somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

!!২৬শে মার্চ- বাংলাদেশের স্বাধীনতা- কেউ কখনও খুঁজে কি পায় সেই স্বপ্নলোকের চাবি!!

২৫ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে,
কে বাঁচিতে চায়,
দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে,
কে পরিবে পায়!
আমার এ ক্ষুদ্র জীবনে বুদ্ধি হবার পর থেকেই যখনই "স্বাধীনতা" এ শব্দটি আমার কানে বেঁজেছে, সাথে সাথে প্রাণে বেঁজেছে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত "পদ্মিনী" উপাখ্যানে এই উক্তিটি। শুনেছি যুগে যুগে সকল স্বাধীনতাকামী স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবীদের বীজমন্ত্র হিসেবে কাজ করেছিলো রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বাক্যগুলি।

আমরাও বাঁচতে চাইনি স্বাধীনতাহীনতায়, থাকতে চাইনি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আব্দ্ধ হয়ে আর তাই ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্রারম্ভে পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে শুরু হয়েছিলো স্বাধীন সূর্য্যপানে আমাদের পদযাত্রা, মুক্তির সংগ্রাম। নয় নয়টি মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ই ডিসেম্বরে এসেছিলো বিজয়। আমরা হয়েছিলাম প্রকৃত স্বাধীন। স্বাধীন বা স্বাধীনতার তকমা এটে নিয়েছিলাম আমরা প্রতি বাঙ্গালীর গায়ে কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা আসলেই কি? আমরা কি তা জানি? কি তার মূল্য? এই স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব কার? স্বাধীন হয়েও পরাধীনতার দায়ভার কে নেবে? এসব কি ভেবেছি আমরা এই এতগুলো বছরে একটাবারও?

২০১৬ এর ২৬ শে মার্চ। এ দিনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। যদি এ দিনটিকে বাংলাদেশের জন্মদিন বলে ধরে নেই তবে বাংলাদেশের বয়স হলো ৪৫ বছর। পয়তাল্লিশ বছর খুব কম সময় নয়। এ বয়সে একটি মানুষ তার জীবনের সাফল্যমন্ডিত সময়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকেন। মেধা, মনন, জ্ঞানে গরীমায় থাকেন ক্ষুরধার মহীয়ান।


এ বয়সে একজন মানুষ নিজের কৃত কর্মগুলি আত্মপোলদ্ধি করতে পারেন, করতে পারেন আত্মসমালোচনাও। একটি দেশ, তথা জাতিরও আসলে এ বয়সে এসে আত্ম সমালোচনার প্রয়োজন। প্রয়োজন আত্মপোলদ্ধির। পেছনে ফিরে তাকানোর বড় প্রয়োজন তার প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি বা হিসেব নিকেশের খতিয়ানের দিকে। প্রতি বছর আসে স্বাধীনতা দিবস। স্মৃতিসৌধগুলি ভরে যায় ফুলে ফুলে। আমরা সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করি বীর অকুতোভয়, আত্মত্যাগী মুক্তিযোদ্ধাদেরকে, যারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে দিয়ে গেছেন আমাদের এই স্বাধীনতা। এই দিন আসে, আবার চলেও যায়।

কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা কি অধরাই থেকে যায় না? এ বোধ শক্তি কি আমাদের আছে? আমাদের কর্ণধারেরা, আমাদের জন সাধারণ তারা কি আসলেই ভাবেন সত্যিকারের স্বাধীনতা নিয়ে? এ দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য নিয়ে ক'জনে আলোচনা করি আমরা? আজ বাংলাদেশের এই ৪৫ বছর বয়সে আত্মসমালোচনার বড় প্রয়োজন। জাতি হিসাবে আমাদেরও প্রয়োজন আত্মপোলদ্ধির। কিন্তু কারা করবে সেসব?

আমরা কি কখনও ফিরে তাকাই আমাদের দিকে? একবারও কি তাকিয়েছি? আমরা কি তাকিয়ে দেখি আমাদের স্বাধীনতার বয়সের কাছাকাছি আরও কিছু দেশের দিকে? তাদের উন্নতির সোপান আজ অনেক উঁচুতে। তাদের অবস্থান আজ বাংলাদেশের অবস্থানের সাথে অনেকটাই বৈষম্যমূলক নয় কি? তারা এগিয়ে গেছে যে গতীতে আমরা কি তা পেরেছি?


