somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো- একটি শীতকালীন ছুটি ভ্রমন ব্লগ

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ বছর বিদেশ থেকে আগত শীতের পাখীদের আগমনে মনে মনে একটু বিরক্তই হচ্ছিলাম। ভাবছিলাম ছুটিটা এবারেও গেলো। ইনাদের সাথে সাথে শপিং মলে দৌড়াতে দৌড়াতে আর আত্নীয়-স্বজন, তাদের বন্ধু বান্ধব জ্ঞাতি গোষ্ঠীর বাড়িতে দাওয়াৎ খেতে খেতে এ কটাদিন অকারনেই পার হয়ে যাবে। তবে বিদেশ পার্টি যখন ঘোষনা দিলো এবারে তারা এক্সপ্লোর করতে চায় বাংলাদেশের রাঙ্গামাটির রঙ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম, কাপ্তাই ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন থেকেই আমার মনে শুরু হলো গুনগুন- রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো, সাম্পান মাঝির গানে মন ভরালো। সে যাইহোক এইবার টিকেট, হোটেল বুকিং এসবের পালা। তো এই কাজে এগিয়ে এলেন আমাদের পরম সুহৃদ মিঃ আর্মিম্যান। এই পিক সিজনেও যেখানে হোটেল বা বাস, ট্রেন, প্লেন কোথাও ঠায় নাই ঠায় নাই, সেখানে উনি দু'মিনিটের মাথায় ম্যানাজ করে ফেললেন সকল কিছুই। তো শুরু হলো দলবল নিয়ে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে আমাদের যাত্রা। আমাদের দলে নারী ও শিশুসহ ছিলেন মোটমাট ১১ জন। বেশ হৈ হুল্লোড়, আনন্দে, গানে ও সাথে সাথে অবিরাম খানাপিনায় কখন যে কেটে গেলো ট্রেনের কয়েকটা ঘন্টা তা বুঝাই গেলো না।

চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌছুতেই গটগট করে কারা যেন সব মালপত্র নিয়ে গিয়ে উঠিয়ে ফেললো জীপে। আমাদের সহযাত্রীরা বুড়া থেকে গুড়া সকলেই মানে গুড়াগুলো অবশ্য কোলে কাখে করে সেটে গেলো সেই বিশাল দুই জীপের কোটরে। এরপর বাইরে তাকিয়ে দেখি, মাই গড! কোথায় প্রাকৃতিক লীলাভূমি! এ দেখি জ্যামে ভরা রাস্তায় গিজগিজ করছে দোকানপাট লোকজন! কিছুপরেই জীপ এসে থামলো এক পাহাড়ের চূড়োয়! এখানেই নাকি নামতে হবে আমাদেরকে আর হেঁটে হেঁটে আঁকা বাঁকা সিড়ি বেয়ে এই আলো-আঁধারীতে নেমে যেতে হবে নাকি সেই আর্মিদের মনোহর বাংলোতে। এরপর আর গাড়ি চলার পথ নেই। সিড়ি বেয়ে নেমে গেলাম সেই বাংলোয়।

রাতের খানাপিনা সেরেই আমি সামনের লনে হাঁটতে শুরু করলাম ছোটদের দলের সাথে। কিন্তু বড়দের দল বড়ই ভীতু আর ভীতু, তারা বারান্দা থেকেই চেচাচ্ছিলো, রাতে ঝোঁপঝাড়ের দিকে যেন না যাই কারণ সাপ-টাপ বের হতে পারে। আমি অবশ্য এই কথা শোনার আগে পরম সাহসী ছিলাম কিন্তু ভীতুদের সাপের ভয় শোনানোর পরে আমি তাকিয়ে দেখি এক লং জ্যাম্পে আমি ওদের নেটের বারান্দায় ভেতরে ঢুকে গেছি। ঐ দিকে পিচ্চিদের দলবল দৌড়াচ্ছে আমার পিছে বাট আমি ফার্স্ট! :P

কিন্তু রাতে সাপের ভয় থেকে লং জ্যাম্প দিয়ে রক্ষা পেলেও সাত সকালে আরেক আপদ! আপদ মানে কি যে বিপদ আমি হয়ত ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। সকালে ঘুম ঘুম চোখে বাথরুমের দরজার পরদা সরাতেই ওমা দরজায় এক কুমিরের বাচ্চা! এই কুমিরের বাচ্চা ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে আবার তাকিয়েও ছিলো। আমি তো তাকে দেখেই এমন এক চিৎকার দিয়েছি যে কোনো ইনসিডেন্ট এলার্মও ফেইল হবে মনে হয় আমার চিৎকারের আওয়াজের কাছে এবং পুরা আমাদের টিমের ১১জন সহ ওদের বাংলোর বাবুর্চি, দারোয়ান, ড্রাইভার, মালী, তাদের বউ বাচ্চাসহ সব ঘুম ভেঙ্গে হাজির হলো আমার রুমে।

