Click This Link
বেয়াদবির একটা সীমা থাকা উচিৎ!
তাও কিনা আবার নবী-রাসুলদের মর্যাদা নিয়ে!
নবী রাসুলদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোন আলেমতো দূরের কথা কোন সাধারন মুসলমানের পক্ষেও এই অদ্ভুত কাহিনী বর্ননা করা মোটেও শোভনীয় নয়।
"চরমনাই এর পীর"-- তার লেখা কিতাব (আশেক মাশুক এর ৮৮-৮৯ page)-এ লিখেছেন,
"মুসা (আঃ) এরদিন পথে চলছিলেন, এমন সময় দেখলেন এক রাখাল ধ্যান মগ্ন হয়ে গুন গুন করে বলছেন,'ওগো আল্লাহ,তোমারে যদি পাইতাম তাহলে সাবান দিয়া গোসল করাইতাম,মাথার চুল আচড়াইয়া দিতাম,আতর সুরমা লাগাইয়া দিতাম..."
এইসব কথা শুনে মুসা (আঃ) তাকে ধমক দিয়ে বললেন,'কিসব আজেবাজে কথা বলছ!এসব শিরকি কথা!'
রাখাল ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গেল। তখন আল্লাহ (নাকি!) মুসা (আঃ) কে ডাক দিয়ে তিরষ্কার করলেন এবং জানালেন রাখালের কথায় তিনি (নাকি!) সন্তুষ্ট ছিলেন!
মুসা (আঃ) নবুয়াত হারানোর ভয়ে সেই রাখালকে খুঁজে বের করে তার কাছে মাফ চাইলেন। তখন রাখাল জানালো সে নাকি সিরাতুল মুন্তাহা পার হয়ে আরশের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। কিন্তু ঐ মুহূর্তে তাকে বাধা দিয়ে আল্লাহর দীদার হতে বঞ্চিত করেছেন।"
এই ঘটনা উল্ল্যেখ করার পরে চরমনাইয়ের পীর সাহেব বলেছে,"হে মুমীন ভাই সকল! এখন বুইঝালন যে, মুর্খ লোক মারেফতের উপরের দরজায় পৌছাতে পারে কিনা এবং ইহাও খেয়াল করুন যে মারেফতের রাস্তা কত গোপন আর কঠিন, যেখানে মুসা (আঃ) এর মতন নবীও সেই রাখালের অবস্থা বুঝতে পারেন নাই!"
দেখুন,কি করে একজন রাখালকে মুসা (আঃ) এর উপরে প্রাধান্য দিলেন চরমনাইয়ের পীর সাহেব!!মারেফতের নামে ভন্ডামির দ্বার উন্মুক্ত করে!
অথচ নবী রাসুলরা হলেন যার যার যুগের শ্রেষ্ঠ মানুষ! আর মুসা (আঃ) হলেন"উলুল আযমী মিনার রাসুল"(৫জন শ্রেষ্ঠ রাসুল) দের মাঝে একজন।
এই যদি হয় কথিত হাক্কানি পীরদের লিখিত কিতাবের অবস্থা!তাহলে বাকি পীরদের কি অবস্থা!!
*পীর সাহেবের মুখে গল্পটি শুনতে হলে এই link -এ click করুনঃ :
# পর্যালোচনাঃ প্রথমত ঘটনাটি বানোয়াট! নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য এইসব মিথ্যের আশ্রয় নেন তারা। জনাব চরমনাইয়ের পীর সাহেবের মতে,মুসা (আঃ) এর অনুসরন করার চেয়ে ঐ রাখালের অনুসরন করাই উত্তম!!
কারন মুসা (আঃ) এর কাছে যেগুলো শিরকি কথা রাখালের কাছে সেগুলো আল্লাহকে পাবার কথা!
এরই নাম কি মারেফাত?যেখানে মুসা (আঃ) এর শরিয়তে যেটা শিরক আর মারেফতের ভন্ডামীর জগতে সেটা মহব্বতের বাক্য!!
*এই ঘটনাতে পীর সাহেব বোঝাতে চেয়েছিলেন যে আল্লাহর নবী রাসুলরাও সেই পর্যাদায় পৌছাতে পারেনা যে মর্যাদাতে একজন রাখাল ও পৌছাতে পারে! মারেফতের নামে ভন্ডামীর মাধ্যমে!
অথচ কুরআনে আল্লাহপাক মুসা (আঃ) এর নাম ১৩১ বার উল্ল্যেখ করেছেন, আর পীর সাহেবের ভাষায় আল্লাহকে পেতে হলে নবী রাসুলদের দেখানো পথ ছাড়াও অন্য পথে যাওয়া যায়।
কারন মুসা (আঃ) এর কাছেত সেইগুল শিরকি কথা ছিল, তো শিরকি কথা বলেকি কেউ আল্লাহর দীদার লাভ করতে পারে?
