ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে আমাদের দেশের আবাদী জমির পরিমান কমে যাচ্ছে দ্রম্নতগতিতে এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য বিজ্ঞানের অসামান্য অবদান। বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার মধ্যে কৃষি বিজ্ঞান মানবসভ্যতার মূল চালিকাশক্তি। আর এই কৃষি বিজ্ঞানের সুবাদে বর্তমানে কৃষকরা পেয়েছে নানান ধরণের আধুনিক চাষ পদ্ধতি। একই জমিতে একই সাথে বিভিন্ন ধরণের ফসল উৎপাদন বর্তমানে কঠিন কোন কাজ নয়। সেই ধারাবাহিকতায় আদার সাথে সাথী ফসল হিসাবে কলার চাষ শুরম্ন করেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জের আচলাই, ঠাকুরপাড়াসহ অনেক অঞ্চলে। বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র শিবগঞ্জ, বগুড়ার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করছেন মসলা জাতিয় ফসল আদা চাষ করার জন্য। কৃষকরা যদি আদার সাথে সাথী ফসল হিসাবে কলার চাষ করেন তাহলে একদিকে যেমন অর্থকরী মসলা ফসল আদার চাষ করে লাভবান হবেন অন্যদিকে সাথী ফসল হিসাবে কলার চাষ করে আয় করতে পারবেন অতিরিক্ত অর্থ। সেৰেত্রে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে জমি ভালভাবে চাষ করে আদার বীজ বপন করার পর আদা ৰেতের মধ্যে কলার চারা লাগাতে পারেন। আদার জমিতে চার হাত বাই পৌনে চার হাত দূরত্বে কলার চারা লাগাতে হবে। আদার সাথে সাথী ফসল হিসাবে কলা চাষ করতে তেমন কোন অতিরিক্ত খরচ করতে হয় না বলে এই যৌথ ফসল চাষ অনেক লাভজনক। কলার চারা বড় না হওয়া পর্যনৱ তেমন কোন পরিচর্যা না করলেও চলে। তবে আদার পরিচর্যা চালিয়ে যেতে হবে। আদার সাথে কলা চাষ করেছেন আচলাইগ্রামের তিন ভাই শহিদুল ইসলাম, তানজিল ও আঃ রহিম।() এই সব কৃষকদের নিয়ে মাঠদিবস পালন করেন বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। শতশত কৃষক উৎসাহিত হয়েছেন আদার সাথে কলার চাষ করার লৰ্যে। এই অঞ্চলের আরেকজন কৃষক গোলাম মোসৱফা। তিনিও কলার সাথে আদার চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। () কলা ও আদার চাষ একসাথে করার ফলে কলা গাছ যখন বড় হয় তখন খেয়াল রাখতে হবে যে কলা গাছের পাতায় যেন আদার ৰেত পুরোপুরি ছায়ায় ঢেকে না যায়। কারন আদার চাষ ভাল হয় আলো ছায়াযুক্ত জমিতে। আর সেই কারণেই কলা গাছের অতিরিক্ত পাতা ভেঙ্গে দিতে হবে বা কেটে ফেলতে হবে। আদার সাথে কলার চাষ এবং আদার ব্যাপক ফলনের জন্য সার্বৰনিক পরামর্শ দিয়ে থাকে বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।() একই জমিতে আদা ও কলার চাষ যদি দেশের সব অঞ্চলে করা যায় তাহলে অচিরেই আদার আমদানী বন্ধ করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করেন কৃষিবিদরা।