somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ্যান্ডসাম ফেরিওয়ালা লিখন ও স্মার্ট বাদাম বিক্রেতা তাহমিনার তামশা আর খেটে খাওয়া মানুষের পশু হয়ে যাওয়া।

০৯ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাল আমার এক ছোট বোন ফেসবুকে তার স্বামীকে পশু ডাক্তারের কাছে যাবার পরামর্শ দেবার সাথে সাথে তার সুন্দর কারন গুলোও তুলে ধরেছিল। যে সকল কারন গুলো ও তুলে ধরেছিল সেটা যে কোন কষ্ট করে অর্থ উপার্জনকারী মানুষ এক বাক্যে মেনে নেবেন বলেই আমার বিশ্বাস। বাস্তব জীবনে অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে আমরা সাধারন মানুষ গুলো যে দিন দিন মানুষ থেকে পশুতে রূপান্তরিত হচ্ছি এটা বাস্তব।



বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির দিকে তাকালে স্পষ্ট ভাবে দুটি শ্রেণী ধরা পরে। যেখানে এক শ্রেণীর হাতে অঢেল অর্থ এবং যা তারা খরচ করছে ৫ টাকার জিনিস ১৫ টাকা দিয়ে ক্রয় করে। আর অন্য একটি শ্রেণীর সকাল শুরু হয় মোরগের মত তাড়াতাড়ি ধরফর করে উঠে, ঘোড়ার মত ছুটে, গাধার মত সারাদিন খেটে, শেয়ালের মত সারাদিন এদিক ওদিক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, সিনিয়রদের কথায় বাঁদরের মত নাচন-কুর্দন করে, দিনশেষে বাসায় ফিরে ফ্যামিলির সবার ওপর কুকুরের কত করে চিৎকার করে আর রাতে যতটুকু ঘুম সেটা মহিষের মত ঘোঁত ঘোঁত করে। এক কথায় এমন শ্রেণীর জীবিত জীব গুলোর জীবনকে যান্ত্রিক জীবন না বলে পশুর জীবন বলাই যুক্তিযুক্ত। ঠিক এমন সময় জীবন যেখানে খুব খুব কঠিন সেখানে লিখন ও তাহমিনা নামক দুজনের এমন কঠিন বাস্তবতার জীবন নিয়ে তামশা আমার কাছে বিরক্তের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।



"হ্যান্ডসাম ফেরিওয়ালা লিখন" শিরোনামে একটি খবর অনলাইনে বেশ সারা ফেলতে দেখেছি। অনেক অনেক অনেকেই খুব বাহবা দেবার চেষ্টা করেছেন। খুব যুক্তি সঙ্গত কারনেই আমি বাহবাটা দিতে পারিনি। যে লিখন উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান এবং ঢাকা শহরের দুটি ফ্ল্যাট বাড়ির মালিক যিনি তার রাস্তায় নেমে এমন তামশা করলেই কি বা না করলেই কি? তার তো আর সত্যি সত্যি পেটের দায়ে রাস্তায় নামতে হয়নি। দিন শেষে বা মাস শেষের উপার্জনের উপর তার জীবনে কিছু যায় আসে কি? হেড ফোন কানে দিয়ে গলায় দামী ক্যামেরা ঝুলিয়ে ঢাকার রাস্তায় ফেরিওয়ালা সাজা আমার কাছে এক কথায় তামশা। আমার তো মনে হয় এমন নিশ্চিত জীবন থাকলে আমি প্রতি দিন সকালে আমার বাড়ির কাছের সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা নিজের মত করে যত্ন করে ঝাড়ু দেবার কাজ করতাম বিনা পয়সায়। যে রাস্তায় আমি আমার মেয়েকে নিয়ে খুব ভোরে উঠে হাঁটতে বের হতাম।

এখন আবার নতুন করে চলছে স্মার্ট বাদাম বিক্রেতা তাহমিনার গল্প। যার উচ্চ শিক্ষার জন্য মলয়শিয়া যাবার সুযোগ থাকে অথবা যার সপরিবারে মালয়শিয়া স্থায়ী ভাবে বসবাসের সুযোগ থাকে তাদের যে দিন আনি দিন খাই এমন নিশ্চয়ই নয়। এখানেও একই গল্প। প্রতিদিনের বা মাস শেষের উপার্জনের দিকে কেও তো তাকিয়ে থাকে না তাই আমরা এমনি এমনি খাই টাইপের গল্প। যেমনটা মনে হয় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের বেলায়ও। নজরুল যদি রবীন্দ্রনাথের মত করে নদীতে নৌকা নিয়ে মনের জানালা গুলো খুলে দিতে পারতো তাহলে হয়তো আমরাও অন্যরকম নজরুলকে পেতাম। তাই এমন তামশায় বাহবা দেবার মত কিছু খুঁজে পাই না আমি। জীবনে দরকার আর বিলাসিতা তো আর এক নয়। মানুষ জীবনের দরকারের পথে নামে আর এরা নেমেছে বিলাসিতা করার জন্য।

এরা বিলাসী ফেরিওয়ালা। চাইলেই ছুটি, চাইলেই আরাম। বরং এ কাজ গুলো যারা প্রকৃত পেটের দায়ে করে থাকে তারা কিন্তু এমন দামী ক্যামেরা, কানে হেডফোন গুঁজে করতে পারেনা, অথবা চাইলেই আজ ছুটি বলে কাজ ফেলে চলে যেতে পারেনা। ফলে অসহায় মানুষ গুলোর অসাহায়ত্ত নিয়ে এক প্রকারের মজা করা আরকি। এমন কাজে প্রকৃত নিয়োজিত খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর মনে না পাওয়ার কষ্ট, ধনীতে গরীবে ভেদাভেদ তুলে ধরার জন্য এরা দুজনই যথেষ্ট। যারা এদের বাহবা দিচ্ছেন তাদের কে অনুরোধ করছি এদের সম্পর্কে খবর রাখতে থাকুন। দেখবেন তাদের এমন বিলাসি তামশা বেশী দিন চলছে না। কারন তামশা বা বিলাসিতার স্থায়িত্ব যে ক্ষণস্থায়ী।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪২
২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×