পীর সাহেবে আর শিক্ষা দিয়েছেন, নবী রাসুলদের দেখানো পথে আল্লাহকে পাওয়া যায়না!!
তাই তাদের অনুসরনের বদলে পীরদের মারেফতির পথ অনুসরন করাই ভাল!
কারন সেই পথেই নাকি আল্লাহকে পাওয়া যাবে!
আস্তাগফিরুল্লাহ !!!
চরমোনাই পীর সাহেব লিখেছেনঃ “হযরত থানবী লিখিয়াছেন, জনৈক দরবেশসাহেবের মৃত্যুর পর এক কাফন চোর কবর খুড়িয়া (দরবেশের) কাফন খুলিতে লাগিল । দরবেশ সাহেব চোরের হাত ধরিয়া বসিলেন । তা দেখে চোর ভয়ের চোটে চিৎকার মারিয়া বেহুঁশ হইয়া মরিয়া গেল ।দরবেশ স্বপ্নযোগে তার এক খলীফাকে আদেশ করিলেন চোরকে তার পার্শ্বে দাফন করিতে । খলীফা এতে আপত্তি করিলে দরবেশ বলিলেনঃ কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গে লাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসে ওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুলছেরাত পার হইয়া যাইব?” (ভেদে মারেফতঃ ২৭-২৮ পৃঃ)
তিনি আরো লিখেছেনঃ কেয়ামতের সেই মহাবিপদের সময় হক্কানী পীর সাহেবগণ আপন মুরীদগণকে হযরত নবী করীম (সঃ) এর কাছে পৌঁছাইয়া দিবেন । এবং হুজুরে আকরাম (সাঃ) তাহাদিগকে হাউজে কাউছারের পানি পান করাইবেন।” (আশেক মাশুক পৃঃ ৬৬)
তিনি আরো লিখেছেনঃ “এরূপভাবে পরকালেও তাঁহাদের (ওলীদের) ক্ষমতার সীমা থাকিবে না। হাশরের মাঠে একজন আওলিয়ায়ে কেরামের উছিলায় হুজুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া ছাল্লামের হাজার গুনাহগার উম্মতকে আল্লাহ্ পাক মাফ করিয়া দিবেন।” (আশেক মাশুক পৃঃ ৮১)
বান্দা অসংখ্য গুণাহ করার ফলে আল্লাহ্ পাক তাহাকে কবুল করিতে চান না । পীর সাহেব আল্লাহ্ পাকের দরবারে অুননয় বিনয় করিয়া ঐ বান্দার জন্য দুআ করিবেন, যাহাতে তিনি তাহাকে কবুল করিয়া নেন ।” (ভেদে মারেফতঃ ৩৪ পৃঃ)
* * পীর সাহেবের মুরীদ'রা দয়া করে একটু বলবেন কি !আপনাদের পীর সাহেব, এই কথা কোথা হতে নিয়েছেন যে, " বান্দা অনেক গুনাহ করার ফলে আল্লাহ তার তাওবা কবুল করিতে চান নাহ ! " এটা কি কোনো কোরানের আয়াতে অথবা কোনো সাহীহ হাদিছে আছে ? নাহ ! নেই, কারন আল্লাহ্পাক কোরানে কারীমে বলেন," কুল ইয়া ইবাদি আল্লাজীনা আশরাফু আলা আনফুসিহিম লা তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ, ইনাল্লাহা ইয়াগ ফিরু জুনুবান জামিয়া, ইন্নাহু হুয়াল গাফুরুর রাহীম " -- বলে দিন, (হে নাবী) যারা তোমরা নিজেদের উপর জুলুম করেছো, গুনাহ করেছো, তোমরা আল্লাহর রাহমত হতে নিরাশ হয়ো নাহ! নিশ্চ'ই আল্লাহ তোমাদের জমাকৃত গুনাহ সমূহ মাফ করে দিবেন, তিনি-ই তো গুনাহ মাফ কারি।
তো, পীর ছাহেব, মানুষ কে ডর-ভয় দেখিয়ে আপনার দল ভারী করতে কি অন্য কিছু বেছে নিলে হত'না ! কোরান- সুন্নাহ'র শিক্ষা থেকে মানুষ কে বিমুখ না করে !
এই গুলা কোন ধর্মের কাহিনী !
এই গুলি আসলে কি?
