আগামীকাল থেকে যদি ইভটিজিং একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, এলাকার সকল বাদাইম্যা পোলাপাইন যদি কোন এক গায়েবী কারনে খাম্বার মতো সোজা আর গরুর মত সরল হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে শুভ বুদ্ধি জাগ্রত হয় তদুপরি শুদ্ধ চিন্তার অধিকারী হয়ে নিজের আত্মীয় ব্যাতিরেকে আর কারও দিকে মুখ তুলে তাকায় না, এলাকায় যত সুন্দরী মাইয়া আছে তাদেরকে নিজের মা বোন জ্ঞান করে একশো হাত তফাতে থাকে, তবে সমাজে এর কি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে? চিন্তা করে কি কেউ দেখেছে কখনো? আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বিষয় টা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেছি। সেই চিন্তাগুলো নিয়েই আজকের লেখা...
প্রথমতঃ সকল পর্যায়ের বেশী সুন্দর, কম সুন্দর আর বান্দর মেয়েগুলো বিরাট পর্যায়ের টাসকি খাইয়া পড়বে, তারা রীতিমতো দিশেহারা হয়ে যাবে, প্রথমদিন যখন এই রকম ঘটনা ঘটবে সেদিন স্কুলে কলেজে বিশবিদ্যালয়ে গিয়ে প্রথমেই দীর্ঘক্ষন নিজস্ব ক্ষুদ্র আরশীতে চাইয়া থাকবে নিজের চেহারাতে কোন চেঞ্জ আসলো কিনা চেক করতে, তাতেও মন না ভরলে চলে যাবে ওয়াসরুমের বড় আয়নায় দেখতে, সেখানে সবাই যেহেতু একই কাজে আসবে সুতরাং বেশ বড়সড় ভীড় লেগে যাবে। প্রবল ধাক্কাধাক্কি এবং মনমেজাজ খারাপ থাকার দরুন ছোটখাটো চুলোচুলির ঘটনাও যে ঘটবে সেটা “বিফলে মুল্য ফেরত” গ্যারান্টি সহকারে বলে দেয়া যায়।
দ্বিতীয়ত: ঐ দিনের টিফিন টাইমের পুরা সময়টা কাটবে নিরসভাবে। কারন, আসার সময়ে কোন ছেলে কেমন করে কি করে উত্তক্ত করেছিল কিংবা ছেলেটি কি পড়ে এসেছিলো, দেখতে কেমন ক্যাবলার মতো মনে হয়েছিল, শাকিব কিংবা সালমানের মতো কোন ছেলে তোমাকে না পেলে মরে যাবো বলে হুমকি দিয়েছে, কোন ছেলে রক্ত দিয়ে চিঠি দিতে চেয়েছে, কোন ছেলে পার্কে নিয়ে যেতে অফার করেছে, কোন ছেলে নতুন মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে এইসব ব্যাপারে সরস কোন আলোচনাই হবে না। স্কুল শেষ হবে "যাইরে মনটা ভালো লাগছে না" বলে পরষ্পর থেকে বিদায় নিয়ে। স্কুল থেকে ফেরার সময়ে ও যেহেতু কেউ টিজ করবেনা সেহেতু মেয়েটি স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেবে তার চেহারা খারাপ হয়ে যাওয়াতেই ছেলেরা তার দিকে এভাবে আগেরমত তাকাচ্ছে না। খাওয়া দাওয়া ভালোভাবে ত হবেই না
