somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাকিব শাহরিয়ার
বিবর্ন স্বপ্নাবলী নিয়ে অর্ধ জীবন্ত এক অস্তিত্ব আমি। খুব সতর্ক পায়ে হেটে চলি এই ভূমন্ডলে ও স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি শূন্য পানে নিজের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা খুঁজতে।

অস্তিত্বের অন্তরালে: ৯ (১৮+)

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুবাইয়াতের মধ্যে এখনো হাসব্যান্ডলি ব্যাপারটা জন্মাচ্ছে না। সে সব সময় তার নিজস্ব চিন্তাগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এটা নিয়েই অরনীর যত চিন্তা। বিয়ের প্রায় বছর ঘুরতে চলল কিন্তু রুবাইয়াতের চাকরী করার ব্যাপারে চরম উদাসিনতা। এদিকে অরনীর একটার পর একটা বিয়ে এসেই যাচ্ছে। পড়াশোনার কথা বলে আর কতদিন? তার বাবার অসুস্থতা বাড়েই চলছে। পেনশনের যা কিছু টাকা ছিলো তা ব্যংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে কিছু টাকা আয় হয় তা দিয়েই কোনো মত খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে তাদের সংসার। এমন একটা সময় রুবাইয়াতের এরকম উদাসিনতা খুবই কষ্ট দিচ্ছে অরনীকে। সে কোনো কিছুই যেন কেন সিরিয়াসলি নিতে চায় না। সব কিছুতে কেমন যেন একটা উদাস উদাস ভাব।
অরনী এবারের সামার ভেকেশনে তার মাকে বলতে চেয়েছিলো রুবাইয়াতের সাথে তার বিয়ের কথাটা। কিন্তু কিভাবে বলবে? বললেই তো তার মা জিজ্ঞেস করবে ছেলে কি করে? কত টাকা আয় করে? এমন সময় অরনী কিভাবেই বা বলবে যে সে পরিবারের এমন অবস্থায় সারা জীবনের জন্য তার জীবনটাকে সমর্পন করেছে এক বেকার যুবকের হাতে। তাহলে কি সে ভুল করলো? তার কি উচিত হয়নি? এখন তার জন্য কত ভালো ভালো জব করা ছেলে আসছে তাকে বিয়ে করার জন্য। যাদের এক জনের কাধে ঝুলে পড়লেই নিশ্চিন্ত হতে পারে সে ও তার পরিবার। বারবার ই সে এসব কথা বলতে চায় রোবাইয়াতকে, কিন্তু বললেই তার মুখ কেমন যেন কালো হয়ে যায়। সে আর কিছু বলে না চুপ করে থাকে।
- কি? কি ভাবছো এত?
- এত তাড়াতাড়ি নামায পড়া শেষ?
- হুম, খালি ফরযটা পড়ে চলে এসেছি।
- ফাকিবাজ।
- নাহ তুমি একলা বসে আছো তাই।
- নিজে তো ঠিকি নামায পড়ে আসলেন। আর আমার নামাযটা তো দিলেন কাযা করে।
- ইস আমি কখন কাযা করলাম?
- আপনি না তো কে? কে আমাকে আজ আসতে বলল?
- হুম, তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই।
- সত্যি?
- হুম।
- আপনার তো আমাকে কখনো দেখতে ইচ্ছে করে না। তা আজ হঠাত কেন?
- কি জানি।
- কি জানি না, বলেন।
- সত্যি বলছি বলতে পারছি না। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে যেন কেমন ফাকা ফাকা লাগছিলো। মনে হচ্ছিলো আমার কেউ নাই কিছু নাই। এই প্ৃথিবীতে আমি কেন আসলাম? কিবা আমার কাজ। তখন মনে হয়ে গেলো নাহ কে বলেছে আমার কেউ নাই? সোনা বঊ আছে না আমার সাথে?
- (এক সুখের দোলায় পরম আনন্দে ঝাকি খায় অরনী) তাই?
- হুম। তুমিই তো আমারা জীবনের শত অপূর্ণতার মাঝে এক অসীম পূর্ণতা।
- তাই কখনো তো বলেন না।
- কখনো তো আজকের মত মনে হয়নি।
- আজকে কেমন মনে হচ্ছে?
- জানি না, বিকেলে ঘুম থেকে উঠার পরে মনে হচ্ছে তুমি ছাড়া এই দুনিয়ায় আমার আর কেউ নাই।
- হি হি হি। আপনি তো পুরোই ছোট বাচচাদের মত করছেন আজ।
- হুম, কেমন যেন লাগছে ঠিক বুঝাতে পারছি না।
- ধুর, এই সব চিন্তা বাদ দেন ঠিক হয়ে যাবে।
- আচ্ছা দিলাম।
- আপ্নি আজকেও নাকের লোম কাটেন নি তাই না?
- এই অন্ধকারে তুমি দেখলে কিভাবে?
- দেখব না কেন? কি বিশ্রি ভাবে বের হয়ে আছে।
- আচ্ছা তুমি পুলিশে চাকরী করলে খুব ভালো হত।
- কেন?
- না পুলিশ না ল পরলে আর ভালো করতে পারতে।
- কেন?
- এই যে সারাদিন মানুষের লেজের সাথে লেগে থেকে ইনভেস্টিগেশন করো যে সে কি করেছে আর না করেছে।
