somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিছানাকান্দি-- এক লুকিয়ে থাকা অপ্সরী(ছবি ব্লগ)

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
দূরের ঐ ঝর্না, পাহাড়---হ্যামিলিওনের বাশীওয়ালার মতন ডাকছে আমায়।

মেঘালয় পাহাড় থেকে ভেসে আসা মেঘ।

পরদেশী মেঘ, যাওরে ফিরে...



আমার গিন্নি মেঘে মুগ্ধ



আমাদের নৌকা থেকে দেখা ঝর্না



ঝর্না, মেঘ, বৃষ্টি.।।আহ! প্রকৃতির কি সৃষ্টি.....



আমি আর আমার গিন্নি।পেছনা ঝর্না ।



সেভেন সিস্টার্স



কি অপার্থিব!!



আমার মেয়ে।মেঘে মেঘে মুগ্ধ।

দূরের

ঐ ঝর্না । যার উৎপত্তি পিয়াইন নদী থেকে ।


এটা যে আমার দেশ! না দেখলে বুঝাই যায় না ।



এই ঝুলন্ত সেতু দিয়ে চলে যাওয়া যাচ্ছে শেষের কবিতার শিলং।



আজ তোমার মেঘের অনেক রঙ। আজ তোমার মেঘে মেঘে দিন।



এযে মেঘের রাজ্য!



দুপুরের আহার। ছোলার বিরিয়ানি। খেতে দারুন।



মেঘের দেশে এখনো কি তুমি হারাও আনমনে? কবিতা কি লিখ আমায় ভেবে?