আমি যতই বলি আজকেই এখান থেকে চলে যাবো, কুমিরের বাচ্চার সাথে আমি কিছুতেই থাকতে পারবোনা তারা ততই বলে কিছুই হবেনা এরা নাকি নিরীহ প্রাণী, কারো কোনো ক্ষতি করে না হেন তেন। যাইহোক আমার বাক বিতন্ডা কান্না কাটিতে বিরক্ত হয়ে শেষে দারোয়ান আর ওদের বাবুর্চি মিলে লাঠি সোটা ঝাটা ( মশা মারতে কামান দাগা অবস্থা) দিয়ে কুমিরের বাচ্চাকে তাড়িয়ে দিলো জানালা দিয়ে। আমার অবশ্য আটোসাটো করে জানালা লাগানোর পরেও সন্দেহ যাচ্ছিলো না যে সে যদি আবার নিজ গৃহে ফিরে আসে দরজা দিয়ে। :(

যাইহোক, এরপর বারান্দায় বেরিয়ে ভোরের কুয়াশাছন্ন পাহাড়চূড়া দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। কিছু দূরেই থরে থরে মৌনব্রতী সন্যাসীর মত পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। চারিদিকে সবুজ বনানী। আমরা রাতে যে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসেছিলাম আঁকাবাঁকা সর্পিল সেই সিড়িটার সৌন্দর্য্যেও আমি মুগ্ধ হলাম।


পাহাড়ের উপরের আমাদের বাংলোর লন থেকে দেখা যাওয়া ভোরের কুয়াশাছন্ন নগরীর একাংশ


বাংলোর বারান্দা


বাংলোর আঁকা বাঁকা সিড়ি


সকালে নাস্তার পর আমাদের প্রথম অভিযান ছিলো চিটাগং নগরী ভ্রমন। প্রথমেই আমরা পাহাড়টা ঘুরে দেখলাম। আহা মরি মরি ! চারিদিকে একি অপরূপ ধরি, দাঁড়িয়ে আছে ধরিত্রী।


হেঁটে হেঁটেই আমরা পার হলাম রেইলওয়ে অফিস


জায়গাটার নাম ছিলো টাইগার পাস।


যদিও সেখান দিয়ে গরুও পাস হচ্ছিলো।
আমরা গেলাম নিউ মার্কেট। কিছু কিনতে না শুধুই ভিজিট করতে। এরপর দুপুরের খানা শেষে চললাম আমরা পতেঙ্গা ওয়েস্ট পয়েন্ট নেভীর সী বিচের উদ্দেশ্যে। যেতে যেতে পথে ড্রাইডক, এয়ার ফোর্স অফিস, মেরিন ফিশারিজ, সিমেন্ট ফ্যাক্টরী কত কিছুই না চোখে পড়লো আর এক দিকে দাঁড়িয়ে ছিলো স্থির চিত্রের মত সারে সারে জাহাজ।


অবশেষে নৌবাহিনী সংরক্ষিত সি বীচ। আমাদের মিঃ আর্মিম্যান এ সকল কিছুর সুবন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন। সেখানে বসেই আমরা সান্ধকালীন চা খেলাম আর তারপর ফিরে এলাম বাংলোতে। রাতে সেদিন মিঃ আর্মিম্যানের সৌজন্যে ছিলো বিশেষ ডিনার- মেজবানী মাংস, চিকেন কোরমা, লইট্যা শুটকী ভুনা, শোলমাছের কালিয়া, আলু ভর্তা আরও কি কি সব চট্টগ্রাম স্পেশাল ডিশেস.......
পরদিন ছিলো রাঙ্গামাটি যাত্রা----ওহ বলতে ভুলে গেছি বাথরুমের দরজায় কুমীরের বাচ্চা বলে যে ভ্রম করেছি সেটা আসলে ছিল চট্রগ্রাম ঐ আর্মি বাংলোর স্পেশাল বিগ সাইজ টিকটিকি। টিকিটকিটার ছবি আছে কিন্তু এইখানে ভয়ে আমি এ্যাড করতে পারলাম না!:(
পরদিন শুরু হলো রাঙ্গামাটি যাত্রা!!!! গাড়িতে করে ধেয়ে চলি, মনে বাজে সূর, একি অপরূপ রূপে মা তোমার হেরিনু পল্লী জননী!!!! শেষ পর্যন্ত আর গাড়িতে বসে থাকা গেলোনা। পথে নামতেই হলো কিছুক্ষন সেই পাহাড়ী পথের সৌন্দর্য্যে পা ডুবিয়ে চলতে। এরপর আমাদের গাইড কাম ড্রাইভার আমাদেরকে নিয়ে গেলো রাজবন বিহারে। স্বর্নালী সেই মন্দিরে ছবি তোলা কঠোরভাবে নিষেধ ছিলো। তাই বাইরে থেকেই ছবি তোলা হলো।