- কি তার মানে আমি পুলিশ?
- তা নয়ত কি? কই আসলাম একটু রোমান্টিক প্রেম ভালোবাসার কথা বলব না শুরু করে দিয়েছে আমি নাকের লোম কেটেছি না কাটিনি এই সব। আমার নাকের লোম তোমাকে কামড় মেরেছে?
- ছেদারে তো একটা বুঝবেন কি করে?
- তোমাদের মেয়ে মানুষের এই একটা সমস্যা। বিরক্তিকর প্রাণী। সারাদিন ছেলেদের কানের কাছে এফ এম রেডিও র মত ঘ্যানর ঘ্যানর করতে না পারলে ষোলো কলা পূর্ণ হয় না।
- কি আমি ঘ্যানর ঘ্যানর করি?
- শুধু কি ঘ্যানর ঘ্যানর কর? সুযোগ পেলে তো কেচর কেচর পেচর পেচর ও কর।
- ঘ্যানর ঘ্যানর আর কেচর কেচর পেচর পেচর এর মধ্যে পার্থক্য কি?
- আমি কি জানি? হবে কিছু একটা খারাপ যা কর সারাদিন ভর।
- আপনি একটা নেমক হারাম।
- কেন?
- এইসব তো আপনার ভালোর জন্যই করি।
- তা বলে নেমক হারাম হব কেন? নিমক হারাম মানে তো যে তোমারটা খেয়ে তোমার সাথে বেইমানি করে।
- আরে ধুর। এই খারাপ একটা কিছু বুঝে নেন না। সব কিছু কি অর্থের সাথে মিলতে হবে নাকি? মানুষ বকা দেয় মনের খায়েস মেটানোর জন্য। আমার মনের খায়েস মিটলেই তো হয়। অর্থ হতে হবে তা তো নয়। আপনি আবার আপনার এই মুরগী চোর মার্কা নিম দাড়ি রেখেছেন না?
- মুরগী চোরের আবার দাড়ি থাকে নাকি?
- না, তবে এই দাড়ি রাখলে আপনাকে দেখলে কেমন যেন মুরগী চোর মুরগী চোর মনে হয়।
- মুরগী চোরই তো, তাহলে মুরগী চোরের মত লাগবে না তো কার মত লাগবে?
- মানে?
- মানে বোঝোনি? তোমরা যারা হলে থাকো তারা তো মুরগী ই। মুরগীর মত একটা নির্ধারিত সময়ে খোয়াড় থেকে বের হও আবার খোয়াড় বন্ধ হওয়ার সময় হলে খোয়াড়ে চলে যাও।
- ইস শখ কত সারাদিন কি হল গেট খোলা থাকবে নাকি?
- সারাদিন কেন হবে সারারাত খোলা থাকতে পারে না?
- ইস, কেন খোলা থাকলে কি করবেন?
- সারারাত তোমাকে নিয়ে গল্প করব, ঝগড়া করব আবার আদর করব।
- না আমার ভয় করে।
- কেন?
- পুরুষ মানুষ শয়তানের ভাই। সারাদিন শয়তান তাদের কাধে ভর করে থাকে।
- তাই, আমার সাথে রাত কাটাতে ও তোমার ভয় করে?
- হুম
- কেন?
- কেন জানেন না?
- না
- না জানলে থাক।
- না থাকবে কেন বলো।
- না বলতে পারবো না আমার লজ্জা লাগে।
- ইস লজ্জা কি লজ্জা। মাইয়ার গতর ভরা খালি শরম।
- সরেন ফাজলামি করবেন না।
- না সরব না।
- ইস মানুষ দেখলে কি বলবে? উফ ছাড়েন তো।
- না ছাড়বো না।
- না ছাড়েন প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
- আচ্ছা।
- আপনি দিন দিন খুব ফাজিল হয়ে যাচ্ছেন। আগে তো বলেও কিছু করানো যেত না আর এখন খালি হাত চলে না?
- হুম তোমাকে দেখলে আমি তুলা রাশি হয়ে যাই।
- তুলা রাশি মানে?
- তুলা রাশি মানে জানো না? যাদের হাত অটো চলে তাদের তুলা রাশি বলে। বাটি পড়া দেখনি কখনো?
- না
- আচ্ছা দেখতে হবে না। এখন আমার হাতের নাচন কোদন দেখলেই বুঝতে পারবে বাটি পড়া দিলে তুলা রাশির হাত কি করে।
- না।
- না করে লাভ কি আমার হাত তো তুলা রাশি এখন। আমার কোনো কনট্রল নাই আমার হাতের উপর। তোমার যে কোন স্পর্শ কাতর জায়গায় হাত পরতে পারে।
- উহু চারদিকে কত মানুষ।
- আমি তো তুলা রশি।
- উহু হয়েছে। এবার ছাড়েন।
- বাটি চালান তো শেষ হয়নি এখনো।
- ফাজলামো করছেন কেন, ছাড়েন।
- আর একটু।
- না একদম ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
- কি হবে?
- কি হবে, না? দাঁড়ান দেখাচ্ছি কি হবে।
- উফ মা। এত জোড়ে কেউ খামচি দেয়? দেখ পাঁচ আঙ্গ্ুলের দাগ হয়ে গেছে।
- বেশ হয়েছে। লম্পট কোথাকার।
- ক্ষেত্র বিশেষ প্ৃথিবীর সব পুরুষই লম্পট। পুরুষেরা লাম্পট্য বন্ধ করে দিলে মানব স্রৃষ্টির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেত।

(চলবে)
আগের অংশ পড়ুন
অস্তিত্বের অন্তরালে: ৩ - ২
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×