জায়গাটার নাম বিছানাকান্দি । সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বিস্নাকান্দি।অনেকদিন থেকেই যাব যাব করছিলাম। হাসান মোর্শেদ ভাইয়ের ব্লগ পড়েই মনে হয়েছিল জায়গাটায় যেতে হবে। বিছিয়ে রাখা সুন্দর জায়গা! এবারের ঘোর বর্ষায় বিছাকান্দির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমরা চারজন। আমি,জুবের,শিরিন আর অর্পিতা। আর সিলেট যাব কিন্তু বন্ধু লিঙ্কন এর বাংলো বাড়ী 'শান্তিবাড়ি' যাব না! এটা কি হয়? সিলেট গামী কালনি এক্সপ্রেস করল ২ ঘন্টা লেট। শ্রীমঙ্গল পৌছাতে পৌছাতে রাত ১২.৩০। স্টেশন থেকে লিঙ্কন এর গাড়িতে করে সোজা চলে গেলাম 'শান্তিবাড়ী'। জায়গাটাকে একদম নিজের বাড়ীর মত লাগে। লিঙ্কনের মায়াবি আতিথিয়তা, মজার মজার খাবার আর ভ্রমণ জনিত ক্লান্তর কারনে রাতের খাবারের পরই চোখে চলে আসল রুপকথার রাজ্যের ঘুম। সকালে ভোরে রওনা দিলাম সিলেটের উদ্দেশ্যে। সিলেট বাস স্টপেজে নেমেই সিএনজি চালিত অটোরিস্কা নিলাম বিছাকান্দির উদ্দেশ্যে। সিলেট থেকে গোয়াইন ঘাট- হাদার বাজার হয়ে যেতে হয় বিছানাকান্দি। গোয়াইনঘাট পর্যন আসলাম হাওর অঞ্চলের চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখতে দেখতে। গোয়াইন ঘাট এর পর থেকে শুরু হয় প্রচন্ড রকমের খারাপ রাস্তা। কোথাও উচু-কোথাও নীচু। কিন্তু রাস্তা বাঁক নিতেই দৃশ্যপট পালটায়। দূর থেকে দেখা যায় মেঘে ঢাকা মেঘালয় পাহাড়। পাহাড়ের মধ্যে দূর থেকে দেখা যায় মায়াবতী ঝর্না। দেখে মনে হয় ভ্যানগগ বা রেমব্রান্ট এর আকা কোন শিল্পকর্ম। আকাঁবাকা পথ যেন আর শেষ হয় না। কানে বাজে রবার্ট ফ্রস্টের "But I have promises to keep, And miles to go before I sleep" । রবার্ট ফ্রস্ট ঠিক কার কাছে প্রমিজ করেছিল জানি না। তবে আমি সময় পেলেই প্রকৃতির কাছাকাছি যাই। কারন প্রকৃতিতে নিঃশ্বাস আছে , আছে পরিত্রান! একটু পরে পৌছে গেলাম হাদার পাড় বাজার। বাজার থেকে নৌকা নিয়ে চলে গেলাম বিছানাকান্দি । নৌকায় প্রায় ৩৫ মিনিটের পথ। যেতে যেতে দেখতে পেলাম মেঘালয় এর পাহাড়্ গুলো। মেঘ আসছে ভেসে ভেসে। চেরাপুঞ্জির মেঘ। এই মেঘ গুলোই বোধহয় 'পরদেশি মেঘ'। ঝুলন্ত সেতুটা পাড় হলেই চলে যাওয়া যায় মেঘালয়। তারপরেই 'শেষের কবিতার' শিলং। কষ্টকর যাত্রার ক্লান্তি নিমিষেই চলে গেল পাহাড়ের হাতছানিতে। মেঘে ঢাকা পাহাড় যেন ডাকছে। আর এ ডাক কি এড়ানো সম্ভব? পাহাড়ের বুকের মধ্যে ঝর্না গুলো থেকে অবিরাম জল পড়ছে। এই ঝর্না গুলো যেন নিদারুন উদাসীন ও নির্বিকার। একটা জায়গা যে এরকম নির্বিকার অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে তা কখনো ভাবিনি। সভ্যতার বিবর্তন,বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, মানুষের দ্রুত পরিবর্তন কোন কিছুই তাকে স্পর্শ করে না। এই প্রকৃতির কাছাকাছি এসে নিজেকে বড় ক্ষুদ্র ও অপাঙ্কেয় মনে হয়। এই শেষ সীমান্তেও কিছু গল্প আছে। শেষ পীলার অতিক্রম করে ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে পড়া কিছু দরিদ্র মানুষ আর তাদের জীবনের গল্প, অভিযোগের গল্প! সে গল্প না হয় তোলা থাকুক আরেকদিনের জন্য! চোখের ভেতরে জমে থাকা সবটুকু ক্লান্তি নিয়ে পরিত্রান খুঁজতে খুঁজতে হাতড়ে বেড়াই কোথাও যদি দুদন্ড শান্তির দেখা মেলে!!বিছানাকান্দি----আমায় শান্তি দিয়েছ তুমি!
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে সিলেট । ট্রেন অথবা বাসে। সিলেট থেকে নগরীর অম্বরখান পয়েন্ট। সেখানে সিএনজি পাওয়া যায়। সিএন জি করে গোয়াইঙ্ঘাট হয়ে হাদার বাজার। আমাদের থেকে ১৫০০ টাকা নিয়েছিল (রিজার্ভ)। রাস্তা খুবই খারাপ। হাদার বাজার থেকে নৌকায় বিছানাকান্দি। নৌকা পথে দূরত্ব্ব কম কিন্তু ভাড়া বেশী। আমাদের থেকে ১১০০ টাকা নিয়েছিল(রিজার্ভ)।নৌকাটা অবশ্য বড় ছিল। ছোট নৌকাও পাবেন।বিছাকান্দি ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। সঙ্গে ছাতা, রেইনকোট নিতে ভুলবেন না। বিছকান্দিতে খুব ভাল হোতেল নেই। তাই সিলেটে থাকাই ভাল। সিলেট থেকে সকাল সকাল রোনা দিলে দিনে দিনে ফেরত আসা যাবে। হ্যাপি ট্রাভেলিং।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৯
২৬টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×