রাজবন বিহার মন্দির


রাজার কামান
এরপর গেলাম রাজবাড়ি। রাজবাড়ির প্রাঙ্গন আছে, রাজ দরবার আছে কিন্তু রাজার বাড়ি আজ আর নেই। কয়েক বছর আগে ফানুস উৎসবের এক অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে রাজবাড়ির এক অংশ আরও এক অংশ ডুবে গেছে পানির মাঝে। তবে এখানের বাঁদরেরা খুবই ফ্রেন্ডলি। তারা নির্ভয়ে চারিদিকে ঘুরছিলো এবং নিজের মনে করে যার হাতে খানা দানা যা পাচ্ছিলো টান দিয়ে নিয়ে নিচ্ছিলো!


রাজবাড়ির প্রাঙ্গন ও বাঁদরের দল

রাঙ্গামাটিতে আমরা উঠেছিলাম রাঙ্গামাটি ক্যান্টনমেন্টের আরন্যকে। প্রকৃতির মাঝে মানুষের হাতের ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা যেন এ আরেক রুপকথা রাজ্য। যাইহোক বিকালে গেলাম ঝুলন্ত ব্রীজ। ঝুলন্ত ব্রীজে পর্যটকদের ভীড়ে ব্রীজ কখন ভেঙ্গে পড়ে এ চিন্তায় আমার এ সৌন্দর্য্যই দেখা হলো না ঠিক মত। তবে মনে সাধ মিটিয়ে আমি ব্যাগ কিনেছি। স্থানীয়দের হাতে তৈরী মনোহর ব্যাগ, আচার, বাদাম, গয়না গাটি যা পেয়েছি হাতের কাছে সব!!!!!


ঝুলন্ত ব্রীজ


ব্যাগ বুননরত বিক্রেতা

এবার গাইড আমাদের নিয়ে গেলো টেক্সটাইল মার্কেটে। এটাও চাকমাদের হাতে তৈরী নানা জিনিসের মার্কেট। সেখান থেকে আমি লাল নীল হলুদ সবুজ কাপড় ও সাথে কিনে ফেললাম সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, থামি যা কিছু ভালোলাগার সবই। রাতে ফিরে এসে কোনো মতে ডিনার সেরেই আমরা গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম।

পরদিনের যাত্রা ছিলো দিনমান কাপ্তাই লেক।


খুব সকালে আগের দিনের কেনা চাকমাদের ড্রেস পরে সাজুগুজু করে রেডি হয়ে নিলাম তারপর নাস্তা সেরেই দৌড়ালাম এস পি ঘাটে। সেখানে আমাদের জন্য বোট রেডি করা ছিলো। আমি অবশ্য বোট দেখে চিন্তিত ছিলাম সেখানে উঠতে পারবো কিনা। তবে দেখলাম এই বোটে ওঠা তেমন ঝামেলার না, সহজেই ওঠা যায়। কিছু পরে বোট ছেড়ে দিলো। চারিদিকে অথই জলে রোদ্রের ঝিকিমিকি। বাচ্চারা মেতে উঠলো আনন্দে। সকলের কলকাকলীতে মুখর হয়ে উঠলো আমাদের নৌযাত্রা।


নৌকা নিয়ে বয়ে চলা মাছ ধরা জেলেদল


দুপাশে সারে সারে দাঁড়িয়ে পাথুরে পাহাড়, চারদিকে ঝিলিমিলি জল।
বেশ কিছুক্ষন পরে আমরা পৌছালাম পেদা টিং টিং দ্বীপে। এই ছোট্ট মনোহর দ্বীপটিতে এসে ভাবছিলাম এই দ্বীপের নামই কি পেদা টিং টিং? পরে জানলাম এই দ্বীপ জুড়ে করা খাবারের রেস্টুরেন্টটির নাম এটা। আর পেদা টিং টিং মানে পেট ভরে খানাপিনা। জানলাম এখানে লোকাল ফুড খেতে চাইলে অর্ডার দিয়ে চলে যেতে হবে তারপর আরও সব খানে ঘুরে এসে খেতে বসলেই খাবার হাজির হবে গরমাগরম।