চরমোনাই পীরের লেখা ‘ভেদে মারেফত’ বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় মৃতকে জীবিত করার যে গল্পটা আছে তা নিম্নরূপঃ
শামসুদ্দীন তাব্রীজী নামের এক লোক ছিলেন। লোকেরা তাকে পীর সাহেব কেবলা বলত।
একদা হযরত পীর সাহেব কিবলা রোম শহরের দিকে রওয়ানা হইলেন। পথিমধ্যে ঝুপড়ির ভে...তর এক অন্ধ বৃদ্ধকে লাশ সামনে নিয়া কাদঁতে দেখিলেন। হুজুর বৃদ্ধকে প্রশ্ন করিলে বৃদ্ধ উত্তর করিলেন, “হুজুর এই পৃথিবীতে আমার খোঁজ খবর করিবার আর কেউ নাই, একটি পুত্র ছিল সে আমার যথেষ্ট খেদমত করিত, তাহার ইন্তেকালের পর সে একটি নাতি রাখিয়া যায়। সেই ১২ বছরের নাতি একটা গাভী পালিয়া আমাকে দুগ্ধ খাওয়াইত এবং আমার খেদমত করিত, তার লাশ আমার সম্মুখে দেখিতেছেন। এখন উপায় না দেখিয়া কাঁদিতেছি” । হুজুর বলিলেন এ ঘটনা কি সত্য? বৃদ্ধ উত্তর করিলেন এতে কোন সন্দেহ নেই। তখন হুজুর বলিলেন"হে ছেলে আমার হুকুমে দাঁড়াও"। তো ছেলে উঠে দাঁড়াল এবং দাদুকে জড়াইয়া ধরিল, বৃদ্ধ তাকে জিজ্ঞেস করিল “তুমি কিরূপে জিন্দা হইলে”। ছেলে জবাব দিল, “আল্লাহর অলি আমাকে জিন্দা করেছেন”। (নাউজুবিল্ লাহ) তারপর ঐ অঞ্চলের বাদশাহ হুজুরের এই খবর পেয়ে উনাকে তলব করিলেন। উনাকে পরে জিজ্ঞেস করিলেন"আপনি কি বলিয়া ছেলেটিকে জিন্দা করিয়াছেন"। হুজুর বলিলেন আমি বলেছি “হে ছেলে আমার আদেশে জিন্দা হইয়া যাও”। অতঃপর বাদশাহ বলিলেন, “যদি আপনি বলিতেন আল্লাহর আদেশে”। হুজুর বলিলেন"মাবুদ! মাবুদের কাছে আবার কি জিজ্ঞেস করিব। তাহার আন্দাজ নাই (নাউজুবিল্ লাহ)। এই বৃদ্ধের একটি মাত্র পুত্র ছিল তাহাও নিয়াছে, বাকী ছিল এই নাতিটি যে গাভী পালন করিয়া কোনরুপ জিন্দেগী গোজরান করিত, তাহাকেও নিয়া গেল। তাই আমি আল্লাহ পাকের দরবার থেকে জোরপূর্বক রুহ নিয়ে আসিয়াছি”। (নাউজুবিল্ লাহ)।
এরপর বাদশাহ বলিলেন আপনি শরীয়াত মানেন কিনা? হুজুর বলিলেন “নিশ্চয়ই! শরীয়াত না মানিলে রাসূল (সাঃ) এর শাফায়াত পাইব না”। বাদশাহ বলিলেন, “আপনি শির্ক করিয়াছেন, সেই অপরাধে আপনার শরীরের সমস্ত চামড়া তুলে নেয়া হবে”। এই কথা শুনিয়া আল্লাহর কুতুব নিজের হাতের অঙ্গুলি দ্বারা নিজের পায়ের তলা থেকে আরম্ভ করে পুরো শরীরের চামড়া ছাড়িয়ে নিলেন, তা বাদশাহর কাছে ফেলিয়া জঙ্গলে চলিয়া গেলেন। পরদিন ভোরবেলা যখন সূর্য উঠিল তার চর্মহীন গায়ে তাপ লাগিল তাই তিনি সূর্যকে লক্ষ করিয়া বলিলেন “হে সূর্য, আমি শরীয়াত মানিয়াছি, আমাকে কষ্ট দিওনা”। তখন ওই দেশের জন্য সূর্য অন্ধকার হইয়া গেল। দেশের মধ্যে শোরগোল পড়িয়া গেল। এই অবস্থা দেখিয়া বাদশাহ হুজুরকে খুঁজিতে লাগিলেন। জঙ্গলে গিয়া হুজুরের কাছে বলিলেনঃ শরীয়াত জারি করিতে গিয়া আমরা কি অন্যায় করিলাম, যাহার জন্য আমাদের উপর এমন মুসিবত আনিয়া দিলেন। তখন হুজুর সূর্য কে লক্ষ করিয়া বলিলেনঃ আমি তোমাকে বলিয়াছি আমাকে কষ্ট দিওনা, কিন্তু দেশবাসীকে কষ্ট দাও কেন? সূর্যকে বশ করা কি কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব? ইহা বলা মাত্র সূর্য্য আলোকিত হইয়া গেল। আল্লাহ্ পাক তাহার ওলীর শরীর ভাল করিয়া দিলেন।
আল্লাহ্ আমাদের এই সকল ভণ্ড পীরদের থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
কৃতজ্ঞতাঃ Jahi Jahid