শুনেছি জাতিস্মরদের পূর্বজন্ম মনে রাখার অলৌকিক ক্ষমতা থাকে। যাঁরা জাতিস্মরদের মোটেই বিশ্বাস করেন না তাঁরা বলেন, এই পূর্বজন্ম মনে রাখা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না নাকি?
আবার অনেক বৈজ্ঞানিক বলেন পুনর্জন্মকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করা সম্ভব। পৃথিবীর অনেকখানেই ছোট বাচ্চারা নিজেদের জাতিস্মর হিসাবে দাবী করে। এদের বয়স সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছর । বহু ক্ষেত্রে জাতিস্মরের পূর্বজন্মের পরিবারের সঙ্গে বর্তমান জন্মের পরিবারের কোন সম্পর্ক বা পরিচয়ই থাকে না।
জাতিস্মরদের নিয়ে গবেষনায় অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাম ইয়ান স্টেভেনসন । তিনি জাতিস্মরদের নিয়ে গবেষনা পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করেন। তাঁর প্রকাশনার সংখ্যা অনেক এবং অনেকেই তাঁর লেখার মধ্যেও বৈজ্ঞানিক সত্যতা খুঁজে পান।
সে যাইহোক, জাতিস্মর শব্দটি ইন্টারেস্টিং বটে তবে তা কি করে মানব মস্তিস্কে কোন প্রক্রিয়ায় কার্য্যকলাপ চালায়, কি তার রহস্য এসব কঠিন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতা বা গবেষনায় অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার।
তবে আমার ধারনা আমি নিজেও একজন জাতিস্মর।
আমার পূর্ব জনমের হাজারো স্মৃতি আমার মানসপটে উঁকি দেয় মাঝে মাঝেই। মনে পড়ে বন্ধু স্বজন তাহাদের ও উহাদের কথা। অতীত দিনের স্মৃতি কেউ ভোলে না কেউ ভোলে। ঠিক তাই, কেউ কেউ মনে রাখে কেউ রাখেনা তাতে কি? জাতিস্মরেদের তো সেসব ভুললে চলবে না। তবে মজা একটাই নতুন চোখে তারা দেখে নতুন করে নতুন পৃ্থিবীটাকে।আমিও দেখি তেমনি রং বদলানো পৃথিবীটাকে।
মনে পড়ে আজ সেকোন জনমে বিদায় সন্ধ্যাবেলা!!!
আবু সালেহ,আহমেদ চঞ্চল,হাসান মাহবুব,তাজা কলম,আকাশচুরি,ভাঙ্গন, সালাউদ্দিন শুভ্র, শামসীর, তায়েফ আহমেদ,সবাক,আমি ভালো আছি, ভোরের তারা,যার যার স্বমহিমায় মহীয়ান। ঠিক আগের মতই আছেন।
বুমবুম,রেজোওয়ানা,মেঘদূত তারা বুঝি সর্বকালের সর্বযুগের সকলেরই সুমিষ্টভাষী বন্ধু।অবিকল তেমনি রয়ে যায়।
সমুদ্র কন্যা,রাত্রী, নৈশচারী, সপ্তর্ষী, কখনও মেঘ কখনও বৃষ্টি,মেহবুবা আপু, চিঠি আপু, প্রতীক্ষা আমি তাদের নাম দিয়েছি গভীরতার মেয়ে।এমন গভীর করে ভাবতে পারে তারা দেখে অবাক হই। আমার ইচ্ছে করে তাদের মত মনের কথা কই।
লেনিন- আমার ধারনা ইনি একজন খটমট কোনো প্রকৌশলী পেশাধারী,ব্যাক্তি। কখনও কেনো যেন জানা হয়নি কি পেশা বা কোন বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন তিনি। শুধু তার ছন্দ ভালোবাসা মনের পরিচয় পেয়েছি আমার পূর্বজনম ও ইহজনমে। একজন সত্যিকারের ছন্দপ্রেমিক লেনিন। একজন খাঁটি মানুষ বলেই জানি তাকে।
দুরন্ত স্বপ্নচারী,মেঘ বলেছে যাবো যাবো,তারিক মাহমুদ (তারিক)- ইনারা একটু বিশেষ ভাবে জড়িয়ে আছেন আমার পুর্ব ও ইহজগতের সাথে। কে কিভাবে তা তিনারাই ভালো জানেন। এরি মাঝে দুরন্ত স্বপ্নচারী
তিনি নিজেকে আবার বিশেষ ওঝা বলিয়া দাবী করেন। আমাকে তিনি ইহজনমে বিশেষ এক নামে অভিহিত করেছেন যেই নামটা মাঝে মাঝে আমার যখন মনে পড়ে যায় আমি গুরু গম্ভীর কোনো মন্ত্রনালয়ে বসেও হেসে ফেলি। আমার সে বিশেষ নামটি তিনি দিয়েছেন চাঁপা ডাঙার বউ। মানে আমি নাকি চাপাবাজ! :
অরুনাভ ভাইয়াকে হঠাৎ খুঁজে পেলাম সেদিন। খুবভালো লাগলো উনাকে দেখে।
কথক পলাশ- এই জীবনের অবিস্মরণীয় নাম। আমি তখন সদ্যজাত শিশু। আমার লেখা প্রথম পাতায় আসেনা। তিনি প্রথম পদধুলী দিয়া অঙ্গীকারবদ্ধ হইয়াছিলেন আমার লেখা সে যেমনই হৌক পড়িবেন তিনি।
Click This Link
বয়সে ছোট হইলেও তাই তোমার পায়ে শতকোটী সালাম কথক পলাশ। তোমার কথা আমি আমার তৃয় ৪র্থ এমনকি শততম জনমেও মনে রাখিবো।
মুকুট বিহীন সম্রাট- তাহার পর স্মরণীয় নাম মুকুটবিহীন সম্রাট।পরম মমতাময় হৃদয়ের অধিকারী সম্রাটজীকেও সশ্রদ্ধ সালাম। অসম্ভব রকমের একজন ভদ্র ও নম্র স্বভাবের এমন সম্রাট খুঁজে পাওয়া ইহজগতে দূর্লভ!