আমরা পেদা টিং টিং দ্বীপ হতে চললাম শুভলং এর উদ্দেশ্যে পথে পড়লো মনোহারি ঝর্ণার দ্বীপ। মাঝি বললো বর্ষায় এই ঝর্না জেগে ওঠে । এখন ঝর্না মৃতপ্রায়। শুভলং এ যখন পৌছালাম দেখলাম এ শুধু আর্মিদেরই এক দ্বীপ। বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তারা। এখানে আছে এক রেস্ট হাউজ ও মেইন আকর্ষন এখানকার স্থানীয় হ্যান্ডিক্রাফটস বাজার।


শুভলং পাহাড়ের উপরের সেই আর্মি ক্যাম্পে ঘুরে ঠান্ডা শীতল ডাবের জলে গলা ভিজিয়ে আমরা ফিরে চললাম। পথে পড়লো গোল্ডেন বুদ্ধা টেম্পল ও হোয়াইট বুদ্ধা টেম্পল। তবে হোয়াইট বুদ্ধা টেম্পল এখনও রেডি না থাকার সেখানে নামা যায় না। এর পর ফিরে এলাম আবারও পেদা টিং টিং এবং পেট ভরে খেলাম বাঁশ দিয়ে রাঁধা বনমোরগের মজাদার কারী যা বাঁশের পাত্রেই সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। কালবাউশের কারীও বাম্বু শ্যুটসে রান্না করে কলাপাতায় করে সাজিয়ে দিয়েছিলো ওরা। বাচ্চারা খেলো নর্মাল ফুড। পেট ভরে খানাপিনার পর আমাদের মন ভরে গেলো এই দ্বীপের মনোহর সৌন্দর্য্যে।


মনোহর দ্বীপে পাহাড়িয়া মনোহারী সাজে একজন ভ্রম্যচারিনী উদাস নয়নে সন্মুখে চাহিয়া মনে মনে গান গাইছিলো...


গোল্ডেন বুদ্ধা


হ্যোয়াইট বুদ্ধা


চাকমা স্পেশাল লোকাল ফুড- বাঁশ দিয়ে মাছ আর মাংস

আবার শুরু হলো নৌযাত্রা। এবারের গন্তব্য টুকটুক পাহাড়। টুকটুক পাহাড়ের নাম কেনো হয়েছে তা পাহাড়ে উঠতে গিয়েই বুঝলাম আমি। এ পাহাড়ে উঠতে গেলে টুক টুক করেই উঠতে হবে। পরম শক্তিশালী ব্যাক্তি ছাড়া হন হন করে ওঠার সাধ্য নেই কারো আর তাই বুঝি হন হন পাহাড় না হয়ে টুকটুক পাহাড়ই হয়েছে। তবে টুকটুক শুধু পাহাড়ই নয়। এখানে রয়েছে গহীন অরণ্য। ঝিরিঝিরি পাতার ফাঁকে বিকেলের রোদ। মনে মনে গাইছিলাম। গাছের পাতায় রোদের ঝিকিমিকি ......


টুক টুক পাহাড়


টুকটুক পাহাড়ের রেস্টুরেন্ট
এখানের এক মনোরম রেস্টুরেন্টে খেলাম বিকালের চা ও সাথে ওদের নিজস্য স্টাইলে বানানো টা মানে এক গাঁদা ছোট ছোট বামন পেঁয়াজী উইথ কুচি কুচি করে কাঁটা কাচা মরিচ পেঁয়াজ!!!!!এর পর আর পা চলছিলো না কারো কারো সারাদিনের ঘুরাঘুরি শেষে আমরা ফের পা বাড়ালাম আরন্যকের উদ্দেশ্যে।


টুকটুক পাহাড়ের অস্তগামী সূর্য্য

বাঁশের মাচার রাতের খাবার
রাতে আমাদের ডিনার ছিলো ক্যান্টনমেন্টের এক বাঁশের মাচার উপরের রেস্টুরেন্টে। সেখানে আমাদের মিঃ আর্মিম্যানের সৌজন্যে চকচকে র‌্যাপিং এ মোড়ানো বিশাল এক গিফ্ট দেওয়া হলো এবং কাবাব, নান, মাংসের চাপ ও নানা রকম মাছের ফ্রাই দিয়ে ডিনার সেরে ক্লান্ত শ্রান্ত দেহে ফিরে এলাম। ঘুমানোর আগে গিফ্ট খুলে দেখি এক গাঁদা পিস্তল!!!!!! ও মাই গড!!!!!! এ কি গিফ্টের ছিরি! আর্মি বলে কি আমাদেরকেও এমন সব বন্দুক পিস্তল দিয়ে ভয় দেখাতে হবে। বাচ্চারা মহোৎসাহে এই ডেকোরেশন থেকে কে কোন বন্দুক পিস্তল তুলে নেবে সেই নিয়ে গোল করতে শুরু করলো। তবে পরে মিঃ আর্মিম্যানের সাহাচার্য্যে তাদের হাত থেকে বন্দুক পিস্তলগুলো রক্ষা পেলো।


