‘ঈদ’ শব্দের অনেক অর্থ আছে। তবে বহুল প্রচলিত অর্থ হচ্ছে খুশি প্রকাশ করা। মুসলমানদের খুশি প্রকাশ করার জন্য রয়েছে ১৭৭/১৭৮টি ঈদের দিন। আপনারা অবাক হলেন নাকি? মুসলমানগণ এতো ঈদের খবর রাখে না। এটা তাদের অজ্ঞতা।
ঈদ বললেই মন চলে যায় রোযার ঈদ অর্থাৎ পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র কুরবানী উনার ঈদ অর্থাৎ পবিত্র ঈদুল আদ্বহা শরীফ উনার দিকে। এই দুই ঈদ ছাড়া অন্য সব ঈদের খবর কে রাখে? এমনকি সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদু ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদু ঈদে আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খবর নেই অধিকাংশ মুসলমান নামধারীদের নিকট। মুসলমানগণের যদি একটি ঈদ পালনের নির্দেশ থাকতো, তাহলে শ্রেষ্ঠ ঈদ- ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতো। হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ অর্থাৎ আগমনের দিন উৎসব পালন করাই ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিছুই সৃষ্টি করতেন না। উনার উপর মহান আল্লাহ পাক ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সার্বক্ষণিক ছলাত ও সালাম পাঠান। উনার উপর দুরূদ শরীফ পাঠ না করলে বান্দার কোনো আমলই মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার মুবারকে গৃহীত হবে না। উনার পবিত্র নালাইন শরীফ বা স্যান্ডেল মুবারক উনার স্পর্শে আরশে মুয়াল্লা ধন্য হয়, উনার বিলাদত শরীফ-এ যারা গাফিল বেখেয়াল তারা উম্মতের নামের অযোগ্য। এরপর মুসলমানদের জন্য রয়েছে জুম্মার দিন, শুক্রবার। হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ অর্থাৎ আগমন দিন সোমবার শরীফ। পবিত্র ৯ই যিলহজ্জ শরীফ, পবিত্র আরাফা শরীফ উনার দিন, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আযহা শরীফ নিয়ে সর্বমোট ১৭৭/১৭৮ দিন ঈদ। তবে সকল ঈদ উদযাপনের নিয়ম এক নয়।
এর মধ্যে আছে সাপ্তাহিক ঈদের দিন, বার্ষিক ঈদের দিন ইত্যাদি। তবে সকল ঈদের সেরা ঈদ, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদু ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদু ঈদে আকবার পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
বিভিন্ন ঈদ পালনের তরবীব- নিয়ম আলাদা। যেমন পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা শুরু হয় ফযর নামাযের পর ঈদের নামাযের মাধ্যমে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে নামায আদায় করে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে খুশি বণ্টন করা, উন্নত খাবার পরিবেশন ও দেখা সাক্ষাৎ ইত্যাদি। আর পবিত্র ঈদুল আদ্বহা পালন হয় ভিন্নরূপে। মাঠে পবিত ঈদের নামায আদায় করে সাধ্যানুযায়ী পবিত্র পশু কুরবানী করা ইত্যাদি।
শুক্রবার ঈদ উদযাপন করা হয় ভিন্নভাবে। যোহরের ওয়াক্তে সুন্দর পরিষ্কার পোশাকে মসজিদে উপস্থিত হয়ে একত্রিত হয়ে খুতবা শুনতে হয়, তারপর যোহরের পরিবর্তে দুই রাকাত ফরয নামায আদায় করতে হয়। জুমুয়ার নামায ফরয এবং খুতবা ফরয-ওয়াজিব আর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার দুই রাকাত নামায ওয়াজিব এবং খুতবা পাঠ সুন্নত।
এভাবে বিভিন্ন ঈদের দিনের তারতীব আলাদা। পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনের তারতীব আলাদা। এই দিন মীলাদ শরীফ পাঠ করা হবে। ওয়াজ মাহফিল ও দোয়া মাহফিল হবে ইস্তিগফার করে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে দোয়া করতে হবে। নতুন পোশাক পরিধান করে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিয়ে উন্নত মানের খাবার খেতে হবে। মিষ্টি বিতরণ করা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি নানাভাবে শুধুই আনন্দের বন্যা বহাতে হবে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আজ মুসলমানগণ না বুঝে বলে, মুসলমানদের শুধু দুই ঈদ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক-এর দেয়া ঈদকে অস্বীকার করলে তাদের স্থান হবে জাহান্নাম। তাই তো প্রাণের আঁকা, ওলীদের ওলী, মুজাদ্দিদগণের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সকল ঈদের সেরা ঈদ পালনের জন্য মুসলমানদের উৎসাহিত করছেন। বিশেষ করে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদু ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদু ঈদে আকবার পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
ঈদের রাত্রিগুলো কিন্তু বরকতময়। ঈদের রাতে বিশেষভাবে বান্দার দোয়া মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করে থাকেন। এর চেয়ে আনন্দের বিষয় কী হতে পারে? সুতরাং মুসলমানদের ঈদের রাত্রিগুলো ইবাদত-বন্দেগী করে কাটাতে হবে।
ঈদ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে সকল ভুল ধারণা দূর হয়ে যাক। ঈদ মুসলমানদের জীবন আনন্দে ভরে দিক এবং ধ্বংস হোক সকল ফিতনা। যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন উনার রহমত থেকে বঞ্চিত করায় ইহুদী, নাছারা ও মুশরিকদের সকল ষড়যন্ত্র নিপাত যাক। ইহুদী-নাছারাদের গোলাম উলামায়ে ছূ’ ধ্বংস হোক। ইসলাম ধর্ম ফিরে পাক তার গৌরবোজ্জ্বল দিন। জান্নাত হোক মুসলমানদের আসল ঠিকানা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




