অ্যাক্রোব্যাটদের কৌশলে। মূল খাদ্য এদের পোকামাকড়, গিরগিটি, ব্যাঙ, টিকটিকি; গরু-মহিষ-ভেড়া-ছাগলের শরীরের পরজীবী পোকা-কীটসহ আটালি ও ডাঁশ মাছি। জোঁক এরা খায় না। তবে গবাদিপশুর নাকের ভেতরে, খুরের ফাঁকে, তলপেটে জোঁক লাগলে সেগুলো এরা টেনে বের করে ফেলে শালিকদের মতো। নাকের ভেতরে জোঁক ঢুকলে গবাদিপশু হ্যাঁচ্চো দিতে থাকে। শালিক ও গো-বকেরা আসে। পশুটি মুখ নামিয়ে দেয়। নাকের ভেতরে ঠোঁট ঢুকিয়ে দিয়ে বের করে আনে জোঁক। জোঁকেরাও অতি বুদ্ধিমান। গবাদিপশুর এমন সব জায়গায় লাগে, যেখানে পশুটি জিভ দিয়ে চাটতে পারবে না, চাটা দিলে জোঁকের বাবারও সাধ্য নেই লেগে থাকে। গো-বক তাই গবাদিপশুর পরম বন্ধু। গবাদিপশু কাত হয়ে শুয়ে আছে, গো-বক কানের ভেতরের বা শিংয়ের গোড়ার আটালি বের করে খাচ্ছে বাংলায় আজও এটি সাধারণ দৃশ্য। গবাদিপশু ঘাসবনে চরছে, নড়ছে ঝোপঝাড়, উড়ছে পোকামাকড়, খাচ্ছে গো-বকেরা। এটিও চিরচেনা দৃশ্য। এমনিতেও গো-বকেরা ঘাসবনে পাশাপাশি দলবেঁধে হাঁটে, নিজেরাই পা ও পাখা দিয়ে ঝোপঝাড়-ঘাস নাড়ায়, পোকামাকড় বের হলেই পাকড়াও করে। ঘাসবনের ওপর দিয়ে উড়তে উড়তে এরা দুই পাখার বাতাস ঢেলে পোকামাকড় বের করার কৌশল জানে। শুধু পোষা প্রাণী নয়, বুনো শূকর, হরিণ, হাতি ইত্যাদির সঙ্গে একই কারণে বন্ধুত্ব গো-বকের। এরা দিবাচর। তবে প্রয়োজনে নিশাচর হতে পারে।


(১৩) পাশের বাড়িঘরগুলোর আশেপাশেও বকদের অনেক উড়াউড়ি চোখে পড়ে।


(১৪) তবে একটা ভাবনার বিষয় হলো, পাড়ের বালিয়াড়িতে ভাঙ্গন ব্যপক।


(১৫) কুনি জাল দিয়ে পদ্মায় মাছ ধরছে একজন।


(১৬) কোথাও আবার এমন অযত্নে ফুটে আছে কচুরী পানা ফুল।


(১৭) স্পীডবোড ছুটে চলেছে যাত্রীদের উপারে পৌছে দিতে।


(১৮/১৯) ঘোড়ার গাড়িতে করে ইট পরিবহন করতে মৈনটঘাট ছাড়া আর কোথাও দেখিনি আমি।




(২০) ফেরার আগে বাসে বসে একটা ক্লিক, সবুজ ক্ষেতের ওপাশেই পদ্মা নদী।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০২
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×