আমাদের জন্য আর্মিদের দেওয়া ভালোবাসার বন্দুক পিস্তল গিফ্ট


রাতের আরন্যক রিসোর্ট


দিনের আরণ্যক রিসোর্ট
পরদিনের গন্তব্য ছিলো কাপ্তাই হেলিপ্যাড ও পাওয়ার প্লান্ট।
কাপ্তাইকে ওরা বলে হাপ্তাই তবে হাপ্তাই পাওয়ার প্লান্টে যাবার আগে আমরা গহীন অরন্য পেরিয়ে পৌছালাম জীবতলী ক্যান্টনমেন্ট।পথে পড়লো বনভান্তে মন্দির।


বনভান্তে মন্দির
এরপর গহীন বন বনানী পেরিয়ে পৌছুলাম উঁচু পাহাড়ে চূড়ায় এক হেলিপ্যাডে। সেই হেলিপ্যাড পাহাড়ের চূড়ায় উঠে মনে হলে নীচে নৈস্বর্গিক এক প্রকৃতি থমকে আছে।



আমি তো পাহাড়ী ড্রেস আর সাজুগুজু নিয়ে ছবি তুলতে তুলতে শেষ।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র


যাইহোক এরপর পাওয়ার প্লান্ট পরিদর্শন। ভেতরে সাধারণ জনগনের প্রবেশ নিষেধ তবে মিঃ আর্মিম্যানের সৌজন্যে আমাদের সেই পারমিশনও জুটে গেলো। ঘুরে ঘুরে দেখলাম আমরা আমাদের দেশের এই অপূর্ব সম্পদ হাপ্তাই ওরফে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ সৌন্দর্য্য।


অবশেষে ফিরে যাবার পালা..... কয়েকদিনের ক্রমাগত হন্টন আর অবিরাম ঘুরাঘুরির কারণে সকলেই বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো। তারপরেও ফিরে যাবার সময় চোখে গেঁথে নিলাম এক অপরুপ যাদুময় মায়াবী দিনগুলোর স্মৃতি।


এ ভ্রমনে চির স্মরনীয় কয়েকটি বিশেষ ঘটনা........

১। রাজন্যা ভৌমিক ঋদ্ধি - তার বয়স হবে চার বা পাঁচ কিন্তু কান্নার আওয়াজ, বাপরে! মা তাকে থামাতেই পারছিলো না। সে মায়ের কোলে ঘুমাতে চাচ্ছিলো ট্রেনে কিন্তু মা বিরক্ত হয়েছিলো এই তার অপরাধ। সে অপরাধে সে মা সহ ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের কান ঝালাপালা করে তুললো। আমি আবার সবই সহ্য করতে পারি কিন্তু বাচ্চাদের কান্না! কিছুতেই না। কাজেই আমিই এগিয়ে গেলাম থামাতে অবশেষে। বললাম এ্যই কি হয়েছে! কাঁদছো কেনো? সে চোখের কোনে আমাকে দেখে নিয়ে আরও দ্বিগুন স্বরে চিৎকার শুরু করলো। আমি বললাম, হায় হায় আমি তো সব দেখে ফেললাম তুমি বেবিদের মত কাঁদো!!!!!! অংবং এই সব আমার নানা এক্টিং কাজে লাগালাম। কাজ হলো। তারপর সে আমার বন্ধু হয়ে গেলো। কান্না থামিয়ে গান শুনালো-
গুড মর্নিং গুড মর্নিং হাউ আর ইউ টু ডে
আই এ্যাম ফাইন , আই এ্যাম ফাইন
উইশ ইউ আ গুড ডে........
ওর কাছে আমি শিখে নিলাম গানটা। আর ওকে বললাম ...... আমি তোমাকে মনে রাখবো। অবশেষে আমরা অটোগ্রাফ বিনিময়ও করলাম। সে আমার ছোট রাইটিং প্যাডটা টেনে নিয়ে লিখে দিলো নিজের নাম গটগট করে। আমিও লিখে দিলাম ওকে আমার নাম আর রাজন্যা নামের সেই ছোট্ট মেয়েটাকে গেঁথে নিলাম হৃদয়ের মনিকোঠায়।