তাহলে আমাদের বাঁধা আসলেই কোথায়? কি আমাদের প্রতিবন্ধকতা! কে আমাদের সামনে দেওয়াল তুলে রেখেছে? কি নেই আমাদের? আমাদের আসলেই কিসের অভাব? এসব নিয়ে ক'জনে ভেবেছি?

বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিকে তাকালে দেখা যায় আমাদের মত প্রাকৃতিক নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্যতায় অনেক কম হবার পরেও কৃত্রিমভাবে হলেও পর্যটকদের জন্য কিভাবে তা আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে।
কিন্তু আমরা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অধিকারী, আমাদের রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার,আমাদের রয়েছে সুবিস্তৃত সী-বিচ কক্সেস বাজার, অপরূপা সেইন্ট মার্টিন,আমাদের রয়েছে সীতাকুন্ড, মাধবকুন্ড সহ আরও নানা প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য, বান্দরবান, বগালেক, মহাস্থান গড়,কান্তজীর মন্দিরসহ আরও আরও প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো। আমরা কি তা সঠিকভাবে অন্তত সংরক্ষনও করতে পারছি? আমাদের স্বাধীনতার পর হতে পাওয়া সকল প্রাপ্তি কি প্রত্যাশার তুলনায় খুবই নগন্য নয়?




স্বাধীনতার এতগুলো দিন পরেও এখনও আমরা তর্ক করি স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের মূলভিত্তি নিয়ে। এতে কি তরুন প্রজন্মরা হচ্ছে না বিভ্রান্ত? এভাবেই কি ভবিষ্যৎ বংশধররা হবে না আরও বেশী বিভ্রান্ত?

যদি আমরা স্বাধীনতার চার মূলনীতির দিকে তাকাই, দেখবো-

১ - গনতন্ত্র
২ - সমাজ তন্ত্র
৩ - ধর্ম নিরপেক্ষতা
৪ - বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ


১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর মাত্র ১ বছরের মাথায় মহান জাতীয় সংসদে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়, যেখানে মূল নীতি হিসেবে ছিলো এই বিশেষ ৪ টি নীতি। আমাদের ১৯৭২ এর সংবিধান এর চার মূলনীতি, বাংগালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকেই বুঝি। সময়ের সাথে সাথে এই চেতনার বৈষম্য, যথার্থতা নিয়ে নানা প্রশ্ন এসেছে । আসলে মুক্তিযুদ্ধকালীন চেতনার প্রথমটি ছিলো সকল মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা। সেই সময়ে মুক্তিকামী প্রত্যেকেই পাকিস্তান নামক দেশটির প্রভুত্ব চালানোর বিরোধী ছিলো।

এর পরবর্তী সেকেন্ড স্টেপ বা বিস্তারিত চেতনা ছিলো গনতন্ত্র। মুক্তিকামী লোকদের অধিকাংশই মনে করতো এই দেশ জনগনের আর জনগনই এই দেশের ভাগ্য নিয়ন্তা। এই দুটি প্রাথমিক চেতনার স্তরের পরেই ছিলো অন্যান্য বিষয়গুলি, বৈষম্যহীন সমাজ, বাংগালী সংস্কৃতি এরকম অন্যান্য ব্যাপারগুলো। গনতন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম প্রধান অংশ। কিন্তু আজ এই চেতনা সেই গনতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে নিজেকেই একটি চরম বৈপরীত্যমূলক ধারনার সৃষ্টি করেছে। এই ধারণাটির দ্রুত নিরাময় প্রয়োজন।

বইয়ের ভাষায়, গণতন্ত্র কোন জাতিরাষ্ট্রের এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নীতি নির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমান ভোট বা অধিকার আছে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহনের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। যদিও শব্দটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয় তবে অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

ধনী, গরীব নির্বিশেষে, রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সাধারণ জনতার জন্য সমান ভাবে এই গণতন্ত্র, শাসন ব্যাবস্থা কি সত্যিই আছে আমাদের দেশে? হ্যাঁ আছে তা গুটিকয় মানুষের জন্য তবে তা অবশ্যই সকলের জন্য নয়। সাধারণ মানুষ থানায় একটা জিডি নিয়ে গেলে নানা ছুঁতোয় তাকে ঘোরানো হয়, জিডি নেওয়া হয় না। ক্ষমতাবান মানুষের সবই আছে অথচ সাধারন জনগণের জন্য কিছুই নেই।