বরং সেদিন পুরো রাতের বেশিরভাগ জুড়েই চলবে চেহারার পরিচর্যা, বাকি রাত কাটবে দু:সপ্নে। সপ্নের মধ্যে বখাটেদের দেখা যাবে আপাদমস্তক ভদ্র হয়ে স্লামালাইকুম আপা বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে। বাকিরাতটুকু কাটবে ঘুমহীন ছাড়া ছাড়া ভাবে। কিন্তু দুশ্চিন্তা আর অনিদ্রায় চেহারা আরো খারাপ হয়ে পড়বে।চোখের নীচে কালি পড়বে, চোখ কোটরে ঢুকে যাবে।পরের দিনের ঘটনা হবে আরো ভয়াবহ। কারন পুরো ক্লাস জুড়েই থাকবে এই আলোচনা। বয়স্ক শিক্ষক শিক্ষিকারা খুশী হলেও অল্পবয়েসী অবিবাহিত শিক্ষিকারা থাকবেন ছাত্রীদের মতোই ব্যাপক চিন্তিত। মেয়েদের কথাবার্থায় থাকবে কেবলই হতাশার সুর। কেউ আর নিজেকে আলাদা করে ভাব নিতে পারবে না। ভাইদের বলে বন্ধুদের কাছে এক্সট্রা খাতির পাবার পথও যাবে বন্ধ হয়ে। তবে ক্লাসের সবচেয়ে সিরিয়াস মেয়েটা আর তুলনামূলক কম সুন্দরী মেয়েরা যারা নাকি জীবনে কখনো টিজিং এর শিকার হয়নি, যাদেরকে তারা সবসময়ই তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখতো, আজ তারা সহানুভূতি জানাতে আসবে "মন খারাপ করোনা কেউ কখনো আমাদের টিজ করেনি বলে আমরা কি মরে গেছি? দিব্বি হেসেখেলে পার করে দিচ্ছি " টাইপ উপদেশমুলক কথা বলে। এসব সহানুভূতিমুলক কথা শুনে তাদের ত মন ভালো হবেই না বরং কেউ কেউ হু হু করে কেদে কেটে আকাশ বাতাস ভারী করে তুলবে। সেই পানি স্কুলের পাশের ছোট ছোট নালা ছাপিয়ে নদীতে গিয়ে পড়বে, নদীর পানি আর চোখের পানি একাকার হয়ে সাগরে মিশে সাগরের পানিকে আরো লবনাক্ত করে তুলবে। পুরো ক্লাসটাতে বজায় থাকবে সাম্যের জয়গান। কাজী নজরুল এর আত্না হয়তোবা সামান্য হলেও শান্তি পাবে সেদিন।এদিকে দিনের পর দিন অবহেলা আর টিজিং মুক্ত থাকায় কিছু ছাত্রী পড়াশুনায় লেগে যাবে ঠিকই কিন্তু বেশিরভাগই আর স্কুল কলেজে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। মেয়েদের উচ্চশিক্ষার হার শপাট করে তলানিতে এসে ঠেকবে। যেহেতু স্কুল কলেজে যাওয়ার ইচ্ছা নেই সেজন্য আগেরমত সাজগোজের দিকেও মন থাকবে না।সাজের জিনিস গুলোর বিক্রিতে ভাটা পড়বে অসংখ্য ব্যবসায়ীর ব্যবসায় লাল বাতি জলবে। রাস্তাঘাট, পার্কের পরিবেশ হয়ে ঊঠবে নির্মল আর শান্ত। তাদের পড়াশোনা শিকেয় উঠে যাওয়ায় মা বাবাও এক সময় বিয়ে দিয়ে অকালেই সংসার ধর্ম পালন করতে শশুড়বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন। শশুরালয়ে মেয়েরা স্বামী শশুরের সেবা আর সন্তানের লালন পালনের ব্যস্তটায় দিন কেটে যাবে। যেহেতু ছেলেরা সব ভদ্র আর অন্য মেয়ের প্রতি অনাসক্ত থাকবে সেকারনে স্বাভাবিকতই স্ত্রীকেই আরো বেশী সময়ের জন্য কাছে পেতে চাইবে। তার ফলাফল! জনসংখ্যারমহাবিস্ফোরণ।
এভাবেই টিজিং না থাকায় ফুলের মতো মেয়েদের জীবন ধংসের(!) পথে চলে যাবে। আমাদের কি উচিত এমন করে তাদের জীবনটা ধংস করে দেয়া?তাই সবার কি করা উচিত?
পাওটীকা: এই লিখাটা অতিশয় সস্তা রকমের ফান পুষ্ট, উক্ত নিন্দনীয় লেখা পড়িয়া কেউ মাইন্ড খাইলে সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে খাইবেন। আমাকে বহুমাত্রিক গালি দিয়ে নিজ বংশের পরিচয়ে কলংকের কালি লেপন করিবেন না আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৯