২। মটু ছেলে ও তার মা - নৌকায় ওঠাতে আমার বড় ভয়। কিন্তু আমি নিজের ভয় ভুলে গেলাম এক ইয়া বড় সড় মটু ছেলের ভয় দেখে। এ বয়সের অন্যান্য ছেলেরা দুঃসাহসী সৈনিকের মত তড়বড় উঠে যাচ্ছিলো আর সে কিনা মায়ের হাত ছাড়বেই না। পরে বুঝলাম আসল কারণ তার মনে সকল ভীতি ঢুকিয়েছেন তার মা। বাবু আমার হাত ধরো, বাবু আমার পাশে বস, ভয় নাই ভয় নাই আর মা যত বলে মটু ছেলে আরও ভয় পায়। আমি না পেরে জিগাসা করলাম, ও কোন ক্লাসে পড়ে। মা বললেন ক্লাস এইট। ক্লাস এইটে পড়ে এই নন্দ দুলালকে মনে হয় মা শুধু মুখে তুলে খাইয়ে দেয় আর সামনে একটা তেলাপোকা আসলেও মটু ছেলেকে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে বলে! :( আহারে মা আর আহারে ছেলে! অতি আদরেও মানুষ মটু ও ভীতু হয়।

৩।ডমিনেটিং ছেলে ও তার বাবা-
ট্রেইনে যেই খাবারই আসে চিকেন, কাটলেট, চা কফি, চুইংগাম, চকলেট সবই খেয়ে ফেলেন এই বাবা। পাশে বসে থাকা মাও তার মাঝে সাঝে দু একটাতে ভাগ বসায় হ্যাজব্যান্ডের অনুরোধে। তার কয়েক সিট আগে বসেছিলো তাদের গাট্টাগোট্টা ষন্ডা মার্কা ১৯/২০ বছরের এক ছেলে। সেও হয়তো খাচ্ছিলো একই ভাবে। তাকে দেখা যাচ্ছিলো না। শেষে যখন খানাপিনার বিল নিয়ে ট্রেইনের কর্মচারীরা এলো। বাবা টাকা দিতে গেলেন। ৩ প্যাক কাটলেট,ব্রেড, দুই প্যাক চিকেন ফ্রাই, ৪ প্যাক কি কি যেন হেন তেন হিসাব। ছেলে উঠে এলো। থামিয়ে দিলো বিলম্যানকে। কি বলেন যা তা! একটা মানুষ এত খায় নাকি! ফাজলামী পেয়েছেন? সেই লোক তো কাচুমাচু- স্যার এসবই খেয়েছেন। ছেলে বাবাকে চার্জ শুরু করলো- কয়ডা নাস্তা খাইসেন? বাবা মিন মিন করে বললো কি যেন। ছেলে আবার বলে, কয়ডা নাস্তা খাইসেন, ঠিক করে বলেন? বাবা বলেন, তিনডাই তো খাইলাম। ছেলে বলে কি বলেন? আমিই দুইডা খাইলাম, আপনি তিনডা খাইলেন কেমনে! আম্মা আপনি কয়ডা খাইসেন? মাও বাবার দলে- মিন মিন স্বরে বললেন, কি জানি মনে নাই। এই মুহুর্তে আমি হাসি ঠেকাতে পারলামই না এবং আমার হাসির শব্দও নিম্মগামী ছিলো না। তবুও ছেলের কোনো ভ্রুক্ষেপই নাই। সে বাবা এবং মাকে চার্জ করেই যাচ্ছে আর বাবা নিশ্চুপ। হঠাৎ বাবা ছেলের এইসব অযথা বিরক্তি সহ্য না করে বলে উঠলো, ঐ যা তুই দূরে গিয়ে বস, দেন ভাই বিলডা দেন। ছেলে বিস্মিত বাবার এ হেন বোকামী দেখে যেন তার সহজ সরল ভালোমানুষ বাবাকে সকলে ঠকিয়ে নেয়, তো বাবার বকা খেয়ে ছেলে বললো, আজীব তো, যান যা করার করেন, আপনার টাকা তো বেশি সস্তা হইসে। গজ গজ করে সে নিজের সিটে ফিরে গেলো। এই ভালোমানুষ বাবা আর মা আর তার নিজের আদরের ছেলের তাদেরকে বোকা ভাবা দেখে আমার খুবই মজা লেগেছে। যদিও এই ছেলের আচরণ আমার চোখে একটু বেয়াদপীই তবুও তারা যে এক সুখী এবং সহজ সরল বাবা মা এবং আল্লাদী ডমিনেটিং ছেলের ফ্যামিলী তা দেখে বোঝা গেলো।