সকালরাত্রী,বাঁশীওয়ালা,শিরীষ,হায় ঈশ্বর! সুষম,আলী প্রাণ,হানিফ রাশেদীন,ফাহাদ,অদ্ভুত শূন্যত সায়েম মুন, জিনিয়া, বড়বিলাই,মনসুর,আকাশচুরি,পলাশমিয়া, স্বপ্নকথক, মেঘ রোদ্দুর,
অমিত চক্রবর্তী,প্রতীক্ষা,ছোট সরকার,সান্তনু আহমেদ,পাহাড়ের কান্না, ,মেহরুবা, ডাইনীবুড়ি, ফারজান ওয়াদুদ( বল্গীয় হুমায়ুন আহমেদ মনে হয় তাকে)মনিরুল হাসান (চেনা ছড়াগুলো আসলেই চেনা কত চেনা আমাদের)শূন্য উপত্যকা,অণৃন্য,ফয়সল নোই,করবি,বৈরী হাওয়া,চতুস্কোন,জিকসেস( অসাধারন রম্য প্রতিভা)জীবানানন্দের ছায়া,টানজিমা- এদের মধ্যে যে বিস্ময়কর কাব্য ও সাহিত্য প্রতিভা লুকিয়ে আছে সত্যি তা দেখে অবাক হয়েছি আমি যুগে যুগে। সত্যিই আমি বিমুগ্ধ !
তবে টানজীমা স্মরনীয় হয়ে থাকবে আমাকে প্রথম মাইনাস দেওয়ায়। যতই তা ফান করে দিয়েছে বলা হৌক না কেনো আমি মনঃক্ষুন্ন ও রাগান্বিত হয়েছিলাম মনে মনে সে কথা অনস্বীকার্য্য। আর জীবানানন্দ নাকি মডু, যেদিন থেকে শুনেছি সেদিন থেকে একটু ভয়ে আছি ধরা খাওয়ার।
মতিউর সাগর- এই কবিভাইটির কবিতাপ্রেম মূলক একটি পোস্টে মজা করে কমেন্ট দেবার পরে উনি আমাকে কবিসমাজে যে স্বীকৃতি দিলেন তাতে ধরনী দ্বিধা হও অবস্থা হইলেও আমি মনে মনে বড়ই পুলকিত হইয়াছি। আর কবিভাই তুমি রহিলে নীরবে হৃদয়ে মম।
ধীরে বৎস- এই পিচকিটা আমাকে যে স্বীকৃতি দিয়েছে তার এক পোস্টে তা পড়ে কি জীবন না ধন্য হয়ে পারে? কিন্তু সে নিজেই যে কোন ভূবনে লুকিয়ে থাকে তাকে খুঁজেই পাইনা।
রোবোট- এই জ্ঞানী ভাইটিকে সমীহ করি। তিনি যে স্নেহের পরিচয় দিয়েছেন তার একটি দুটি বাক্যে তাতেই এ জীবন ধন্য আমার।আর জ্ঞানী বানানটি জীবনে ভোলা হবেনা তাহার কল্যানে।
সুরঞ্জনা - এ জীবনের সবচাইতে স্নেহময় বড় প্রাপ্তি। অজানা অচেনা আপুটাকে মনে হয় বুকের গভীরে লুকিয়ে রাখি। আমার বড়বোন যদি হতে তুমি। ইশ পৃথিবীটা বুঝি স্বর্গ হতো। এমন মজা করে কথা বলতে পারা, লিখতে জানা, রাঁধতে জানা নারীর জন্য বিশ্বের সমগ্র নারীকূল ধন্য।
ফারিহান ভাইয়া- শুধু আমার পুর্ব ও ইহজনমে একিটি কথাই প্রযোজ্য উনার ক্ষেত্রে তা কৃতজ্ঞতা।
নস্টালজিক- এমন একজন মানুষ আমার আশেপাশে রয়েছে দেখলেই অবাক হই! ভাবি এমন অসাধারন ব্যাপার স্যাপার কি করে ঘটে মানুষের জীবনে? এমন সব গান যা মানুষের হৃদয়ে দাগ কেঁটে যায় সেসব নাকি লিখেছেন ইনি? এক সময় এই গান গুলো শুনে শুনে রাত পার করেছি তখন কি জানতাম এই সব যে লিখেছে তার সাথে একদিন দেখা হবে ইহজগতে আজকাল যেখানেই যাই সেখানেই শুনি তাহার গান। নিশ্চয়ই সে ভাববে মিথ্যা বানাচ্ছি কথাটা, চাঁপাডাঙগার বউ হয়ে।