সত্য কথা প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, মুক্ত চিন্তা প্রকাশ করলে তাকে হতে হয় হানাহানি, সাম্প্রদায়িকতার স্বীকার। জ্ঞানীজনের জ্ঞান প্রকাশের ক্ষমতা নেই। সত্যবাদীর জন্য সন্মুখে প্রস্তুত খড়গ। সত্য বললেই তা নেমে আসবে ঘাড়ে। তবে কি গনতন্ত্রের পূর্ন স্বাধীনতা আমরা কখনই ভোগ করবো না? বাড়ির বাইরে পা বাড়ালেই নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা। কে দেবে আজ জীবনের নিরাপত্তা!

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গেলে কতগুলো বিষয় উন্নয়ন অতীব জরুরী। শিক্ষার অগ্রগতী, মানবিকতার সুষ্ঠ শিক্ষা, নিজস্ব মত প্রকাশের অকুতভয় হবার দীক্ষা। আমাদের দেশে শিক্ষার হার এখনো অনেক কম বর্তমানে যদিও আগের তুলনায় শিক্ষার হার বেড়েছে তবে প্রতিটা মানুষকেই শিক্ষিত করা বা হওয়া সম্ভব হয়নি। দেশকে মেধাশূন্য করবার জন্য বরং সদা প্রস্তুত কিছু ড্রাকুলা গোত্রীয় শোসক শ্রেণী।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অমূল্য সম্পদ-স্বাধীনতা মূল দলিল। পৃথিবীতে খুব কম দেশ বা জাতি আছে যাদের এ ধরনের মহামূল্যবান দলিল বা সম্পদ আছে যার ভিত্তিতে স্বাধীনতা লাভ করেছে। আমাদের ঘোষণাপত্রটি ঘাটলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসেবে আরও পাওয়া যাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এসব অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি।

সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এসব চেতনার সাথে কে দ্বিমত করবে? এই চেতনাগুলোর মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জাতীয় ঐক্যমত হতে পারে। মৌলিক বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত ছাড়া জাতি সামনে এগুতে পারে না।

আর কিছুদিন পর পার করবো আমরা স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পরও আমরা কি এখনও জানতে পারবো? মুক্তিযুদ্ধে সঠিক কতজন লোক শহীদ হয়েছেন? প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধার সংখ্যা কত? রাজাকারদের সঠিক সংখ্যাইবা কত? এগুলোর সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা মোটেই কঠিন ছিল না। শুধু দরকার ছিল সদিচ্ছার। এগুলো ছিলো অতি আবশ্যকীয় কাজ। এই কাজগুলি সুচারূরূপে করা হলে আর আজ থাকতো না এত দ্বিধা দ্বন্দ, মতভেদ। কিভাবে দূর হবে এই সব বাঁধা? কিভাবে গড়ে তুলবো আমরা ইউনিটি বা ঐক্যবদ্ধতা ? এসব নিয়ে কি আজও ভাবনার সময় আসেনি?

মোরা বন্ধনহীন, জন্ম স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল
আবারও আসি- স্বাধীনতা মানে কি? এক কথায় স্বাধীনতা মানে আমার চোখে নজরুলের এই লাইনটি- বন্ধনহীন, জন্ম স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল। স্বাধীনতা মানে স্বাধীন চেতনায় বাস করা । এই চেতনা বাস করে একজন মানুষের চিন্তা, চেতনা ও মগজের ভেতরে। সূর্যসেন, তীতুমীর, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা কিংবা রবীন্দ্র-নজরুল ছিলেন স্বাধীন চিন্তা, চেতনা ও বোধের অধিকারী। তারা ছিলেন চিন্তায়, মেধায়, মননে বন্ধনহীন, জন্ম স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল।

আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বা স্বাধীনতার সংগ্রামে সেই সাত কোটি বাঙ্গালিই হয়ে উঠেছিলেন সেই তীতুমীর , সূর্যসেন, প্রীতিলতা। এমন স্বপ্ন বাঙ্গালী আগে কখনও দেখেনি একই সাথে, একই চেতনায় আর কখনও উদ্ভুদ্ধ হয়নি তারা। চিন্তায়-বোধে-চেতনে, মননে এমন বোধন বাঙ্গালির আগে আর আসে নি, হাজার বছরের ইতিহাসে আর কখনো সেই অকুতভয় সাত কোটি বাঙ্গালিকে মনে হয়নি এতখানি সংকল্পবদ্ধ, দৃঢ় মনোবল। আর তাই বাঙালি জাতি স্বাধীন হয়েছিল সত্যিই সেই একাত্তরের ২৬ শে মার্চেই। স্বাধীন বাঙালি জাতিকে লড়তে হয়েছিল স্বাধীনতার শত্রুদের সাথে নয় নয়টি মাস, ডিসেম্বরে ঘটেছিল যেই লড়াইয়ের চূড়ান্ত বিজয়।

কিন্তু স্বাধীনতা কি চিরস্থায়ী হয়েছে?
হয়তো আজ দেশটা স্বাধীন, কিন্তু আমরা কি পরাধীন নই? সাম্প্রদায়িকতা থেকে শুরু করে দুর্নীতি, সন্ত্রাস- প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পরাধীনতার বেড়ি আমাদের পায়ে কিন্তু এর দায় কি আমাদেরই না?

আমাদের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ, অসাম্প্রদায়িকতার শপথের কাছে-

আমাদের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ বাক স্বাধীনতা দানের আশ্বাসের কাছে-

আমাদের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ নারী পুরুষ নির্বিশেষে নিরাপত্তার কাছে-

আমাদের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ আমাদের বিবেকের কাছে-

আমরা কি চিন্তা ও মননে আবার হতে পারি না স্বাধীন? সবাই মিলে হতে পারি না একতাবদ্ধ? আমাদের গলায় যদি থাকে একই গান এবং লড়াই করতে পারি একই সাথে, এই সাম্প্রদায়িকতা থেকে শুরু করে দুর্নীতি, সন্ত্রাস,স্বাধীনতার সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে, একাত্তরের সেই সময়ের মত করে, পরাধীনতা থেকে তাহলেই হবে মুক্তি।

মুক্তির মন্দির সোপান তলে
কত প্রান হলো বলিদান লেখা আছে অশ্রুজলে....
আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন লাখো বাঙ্গালী। তবে মুক্তিকামী স্বাধীনতাকামী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী অগ্রজদের কথাও অবিস্মরণীয়। তাদের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েও ঘটেছিলো পরবর্তী বিপ্লবগুলো।
মুক্তিকামী অগ্রদূতেরা----


সূর্য সেন
সুভাষচন্দ্র বসু যে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দল গঠন করেছিলেন, তার আদলে মাস্টারদার চট্টগ্রামের দলে তিনি জিওসি হন। ১৯২৯ সালে চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসে নির্বাচিত হওয়ার পর সূর্য সেন যে ‘বিপ্লবী পরিষদ’ গঠন করেছিলেন, গণেষ ঘোষ ছিলেন তার পাঁচ সদস্যের অন্যতম সদস্য। অপর সদস্যেরা হলেন মাস্টারদা নিজে, অম্বিকা চক্রবর্তী, নির্মল সেন ও অনন্ত সিং। পরে পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের নাম পালটে ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা’ রাখা হয়।
পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই প্রয়োজনীয় অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামের বিভিন্ন অস্ত্রাগার দখলের কর্মসূচি গ্রহণ করেন বিপ্লবীরা। গণেশ ঘোষ ছিলেন এই অভিযানের ফিল্ড মার্শাল। রাত দশটা পনের মিনিটে বিপ্লবীরা সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল করেন। বিপ্লবীরা একের পর এক অতর্কিত আক্রমণ করে সরকারি অস্ত্রাগার, টেলিফোন কেন্দ্র, টেলিগ্রাফ ভবনসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে নেন, যা ছিল দেড়শত বছরের ইতিহাসে ইংরেজদের জন্য খুবই অপমানজনক ঘটনা। এটি ছিল সরাসরি ইংরেজ বাহিনীর প্রথম পরাজয়।


