somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কি অপ-রাজনীতির কাছে হেরেই গেলাম?

২০ শে মে, ২০১২ ভোর ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা যেন রাজনীতির মারের কাছে হেরেই গেলাম। রাজনীতি ছাড়া আমরা যেন আর কিছুই বুঝি না। দেশ, জাতি, সমাজ উচ্ছন্নে যাক, নেতা নেত্রীর আশীর্বাদে জীবন ধন্য। রাস্তা ঘাট, স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি, অফিস আদালত এমন কি চায়ের দোকান সকল জায়গায় রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছুই আলোচনা হয় না। দেশে যেন রাজনৈতিক দক্ষিণা বাতাস বইছে। সকল দুয়ারে কেবল রাজনৈতিক মশাল। ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, স্কুল শিক্ষক অথবা রিকশাচালক দিনমজুর এমন কি বাড়ির কাজের বুয়াও রাজনৈতিক জ্বরে আক্রান্ত। স্বীকার করছি রাজনীতি হচ্ছে সকল নীতির চালক। কিন্তু এই নীতির জ্বরে পিতা পুত্র ভাই বোন বন্ধু প্রতিবেশী সবাই একে অপরের চরম শত্রুতে পরিণত হয়েছে। এমন একটা পরিবেশ কেউ অন্য রাজনৈতিক দলের কারো মুখ দর্শন পর্যন্ত করতে ঘৃণা করে। একে অপরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এ যেন অতি পরিচিত বাংলার ঐতিহ্যে পরিণত হচ্ছে।

সমাজ যেন রাজনীতির কাছে জিম্মি হয়ে আছে। সামান্য ঝগড়া বিবাদও রাজনীতির ছোঁয়ায় বৃহৎ আকার ধারণ করছে। ভাইয়ে ভাইয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হলে দুজনের মাঝে রাজনীতি এসে সমস্যার চিরস্থায়ী রূপ দিচ্ছে। পাড়া প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া বিবাদ হলে তো কথাই নেই। বিচার করার আগে কোন পক্ষ কোন দল করে সেই বিবেচনায় বিচার করার চেষ্টা চলে। স্বামী স্ত্রী যদি ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থন করে তাহলে এক পরিবার বহুদলে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। কখনও কখনও বাহিরের লোক এসে পরিবারের রাজনৈতিক বলয়ে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করছে। বাহ আর কি চাই, এই না হলে বাঙ্গাল জাতি? বাঙ্গালী একটা জাতি আর বাঙ্গাল একটা গালি, জানেন তো? যারা নিজেদের ভাল নিজেরা বুঝে না তাঁদেরকে উপজাতিরা বাঙ্গাল বলে উপহাস করে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এই উপহাস এখন আর অমূলক নয়।

প্রশাসনের এমন কোন শাখা নেই যা রাজনৈতিক করণ করা হয়নি। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত সকল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বলয়ের মধ্যে আনা হয়েছে। বিচার বিভাগের সকল স্তরে সকল শাখায় অবাধ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দৃশ্যত। প্রশাসনের প্রতিটি শাখা রাজনীতি পোষ্য, প্রতিটি সদস্য কোন না কোন রাজনৈতিক দলের ধারক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে এখন সরকারী প্রতিষ্ঠান ও সদস্যকে রাজনৈতিক করণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মত রাজনীতির ছত্রছায়ায় প্রশাসনের এমন দলীয় করণ অন্য কোন দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।

ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার রাজনীতি নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পরেছেন যে নিজেদের স্ব-কাজ ভুলে গিয়ে রাজনীতির মাঠে উত্তাল খেলায় মেতে উঠছেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে মূর্খ বলে গালাগাল দিচ্ছেন। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার রাজনীতির নিজস্ব সংঘ হচ্ছে। তাঁরা কোন অপরাধ করলে দুই দল মাথায় তুলে তাঁদের উদ্ধার করছে। একে অপরের উপর প্রাধান্য বিস্তারের দাবি করছেন। দাবি করার সাথে সাথে একে অপরের বিপক্ষে বেআইনি ভাবে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছেন।

একই গ্রাম দৃশ্যত কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। এক দল অন্য দলের ধারে কাছে যায় না। খেলার মাঠেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে বিভক্ত, তাই খেলার মাঠেও এক ঘা বুঝিয়ে দেয়ার ইচ্ছায় একে অপরের উপর ব্রত হয়ে থাকে। সুযোগ পেলেই জান বধ করার মন্ত্র পাঠ করতে দ্বিধা করে না। দৃশ্যত মনে হয় দেশ যেন কোন কালের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে। তা নাহলে এমন হওয়ার কি কারণ হতে পারে!

কাজের চেয়ে নীতি কথা বেশী হচ্ছে। এই করেংগা সেই করেংগা বলে নিজেই নিজের গুণগানে মত্ত হয়ে আছে। দেশ সাফল্য আর উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে, চারিদিকে এই ধ্বনি শুনা যাচ্ছে। একচক্ষু-পাত পোষ্যরা অন্ধের মত বাহা বাহা বলে করতালিতে উৎসাহিত করছে। দেখে মনে হয় এ দেশে কোন সমস্যা নেই, যন্ত্রণা নেই, এমন এক মহা-শান্তির রাজ্যে সবাই মহা খুশিতে আছে।

সরকার সমাজ পরিবার প্রত্যেকটা একটি দেশের আলাদা আলাদা অঙ্গ। কিন্তু বাস্তব দেখে মনে হবে এদেশে সমাজ ও পরিবার সরকারের অবিচ্ছিন্ন অংশ। সবাই যেন সব জান্তা, কেউ যেন কারো চেয়ে কম যায় না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় দেশের সবাই চৌকস রাজনীতিবিদ। আমাদের যার যা দায়িত্ব সেটা পালন না করে সকলে রাজনীতির ধ্যানে মগ্ন আছি। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে সমস্যা তো হবেই। কারণ অতি সন্ন্যাসীতে গাঁজর নষ্ট।



সাঈদ মোহাম্মদ ভাই
[email protected]
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×