রাজসোহান- এই যে এই পিচকি ভাইটা ইহজনমে সে আমার কলিজার টুকরা একটা পিচকি ভাই। সমুদ্র কন্যা ভয় পেওনা। তোমার ছোটভাইকে আমারও ছোট ভাই বানিয়ে দিলাম বলে।
সব শেষে স্মরন করি আমার উপর রাগ করা মানুষগুলোকে, নীলান্জন ও স্বপনচারী । হি হি হি আমার সাথে ঝগড়ায় পারেনাতো তাই ওদের এত রাগ।
তবে আরেকজন শাহরিয়ার। ইনার সাথেও আমার বেশ কয়েকবার যুদ্ধ হয়ে গেছে। স্পেশালী শাহরিয়ারের অনবদ্য পুঁথিপাঠ "খোকা নামের বোকা ছেলে জনম নেবে কবে" পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ হয়েছি। তারমত সর্বকালের সর্বযুগের পুঁথিলেখক আমার দৃষ্টিতে আর কেউ নেই।তবে শেষ পর্যন্ত কাউকেই আমার উপর রাগ করে থাকতে দেইনি আমি। বলা যায় বাধ্য করেছি বশ্যতা/ বাধ্যতা/ রাগ ভুলে যেতে তাদের নিজের অজান্তেই। তারা তা বুঝতে পারেনি। হি হি হি।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেনো পাইনা?
সহেলী, নাজনীন, কালপুরুষ ভাইয়া , শ্রাবনসন্ধ্যা ,ফেরারীপাখি, সাজি আপু,বোহেমিয়ান কথকতা, ,মোজাম ভাইয়া,জটিল,ইমন জুবায়ের, এ টি এম মোস্তাফা কামাল,আহমেদ রাকীব, পারভেজ,অদৃশ্য, সাদা কালো এবং ধূসর,কাব্য,ব্যাতিক্রমী,উধাও ভাবুক,বাবুনি সুপ্তি, একরামুল হক শামীম,আকাশ অম্বর, ম্যাভেরিক ভাইয়া, দুরের পাখি,উদাসী স্বপ্ন ,এই জনমে দেখছি তাদের আনাগোনা আগের মত নেই। লেখালিখিও কমিয়ে দিয়েছেন তারা।
মিস করি , মন্জু ভাইয়া, স্বপ্নজয় ভাইয়া, হিমালয়, নিবিড়, কৌশিক ভাইয়া,লাল দরজা ভাইয়া, ত্রিভুজ, অন্ধ দাঁড়কাক, অক্ষর,জুলহাস,নম্রতা, তনুজা, লাবন্যপ্রভা,রুমমা,নাজনীন খলিল আপু, লীনা দিলরুবা আপু, রুবাইয়াৎ সাদাত,নির্ঝরিনী আপু, সামছা আকিদা, সোহাইলা , সোহানা আপু, নিরজন আপু, তাজিন আপু, ভোর,আউলা,এপু, খুশবু,টুশকি ,নষ্ট মাথার দুষ্ট বালিকা, চানাচুর রুবেল শাহ, নকীবুলবারী,সাইফুর,ভাঙা পেন্সিল, ভুতেরআড্ডা,অসমাপ্ত ,সৌপ্তিক,অনন্ত দিগন্ত,চাঙ্কু, রাতমজুর,এন এইচ আর ,স্পর্শহীন কিছুদিন,চাচামিঞা,দূর্ভাষী,লেখাজোকা শামীম,ক্যামেরাম্যান,তামিম ইরফান,বায়োলজী বলে আমি নাকি ছেলে,সোনালীডানা,রাহাত,দন্ডিত,রাজামশাই ,জেরী,পাথুরে, সালাউদ্দিন শুভ্র,বিবর্তনবাদী,মুহম্মদ জায়েদুল আলম,সাইফ সেরিফ ভাইয়া সহ আরো কত শত নাম!
আমিও ভুলে যাচ্ছি ইদানিং। কথায় আছে চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। তবুও জাতিস্মর বলে কথা । আমার কি আর সব ভুললে চলবে?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১০ ভোর ৬:৪৩