প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ, অগ্নিকন্যা খ্যাত বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে ১৯৩২ সালে ডিসটিঙ্কশনসহ বিএ পাস করেন।
বিপ্লবী নেতা মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে অস্ত্রলুট, রেললাইন উপড়ে ফেলা, টেলিগ্রাম-টেলিফোন বিকল করে দেওয়াসহ ব্যাপক আক্রমণ হয়। এই আন্দোলন সারাদেশের ছাত্র সমাজকে উদ্দীপ্ত করে। এই আক্রমণ চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ নামে পরিচিতি পায়। চাঁদপুরে হামলার ঘটনায় বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসির আদেশ হয়। তিনি যখন আলীপুর জেলে বন্দি তখন প্রীতিলতা রামকৃষ্ণের বোন পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতেন। রামকৃষ্ণের প্রেরণায় প্রীতিলতা বিপ্লবী কাজে আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৩১ সালে ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণের ফাঁসি হবার পর প্রীতিলতা আরও বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন।
ঠিক ঐ সময়েই তখনকার আরেক বিপ্লবী কন্যা কল্পনা দত্তের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রীতিলতার। বিপ্লবী কল্পনাদত্তের মাধ্যমে মাস্টার দার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন প্রীতিলতা। ১৯৩২ সালের মে মাসে প্রীতিলতার দেখা হয় মাস্টারদা ও বিপ্লবী নির্মলসেন এর সঙ্গে। তাদের কাছ থেকিই অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ লাভ করেন তিনি।
১৯৩২ সালে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। ওই বছর ১০ আগস্ট আক্রমণের দিন ধার্য করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে নারী বিপ্লবীদের নেতৃত্বে আক্রমণ হবার কথা হয়। আর নেতৃত্বে থাকে কল্পনাদত্ত। কিন্তু আক্রমণের আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কল্পনাদত্ত। তাই নেতৃত্ব দেয়া হয় প্রীতিলতাকে। ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে সফল হন বিপ্লবীরা। প্রীতিলতা সে দিন পুরুষের বেশে আক্রমণ যোগ দেন। জয়ী হয়ে নিরাপদ আশ্রায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন প্রীতিলতা। এই অবস্থায় ধরা পড়ার আগেই সঙ্গে থাকা সায়ানাইড খেয়ে আত্মহুতি দেন তিনি।


ক্ষুদিরাম
ক্ষুদিরাম। বিপ্লবীদের অন্যতম আদর্শ। তার এই আত্মত্যাগ এক সময় এই অঞ্চলের মানুষকে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলো। তার জন্য হৃদয় হতে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। এই দূর্লভ ছবিটি ক্ষুদিরামের; তাকে ফাঁসির জন্য যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো সেই সময়ের।


বাঘা যতীন
বাঘা যতীনের জন্ম আমাদেরই বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে। ভারতবর্ষে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে যাঁরা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন, এই সংগ্রামে যাঁদের আত্মদান ইংরেজ শাসকদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে, দুশ’ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের ভিত্তিমূলে আঘাত হেনে স্বাধীনতা অনিবার্য করে তুলেছে- তাঁদের অন্যতম বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৭৯-১৯১৫), যিনি ‘বাঘা যতীন’ নামে সমধিক পরিচিত। দেশমাতৃকার প্রতি গভীর ভালবাসা ও দায়বদ্ধতা, অপরিসীম সাহস ও শৌর্যবীর্য তাঁকে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের প্রথম পংক্তিতে স্থান দিয়েছে। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর উড়িষ্যার বালাশোরের কপ্তিপোদায় ইংরেজ বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। অন্তিম নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে এই মহাবীর বলেছিলেন- “আমরা মরব দেশ জাগবে”।


মওলানা ভাসানী
আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক, আফ্রো-এশিয়া ল্যাটিন আমেরিকার নিপীড়িত দেশ, জাতি ও জনগণের মুক্তির সংগ্রামের অন্যতম পথপ্রদর্শক, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ চেয়ারম্যান মওলানা ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি আজীবন শোষিত মানুষের পক্ষে নিয়ে শাসকগোষ্ঠীকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব সময় থেকেছেন আপসহীন নেতৃত্বের ভূমিকায়।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন কেবলমাত্র নয় মাস সময়সীমার ভেতর আবদ্ধ ছিল না। ঔপনিবেশিক বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয় বলে অধুনা ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করে। তবে তারপর বৃটিশরা বিদায় নিলেও সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির জন্য বাঙালিকে আরও দুই যুগ সংগ্রাম করতে হয়েছে, যার সফল পরিসমাপ্তি ঘটে স্বাধীন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অনন্যসাধারণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।
বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় কণ্ঠ, প্রিয় মুখ, প্রিয় নাম-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙ্গালি বিশ্বের যেখানেই থাকুক না কেন, তার আত্মপরিচয়ের ঠিকানা, অহঙ্কারের সাতকাহন, আত্ম মর্যাদার প্রতীক-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
নেতার আদেশে হাজার হাজার নিরস্ত্র জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে সশস্ত্র হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর ট্যাংকের সামনে, অবুঝ কিশোর তাজা রক্তের আখরে লিখে যায় মাতৃভূমির রক্তঋণ শোধ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, অশ্রু সজল জননী প্রাণপ্রতিম সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে দেন অবলীলায়, আবালবৃদ্ধ-বণিতা লিপ্ত হয়ে পড়ে সর্বাত্মক এক জনযুদ্ধে।