৪। ঘাটের বুড়ি - আমরা যখন কাপ্তাই লেকের ঝর্না দেখতে গেলাম। আমি কিছু সময় বসেছিলাম নৌকাতে। অন্যরা সবাই ঝর্নায় ভেজাভেজির চেষ্টা করছিলো। এই সময় দেখলাম এক হাসিখুশী বুড়ি। আরেক নৌকা থেকে আমাকে ডাকাডাকি করছে। আমার খুবই মজা লাগলো, আমিও তাকে ডাকলাম আমার নৌকায় আসার জন্য। দূর থেকে তার কথা শুনতে বা বুঝতে পারছিলাম না। সে আমার ডাক পেয়ে খুশীতে দুই কদম হাঁটা আর এক লাফে চলে আসলো আমার নৌকায়। যেখানে আমি নৌকায় উঠতে নৌকার স্ট্যান্ড হতে শুরু করে মাঝি, আমাদের সঙ্গী সাথী পাঁচ বছরের বাচ্চারও হাত পা জড়িয়ে ধরি সেখানে এই বয়সে এই বুড়ি খালাম্মার দুই কদম আর এক লাফে এক নৌকো থেকে আরেক নৌকায় ওঠা দেখে আমার চোখ গুল্লু গুল্লু হয়ে গেলো! জানলাম সে রোজ সকালে এখানে আসে ১০/১১টায়। তার গ্রাম থেকে যেসব মাঝি নৌকা নিয়ে আসে তাদের সাথে চলে আসে, নিত্য নতুন ভ্রমনবিলাসী মানুষ দেখা তার শখ। তার নিজেকে হ্যাপী রাখার এই বিচিত্র শখ আর হাসিখুশী মুখ আমি কোনোদিন ভুলবোনা।

৫। সেলফি ওয়াইফ- ঐ ঝর্নার ধারেই আরেক দৃশ্য।একদল অভিযাত্রী হৈ চৈ করে নামলো বোট থেকে। সেই দলের সবচাইতে স্মার্ট সুন্দরী আর খুবই সুন্দর হালকা হালকা রঙধনু রঙ জামা পরা মহিলাটাই সেই বাড়ির ভাবী। সবাই ভাবী ভাবী করে অস্থির। সেই বাড়ির সব ছোট ছোট দেবর ননদদেরকে মাতবরী স্টাইলে নির্দেশনা দিচ্ছিলো সেই অতি পরম আপনভাবীটা। সে যদিও খুব অস্থির আর এই ভ্রমন নিয়ে এক্সাইটেড ছিলো। শুধু ভ্রমন না দেবর ননদ সামলানোই নয় বরং তার পাশাপাশি তার মেইন আকর্ষন ছিলো সেলফি তোলাটাও। সে পাড়ে দাঁড়িয়েই একবার এদিক, আরেকবার ওদিক তার এক ঢাল খোলা লাল নীল রং করা চুলগুলো নিয়ে দেখছিলো, কোন দিকে তার সেলফি স্টিক ঘোরাবে। সব্বাই হই হই করে উপরে উঠে যাচ্ছিলো। সে বিশাল হাক ডাকে বলছিলো, ঐ তোদের ভাইয়াকে একটু ডাক দে না! মানে সে তার হাসব্যান্ডের সাথে ছবি তুলতে চায়। কিন্তু হাসব্যান্ডের ছবি তোলা তো দূরের কথা কই যে সে ছিলো আমি খুঁজেও পাচ্ছিলাম না। শেষে হাসব্যান্ড আসিলেন হাতে এক ঠোঙ্গা বাদাম নিয়ে ও বউ এর এই সেলফী প্রীতিতে ভীষন বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে রইলেন ও সেলফী তুলতে রাজী হলেন না। বউ তো মহা রাগ করে একা একাই পটাপট কয়েকটা সেলফী তুলে ফেললো। আমি নৌকা থেকে বসে বসে এই দৃশ্যে যেমনই মজা পেয়েছি তেমনি দুঃখ পেয়েছি বেরসিক হাসব্যান্ডটার কান্ড দেখে। হা হা তাই বলে বউটাকে আমার খুবই ভালো লেগেছে। সে যেন আপনার মাঝে আপনি হারা, আপন সৌরভে সারা, যেন আপনার মন আপনার প্রাণ আপনারে সঁপিয়াছে...... হাহাহাহাহহা আর অবশ্যই সে যদি তোর ডাক শুনে কেই না আসে তবে একলা চলো, একলা মাতো, একলাই আনন্দে ভাসো নীতিতে বিশ্বাসী!

