somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্যারিস থেকে আমি
স্বপ্ন দেখি সত্য ও সুন্দরের।আহত হই সত্যের পরাজয়ে।মনের মাঝে কতশত এলোমেলো ভাবনা এসে জড়ো হয়।ভাবনা গুলো চাই সকলের সাথে শেয়ার করতে,কিন্তু সীমাহীন অযোগ্যতায় আর লিখা হয়না।ভাবনা গুলো গুমড়ে মরে সমাধিত হয় নীরবে।

গল্প : যুবক পুরুষ (শেষ পর্ব)

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাজের শেষেও তাকে খুব নিরিবিলি যে পাব তা কিন্তু নয়। এমনকি কথা বলতে গেলে খুব বেশি সময়ও দেয়না। একবার ইচ্ছে হয়েছিলো তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেই। কিন্তু আমি জানি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে। যে মেয়েদের সাথে হাত মেলায় না সে করবে প্রেম ! আর আমি কারো কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হতে চাই না বলে গোপন বাসনাটা মনের গহীনে চাপা দেই।

কাজের শেষে সামান্য সুযোগ পেয়ে তার কাছে জানতে চাইলাম, আমি যখন পানিতে ডুবতে বসেছি তুমি আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেনা। বুঝলাম,তুমি মেয়েদেরকে ছুতে চাওনা বলে এগিয়ে যাও নি। তোমার ধর্মের নিষধ আছে। তবে কেন বাস দুর্ঘটনার পর অন্য মেয়েদের হাত ধরে ধরে তাদেরকে উদ্ধার করলে। সেখানে কি তোমার ধর্ম নিষেধ করেনি ?

এমন প্রশ্নে সে ক্ষণমুহুর্ত আমার মুখের দিকে তাকালো, সুন্দর করে একটা হাসি দিলো। যে হাসিতে কোন পাপ নেই, যেন জগতের সব পুন্যতা ঝরে পড়ছে। হাসিটাও বেশিক্ষণ স্হায়ী হলোনা। বললো, বিপদে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া তার নবীর সুন্নাত। বিপদগ্রস্হ মানুষ পুরুষ না মহিলা এখানে তা বিবেচ্য নয়। তুমি যখন পানিতে ডুবে যাওয়ার মিছে নাটক করছিলে তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তোমাকে বাচাতে এগিয়ে না গেলেও তোমার কিছু হবেনা। আর বাসে সত্যি সত্যি ওদের সাহায্যের প্রয়োজন ছিলো। ওখানে সাহায্য করাটা আমার জন্য ফরজ ছিলো।

তার কথাগুলো শুনে আমার মুখ থেকে যেন আর কোন কথা বের হচ্ছেনা। তাকে সরাসরি বলে ফেললাম , আমি মুসলমান হতে চাই। এখন আমাকে কি করতে হবে এবং সে কিভাবে আমাকে সাহায্য করবে।

সে জানতে চাইলো, আমি কেন মুসলমান হতে চাই ?

বললাম ,তোমার ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে কিছুদিন থেকে অনেক পড়াশুনা করেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মুসলমান হব।

তুমি যদি মুসলমান হতে চাও তবে কোন মসজিদে গিয়ে ইমাম সাহেবের কাছে কালেমা পড়ে মুসলমান হতে পার। আমি তোমাকে এতটুকু সাহায্য করতে পারি, ইস্ট লন্ডন মসজিদে আমার জানাশুনা আছে আমি তোমাকে সেখানে নিয়ে যেতে পারি। সেখানে প্রতিদিনই দু'একজন মুসলমান হচ্ছে।

বললাম, তোমার পরিচিত ইমাম সাহেব কে ফোন দাও ।আমরা এখনি মসজিদে যাব এবং আজকেই আমি কালেমা পড়ে মুসলমান হব।

সে আমাকে বলে, তাড়াহুড়া না করে আরেকটু পড়াশুনা করে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে।

বললাম, বুঝাশুনা শেষ। যতটুকু পড়াশুনা করেছি তাতে বুঝতে পেরেছি আর এক মুহুর্ত দেরী করা ঠিক না।কেননা ইসলাম গ্রহনের আগেই যদি মরে যাই তাহলে আমার মৃত্যু হবে কুফরির মৃত্যু। একজন মুসলমান হিসাবে নিশ্চয় তুমি তা চাওনা।

আমার এমন কথায় সে ইস্ট লন্ডন মসজিদে ফোন দিয়ে একজন ইমামের কাছ থেকে সময় নিলো।

আমরা ছুটে চললাম ইস্ট লন্ডন মসজিদের পানে। আমার মনে আজ খুশির বারতা। হৃদয়ের আকাশে হিমেল বাতাস বইতে শুরু করেছে। বিশ্বাস করেন, এই ইসলাম ধর্ম গ্রহনে তাকে পাওয়ার কোন লোভ নাই। আমি যে এক বিশ্বস্ত ধর্ম গ্রহন কর‍তে যাচ্ছি,কালজ্বয়ী আদর্শ বুকে ধারণ করতে যাচ্ছি সেই জন্যেই আমার মনে প্রাণে আনন্দের হিল্লোল বইছে।

ইস্ট লন্ডন মসজিদে গিয়ে হাজির হলাম। সেখানে আমাদের জন্য একজন ইমাম সাহেব অপেক্ষা করছেন। আমাদেরকে তিনি সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। মুসলমান হওয়ার ব্যাপারে তিনি আমাকে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন। তারপর আমাকে কালেমা পড়িয়ে দিলেন। আমার নাম রেখে দিলেন ফাতিমা। নবীর মেয়ের নাম, আমার পছন্দ হলো। এখন থেকে আমি ফাতিমা সিনথিয়া।

মুসলমান হওয়ার পর ইমাম সাহেব আমাকে বললেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোন ভালো মুসলমান যুবক দেখে বিয়ে করে নিও। এটা তোমার জন্য নিরাপদ।

বললাম, আমার জানাশুনা খুব ভালো একটা মুসলমান যুবক আছে যদি সে রাজি হয় তবে আমি তাকেই বিয়ে করতে চাই।

এমন কথায় যুবকটি আমার মুখের দিকে তাকালো। ইমাম সাহেব জানতে চাইলেন সেই ভাগ্যবান যুবকটি কে ? যাকে একজন নওমুসলিম বিয়ে করতে চায়।

ইমাম সাহেবকে বললাম, আপনার সামনে বসা মানুষটিই আমার দেখা একজন ভালো মুসলমান যুবক পুরুষ।

(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৫৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×