বৃটিশ ভারতে বাঙালিসহ ভারতকর্ষের সকল জাতিসত্ত্বার সংগ্রাম ছিল একসূত্রে গাঁথা- প্রধান লক্ষ্য ছিল ইংরেজ বিতাড়ন। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রাম যা কখনও সশস্ত্র অভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছিল- অনুপ্রাণিত করেছে ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। তবে স্বাধীনতার বেদিমূলে বাঙালির মত এত রক্ত অন্য কোনও জাতিকে দিতে হয়নি।
বৃটিশ ভারতে ক্ষুদিরাম, বাঘা যতীন, প্রফুল্ল চাকী, সূর্য সেন, প্রীতিলতাদের অপরিসীম দেশপ্রেম, সাহস ও আত্মদান শুধু ভারতবর্ষ নয়, ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামরত যে কোনও জাতির অনুপ্রেরণার উৎস। আর আমাদের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতার সংগ্রামে বাঙ্গালী দিয়েছিলো নির্দ্বিধায় জীবন।

কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙ্গা, বন্দীশালার ঐ শিকলভাঙ্গা
তারা কি ফিরবে আর!
তারা কি ফিরবে এই সুপ্রভাতে
যত তরুন অরুণ গেছে অস্তাচলে!

তারা হয়তো আজকের এই সুপ্রভাতে ফিরবে না। তবু স্বর্গ থেকে ঠিকই দেখবেন তারা। তাদের সেই অশ্রুজলের লেখা কিছুটা শান্তি পাবে। যদি সবাই মিলে রক্ষা করি আজ আমরা তাদের সেই আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। যে জীবন স্বাধীনতার জন্য, স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য নিবেদিত হয়েছিলো, সে জীবনের এতটুকু প্রশান্তি রক্ষার দায়ীত্ব তো আমাদেরই।

আমরা সমাজের দোষ দেই, দোষ দেই রাজনৈতিক হানাহানি, ক্ষমতার লড়াই বা সমাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়সহ নানা নিয়ামকের। দোষ দেই একতাবদ্ধতার। তবে একটা কথা ভুললে চলবেনা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধুলিকনা থেকেই গড়ে ওঠে মহাদেশ, বিন্দু বিন্দু জলেই গড়ে ওঠে মহাসাগর।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে....
তবে একলা চলো রে.....
হ্যাঁ আমাদের হাতেই আসলে রয়েছে সেই স্বপ্নলোকের সোনার চাবিটি। যা কিছু আজ অধরা মনে হচ্ছে আমরা চাইলেই তা হয়ে উঠতে পারে অতি সহজ। প্রয়োজন শুধু প্রতিটা নাগরিকের হাতের সেই সোনার চাবিটিকে ঘোরানোর। চিন্তা মনন, মেধা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজ উন্নয়নের সে চেতনায় যদি এক এক করে এগিয়ে আসি আমরা, ঘুরিয়ে দেই সোনার চাবিটি। তাতেই খুলে যাবে সেই স্বপ্নলোকের দ্বার। আমরা হবো প্রকৃত স্বাধীন।

আর তাই স্বাধীনতা দিবসে আমার একটাই চাওয়া, চিন্তা, চেতনা ও মননে স্বাধীন হোক বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক।

পড়ছিলাম-
‘বাস্তবতার নিরিখে সমকালীন প্রসঙ্গ’- ব্যারিস্টার নাজির আহমদ

স্বাধীনতা কি?