৬। হাসব্যান্ড সচেতন ওয়াইফ- এ ওয়াইফ আমাদের সহযাত্রী ছিলেন। পানিপথে উনার হাসব্যান্ডের হঠাৎ জরুরী কাজ প্রয়োজন পড়লো। বেশ কিছুক্ষন যাবৎ উনি উশখুশ করছিলেন। কিন্তু উনার ওয়াইফের কষ্টটা ছিলো দেখার মত। হাসব্যান্ড যত না সমস্যা ফিল করছিলো ওয়াইফটার মনে হচ্ছিলো তার থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে। একটু পর পর জিগাসা করে বেশি কষ্ট হচ্ছে? বলো বলো? হাসব্যান্ড কঠোর মুখে সামনে দৃষ্টি মেলে উদাস চেয়ে রয়, আর ওয়াইফ অপলক তার মুখে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কষ্টের পরিমান তার ঠিক কতখানি। একটা মুহুর্তে ওয়াইফ না পেরে মাঝিকে বলেই ফেললেন, মাঝি কোথাও নৌকা ভিড়ানো যায় না!

৭। শীত লাগা ছেলের মা- ইনি আরেকজন মা। বাচ্চা কিছুতেই গরম কাপড় পরে আসতে রাজী হয়নি। তাতে মায়ের বড় আপত্তি। একটু পর পর মায়ের নিজের চাদরে তাকে ঢাকতে যায়, নিজের ওড়না খুলে দিতে চায়। আর বাচ্চা খেপে ওঠে।শীত বাচ্চার লাগছিলো না যেন লাগছিলো মায়েরই বেশি। হা হা হা আমি শুধু অবাক হয়ে দেখছিলাম নারীর নানা রুপ, কত রুপে, কত ছন্দে, কখনও মমতাময়ী মা, কখনও ভালোবাসাময় স্ত্রী সকলের সকল সুবিধা অসুবিধাগুলি নিজের উপরে নিয়ে নিজে যে একটু ঘর ছেড়ে এসেছেন খোলা হাওয়ায় নিশ্বাস নিতে। সে নিশ্বাসটুকুও বুঝি ভার হয়ে আসে সবার কথা ভাবতে ভাবতেই!!!!!!!!

৮। জীবতলী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও ছুটির ঘন্টা- কাপ্তাই এর যে ক্যান্টনমেন্টে আমরা হেলিপ্যাড পরিদর্শনে গিয়েছিলাম সেখানে ছিলো এক বাচ্চাদের স্কুল। আমাদের ড্রাইভার বলে অনেক আগে নাকি এই স্কুলেই ছুটির ঘন্টা সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিলো।

৯। জীবতলী ক্যান্টনমেন্টের পথে হাতী চলা পথের গল্প- গাইড বললো এই গহীন যে অরণ্যে আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে। খুব ভোরে এবং সন্ধ্যার পর পরই এইখানে নেমে আসে হাতী। আর সামনে এই সব যানবাহন দেখলেই খেপে ওঠে তারা। কিছুদিন আগে এক সি এন জি ড্রাইভার নাকি হাতী দেখে পালিয়েছিলো সি এন জি ছেড়ে। হাতি নাকি তার সি এন জি উলটে দিয়ে পা দিয়ে পাড়িয়ে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে। বাপরে এটা শোনার পর আমি চোখ বুঁজেই ছিলাম। বলা যায় না তখন ভোর না হলেও যদি ভুল করে তারা আমাদের গাড়ির সামনেই নেমে আসে! :(

১০। ফাহমিদা মিষ্টি পিচ্চি- যাবার কালে ট্রেইনে পেয়েছিলাম এক ছোট্ট মিষ্টি মেয়ে রাজন্যা ভৌমিক ঋদ্ধিকে। আর ফেরবার কালে পেলাম আরেক পিচ্চি ফাহমিদাকে। এত সুন্দর একটা পরী বাচ্চা! তার সিটের উপর দাঁড়িয়ে আমার ব্যাগে কি আছে উঁকি দিচ্ছিলো। আমি তাকে ব্যাগ থেকে বের করে দিলাম একটা ছোট্ট লোশনের টিউব। সেটা পেয়ে মনে হয় এমন মহার্ঘ সে আর কখনও তার জীবনে পায়নি। সেটা দিয়ে একবার সেলফি তোলে, একবার চুমু খায় আবার খুলে একটু হাতে ঢেলে মুখে লাগায়!!!!!!! হা হা হা নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি দেখে ফেরবার পথেে ট্রেইনের দীর্ঘ বোরিং সময়টাও শেষ মেষ ফাহমিদাকে নিয়ে ভালোই কেটেছিলো।

এক কথায় অনবদ্য অবিস্মরণীয় শীতকালীন ভ্রমন সাঙ্গ হলো এক রাশ আনন্দময় স্মৃতিগুলি নিয়েই।
সবাইকে নতুন বছর ২০১৭ এর শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২১
১৭৬টি মন্তব্য ১৭৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×