ভাবছিলাম- তনুর মর্মান্তিক পরিনতির কথা-
এই তো দুদিন আগেও মেয়েটা বেঁচে ছিলো এই আমাদের বাংলাদেশের মাটিতে। নাট্যগোষ্ঠির সদস্যও ছিলো সে। প্রানোচ্ছল সেই জীবনটা আজ আর নেই। তাকে ধর্ষন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি নরপশুরা। তাকে হত্যাও করা হয়েছে। ঘটনাটি আবার খুব সুরক্ষিত সেইফ একটা জায়গায়। একটি সেনানিবাসের ভিতরে, এত নিরাপত্তায় যেখানে বিনা অনুমতীতে একটা মাছিও গলতে পারে না সেখানে কিভাবে ঘটে এমন একটি পৈচাশিক ঘটনা? তাহলে স্বাধীনতা কোথায়? কোথায় একটি স্বাধীন দেশের নিরাপত্তা?

তানভীর জোহার হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া-
জলজ্যান্ত মানুষ হারিয়ে যায়! স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে হাঁটতে পারেনা মানুষ! মায়ের আহাজারীতে আকাশ কাঁপে। তবুও কেউ জানেনা। কেউ দিতে পারে না সঠিক আশ্বাস! শুধুই অপেক্ষা করতে হয় নিয়তির উপর। উদ্বেগ, আশঙ্কা এবং দূর্বিসহ প্রহর শেষে অবশেষে সে ফেরে। কিন্তু তাকে থাকতে হয় বাকহীন, মুঢ়। হয়তো টগবগে উদ্দিপ্ততায় ছুটে চলার প্রেরনা হারায় সে। হারায় স্বাধীনতা।

মনে পড়ে-
টি এস সিতে উৎসবে একদল নরপশুর নারীদেহের প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। আনন্দ উৎসবে এখনও রয়ে গেছে এই বৈষম্য, এই স্বাধীনতা হরণের কুৎসিৎ প্রমান চিত্র। মানুষ বিশেষ করে নারীরা এখনও পায়নি সে স্বাধীনতা যে স্বাধীনতায় নিশঙ্কোচে, দৃপ্ত চিত্তে ভয় ও দ্বিধাহীন ভাবে সেও আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে। এখনও সুশিক্ষিত হয়নি সমাজের বিবেক। দিতে শেখেনি মানুষের স্বাধীনতার মূল্য।

কষ্ট পাই-
যখন দেখি কিছু অসুস্থ্য বিকলাঙ্গ মানুষের দ্বারা ধর্ষিত হতে আমাদেরই বোনদেরকে। শাজনীন থেকে তনু সমাজের কোথাও নিরাপদ নয় কেউই তারা। রমরমা সংবাদ হয়, গনমাধ্যমে ঝড় ওঠে। ধর্ষিতার বিকৃত দেহের ছবি মিলি সেকেন্ডে ছড়াতে থাকে সারা বিশ্বে। ভীষন কষ্ট লাগে জীবিত এবং মৃত কোথাও কি পাবোনা আমরা এতটুকু সন্মান ? মৃত্যুর পরেও পরাধীনতার শেকলে বন্দীই থেকে যাই আমরা। যে দেহ লালসার চক্ষু থেকে বাঁচাতে হিজাব নেকাব পরেছিলো মেয়েটি। মৃত্যুর পরেও রেহাই পায়না সে। সেই দেহটিকেই অনাবৃত করে ছিড়ে খুড়ে খায় কিছু বিকৃত মানুষের দল।


স্মরণ করি-

অভিজিৎ রায়, নিলয়দেরকে, -স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতায় প্রাণ দিতে হয়েছিলো যাদেরকে। সাম্প্রদায়িকতার বেড়াজাল ভাঙ্গতে পারেননি তারা।

আবারও বলছি-
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে....
তবে একলা চলো রে.....
আমাদের হাতেই আসলে রয়েছে সেই স্বপ্নলোকের সোনার চাবিটি। প্রয়োজন শুধু সেই চাবিটিকে ঘুরিয়ে দেবার।



মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা বাক স্বাধীনতা হোক একজন সুস্থ্য স্বাধীন নাগরিকের প্রাপ্য অধিকার। চিন্তা, চেতনা ও মননে প্রতিটি বাঙ্গালী হয়ে উঠুক মুক্ত স্বাধীন। স্বাধীন বাংলার মৃত্তিকায় আনন্দ ও স্বাধীনতায় বাঁচুক প্রতিটি বাংগালী।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪
১৩১টি মন্তব্য ১৪৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×